নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপন মনে, আপন সুরে

I do not agree with what you have to say, but I'll defend to the death your right to say it.

শূন্যবতী

না প্রেমিক না বিপ্লবী

শূন্যবতী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃতপ্রায় বংশী নদী রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি

২১ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১০

দেশের মধ্যাঞ্চলে প্রবাহিত বংশী একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এর উৎপত্তিস্থল জামালপুরের পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ এবং ঢাকার সাভারে ধলেশ্বরী নদীর সঙ্গে মিলিত হতে নদীটি দীর্ঘ ২৩৮ কিলোমিটার জনপথ অতিক্রম করেছে। বংশী মধ্য বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এ নদী তার চলার পথে চারটি জেলা যথাক্রমে জামালপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা এবং ১০টি উপজেলা যথাক্রমে জামালপুর সদর, মধুপুর, ঘাটাইল, কালীহাতি, বাসাইল, মির্জাপুর, সখিপুর, কালিয়াকৈর, ধামরাই, সাভার এবং ৩২১টি মৌজার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ নদীকে কেন্দ্র করে অনেক হাট-বাজার, গঞ্জ, স্থাপনা গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে সাভার স্মৃতিসৌধ, ঐতিহ্যবাহী মসলিন কাপড় তৈরির ধামরাই এলাকা, মধুপুর গড়াঞ্চল ইত্যাদি। এখনো বর্ষা মৌসুমে ছোট ও মাঝারি নৌকায় মধুপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নৌপথে কলা, কাঁঠাল, আনারস ও নানা ধরনের তরকারি ভূঞাপুর, সরিষাবাড়ী, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় এ নদী দিয়ে পরিবাহিত হয়ে থাকে। মধুপুর গড়াঞ্চলসহ মধ্যাঞ্চলের সভ্যতা ও জীববৈচিত্র্য টিকে রয়েছে বংশী নদীকে কেন্দ্র করেই। মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রার প্রয়োজনেই শত শত বছরের সাক্ষী এবং দেশের মধ্যাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এ বংশী নদীকে বাঁচিয়ে রাখা অনস্বীকার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।



ফারাক্কা বাঁধের আগে বংশী নদীতে চৈত্র-বৈশাখ মাসেও জলের প্রবাহ ছিল, এখন আষাঢ়-শ্রাবণেও জলের প্রবাহ কম থাকে। আর চৈত্র-বৈশাখে নদীর মাঝখানেও ধু-ধু বালুকণা ভেসে ওঠে। ফারাক্কা বাঁধের আগে বংশীতে যখন সারা বছর জলের প্রবাহ ছিল তখন এখানে সরপুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু পুঁটি, কালবাউস, পাঙ্গাশ, বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় টেংরা, রুই, কাতলা, মৃগেল, চিংড়ি, বাইন, চিতল, বোয়াল, শোল, টাকি, মলা, ঢেলা, চেলাসহ অসংখ্য প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এ ছাড়া শুশুকসহ শত প্রজাতির উপকারী জলজ প্রাণী নদীতে দেখা যেত। কিন্তু মাত্র চার দশকে এসব মাছ এবং পরিবেশবান্ধব জলজ প্রাণী বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছে এবং বহু প্রজাতির সুস্বাদু মাছ ও জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে; ফলে বংশীর তীরে বসবাসরত প্রান্তিক জেলে সম্প্রদায়ের অনেকে পেশা পরিবর্তন করে রিকশা চালায়, কেউ বা কৃষি কাজ করে জীবন যাপন করে।

অথচ চার দশক আগেও বংশী পারের মানুষের জীবনযাত্রা এ রূপ ছিল না। উজানে ফারাক্কা ও তিস্তা নদীতে ভারত বাঁধ দেয়ায় এখন বংশীকে বাঁচানো এক প্রকার চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণে ষাটের দশকে বিআইডবিস্নউটিএকে ঊঅঝঞ চঅকওঝঞঅঘ ডঅঞঊজ ্ চঙডঊজ উঊঠঊখঙচগঊঘঞ অটঞঐঙজওঞণ (ঊচডঅচউঅ)-এর স্মারক নাম্বার ৭৮৬ (৩) ডউ (ড-১ঠ), উধঃবফ ১৭.১১.১৯৬২-এর মাধ্যমে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। কিন্তু বিআইডবিস্নউটিএ এতদিন বংশী নদী রক্ষায় তেমন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেনি এবং বংশী নদী রক্ষার দায়িত্ব বিআইডবিস্নউটিএর_ এ কথাও অনেকেরই অজানা ছিল। তবে সুখের বিষয় বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার বংশী নদী রক্ষার জন্য সীমিত আকারে হলেও কার্যক্রম গ্রহণ করছে। কিন্তু অতি দ্রুত এর ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি নতুবা বংশীর অস্তিত্বই একসময় বিলীন হয়ে যাবে। এ জন্য বংশী নদী রক্ষায় নিম্নবর্ণিত কর্মপন্থা গ্রহণ করা যেতে পারে_



১। বংশী নদীর অবৈধ দখলদার ও স্থাপনা চিহ্নিত করে এদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনাসহ ও অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ,

২। ২৩৮ কিলোমিটর দীর্ঘ নদীটির সম্পূর্ণ জরিপ কাজ পরিচালনা করে সীমানা নির্ধারণ এবং সীমানা পিলার স্থাপন,

৩। নদীটি পুরনো ব্রহ্মপুত্র থেকে উৎপন্ন হয়েছে, কাজেই এর জলের প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর ন্যায় তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ,

৪। বংশীর উৎসস্থলে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ,



৫। বংশী সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে নদী ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গ্রহণ ও গবেষণা সেল গঠন করা যেতে পারে; যেখানে নদী গবেষক, সাংবাদিক, পরিবেশ ও জীব বিজ্ঞানী, আইনজীবীদের নিয়োজিত করা যেতে পারে।

৬। এই নদীকে যদি পরিবেশ দূষণ ও দখলদারমুক্ত করা সম্ভব হয় তবে নদীতীরবর্তী স্থানগুলো ইজারার মাধ্যমে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পেতে পারে যা দেশ ও জনগণের উন্নয়নে ব্যয় হতে পারে।

৭। যেহেতু এটি দেশের মধ্যাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী কাজেই মধুপুর গড়াঞ্চলের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একে দখলদার ও পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।



সূত্রঃ যায়যায়দিন, জুলহাস উদ্দীন: কলাম লেখক ও সাহিত্যিক



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৩

লেখোয়াড় বলেছেন:
আপনার নিকটি সুন্দর হয়েছে।

এই পোস্টের ছবিটিও খুব সুন্দর।
আর আমাদের নদীগুলোকে নিয়ে লেখা পেলেই আমি পড়ি।
নদী ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই আকর্ষণীয়।

আপনি নতুন, আশাকরি সুন্দর ব্লগিং করে আমাদের মাতিয়ে রাখবেন।
অনেক শুভকামনা, শুভব্লগিং।
ভাল থাকুন।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৩

শূন্যবতী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, ‘লেখোয়াড়’ আমার খুব পছন্দের নিক। ছবির প্রশংসা করায় ভালো লাগছে কারণ ছবিটা আমার তোলা :P বংশী নদীর এই যায়গাটুকুতে অনেক স্মৃতি জমা হয়ে আছে।অনেক রঙ, অনেক সন্ধ্যা, আনেক আড্ডা। উৎসাহ আর শুভকামনার জন্য আবারো ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.