নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপন মনে, আপন সুরে

I do not agree with what you have to say, but I'll defend to the death your right to say it.

শূন্যবতী

না প্রেমিক না বিপ্লবী

শূন্যবতী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবার আলুটিলা

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬



খাগড়াছড়ি শহরের মূল সড়কে নামলেই চোখে পড়ে ঐ দূর আলুটিলা পাহারের উপর ধাতুচৈত্য বৌদ্ধ মন্দিরের সোনালী চূড়া। হ্যাঁ, গন্তব্য আলুটিলা। খাগড়াছড়ি শহর থেকে ০৮ কি.মি. আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ বেয়ে পৌঁছতে হয় আলুটিলা পাহাড়ে। সমতল থেকে পাহাড়ে ওঠার ঝুঁকি যে কেউ ভুলে যাবে একের পর এক সাজানো সবুজ পাহাড়ের সৌন্দর্য আর আলোছায়ার নাচন দেখে। পাহাড়ের বুকে মেঘের ছায়া আর দিগন্ত-রেখায় কেবল কালচে সবুজ পাহাড়।



আলুটিলার শীর্ষস্থানীয় ০৮ টি পাহাড়ের মধ্যে পেন্দিনী পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপিত আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। আলুটিলা পর্যটন স্পটে নামলেই চোখে পড়বে একটা পাড় বাধাঁনো সুন্দর বট গাছ আর একটা সাইনবোর্ড। এর লেখায় চ্যালেঞ্জের সুর- “আপনি কি একজন সাহসী পর্যটক? তাহলে এখানে আপনার জন্য রয়েছে এক রহস্যময় আকর্ষণীয় সুড়ঙ্গ। সুড়ঙ্গের পথ কিছুটা কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল এবং এর তলদেশে একটি ঝর্ণা প্রবাহমান, পাহাড়ের নীচে খুব সাবধানে মশাল নিয়ে সুড়ঙ্গে যেতে হবে। আগ্রহী দর্শনার্থীগণ অবশ্যই সুড়ঙ্গ দেখার সুযোগ হতে বঞ্চিত হবেন না।”

প্রথম লাইনটা ভয় জাগানিয়া কিন্তু পরের বর্ণনায় ভয়টা কেমন যেন কেটে যায়। ভয় কেটে যাওয়াই ভালো। কারণ আলুটিলা কোন ভয়ের যায়গা নয় বরং সাধারণ প্রকৃতিক সৌন্দর্যের অসাধারণ এক যায়গা। এখান থেকে দেখা যায় দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড়, বয়ে যাওয়া চেংগী নদী আর পাহাড় ঘেরা সমতল খাগড়াছড়ি শহর। খাগড়াছড়ির একজন প্রাক্তন জেলা প্রশাসক জনাব খোরশেদ আনসার খান লিখেছিলেন, ‘ক্লান্ত পথিক ক্ষণেক বসিও আলুটিলার বটমূলে/ নয়ন ভরিয়া দেখিও মোরে চেংগী নদীর কূলে’। আরও উঁচু থেকে দেখার জন্য আছে ওয়াচ টাওয়ার। কাছেই আছে খুব সুন্দর ধাতুচৈত্য বৌদ্ধ বিহার।

যাই হোক আলুটিলার প্রধান আকর্ষণ গুহা। গুহায় প্রথম-দিনের অভিজ্ঞতা সাইনবোর্ডের লেখার মতোই। প্রথমে শত-শত সিঁড়ি বেয়ে যেন অতলে নেমে যাওয়া, গুহার মুখে গিয়ে মশাল জ্বালিয়ে গুহায় ঢোকা, তখন মনে হয় সত্যি কোন অভিযানে যাচ্ছি। পাথুরে গুহায় বড় বড় শিলা-পাথর, এবড়ো-থেবড়ো দেয়াল আর গুহার ভেতর বয়ে চলা ঝর্ণার পানির শীতল ধারা নিঃসন্দেহে রোমাঞ্চকর। ১০/১৫ মিনিটেই গুহা শেষ হয়ে যাওয়ায় আক্ষেপ থেকে যায় গুহা কেন আরও একটু বড় হল না! আবার সিঁড়ি বেয়ে উঠা। তবে নামার চেয়ে উঠার সিঁড়ি কম। এটা স্বস্তিদায়ক।

কিন্তু এরপরের বারের অভিজ্ঞতায় নতুন কিছু যোগ হয়েছে। তাতে মনে হয়েছে আলুটিলা গুহা কেবলই প্রাকৃতিক এক গুহা নয় বরং প্রাকৃতিক গুহা বলেই প্রকৃতি এর মাঝে আরও কিছু বিস্ময় লুকিয়ে রেখেছে।

কোত্থেকে যেন জুটল আযাচিত এক গাইড। তাও আবার ঢুঁকু-ঢুঁকু গেলা।



কেন নাম আলুটিলা, আরেক নাম ‘মাতাই হাকার’, কে কবে কি স্বপ্নে দেখেছে, নামতে ২৬৬ সিঁড়ি, উঠতে ১৮৫ সিঁড়ি, গুহার মুখ ১৮ ফুট, গুহার দৈর্ঘ্য ২৮০ ফুট… বক…বক…বক…। বিরক্ত লাগছিলো। গুহার ভেতর ঢুকার পর দেখা গেলো গুহাটাকে সে নিজের হাতের তালুর চেয়েও বেশি চেনে। গুহার দেয়ালে কিছু পাথর দেখাচ্ছিলো

যার কোনটা নাকি হাতির মাথার মতো,



কোনটা আবার নাকি পেঁচার মুখের মতো,



একটা দেখিয়েছিলো বুট পরা পায়ের মতো। বিরক্ত হয়ে সেটার আর ফটো তুলি নি, এখন আফসোস হয় কেন তুললাম না। আমার মতো ‘পয়েন্ট & ক্লিক’ ফটোগ্রাফারের জন্য এমন অপরাধ অমার্জনীয়।

যাই হোক এরপর আমাদের ‘মাতাল’ গাইড সবচেয়ে বিস্ময়ের যা দেখাল তা হল আলুটিলা গুহার ভেতর বয়ে চলা শীতল পানির ঝর্ণার সাথেই রয়েছে আরেকটি উষ্ণ পানির ধারা। কয়েকবার পরীক্ষা করলাম আসলেই পানিটা উষ্ণ। বিষয়টা হয়তো সামান্য কিন্তু আমি বিস্মিত। সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতির মাঝে কত বৈচিত্র্য ছড়িয়ে রেখেছেন। দেখলে হয়তো সামান্য, ভাবলে হয়তো অসামান্য।



পুনশ্চঃ ১। গুহার ভেতর ছোট ছোট বাদুড়ের সাথে দেখা হতে পারে, আশা করি ভয়ের কিছু নেই। অনেকেই সাপের ভয় করেন। কেডস পরে যেতে পারেন, তাতে অবশ্য পায়ে শীতল পানি মেখে গুহা পার হওয়ার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হবেন। হাতে মশাল থাকলে আর একটু সাবধানে থাকলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

২। অযাচিতভাবে সেই ‘মাতাল’ গাইড না জুটলে আলুটিলার এই বাড়তি সৌন্দর্য হয়তো কখনোই দেখা হত না, আলুটিলা গুহা নিয়ে কখনো হয়তো কিছু লিখতেও বসতাম না। ধন্যবাদ আমার মাতাল গাইডকে। আবার আলুটিলা গুহায় যেতে চাই, আবার…।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: আমিও যাইবার চাই............... ওরে আলু টিলা

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬

শূন্যবতী বলেছেন: চলে আসেন :)

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: nice post

৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

শূন্যবতী বলেছেন: thanks :)

৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩০

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার আলুটিলা অভিযানের গল্প! প্রথম ছবির মেঘগুলো দারুণ! পাহাড় থেকে মেঘের এই দিগন্তে মিলিয়ে যাওয়াটা বোঝা যায় ভাল!

৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

শূন্যবতী বলেছেন: ধন্যবাদ… আকাশ, পাহাড়, মেঘে আলো-ছায়ার খেলা ……… অসাধারণ

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৫

শাহেদ খান বলেছেন: চমৎকার! শেয়ার করার জন্য অনেক ভাল লাগা জানবেন।

আর প্রথম ছবিটা তো খুব দারুণ !

+++

শুভকামনা।

৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫২

শূন্যবতী বলেছেন: ধন্যবাদ… শুভকামনা :)

৮| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৬

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
খুব সুন্দর করে ভ্রমণ কাহিনী তুলে ধরেছেন।
যাওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।


++++

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৮

শূন্যবতী বলেছেন: ধন্যবাদ… চলে আসুন :)

৯| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৩৮

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
নাইস !!

১০| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৯

শূন্যবতী বলেছেন: ধন্যবাদ… :)

১১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৮

হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: খাগরাছড়ি গিয়েছিলাম ছোট এক সফরে। ঝুলন্ত ব্রিজ, পর্যটন মোটেল ঘুরে দেখেছি। আলুটিলা বাইরে থেকে দেখেছি। ভিতরে যাও্য়ার সুযোগ হয়নি। পোস্ট ভালো লাগল। ধন্যবাদ।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬

শূন্যবতী বলেছেন: এক চক্করে খাগড়াছড়ির বেশ কয়েকটি স্পট দেখে ফেলা সম্ভব...... ছোট্ট ট্যুরের জন্য বেশ ভালো :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.