নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাজী অনন্য শেখর

সপ্নচোরা

বিশ্বকে জানি এবং বিশ্বকে জানাই

সপ্নচোরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরবানী করুন পশুহত্যা নয়!!

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:২৫

আর একদিন পরে পবিত্র ঈদ।মুসলিম উম্মাহর জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন। ঈদের দিন সকল মুসলমান হাসিখুশিতে মেতে উঠে।ধনী গরিব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একসাথে পাশাপাশি দাড়িয়ে নামাজ আদায় করে,কাঁধে কাঁধ,বুকে বুক মিলিয়ে কোলাকুলি করে।সবাই সবার আনন্দ ভাগাভাগি করে।সত্যিই সে এক মহা আনন্দময় ক্ষন! কোরবানীর ঈদে যোগ হয় আরেক নতুন আনন্দ!! কোরবানী করা!! কোরবানী শব্দের অর্থ ত্যাগ!যদিও বর্তমানে কোরবানী ত্যাগ অর্থে কতটা হয় তা প্রশ্ন সাপেক্ষ! কারণ যারা তিনটা চারটা বা তারো বেশী কোরবানী দেয় তাদের কাছে ওই টাকা কিছুই না। বৈধ-অবৈধ টাকার পাহাড়ে কোরবানীর টাকা একেবারেই ডালভাত।এখানে শোডাউন/বাহাদুরীটাই বড়! হযরত ইব্রাহীম(আঃ)তার পুত্র ঈসমাঈলকে আল্লার রাস্তার কোরবানী করার জন্যে মাটিতে শুইয়ে ছুরি চালিয়েছিল। সফল ছুরি চালনা শেষে তিনি চোখ খুলে অবাক হয়ে দেখেন যে কোরবানী হয়েছে একটা দুম্বা! প্রাণপ্রিয় ছেলে তার পাশেই দাড়িয়ে আছে।যদিও তিনি জানতেন যে তিনি তার ছেলেকেই কোরবানী দিয়েছেন!! এটা ছিল সত্যিকারের ত্যাগ। যদি কোরবানীর এই নিয়মটা এখনও চালু থাকতো আর আল্লাহ বলতো যে তোমরা তোমাদের প্রিয় সন্তানকে কোরবানী করো, তোমার ঈমান যদি সঠিক হয় এবং আমি যদি সন্তুষ্ট হই তবে তোমার সন্তানকে আমি ঈব্রাহীমের সন্তানের মতো ফিরিয়ে দেবো, আর না হলে সে কোরবান হয়ে যাবে! তখন কয়টা ত্যাগী,ঈমানদার খুজে পাওয়া যেত তা অবশ্য প্রশ্ন সাপেক্ষ!



কোরবানী করা সুন্নত নাকি ওযাজিব এই নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ বলে ওয়াজিব আবার কেউ বলে সুন্নত!সুন্নত ওয়াজিব যাই হোক এইটা পালনে আমরা একটুও কার্পণ্য করিনা যদিও প্রতিদিন সতের রাকাত নামাজ ফরজ সত্তেও কদাচিৎ আমরা এটি আদায় করি।কারণ নামাজ আদায়ে বাহাদুরি বা শোডাউন হয়না,কোরবানীতে হয়।



মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।পৃথিবীর বাকী সব কিছুই মানুষের ব্যবহারের জন্য,মানুষের কল্যানের জন্য। মানুষের প্রয়োজনে বা সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে মানুষ অন্য জীবকে ব্যবহার করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষতো মানুষও! তাদের মানবিক গুনাবলী আছে,বিবেকবোধ আছে! নিষ্ঠুরতা পশুর বৈশিষ্ট হওয়া উচিত, মানুষের নয়। শুনেছি মহান সৃষ্টিকর্তা অপ্রয়োজনে,স্বেচ্ছায় একটা পিপঁড়া হত্যাকারীকেও ক্ষমা করেন না। নির্দয় ভাবে অপ্রয়োজনে শুধুমাত্র নিজেকে জাহির করার জন্য নিরীহ পশু হত্যা কারীকে আল্লাহ কতটা ক্ষমা করবেন তা আমার জানা নেই।

ব্লগে দেখলাম অনেকে কোরআনের আয়াত দিয়ে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে কোরবানী বলতে কোরআনে পশুহত্যা বোঝানো হয়নি অন্য কিছু বোঝানো হয়েছে, অনেকে বলেছেন যে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে ঢালাওভাবে সবাই কোরবানী দেয়না,সৌদিতে শুধু হজ্জপালনকারীরাই কোরবানী দেয়!! আমি কোরআন বিশারদ নই বা মধ্যপ্রাচ্যে কি হয়, কেন হয় এত ভাল জানিও না। শুধু আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক বলে যে অপ্রয়োজনীয়,নির্দয় পশু হত্যা আর যাই হোক মানবিক গুণসম্পন্য,বিবেকবান মানুষের কাজ হতে পারেনা।

তাই আমি মনে করি যতটুকু প্রয়োজন,যেটা করলে আমার ওয়াজিব আদায় হয় ঠিক ততটা/ততটুকু কোরবানীই আমার আদায় করা উচিত! লোক দেখানো শোডাউেনর জন্য কোরবানী না করাই ভালো!আর যেখানে সেখানে শিশুদের সামনে এই কাজটা করা পরিহার করা উচিত।

সবাইকে *ঈদ মোবারক*







































*

রাস্তা দিয়ে কয়েক বন্ধু একসাথে যাচ্ছেন অথবা গার্ল্ ফ্রেন্ডের সাথে রিকশা করে রোমান্স করতে করতে যাচ্ছেন। হঠাৎ সামনে দেখলেন একটা স্থুলকায় মেয়ে হেটে আসছে অথবা রিকশা দিয়ে আসছে । তখন মেয়েটার দিকে এমনভাবে তাকিয়ে রইলেন যেন আপনি এলিয়েন দেখছেন!! মেয়েটা বিব্রতবোধ করলো কিনা একবারও ভাবলেন না! মেয়েটা কাছাকাছি আসতেই পাশের বন্ধুকে অথবা বয়ফ্রেন্ডকে আঙুলের খোচা দিয়ে অথবা কুনুই দিয়ে গুতা মেরে মেয়েটিকে দেখিয়ে ফিক করে হেসে দিলেন !! মেয়েটা কষ্ট পেল কিনা তা ভাবার প্রয়োজন মনে করলেন না!!

আপনি অথবা আপনার সন্তান এমনটি হবেনা এতটা নিশ্চয়তা আপনি দিচ্ছেন কীভাবে?? আমার এক আন্টি যে নাকি ছাত্রজীবনে অনেক সুন্দরী ছিল।তার সঙ্গ পেতে বা প্রেম নিবেদন করতে ছেলেরা মুখিয়ে থাকতো। সেই আন্টি একটা অপারেশনের পর এতমোটা হয়েছে যে সিড়ি ভেঙে দোতলায় উঠতে পারেনা। বাথরুমের কমোড মেঝের এক ধাপ উপরে হওয়ায় সে মাঝে মাঝে বাথরুমের মেঝেতেই পশ্রাব করে।! এক ফ্রেন্ডের বাবার মেরুদন্ডের হাড়ে একটা প্রবলেম ছিল তার জন্য অপারেশন করতে হয়। অপারেশনের কিছুদিন পর থেকে সে রিকশা দিয়ে কোথাও যেতে চাইলে রিকশাওয়ালারা তার কাছে দুই জনের ভাড়া চায় !এবং আশেপাশের আপানার/আমার মতো বিবেকহীনরা মুখ টিপে হাসে!!

ভেবে দেখুন তো যদি কোন কারণে আপনার এই পরিণতি হয় আর আপনার অসহায়ত্ত্বকে নিয়ে যদি অন্যরা এইভাবে হাসাহাসি করে তখন আপনার কেমন লাগবে? আল্লায় না করুক যদি আপনার একটি সন্তান এমন হয়!! সে নিজের স্থুলতার জন্য সর্বদা হীনমন্নতায় ভুগে,তাকে দেখে আপনি কষ্ট পান,তার ভবিষৎ নিয়ে আপনি সর্বদা চিন্তিত থাকেন এবং আপনার সেই সন্তানটি রাস্তায় বেরুতে পারেনা অন্যদের ঠাট্টা বিদ্রুপের কারণে!! তখন আপনার কেমন লাগবে??

আমাদের আনন্দ/মজা করার অনেক বিষয় আছে এই বিশাল পৃথিবীতে,অন্যের অসহায়ত্ত্বকে পুজি করে আমাকে আনন্দ নিতে হবে কেন? একেমন মানষিকতা আপনার/ আমার?

আসুননা আজকেই প্রতিজ্ঞা করি যে আজকের পরে আর কারও অসহায়ত্ত্বকে পুজি করে মজা করবোনা এবং অন্যকে মজা করতে দিবনা। এতে আপনার কোন ক্ষতি হবেনা বরং ওই ভাই বা বোনটির মনোকষ্ট দুর হবে! রিকশায়, হেটে পথে যেতে যেতে তখন আর মাথা নিচু করে রাখবেনা! বাসে এক কোণে বসে নিরবে চোখের জল ফেলবেনা। সেও আপনার আমার মতো দু-চোখ দিয়ে প্রকৃতি দেখবে, মানুষগুলোকে দেখবে এবং বুক ভরে নিঃশ্বাস নিবে!! এই পৃথিবীটাকে এনজয় করার অধিকার তো তারও আছে ! তাইনা??



-ছোট বেলায় আমি খুব বাবা ভক্ত ছিলাম । পৌষ মাসের প্রচন্ড শীতের রাতে ভোরের আলো দেখা যাওয়ার আগেই বাবা ঘুম থেকে উঠে খড় কুটো সংগ্রহ করে আগুন ধরাতেন। যদিও আমার কাছে আগুন পোহানোর চেয়ে লেপ কাথার নীচে শুয়ে থাকাটা অনেক আরমদায়ক মনে হতো তবুও বিছানা ছেড়ে বাবার সাথে খড়কুটো সংগ্রহে ব্যস্ত হতাম। তারপর একটা সুবিধামতো জায়গার খড়কুটো গুলো একসাথ করে আগুন ধরাতাম এবং বাপ-ছেলে মিলে আগুন পোহাতাম। পুরো পৌষ মাস জুড়ে বাবার এটা একটা কমন কাজ ছিল্। কিন্তু বাবাকে কোনদিনও দেখেনি কোন গাছের নীচে বা গাছের আশেপাশে আগুন ধরাতে। কারণ জিঙ্গেস করলে বলতেন যে আগুনের ধোয়া গাছের ক্ষতি করে তাই গাছের ধারে কাছে আগুন না দেওয়ায় ভাল।



-বর্ষ্া কালে ঢাকা থেকেই ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে শালবনের ঘন সবুজ বন দেখে প্রশান্তিতে বুকটা ভরে উঠে। সারাক্ষন জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকি প্রকৃতির এই অমূল্যদানের দিকে।



-সুন্দরবন আমার যাওয়া হয়নি। সুন্দরবনের রয়েলবেঙ্গলের পায়ের ছাপ কেমন তা দেখার সৌভাগ্য হয়নি অথবা দেখা হয়নি নতুন আগুন্তকের দিকে বিষ্ময়দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকা দুটো হরিণী চোখও। তবে সিডর যখন সুন্দরবনকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। প্রাকৃতিক সপ্তামাচেযের তালিকায় সুন্দরবনকে স্থান দিতে যখন আসল ভোটের পাশাপাশি নতুন নতুন একাউন্ট খুলে নকল ভোট দেয়া শুরু হয় তখন আমিও নিজের দুটো একাউন্টের পাশাপাশি আরও দুটো একাউন্ট খুলেছিলাম। এদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রক্ষাকারী পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনকে সপ্তম আশ্চযের তালিকায় দেখার জন্য আমিও অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতেছিলাম। কিন্তু সুন্দরবন বাদ পড়ে যাওয়াতে ষোল কোটি বাঙালীর মতো আমিও কষ্ট পেয়েছিলাম।



আমি একজন সামান্য চুনোপুটি। থারমাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে খুব বেশী জ্ঞান আমার নেই। কেউ যখন যুক্তি দিয়ে বলে যে থার্মাল বিন্দুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনকে ধংস করে দিবে তখন তা বিশ্বাস করি। আবার অন্য একজন যখন পাল্টা যু্ক্তি দেয় যে থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের কোন ক্ষতি করবেনা বরং ঐ এলাকার তথা দেশের মানুষের উপকার হবে তখন খুশিতে গদগদ তাই। তাই যুক্তিতকের এই জটিল জায়গাটা এড়িয়ে চলি এবং চলতেও চাই। তবে শুধু একটি কথা বার বার মনে হয়-



যে সুন্দরবন পৃথিবীর সম্পদ,যে সুন্দরবন এই দেশের সম্পদ, যে সুন্দরবন বিলুপ্তপ্রায় টাইগারের একমাত্র আবাসস্থল; কোন হঠকারী সিদ্যান্তের জন্য যদি সেই সুন্দরবনের এতটুকু ক্ষতি হয় তবে কোনদিন আমি ক্ষমা করতে পারবোনা এই সিদ্যান্তবাস্তবায়নকারীদের। হয়তো তাদের ক্ষমা করবেনা এদেশের ষোলকোটি জনগন। ঠিক যেমনটি ক্ষমা করেনি একাত্তরের বিশ্বাসঘাতকদের। আদালতের কাঠগড়ায় তারা কোনদিন না দাড়ালেও প্রতিটা মানুষের বিবেকের কাঠগড়ায় তাদের দাড়াতেই হবে এবং প্রতিটা মানুষের স্বতন্ত্র আদালতে তাদের সর্ব্চ্চ শাস্তিটাই হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.