একটি গল্প

১৮ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০

একটা গল্প লিখবো বলে অনেকদিন থেকে ভাবছিলাম। মাথায় কোনো প্লট নেই, কলমে জোর পাচ্ছি না। কী নিয়ে গল্পটা লিখবো, ভেবে পাচ্ছিলাম না। কোনোকিছুর সাথে গল্পটাকে রিলেট করা যাচ্ছেনা।

একদিন হুট করেই মাথায় এসে পড়লো প্লট, দারুন একটা গল্প হতে পারে এ প্লট থেকে। যদি লিখি তাহলে এ গল্পটা যেকোনো বিখ্যাত গল্পকারের গল্পের চেয়েও সুন্দর হবে। আনাড়ি আমি লিখতে বসলাম গল্পটা। হাতে নিলাম দুই রং এর কলমঃ লাল ও সবুজ। গল্প লেখার আগে শুরু করলাম খসড়া লেখা।

গল্পটা শুরু হয় ৭ই মার্চ থেকে। সেদিনই গল্পটা লেখা শুরু করেছিলাম। রেসকোর্স ময়দানে অনেক লোক এসেছিলো সেদিন, আমার গল্পের নায়ক সেদিন বহু মানুষের উত্তালসমুদ্রে তর্জনী উঁচিয়ে গর্জন করে বলেছিলো, "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম..." আমার গল্প সেদিন থেকেই শুরু।

গল্প এগোচ্ছে,এগোচ্ছে, ২৫শে মার্চ রাতে দেখি, আমার খসড়াখাতায় ছোপ ছোপ লাল কালির দাগ। সে রাতে নিকষ কালো অন্ধকারও ছিলো চারপাশে, এরকম অন্ধকার আগে কখনো দেখিনি। সেদিন কিছু লিখতে পারিনি, আলোর অভাবে। পরদিন, ২৬শে মার্চ খুব ভোরে গল্পটার খসড়া লেখা শেষ করে ফেললাম।

এরপরে, ১,৪৭,৫৭০ বর্গমাইলের একটুকরো সাদা পৃষ্ঠায় লাল-সবুজ কালিতে লিখে ফেললাম গল্পটা। আমার গল্পে নায়ক আছে, খলনায়ক আছে, অনেকগুলো মানুষের স্বপ্ন আছে, বিশ্বাসের আড়ালে বহু বিশ্বাসঘাতক আছে, মুক্তিযোদ্ধা আছে, রক্তাভ ইতিহাস আছে, বেঁচে থাকা আছে, মরে যাওয়া আছে। নৃশংসতা আছে, কষ্টের উপাখ্যানও আছে।

গল্পটা প্রকাশিত হয়েছিলো ১৬ই ডিসেম্বরে, ছাপার অক্ষরে, বাংলা অক্ষরে। সেদিন, কোনো একটি দেশের ৯৩,০০০ লোক, আমার গল্পের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মাথানিচু করে দাঁড়িয়েছিলো। সেদিন তারা কোনো কথা বলতে পারেনি। অবনত মস্তকে তারা আমার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন দেখেছিলো।

আমার সে গল্পের নাম ছিলো "বাংলাদেশ"

৪ টি +০/-০