নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের দলে ..

একজন স্বপ্নবাজ তরুন ......

শওকত জামিল

একজন তরুন ....

শওকত জামিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হে মধ্যবিত্ত তরুন! তাজরিনের অগ্নিকাণ্ডের কথা মনে আছে ????? আজ ২৪ নভেম্বর

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:০৫

নভেম্বর ২৪, ২০১২
রাত ৯টার দিকে খবর এসেছিলঃ আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে একটি গার্মেন্টস কারখানায় ভয়াবহ আগ্নিকাণ্ড, বাঁচার জন্য ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ৯ জনের মৃত্যু। রাত ২টা পর্যন্ত ৯ জনের কথাই জেনেছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উদ্ধার কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

নভেম্বর ২৫, ২০১২
দেশের সবগুলো সংবাদপত্রের শিরোনামে তাজরিনে ৯ জনের মৃত্যু।
একটু পরেই শুনি, আশুলিয়ায় তাজরিন গার্মেন্টসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক লাশ উদ্ধার। কারখানার কল্যাপসিবল গেট বন্ধ করে রাখা ছিল তখন আমার স্পষ্ট মনে আছে, তীব্র ঘেন্নায়-ক্ষোভে হাত কাঁপছিল। কিছুই হলো না। মধ্যবিত্তীয় হতাশা আর ক্ষোভে দিনটা কেটে গেলো।

ডিসেম্বর ২, ২০১২।
গেলাম নিশ্চিন্তপুর। তবে বাসে অতদূর যেতে পারলাম না। অনেকটা দূরেই নামতে হল। শ্রমিক বিক্ষোভ। তীব্র বিক্ষোভ। নিশ্চিন্তপুরের দিকে রাস্তায় আগুন জ্বলছে। পুলিশ গুলি ছুঁড়ছে, টিয়ারশেল মারছে। আর শ্রমিকেরা লাঠিসোটা নিয়েই তাড়া দেবার চেষ্টা করছে। সাঁযোয়া যান পাশ দিয়ে গেল কয়েকটা টিয়ারশেল মারতে মারতে। সব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ঝাঁঝাল ধোঁয়ায় চারিদিক দিনের আলোতেও অন্ধকার। এদিক সেদিক কিছু সাংবাদিক ক্যামেরা নিয়ে দৌড়াচ্ছে। বুকের ভেতর টান টান উত্তেজনা নিয়ে এগুতে থাকলাম। নিশ্চিন্তপুর আর কতদূর!

বাতাসে লাশের গন্ধ! তীব্র উৎকট পোড়া মাংশের গন্ধ। পেট উপচে একবার বমি করেছিলাম, কেউ দেখেনি। অনেক কষ্টে সামাল দিয়ে ভেতরে ঢুকেছিলাম। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে ২০ মিনিট হাঁটার দূরত্বে চিপা গলির ভেতর দীর্ঘকায় ১১ তলা সে ভবন। কড়া পাহাড়া। এত বড় ভবনে মাত্র ১১১ জন মারা গেছে আর বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। নীচতলা ঘোরাঘুরির পর দ্বিতীয় তলায় ঢোকা নিষেধ, ভেঙে পড়তে পারে! তাও নীচতলার একটি কক্ষের আশেপাশে কোনভাবেই ভেড়া গেল না। বমি আসবার উপক্রম হলেও মাথায় খেলছিল – অসম্ভব! অবশ্যই এখানে কোন কাহিনী আছে!

রুদ্রের লেখা লাইনটি কেবলই মাথায় ঘুরছিলো,
‘বাতাসে লাশের গন্ধ,বাতাসে লাশের গন্ধ।’

বাইরে শ’দুয়েক মানুষ – কেউ গার্মেন্টস কর্মী, কেউ মা, বোন, ভাই। কান্নার রোলে শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠছিল। বমি আসছিল, মাথা ঘুরছিল। তাও কথা বলার চেষ্টা করলাম। অনেকে অনেক কিছুই বলল। এতটুকু বুঝতে পারলাম অন্তত ১০০০ মানুষ পুড়ে মরেছিল। সেনাবাহিনী রাত ৩টার দিকে ধ্বংসাবশেষ ছাই করার জন্য আবারো আগুন লাগিয়েছিল, তাতে সেনাবাহিনীর সাথে স্থানীয়দের ১ ঘন্টা সংঘর্ষও হয়েছিল। আর পৃথিবী জানল, তাজরীনে ১১১ জন were roasted alive। কি ফাঁকি! কি চমৎকার ফাঁকি!

নভেম্বর ২৪, ২০১৪: প্রথম প্রহর। ভাবছি। সেদিনের কথাগুলো। কতকিছুই দুই বছরের ব্যবধানে আর স্পষ্ট করে মনে পড়ছে না। কি নির্বোধতায় নিমজ্জিত হয়েছি। ১১১ জনের মৃত্যু আজ লিখতেও খুব একটা বেশী মনে হয় না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: আমরা খুব সহজেই তাড়াতাড়ি অনেককিছুই ভুলে যাই ।

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৬

শওকত জামিল বলেছেন: এ বন্ধ্যাত্ব না কাটালে যে নিজের অসহায় মৃত্যুর পথ পরিষ্কার হবে ..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.