![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিল্প-সাহিত্যের মাঝে নিজেকে বিলীন করতে চাই।https://www.facebook.com/sabet.chowdhury.94
১৯৯৮ বন্যায় ভেসে গেল সব। অসহায় বাঙালির সেকি কষ্ট! চারিদিক দুর্ভিক্ষ। গ্রাম ছেড়ে অনেকের আশ্রয়স্থল ঢাকা। প্রবাদ প্রচলিত বলে কথা। "ঢাকায় টাকা উড়ে।" এ আশায় ঢাকায় এলো বহু মানুষ, তবে ঘটল বিপরিত। ঢাকার অবস্থাও ভালো নয়। রাস্তাগুলো ডুবে গেছে, ড্রেনের ময়লা পানি আর বন্যার পানি মিলে একাকার। সে এক করুণ ইতিহাস বৈকি! নৌকো দিয়েও চলা ফেরা করতে হয়েছে ঢাকাবাসীদের! তবে একে অন্যের সহায়তা করেনি তা কিন্তু নয়।
"খালাম্মা তিনদিন ধইরা ঢাহায় আইসি কিছুই খাই নাইগো, পোলাডা আমার হুগায়া কাঠ। পেডে পিডে মিশ্যা গেছে।" কুলের ছোট বাচ্চাটাকে দেখে মায়া হলো। মা খেতে দিলো, কিন্তু আশ্চর্য! খাচ্ছে না। পলিতে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। মা জিগ্যেস করলেন, 'খাচ্ছেন না কেন? "মাগো ঘরে আমার স্বামীডা বড্ড অসুস্থ। পা দুইডা ফুইল্যা গেছে, ডাক্তর বেডায় কইল অনেক টাহা লাগব সারাইতে; ছুডো আরেকটা মাইয়্যার ডাইরিয়া হইছেগো, অরাতো উপোস! আমার পেডে কেমনে ভাত ঢুকব কওগো মা!" ঢাহায় আইছি কিছু করুম, বন্যা বইলা তাও কপালে জুটলো না। বেবাগতে মানা করে, গিন করে, কাজ দেয় না। ডুঁকরে কেঁদে উঠল মায়ের মন। তাকে আরো কিছু খাবার দিলেন।
এমন নিত্যদিন হরেক মানুষের দেখা মিলতো।
অসহায় মানবতা! বিপন্ন সব। বিভিন্ন এনজিওরা সেবার নামে যা নিয়ে এলো তা অভিষাপ! পার্বত্য এলাকাগুলোতে দলে দলে খৃস্টান হতে লাগল। আহা! আমরা কতইনা বেচারা! সুদের ব্যবসা করে কেউবা রক্ত চুষে নিল। "ঠিক মত টাকা দিতে না পারায়, নির্যাতনে নিস্পেষিত হয়ে আত্মহুতির পথ বেছে নেয়ার ঘটনা অহরহ চোখে পড়ত সে সময়।
ঢাকার মধ্যবৃত্তরা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। না পারে অন্যের কাছে হাত পাততে, না ভালোভাবে দু'মুঠো ভাত খেতে। খয়রাতি দেখলেই তাদের ভয়, না জানি কি চেয়ে বসে। মানুষগুলো অতি সরল ছিল। কেউ কিছু চাইলে না দিয়ে পারতো না। আবার অভাবও পিছু ছাড় ছিলো না।
সেই বন্যায় দিকভ্রান্ত এক ৬ বছরের ছেলে শাহ আলম হারিয়ে গেল। বাবা মাকে না খুঁজে পেয়ে উদ্ভ্রান্তের ন্যায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ফিরতে লাগল। আহা! কতইনা কষ্ট তার।
নামাজ পড়ে মনছুর চাচা বাড়ি ফিরছে। এই শুনো! বেটা তুমি কেনো কাঁদছো? "মা-বাবা কৈ জানি না, অনেক খিদা লাগছে।" ধুর বোকা! কাঁদে না। মেয়েছেলেরা কাঁদে, তুমি তো পুরুষ। "আমি বাচ্চামানুষ বড় না, পুরুষ তো অয় বড়রা।" মনছুর চাচা হেসে পারে না। ছেলেটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন।
সে সময় হাত ধরে সঙ্গ দিয়েছে, আজ ছেলেটির বয়স ২২ বছর। মনছুর চাচার আর কোন সন্তান নেই। এতো মমতা, এতো ভালোবাসা দিয়ে মানুষ করেছে কুড়িয়ে পাওয়া এই ছেলেটিকে। অন্য কেউ হলে কি এরূপ করত?
আদর্শ পিতা আজ নেই, আছে তার স্মৃতি।
বাবার রেখে যাওয়া বাড়িটি আজ "মনছুর প্রাথমিক বিদ্যালয়" নামে পরিচিত।
পুনশ্চ: ছেলেটি পারত মনুছুর চাচার টাকাগুলো আত্মসাত করতে। নিজে বাড়িতে অবস্থান করতে।
মনছুর চাচাও পারতেন কুড়িয়ে না আনতে। কিন্তু সবই সম্ভব হয়েছে। ইচ্ছে থাকলে আজও হবে! চাই কেবল মানবতা। মানবতা তুমি বড়ই দু:খিনি। নারায়নগঞ্জে বাস তোমার।
হতে পারে সবই বানোয়াট, কল্পিত। তবুও মানবতা নামে একটি শব্দ ছিল। যা আজ অনুপুস্থিত। গুম হত্যা এতো স্বপ্নেও ভাবা যেত না। আজ স্বপ্নেও দৌড়াতে হয়।
আমরা বাঙালি একটু শান্তির আশায়, আজ সেই হারিয়ে যাওয়া দিকভ্রান্ত শিশু। আছে কোন মনছুর চাচা!? আমাদের উত্তোলন করবে?
২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩
শক্তি শুধা বলেছেন: সত্যিই দিন দিন আমরা অসহায় হচ্ছি। #দৃষ্টিসীমানা
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: আজ মানবতার বড় অভাব তাই আজ পাশের ফ্ল্যাটে সমস্যা হলে কেউ বেরিয়ে আসে না ।হয়তবা কেহ থানায় ফোন করে ।এতটুকু ই ,আর এতে
আমরা সবাই ক্রমান্নয়ে আরও অসহায় হয়ে যাচ্ছি ।