![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বলার কিছু নাই,শুধু লেখার আছ গল্প বলতে ভয় পাই,যদি লোকে সমালোচনা করে পাছে তাই বলে কেউ কপি করবেন না লেখা,এটা একান্তই লেখকের আপত্তিকর হলে পোষ্ট বাতিলের ক্ষমতা আছে কর্তৃপক্ষের
ডিজিটালায়নের এই যুগে যাদের বাসায় টিভি কিংবা ইন্টারনেটের অবাধ বিচরন কিংবা আধুনিকরনের এই যুগে যাদের বাসায় তাদের পিতামাতারা রক্ষনশীল সমাজের ঝান্ডা তথা পতাকা বহন করছে কিংবা পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির জোয়ারে তাদের মা-বোনেরা সাতরে বেড়াচ্ছে তাদের বাসায় যে তাদের গুষ্টি প্রতিনিয়ত উদ্ধার হচ্ছে না কিংবা মহাভারতের একেক খন্ড লিখিত হচ্ছে না তা বিশ্বাস করা শুধু মুশকিল না,সম্ভাবনার বাইরে।
একদিকে যেমন বাংলা সিরিয়ালের সর্বগ্রাসী থাবায় মা-বোনেরা এমনকি বাবা-ভাইয়েরা বিনা বাধায় নিজেদের স্বার্থ-মন বিসর্জন দিয়ে দিচ্ছে অন্যদিকে ফেসবুক নামক মুখবন্ধের একটিভিটির উপরে সন্দেহের তীর প্রতিনিয়তই বেগবান করছে।যায় ফলাফল স্বরূপ আমাকে এখন আর নিজের চৌদ্দগুষ্টি নিয়া চিন্তা করার দরকার পড়ে না।ধরা খাইলে আমার আম্মাজান আমার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে দিচ্ছেন।ইহা হলফ করে বলা যায়,আমার মত যারা অভাগা,নিজ ঘরে অবহেলার পাত্র,তাদের প্রত্যেকেই তাদের মা বোনের হাতে ডিজিটালায়নের সকল সামগ্রী নষ্ট হতে দেখছে।মাঝে মাঝে আমাদের হাতেও যে অন্যের গুষ্টি রসাতলে যাচ্ছে না তা কিন্তু নয়।ঈদের দিন বা তার পরের দিন গুলাতে অনুষ্ঠিত নাটকমালার ফাকে ফাকে দৃশ্যায়মান বিজ্ঞাপন বিরতিগুলা দেখলে তা সহজেই বুঝা যায় যেখানে চ্যানেলগুলার নিপাত যাওয়াতে আমাদের চিন্তাচেতনা সচেষ্ট হয়
১/আমার ফেসবুক রঙ্গ এবং প্রথম গুষ্টি উদ্ধারঃ
নারীজাতির বিচিত্র রূপ একদিকে যেমন তারা নিজেরাই প্রকাশ করছে অন্যদিকে আমরাই তা প্রকাশে কম ভূমিকা রাখছি না।ফেসবুক নামক মুখবইয়ে গা ভাসাইয়া যখন নারীদের ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাওয়ার জন্য আমাদের প্রান উষ্ঠাগত তখন অন্য কাউকে চোখের সামনে একটা মেয়েকে ফ্রেন্ড বানাতে দেখলে আমাদের কেন জানি না কলিজা পুড়ে ছাড়খার হয়ে যায়।তা সেটা ফেক প্রোফাইল হোক বা আসল প্রোফাইল হোক।কিন্তু যাদের পিছনে তাদের বাবা-মা দেবীরূপে সর্বদা দন্ডায়মান থাকে তাদের যে মেয়ের চেহারা দেখাতেও পাপ তাহা আমি জানতাম না।"ওম শান্তি ওম"মুভির টাইটেল গানে শিল্পাশেঠির পড়া শাড়ি দেখে যিনি বলতে পারেন এই মাইয়া কি পড়ছে,এখনি তো শাড়ি খুইলা পড়বে,তুই কিনা এগুলা দেখস,তারা যে ফেসবুকে এক রমনীর ছবি দেখিয়া রাগবেন না ইহা বিশ্বাস করা কঠিন।
সদ্য খুলে বসা ফেসবুকে যখন চ্যাটিং চ্যাটিং খেলা বেশ জমে উঠেছে তখনও আমিও সেই খেলায় নাম লেখাইলাম আর দিনরাত খেলিতাম কিন্তু তখনও জানিতাম না মেয়েরাও ছেলেদের গনহারে রিকুয়েষ্ট পাঠায়।এরকমি এক বিকালে আমি আমার ফ্রেন্ডের সহিত চ্যাটিং এ ব্যাস্ত।তখন আমার বন্ধুটি আমাকে একটা লিঙ্ক দিয়ে বললও দেখতো এই মেয়েকে চিনিষ কিনা।আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠাইছে।
আমিও আমার ফ্রেন্ডের সাহায্যের কাজে নিবেদিত হইলাম।মেয়ে সুন্দরীও ছিল বটে।কিন্তু খুশির ঠেলায় যেইমাত্র পিছনে ফিরে তাকাইলাম দেখলাম আমার আম্মাজানও আমার চেয়ে একশগুন আগ্রহ নিয়া সেই ছবি প্রতক্ষ করছে।টারমিনেটর মুভিতে এলিয়েনটাইপ ভিলেনের চোখ যেমন ভয়ানক দৃষ্টিতে আর্নল্ডশোয়ার্জনেগারকে আঘাত করে দৃষ্টির সীমায় রেখেছিল আমার আম্মাজানও আমাকে তার সেই ভয়ানক চোখ দিয়া প্রশ্নবিদ্ধ করল।জানতে চাইলেন এই মেয়েটা কে,তার সাথে আমার কি সম্পর্ক,কবে থেকে তাকে চিনি,কেন ওই সময় তার ছবি দেখছি,কোথায় পড়ে,প্রতিদিন দেখা হয় কিনা এবং আরও কত কি।নিজের চৌদ্দগুষ্টিকে জেল হাজত থেকে ছাড়াইতে যে কয়টা প্রশ্নের মুখোমুখি আসামীকে হইতে হয় আমিও তাই হয়েছি।এরপর থেকে নিজের আত্মীয়স্বজনের ছবি দেখতে হইলেও আগে পুরা ঘর তল্লাশী করে দেখি বাবা মা কোথায় আছে।তারপর ছবি ওপেন করে দেখি
২/বাংলা সিরিয়াল রঙ্গ এবং আমার কচি মনের অপমৃত্যূঃ
ব্লগে ব্লগর ব্লগর করা শুরু করা মাত্রই উপলব্ধি করলাম এই জাতী ঝগড়া খুবই পছন্দ করে তা সেটার বিষয় যেটাই হোক না কেন।আমি আমার বাসায় প্রতিনিয়তই ঝগড়ায় লিপ্ত থাকি তাও সেটা আমার আম্মা-আব্বাজানের মনকে দেশীয় সংস্কৃতির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে।বাংলা সিরিয়াল তাদের দেহ মন অন্তরে ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে পড়ছে।সপ্তাহে রবি-শনি এই সাতদিন আমার বাসায় ইন্ডিয়ান বাংলা নাটকের আগ্রাসন দেখলে যে কেউ বলবে ভারতিয় সংস্কৃতি ধরে রাখার লক্ষ্যে আমার পরিবার বদ্ধপরিকর।সেগুন কাঠও যে ঘষতে ঘষতে ক্ষয় করা যায় তাহা আমার বাসার টিভির সামনে পেতে রাখা চেয়ারগুলো দেখলে ভালই বুঝা যায় যেখানটাতে সপ্তাহে ছয়দিন আমার পিতা-মাতা অটিষ্টিক বাচ্চাদের মত এক নাগাড়ে বসে থাকেন।সেখানে আমার পদচারনা যে তাদের কোন একটা ঝগড়ার লক্ষন তা তারা আমার সেখানে হাজির হওয়ার আগেই বুঝিয়া ফেলেন।তাই ইদানিং তারা আমাকে বাংলা সিরিয়ালের প্রতি আসক্ত করছেন।
আমার অপছন্দের দুইটি চ্যানেল হইল স্টার জলসা আর জি বাংলা।আমি এদের প্রতি এক কথায় বলতে গেলে জিহাদ ঘোষনা করে ফেলেছি।যতই বদনাম করিনা কেন,আম্মাজানরে ঠেকাইতে গিয়া আমারেও এই চ্যানেল এখন দেখা লাগে।কিছুদিন আগে শুরু হওয়া "কেয়ার করি না" নামক একটা নাটক দেখার প্রতি আম্মাজান আগ্রহী হয়ে পড়েন।তিনি আমাকেও জোড়াজুড়ি করেছেন দেখার জন্য।কিন্তু নাটক দেখার জন্য তার যুক্তি শুনলে টাস্কির চোটে উল্টাইয়া পড়তে হয়।তার যুক্তি-
১/এই নাটকের হিরো ডাক্তারি পড়তাছে।রিয়েল লাইফে আমিও তাই পড়তাছি
২/হিরোর চেহারা দেখতে নাকি আমার মত। তাকে দেখলে আম্মাজানের আমার কথা মনে পড়ে |আমার কথা স্মরন করার জন্য তিনি নাটকটা দেখেন।নাটকের ফাকে ফাকে আমি কখনই তার স্মরনে আসি না।
৩/নাটকে হিরো তার মায়ের স্বপ্ন পূরনের জন্য ডাক্তার হবে।আর আমি আমার চৌদ্দগুষ্টির স্বপ্ন পূরনের বলির পাঠা।
৪/নাটকে হিরো হিরোইনকে বা অন্য মেয়েদের পাত্তা দেয় না।আমিও দেই না (আসলে পাত্তা চাইতে আসেওনা কেউ)
শান্তিমত টিভি দেখার জন্য আর বাপজান-আম্মাজানকে শান্তিমত তাদের সিরিয়াল দেখতে দেওয়ার জন্য টিভিকার্ড লাগাইলাম।কিন্তু বাপজান টিভিতে দেখে জি বাংলা আর আম্মাজান টিভিকার্ডে দেখে স্টার জলসা।এর ফলস্বরূপ তাদের বাধা দিতে গেলে আমার কতকিছুই যে উদ্ধার হচ্ছে তা হয়ত আপনারা বুঝেই ফেলেছেন
৩/নাটকের ফাকে ফাকে বিরতি না বিরতির ফাকে ফাকে নাটকঃ
ঈদের দিনে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত নাটকের ফাকে ফাকে যেসব বিরতি দেয় তা যে আমার ফাটা কপালে পারমানবিক বোমার মত আঘাত করবে আর আমার বাপ-মায়ের মনে ত্রানকর্তা রূপে আবির্ভুত হবে তা বিগত ঈদগুলাতে বেশ ভালবভাবেই টের পেয়েছি।ঈদের অগ্রীম টিকেট পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকা যাত্রীদের মত আমার বাপ-মাও হাহুতাশ শুরু করে কখন বিরতি স্টার্ট হইবে আর তারা রিমোট কন্ট্রোলে অধিকার লইয়া মন প্রান উজার করে সিরিয়াল দেখিবে।নাক-কান চলচ্চিত্র উতসবে যদি বাংলাদেশে ঈদের অনুষ্ঠান্মালাতে অনুষ্ঠিত বিরতিগুলা লইয়া শর্টফিল্ম বানানো হত তাহলে নির্ধিধায় তা পুরষ্কার হাতিয়া লইত।
সিনেমার ফাকে ফাকে জীবনের আকে বাকে যে রঙ্গীন বিজ্ঞাপন গুলা জীবনের কতিপয় উদ্দিপনামূলক সময় নষ্ট করে দেখানো হয় তাতেই চলে যায় একটা দিনের অর্ধেক।বাকিটার মধ্যে আবার আছে বিশেষ সংবাদ,নির্ধারিত সময়ের সংবাদ আরও কত কিছু।দুইবছর আগের এক ঈদে চ্যানেল আইতে দেখাচ্ছিল "থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার"মুভিটা।সবার মুখে প্রসংশা শুনে ভেবেছিলাম মুভিটা দেখব।কিন্তু দেখা হল না।মুভিটা হবে বড়জোড় ১৩০ মিনিটের আর বিজ্ঞাপন হয়েছে প্রায় ২৫০ মিনিটের।মাঝে আছে আবার সংবাদের বিরতি।বেলা বারোটার দিকে দেখতে বসি ,দুপুরে বিরক্ত হয়ে ঘুমাতে যাই,সন্ধ্যায় এসে দেখি মুভিটার শেষ অংশ বাকি।ভাবলাম,শেষটুকু দেখি,সেখানেও আরও প্রায় দুইবার বিজ্ঞাপন বিরতি দেখানো হল।মেজাজ খারাপ করে সেইদিন আম্মা-আব্বার সাথে বসে স্টার জলসা আর জি বাংলার সবগুলা নাটক দেখলাম আর নিজেকে মানসিকভাবে শাস্তি দিলাম
এবার আসি এই ঈদের একটা অভিজ্ঞতার কথায়।সেদিন "ওয়ান পিস মেড,কারিগর ডেড"নামে দেশ টিভিতে একটা নাটক হয়।ওই নাটকের ফাকে ফাকে প্রথম যে বিজ্ঞাপন বিরতি দেওয়া হয় তার ফাকে আমি নিচের কাজগুলো করে এক অনন্যসাধারন রেকর্ড করে ফেলেছি-
১/ বিরতি শুরু হবার সাথে সাথে অন্য চ্যানেল থেকে একটু ঘুরে আসি
২/এরপর একটু ফেসবুকে গিয়ে গুতাগুতি করি।
৩/প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে প্রকৃতির মাঝে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যাই।
৪/এক কেজি আলু কেনার জন্য দোকানে যাই
৫/তারপর ফিরে এসে দেশ টিভিতে টিউণ করি,তখন অন্যান্য দিনের অনুষ্ঠানের সময়সূচী দেখানো হচ্ছে
৬/এরপর স্টার মুভিজে একটা মুভি দেখি কিছুক্ষন
৭/আবার ফেসবুক গুতাই
৮/তারপর দেশ টিভিতে দেই,তখন স্পন্সরদের নাম দেখানো হচ্ছে।বুঝলাম নাটক এবার শুরু হবে
অবশেষে নাটক শুরু হইলে যখন পাচ মিনিটেই শেষ হয়ে যায় তখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর উপায় থাকেনা।মা-বোনের খিলখিল হাসিতে দন্ত কিরমির করে উঠে।
বাংলা সিরিয়ালের চিপায় আমার অবস্থা Click This Link
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:৩৮
আশিক সীমান্ত বলেছেন: আসিতে যাতে দেরি না হইয়া যায় আবার
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:৩৬
মাক্স বলেছেন: প্লাস। গতকাল রাতে একটা পোস্ট লিখার পরে দেখি এই অবস্থা Click This Link
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:৩৮
আশিক সীমান্ত বলেছেন: অবস্থা তো বেগতিক।চালিয়ে যান ব্রাদার
৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:৪০
মাক্স বলেছেন: চালাইয়া কই যামু?
৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪১
টুনা বলেছেন: ভাল লাগলো। সময় মতো কেউ না কেউ এসে যাবে।
ধন্যবাদ।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৮
আশিক সীমান্ত বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:১৬
সাদরিল বলেছেন: নাটকে হিরো হিরোইনকে বা অন্য মেয়েদের পাত্তা দেয় না।আমিও দেই না (আসলে পাত্তা চাইতে আসেওনা কেউ
এইভাবে লিখতে থাকো।আসা করি পাত্তা চাইতে কেউ না কেউ আসবে