![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এইতো সেদিনও কোন বাড়িতে কেউ মারা গেলে দু চার সপ্তাহ পর্যন্ত সে বাড়িতে যাওয়ার সাহস করতাম না । কোন কারনে গেলেও গা ছমছম করতো। আত্মার অস্তিত্ব টের পেতাম। এখন আর আত্মার অস্তিত্ব টের পাই না ।নিজের আত্মাই মরে গেলো নাকি একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কোন আত্মাই থাকে না, বুঝতে পারছি না ।
প্রতিটি রাজপথে মানুষ পুড়ছে, পাশেই বার্ণ ইউনিট । খবরের পাতা খুললেই ভেসে ওঠে ঝলসে যাওয়া মানুষের মুখ। দেখতে অস্বস্তি লাগে, খারাপ লাগে না। খারাপ না লাগাটা ভাল,অন্তত নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য তা অপরিহার্য। বইয়ে পড়েছি,‘যন্ত্রপাতির ঠকঠক বেসুরো শব্দের মাঝেও স্বপ্নময় ঘুমের নিশ্চয়তা নিয়েই যান্ত্রিক সভ্যতার গোড়া পত্তন হয়েছিলো। যতদিন মানুষ মনে করতো, যন্ত্রের ঠকঠক আওয়াজে শান্তি নষ্ট হয়,ততদিন মানুষ যান্ত্রিক সভ্যতার দ্বারে কড়া নাড়ার সাহস করেনি।’ আমরাও আগুনের সভ্যতার গোড়া পত্তন করতে চলেছি, আমরাও আর পোড়া লাশের ভয়ে ভীত নই, সে ভয় আমরা জয় করেই মাঠে নেমেছি। কী ভীষন আমাদের পণ! কী নিমর্ম আমাদের প্রতিটি সন্ধ্যা ! আধুনিক বুদ্ধিজীবীরা এরই নামকরণ করেছে ‘বাস্তবতা’, রাজনীতিবীদরা ডাকছে ‘ উন্নয়নের কৌশল’, আর আমি বলি ‘বিবর্তন’। মানুষ থেকে বণ্য জীবে পরিণত হবার প্রথম পর্যায় । আমরা সবাই বিবর্তনের স্বীকার, অগ্নিময় অন্ধকার ভবিষ্যতের জন্য বিবর্তিত হচ্ছি। খাপ খাইয়ে নেবার কী অসীম ধৈর্য নিয়ে আমরা মৃত্যুর অপেক্ষা করছি! নিজের ছায়ার দিতে তাকালেও অবাক হই। কী ভীষণ সাহসের সাথে আমাকে অনুসরণ করছে! আমার মত সেয়ো নির্ভীক। ছায়ার মত আমিও মৃত্যুর ভয়হীন। ওর জীবনের ভয় নেই, আমি জীবনের ভয়ে ভীত।
বছর দুয়েক আগেও অপঘাতে মৃত্যুর কথা শুনলে অন্তত ঘুমের ঘোরে দু:স্বপ্ন দেখতাম। নিজের ওমন ভয়ানক পরিস্থিতি হতে পারে ভেবে খাবার খেতে পারতাম না । চিন্তায় আড়ষ্ট থাকতাম সারাক্ষণ। আর এখন ! নিউজ পোর্টালে পোড়া লাশ, আপলোডেড ছবির উপর স্ক্রল, মাউজের রাইট বাটনের উপর দারুন চাপ আর চোখ আটকে থাকে মনিটরের কোনে চলমান হিন্দি সিনেমায় । কী আজব বিবর্তন ! ক্ল্যাসিক্যাল ডারউইনিজমের মৃত্যু ঘণ্টা বোধ হয় বাঙালিরাই বাজাবে ! কোয়ান্টাম ডারউইনিজম ছাড়া এ ঘটনা ব্যাখ্যা করা বোধ করি সম্ভব হবে না ।
আগুনে ঝলসে যাওয়া ভবিষ্যতটা আমাদের। আমরাও জাতি হিসেবে প্রস্তুত । ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে চলছে মৃত্যুর মিছিল, কোথাও মুক্তাঞ্চল নেই। সামনে কেবলই পোড়া লাশের গন্ধ। আগুনের সাথে গ্রেনেড যোগ হলেই অন্ধকার। পুরোপুরি অন্ধকার। মৃত্যুর মত অন্ধকার ........................
©somewhere in net ltd.