![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রায় ২ বছর পর সাজেক বেড়াতে গেলাম, ১৪ঘন্টার মারাত্মক জার্নি শেষে পৌছালাম সাজেকে। চাঁদের গাড়ি নামক বস্তুটা যে কি পরিমাণের ভয়াবহ তা বলে বোঝানো যাবেনা। আমিও লিখে বোঝাতে পারবো না। ওখানে যাওয়ার সময় একজনকে বাদে আর কাউকে চিনতাম না, আর যিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তিনি মনে হয় আমার উপর পূর্ণ আস্থা রাখেন, যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে আমার নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা আছে। এই বিষয়ে আমার নিজেরও অতটা আস্থা নাই।
যাই হোক ভিড়ে গেলাম আটজন অজানা মানুষের সাথে। টুকটাক হাসি, কথাবার্তায় পথ পাড়ি দিয়ে সাজেক। ২ বছর আগে লংগদুতে এসে সাজেক যাওয়ার কথা উঠেছিল কিন্তু রাস্তা ভালো না হওয়ায় যাওয়া হয়নি। আর এই ২ বছরে অনেককিছুই পাল্টে গেছে। নিজেকে মেইনস্ট্রিমের নায়িকা ভেবে যে জীবনের স্বপ্ন দেখছিলাম, মুহুর্তেই বুঝে গেলাম আমি আসলে পার্শ্ব চরিত্রতেই ছিলাম ও আছি...এটা প্রকৃতির একটা মজার খেলা আমার সাথে। এখন বুঝে গেছি আমার লিড্ ক্যারেক্টারে আর অভিনয় করা হবেনা। এটা অবশ্য আরেকটা গল্প, সাজেকে ফিরে যাই। ওহ্ আরেকটা কথা আমি কখনোই আমার কোনো লেখা পাব্লিশ করিনি এটাই প্রথম, সবার লেখা পড়ার জন্য একাউন্ট খুলতাম।
সাজেকে গিয়েই মোবাইল চার্জে দেয়ার জন্য সবাই অস্থির হয়ে গেল। আমিও বাদ যাই কেন!! কারন ছবি তোলার জন্য মোবাইলটাই ভরসা। কিছুক্ষণ পরে ঢুকলাম গোসলে। সারাদিনের ধকল আর ক্লান্তি মগের পর মগ পানি ঢেলে দুর করার চেস্টা চালালাম। বের হয়ে দেখলাম খিধায় গাছের পাতাও খেয়ে নিতে সমস্যা নাই, যাই হোক ভাত আর মুরগীর মাংস এমন অমৃত আর কোনদিন লাগেনি। এরপর চোখের পাতা আর খুলে রাখতে পারিনি। সবাইকে বললাম সম্ভব না, কিছুক্ষনের জন্যে হলেও কোমায় যেতে হবে। এই সৌন্দর্য পরে উপভোগ করবো।
ঘুমের রাজ্যে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়িয়ে, উঠে দেখলাম অচেনা জায়গায় শুয়ে আছি, বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকারের ঠিক আগের অবস্থা। ছোট জানালাটা দিয়ে বাইরেটা দেখলাম, অন্ধকার হতে আর কিছুমুহূর্ত মাত্র। কটেজের রুম থেকে বের হয়ে বাইরে আসলাম, রাস্তার অপর পাশের চায়ের দোকানে সঙ্গীরা বসে, দেখেই চিৎকার দিলো যে আমি সন্ধ্যাটা মিস্ করলাম। আমিও একটা লাজুক হাসি দিলাম, অন্যায় হয়ে গেছে এরকম একটা ভাব নিয়ে চা খেতে বসে গেলাম।
এরপর কিছুক্ষন রাস্তায় এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি আর আকাশের তারা দেখা। বেশ কিছু তারা খসে পড়তেও দেখলাম, অন্যসময় হলে কিছু চেয়ে বসতাম, এখন আর চাওয়ার কিছু নাই তাই উপভোগ করাটাই ভালো। যেহেতু কাউকে চিনিনা তাই কথা কমই বলছিলাম, এমনিতে কথা আমি একটু বেশিই বলি।
কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা সবাই কটেজের বারান্দায় অবস্থান নিলাম, মেঘের আড়ালে ঢাকা চাঁদটা বের হওয়ার জন্য অস্থির হয়ে আছে। কটেজের লাইটগুলো নেভানোর জন্য বললাম। অস্থির একটা সময়, চাঁদটা না বের হওয়া পর্যন্ত কিছুই করা যাচ্ছেনা, পা যেন বারান্দার কাঠের মেঝেতে আটকে গেছে। একদমই হঠাৎ করে চাঁদটা মেঘের আড়াল থেকে পিছলে মুক্ত হয়ে গেল, পাশের মেয়েটি ফটাফট ছবি তুলতে লাগলো। আমারও কেমন উত্তেজনাটা টুপ করে কমে গেল। আমরা পূর্ণিমার তৃতীয়দিন টা পেয়েছিলাম সেদিন। এরপর নেশার বস্তুগুলো তৈরি হতে থাকলো, ট্যুরে আসলে হালকা টালমাটাল না হলে ঠিক জমে না। আর টালমাটাল অবস্থাতেই একেঅপরের সাথে ভালভাবে মিশে যাওয়া যায়।
লোকাল চুয়ানি আর গাঁজার স্টিক গুলো ওইসময় একএক হাত ঘোরা শুরু হলো। ব্যাস্ আরকি, সামনে বিশাল চাঁদ আর জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছিলাম। গান, কবিতার পারদর্শীরা নিজেদের পারদর্শীতা দেখাচ্ছে। এর মধ্যে আমার পাশের জনের বুকের ভেতর জমা হওয়া সব কষ্টগুলো আর্তনাদ হয়ে ঝরে পড়ছিলো, ওর মাথায় হাত রাখলাম, হঠাৎ মনে হলো ও একটু নিজের মতো থাকুক, তাই হাতটা সরিয়ে নিলাম।
আমারও মনে হচ্ছিলো একটু কাঁদতে পারলে খারাপ হয়না, কিন্তু আসলো না, শুধু বিরাট এক দীর্ঘশ্ব্াস ছেড়ে গান গাওয়া শুরু করলাম, -কথার উপর কেবল কথা সিলিং ছুঁতে চায়/ নিজের মুখের আয়না-আদল লাগছে অসহায়/ তুমি অন্য কারো ছন্দে বেঁধো গান...... অরিন কে ধন্যবাদ ছবিটির জন্য
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯
শরমি বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: এত অল্প কথায় শেষ করে দিলেন? বেশ ভালই তো লাগছিল পড়তে।
সাজেক উপত্যকা এখন দিনে দিনে ভিড়-ভিড়াক্রান্ত হচ্ছে! আমি গিয়েছিলাম ২০১৭ এ জানুয়ারীতে। এত বিপুল জনসমাবেশ দেখে ভাল লাগেনি। ভিড় পাহাড়ী এলাকার প্রিস্টিন বিউটী ক্ষুণ্ণ করে।
পোস্টে প্লাস + +
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২
রাসেল গাজী বলেছেন: ভাল হয়েছে।