নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুভ হোক তোমাতে, শুভ হোক আমাতে, শুভ হোক সপ্নরা, শুভ হোক পথচলা।(~সা\'দ আহমেদ শুভ~)https://m.facebook.com/desuja.shuvo?

শুভ৭১

কাব্যিক জাহাজের অচেনা এক নাবিক আমি,অনন্তের পথ খুঁজে চলেছি গহীন সাগরে।সেই সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভাসে কবিতারা,আর সেই কবিতারা বেঁচে আছে বলেই আমি বেঁচে আছি,আর আমি বেঁচে আছি বলেই আমার কাব্যিক জাহাজ পথ খুঁজে চলেছে এখনো।।।।।।

শুভ৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

"উল্লাসী স্মৃতি"

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৩

যতদুর মনে পরে,সেই সময়ে পূজা মন্ডপগুলিতে এত সাজ সজ্জাধর্মী কোন আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, অনেকটা সাদা মাটা ভাবেই পালিত হইত।এত এত নিয়ন আলোর ঝলকানি কিংবা এত বিশাল আকৃতির লাল নীল কাপড়ে জরানো কোন দানবীয় গেটের দেখাও মিলত না।তবে পূজা কে কেন্দ্র করে প্রত্যেক মন্ডপের পাসেই গরে উঠত মেলা।আর সেই মেলা'কে নিয়েই জগৎের যত আগ্রহ যেন হুমড়ি খেয়ে পরতো ছোট ছোট বাচ্চাকাচ্চাদের মাঝে।

মেলা জুড়ে সারা দিকে ভ্যা,ভ্যু শব্দে ভেঁপু বাজানোর শব্দ।মাত্র দুইটাকায় মিলত এক ধরনের বিশেষ বাঁশি যার আগায় আবার রংগিন বেলুন লাগানো, ফুঁ দিয়ে বেলুন খানিকটা ফুলিয়ে ছেরে দিলেই অটোমেটিক বাঁশি বাজতে শুরু করে দিত,বেলুনের বাতাস কমার সাথে সাথে শব্দও কমে যেত, যেইনা বাতাস বেরিয়ে গেছে,আবার দম নিয়ে ফুঁ।আবার বাজতে শুরু করে দিত বাঁশি।কিন্তু বেলুন ফুলানোর মাত্রা একটু বেশি হলেই ফট্টাস শব্দে বেলুন ছিরে চৌচির।

এমন কোন বাচ্চা খুঁজে পাওয়া যেতনা যে, তাদের হাতে একখানা বাঁশি নেই।সবাই যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা।আর এক অদ্ভুতুড়ে যিনিস মিলতো মেলায় যার নাম ঢোল গাড়ি,দুই চাক্কার চমৎকার এক গাড়ি যার পিছনের দিকে রিক্সার মতন দুই চাকা থাকে আর সামনের অংশে লাগানো থাকে এক খানা দড়ি,আর সেই দড়ি থাকবে ড্রাইভারের হাতে,সেই ড্রাইভার যত দ্রুততার সাথে চলতে থাকবে ঢোল গাড়িও চলবে একই গতিতে ড্রাইভারের পিছু পিছু,কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে গাড়িতে সেটিয়ে দেয়া দুইটি কাঠি যা তালে তালে সমানে পিটিয়ে যাচ্ছে ঢোল গাড়ির পিঠে ক্লান্তিহীন ভাবে,আর ভেসে আসছে ঢোলের শব্দ। সেই ঢোল গাড়ির শব্দ শুনতে বিদঘুটে শোনালেও কিছুই করার নেই, প্রত্যেকটা বাচ্চার সাথে একখানা ঢোল গাড়ি থাকবে এটাই নিয়ম।সেই ঢোল গাড়ি পাওয়া যেত দশ টাকায়।আমার মনেহয়না এই যুগের কোন ছেলেমেয়ে ওই বিদঘুটে শব্দের কোন ঢোল গাড়িতে কোন ইন্ট্যারেস্ট খুঁজে পাবে।কিন্তু সেই সময়ে ওই ঢোল গাড়িই ছিল পূজার অন্যতম আকর্ষণ।

আর বাড়ি ফেরার সময় তো একজোড়া বেলুন কিনতেই হবে,বড় ফুলানো মাথা ওয়ালা বেলুন যার আবার হাতে ধরার জন্য লম্বা বাতাসের হাতল।কি যে চমৎকার দেখতে এক একটা বেলুন, কোনটা লাল,কোনটা সাদা আবার কোনটা বহুরুপী।সেই বেলুন পাওয়া যেত ছয় টাকা জোড়া।

তখন মাদ্রাসায় পড়তাম,সেই সময়ের কথা।আমাদের পাড়ার একদম পাশেই হিন্দুপাড়া।ওই পাড়ায় প্রতিবছর জাঁকজমক করে পূজা হত,দুর্গা পূজা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে হুজুর সাহেব।তার কড়া নির্দেশ,ওইসব বিধর্মীদের অনুষ্ঠানে যাওয়া নাজায়েজ, ওই সব বিধর্মীদের মেলার খাবার খাওয়া যাবে না।তাই আমরা মাদ্রাসায় পড়া ছেলেরা কেউ যেতে পারতাম না।কিন্তু তারপরেও হুজুরের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢুকে যেতাম মেলার ভিড়ের মাঝে। কিন্তু হুজুর সাহেব আবার ধুরন্ধর চালাক লোক ছিলেন, তিনি হিন্দু পাড়ার আশেপাশে চর লাগিয়ে রাখতেন।কেউ গিয়েছে খবর পেলেই তার পরদিন কঠিন শাস্তি। মুরগির বিষ্ঠা দিয়ে দাঁত মাজা।দাঁত মাজন শেষে মোরগা শাস্তি। পায়ের নিচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে দুই কান ধরে মোরগা হয়ে থাকতে হইতো ঘন্টার পর ঘন্টা,পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে গেলেও কোন নড়া চড়ার উপায় নাই,পাছা নিচে নামানো যাবেনা সর্বদা আকাশমুখী রাখতে হইত,কোন এক্সকিউজ নাই, নড়লে-চড়লেই মাইর,কঠিন মাইর।সপাংসপাং করে পাছায় বেতের বারি!!!

এতকিছুর পরেও আমরা চুরি করে পূজা মন্ডপের আশে পাশেই ঘোরাফেরা করতাম।সেই শিশু মনের মাঝে তখন ইচ্ছের অনুভুতিরা প্রবল শক্তিশালী ছিল।ইচ্ছে গুলি যে খুব বেশি ছিল তা কিন্তু না,ওই একটা ঢোল গাড়ি,বেলুন কিংবা বাঁশি।একটু বাঁশি বাজাতে পারলেই সেই শিশুমন উৎফুল্লে ভরে যেত,একটা পটকা ফুটাতে পারলেই নিজেকে অনেক কিছুই মনে হইতো। উৎসবের শরীর তখন অনেক অনেক রংগিন ছিল,আকাশে বাতাশে ভেসে বেড়াইত উল্লাসধ্বনি।।।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: হুজুর সাহেব আবার ধুরন্ধর চালাক লোক ছিলেন, তিনি হিন্দু পাড়ার আশেপাশে চর লাগিয়ে রাখতেন।কেউ গিয়েছে খবর পেলেই তার পরদিন কঠিন শাস্তি। মুরগির বিষ্ঠা দিয়ে দাঁত মাজা।দাঁত মাজন শেষে মোরগা শাস্তি। পায়ের নিচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে দুই কান ধরে মোরগা হয়ে থাকতে হইতো ঘন্টার পর ঘন্টা,পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে গেলেও কোন নড়া চড়ার উপায় নাই,পাছা নিচে নামানো যাবেনা সর্বদা আকাশমুখী রাখতে হইত,কোন এক্সকিউজ নাই, নড়লে-চড়লেই মাইর,কঠিন মাইর।সপাংসপাং করে পাছায় বেতের বারি!!!


সেই ভূলগুলো শেষ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরো দৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা রইল।

পোস্টে ভাললাগা রেখে গেলাম। সাবলীল হয়েছে(৯৮%)। ১ম লাইক।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

শুভ৭১ বলেছেন: অনেক সুন্দর এবং মুল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ গেম চেঞ্জার ভাই।।।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.