নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের পথে এক বলিষ্ঠ কন্ঠ।আমার সত্যই আমার শক্তি।আমি সমাজ আর রাষ্ট্রের অন্যায় নীতি মানি না।সমাজ আমার কাছে বিষধর সাপ,আর রাষ্ট্র আমার কাছে তার সৃষ্টিকর্তা।অন্যায় প্রতিবাদ করতে আমি কখনো ভয় পাইনা।কেননা,আমার সত্যই আমার পথ দেখাবে।

সাখাওয়াত হোসাইন রিফাত

সত্যের পথে এক বলিষ্ঠ কন্ঠ।আমার সত্যই আমার শক্তি।আমি সমাজ আর রাষ্ট্রের অন্যায় নীতি মানি না।সমাজ আমার কাছে বিষধর সাপ,আর রাষ্ট্র আমার কাছে তার সৃষ্টিকর্তা।অন্যায় প্রতিবাদ করতে আমি কখনো ভয় পাইনা।কেননা,আমার সত্যই আমার পথ দেখাবে।

সাখাওয়াত হোসাইন রিফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরা-একটি দুঃস্বপ্ন

১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:১২

রাস্তাটাও তার কাছে আজ অচেনা মনে হচ্ছে।চেনা মানুষগুলোকেও যেন রূপকথার দৈত্যের সাথে তূলনা করছে তার মন।সে এসেছিল ফুফুর বাসায়।দোয়া নেওয়ার জন্যে।সামনেই তার এইস.এস.সি পরিক্ষা।যদিও বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই তার পরিক্ষার।আর তার কারন টা ইতিহাসকেও হার মানায়।বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ও অনিক তার কাল রঙের টাই টা পকেটে রেখে দিয়েছিল।শুধু ফুফুর বাসার সামনে এসে সে তার শার্টটা ইন করে গলায় টাই টা বেধে একটু ভদ্র আর স্বাভাবিক সাজার চেষ্টা করে।ফুফুরা অনেক বড়লোক।কি নেই তাদের।একজন মানুষের জিবনে আয়েশের জন্যে যা যা প্রয়োজন,তার সবকিছুই আছে ফুফুদের।ঘরে ঢুকেই ফুফুকে সালাম করে সে।তারপর ভাবীদের সাথে কিছুক্ষন আড্ডা দেয়।যদিও তার বিন্দুমাত্র ভাল লাগছিল না।সময় কাটানোর একটা পন্থা খুজতে থাকে সে।তারপর হঠাৎই পাশে ল্যান্ডফোন টা দেখতে পায়।আস্তে।করে উঠে গিয়ে সে ইরাদের বাসার নাম্বার ডায়াল করে।প্রথম প্রথম বিজি দেখাচ্ছিল।তারপর কেউ একজন কল টা রিসিভ করেঃ
-হ্যালো,আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়ালাইকুম সালাম।কে?
-আন্টি আমি অনিক।ইরা কি তার শ্বশুর বাড়ি থেকে এসেছে?
-হুম বাবা।তুমি আসোনা।ওরা আর একটু পরেই চলে যাবে।

অনিক কিছুক্ষন ভেবে বলল,
-আচ্ছা ঠিক আছে আন্টি,আমি আসছি।

তার মনটা ভীষন খারাপ।গেল দুইদিন আগে ইরার বিয়ে হয়েছে।খুব কান্না করছিল অনিক।ইরাকে ছাড়া সে কিছু ভাবতে পারে না।হলুদ রংটা অনিকের খুব পছন্দের।ইরার সে সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ ধারনা আছে।অনিক তার বধু সাজে ইরাকে হলুদ শাড়ি পড়াবে ভেবে রেখেছে অনেক আগেই।সেই ক্লাস থ্রি থেকে।কিন্তু ইরার হঠাৎই বিয়ে হয়ে যাবে,জানত না সে।ইরাও তাকে জানায়নি তার বিয়ের কথা।অনিকের এক বন্ধু জানিয়েছে তাকে।কি করবে বুঝতে পার ছিল না।অথচ যেদিন সে ইরার বিয়ের কথা জানতে পারল,ততক্ষনে ইরার হলুদ সন্ধ্যা।সে ইরার বিয়েতে যেতে পারেনি।হয়তো সহ্য করতে পারবেনা কষ্টটা সেজন্যে।কিন্তু অনেকবার ফোন করে ইরার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে সে।ইরা বিয়ের সাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিল,তাই কথা বলতে পারেনি।আর আজ এই সুযোগটা হাত ছাড়া করতে চায়নি।মাঝখানের সময়গুলো অনিক কিভাবে কাটিয়েছে,সেটাও আরেক রহস্য।কখনো বা ড্রাগ নিয়ে,কখনো এলকোহল,কিংবা কখনো বা ঘুমের ঔষধ।এক সময়ের খুব ভাল ছেলে অনিক হঠাৎ করেই হয়ে উঠে উগ্র।তবুও তার চিন্তাভাবনায় সবসময় একটা নামই ছিল।ইরা।এই নামটা ভূলবেই বা কি করে,৭ বছরের ফিলিংস তো আর দুইএকদিনে ভোলা যায় না।একবুক ভরা ক্লান্তি আর কষ্ট নিয়ে অনিক হাটছে ইরাদের বাসার দিকে।একটা সময় ওদের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়।টাইটা অনেকটা অগোচালো,ইনটাও কেমন যেন অদ্ভূত রকমের লাগছিল।চুলগুলো উস্কোখুস্কো।দরজায় নক করার আগে অনিক আবারো একবার ভাবছিল,ডাকবে নাকি ডাকবে না।একটা পর্যায়ে ইরাকে দেখার লোভ সামলাতে পারল না।তাই হালকা করে দরজায় দুটো নক করল।কিছুক্ষন পর কোন একজন অচেনা ব্যক্তি এসে দরজা খুলে দিল।অনিক তাকে চিনতে পারল না।তবে বুঝতে পারল, হয়তোবা,ইরার শ্বশুত বাড়ির কেউ হবে।

বাসায় ডুকেই অনিক ডাকতে লাগল,-"ইরা,এই ইরা"
ইরার আম্মু সামনে এসে বলল,-"বাবা,এভাবে ডেকো না।ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন আছে।আমি ডেকে দিচ্ছি।তুমি বসো।"
কিছুদিন আগেও যদি ওর বাসায় এসে অনিক চিৎকার চেঁচামেচিও করত,তখন তো আন্টি এমন করতো না।তবে আজ এরকম করছে কেন।ওর বিয়ে হয়ে গেছে দেখে কি আমিও পর হয়ে গেছি।আন্টিতো তার বিষয়টা জানতো।তবে কিভাবে তাকে না জানিয়েই ইরার বিয়ে দিয়ে দিলেন।আর ভাবতে পারল না সে।আস্তে আস্তে ক্লান্ত দুটো চোখ নিয়ে অনিক সারাঘর হাটতে লাগল।দেখল,একটা রুমে ইরা আর সাথে কে যেন বসে আছে।স্ট্রেইঞ্জার।চিনতে অসুবিধা হচ্ছে।
অনিক ইরার রুম টায় ডুকল।তাকে দেখেই ইরা কেমন যেন অপ্রস্তুত হয়ে গেল।তার মূখটা কেন যেন ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে।তবুও তাকে শান্ত করার জন্যে অনিক তার হাত ইশারা করল,চিন্তা করার কিছু নেই।
-কিরে ইরা,কেমন আছিস?
-হুম,ভাল।তুই?
-এইতো কোনরকম।

ইরা হয়তো কিছু একটা ভয় পাচ্ছিল।তাই অনেক টা তাড়াহুড়ো করেই বলল,
-আয় পরিচয় করিয়ে দেই।উনি আমার হাসব্যান্ড।
অনিক ইরার হাসব্যান্ডের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল,
-হাই,আমি অনিক।
-আমি রাসেল।আপনি ওর ফ্রেন্ড বুঝি?
-হুম। সেই ছোট বেলাকার।একসাথেই বড় হয়েছি আমরা।
-ওহ।দেটস গ্রেট।আছেন তো কিছুক্ষন সময়?
-না।তবে ঘন্টা দুয়েক আছি এখানে।
-ওকে, তাহলে আপনারা কথা বলুন।আমি আসি।

রাসেল সাহেব তার ভিজিটিং কার্ডটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে অন্য একটা রুমে চলে গেলেন।হয়তো দুই বন্ধুর মাঝে কাবাব মে হাড্ডী হতে চান নি।তার সাথে হাত মেলাতে গিয়ে নিজেকে কতটা হীনমন্য আর তুচ্ছ ভেবেছে অনিক,তার কথা না বলাই ভাল।
-কিরে,ইরা।বেশ হাসিখুশি আছিস মনে হয়?লোকটা খুব ভাল,তাই না?

ইরা কোন কথা বলল না।অনিকের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু হিতে বিপরীত ভেবে নিজেকে সামলে নিল সে।ইরার দিকে তাকাতে পারছে না।বুকটা কেমন যেন ব্যাথা করছে।এটা সাধারন কোন ব্যাথা না।পৃথিবীর কোন ডাক্তারও এটার চিকিৎসা জানে না।তবুও ইরার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল সে।ছোটবেলা থেকেই ইরাকে চেনে।এখন আর কথা বলবে না।হয়তো লজ্জা ফিল করছে নিজের ভিতর।অনিক কিছু বলতে চাচ্ছিল।কিন্তু ইরার চেহারার দিকে তাকিয়ে বলতে পারলো না।সে বুঝতে পারছিল,হয়তো বা ইরার চোখের কোনে পানি জমাট বাধছে।এই পানি একবার বাইরে বেড়িয়ে আসলে চরম বিপর্যয় ঘটবে।ওর শ্বশুর বাড়ির লোকেদের মনে খারাপ ধারনা জন্মাতে পারে।তাই ইরার চোখের দিকে তাকিয়ে,খুব আস্তে করে বলল,-
"খুব ভালবাসি রে তোকে।" কথাটা বলেই এক প্রকার বিদ্যুতের গতিতে বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলেই সে বেড়িয়ে আসে।
রাস্তায় প্রচুর ধূলোকনা উড়ছিল।হালকা বাতাস বইছিল।মাঝে মাঝে পাশের রাস্তাটা দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলে যাচ্ছিল,আর এর মাঝখানেই হয়তো অনিকের চোখের পানি বার বার হাওয়ায় মিশে যাচ্ছিল।রাস্তার কিছু পথিক ছাড়া হয়তো সেটা কেউ লক্ষ করেনি।ইরাও না।অনিক জানে না,কাল তার কি হবে।আদৌ সে বেঁচে থাকবে কিনা।তবে সে এটাই জানে,ইরাকে ছাড়া সে থাকতে পারে না।ঔ

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


"সামনেই তার এইস.এস.সি পরিক্ষা।"

সামনে ১২ ক্লাশের পরীক্ষা, তার মাথায় বিয়ের প্ল্যানও ছিলো? আপনি নিজে কি ৫ম শ্রেণী থেকে কাজ কাম করে আসছেন নাকি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.