| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এস.এম. আজাদ রহমান
সংগঠক, অভিনেতা, ব্লগার, স্যোসাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট, ডিজাইনার
শাপলা, শাপলা কলি আর ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন — এনসিপি ও প্রতীকের রাজনীতি
বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতীক কখনো কখনো দল থেকেও বড় হয়ে যায়। ধানের শীষ, নৌকা, দাড়িপাল্লা — এগুলো শুধু মার্কা নয়, মানসিক পরিচয়েরও প্রতীক। এবার সেই প্রতীকের রাজনীতিতে নতুন সংযোজন: শাপলা কলি।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাজনীতিতে নতুন উদীয়মান শক্তি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শুরু থেকেই বলে আসছিল— তাদের প্রতীক চাই শাপলা। শাপলা তাদের আন্দোলনের প্রতীক, শান্তির প্রতীক, এবং ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক’।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলল, “তালিকায় নেই, তাই দেওয়া যাবে না।”
বিধি বদলে দাবি তুলল এনসিপি— তবুও শাপলা দেওয়া গেল না। তারপর হঠাৎ একদিন ইসি নতুন করে তালিকায় যোগ করল ‘শাপলা কলি’।
এমন কৌশল দেখে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মুখে বেরিয়ে এলো নতুন শব্দবন্ধ—
“এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন বলতে পারি। এখানে অনেক কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে।”
অর্থাৎ, নির্বাচন কমিশন এখন আর শুধু কমিশন নয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন।
প্রতীকের লড়াই থেকে বাস্তবতায়
অবশেষে এনসিপি ‘শাপলা কলি’ মার্কা নিতে রাজি হয়েছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর যুক্তি,
“আমরা বৃহত্তর স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতীক নিয়ে পড়ে থাকলে নির্বাচনের ফেজে ঢোকা যেত না।”
তৃণমূলে দলীয় নেতাকর্মীরা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে— “শাপলা থাকলেই হলো, কলি না হয় ফুঁটে উঠবে নির্বাচনের পর।”
তবে এই ঘটনাটি শুধু প্রতীক বিতর্ক নয়— এটি বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও আইনি ক্ষমতা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও তুলেছে।
ইসি কিভাবে দল নিবন্ধন দিচ্ছে?
আইন অনুযায়ী, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (RPO)–এর ৯(১)(গ) ধারা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করলে, কমিশন তা যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন দিতে পারে যদি দলটি নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে— যেমন নির্দিষ্টসংখ্যক জেলা কমিটি, সদস্যসংখ্যা, ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা।
কিন্তু বাস্তবে, প্রশ্ন হলো—
এনসিপি যখন নিবন্ধন পেল, তখন তাদের সাংগঠনিক কাঠামো কতটা পূর্ণ ছিল?
জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে কি কমিশন দ্রুত এই নিবন্ধন দিয়ে ‘রাজনৈতিক ভারসাম্য’ তৈরি করতে চেয়েছে?
বেশ কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, এনসিপিকে নিবন্ধন দেওয়া এবং তাদের পছন্দসই প্রতীকের কাছাকাছি প্রতীক “শাপলা কলি” তৈরি করা— দুটোই এক ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতার ইঙ্গিত দেয়।
প্রতীকের রাজনীতি ও আরপিও বিতর্ক
নির্বাচনের আগে আরেকটি বড় প্রশ্ন উঠেছে— জোটে ভোট করলেও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে কিনা।
আরপিও সংশোধনে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত প্রতিটি দলকে নিজস্ব প্রতীকেই ভোটে অংশ নিতে হবে।
বিএনপি এ বিধানের বিরোধিতা করছে, কিন্তু জামায়াত ও এনসিপি সমর্থন করছে।
এনসিপি এমনকি ইসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছে—
“এটা ঐতিহাসিক ও নীতিগতভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত।”
তাদের মতে, বিএনপির রাজনৈতিক চাপে যদি ইসি এখন অবস্থান পরিবর্তন করে, তাহলে তা “কমিশনের স্বাধীনতার ওপর আঘাত” হবে।
অর্থাৎ, নতুন দল এনসিপি এখন শুধু নির্বাচনের অংশ নয়, বরং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার রক্ষক হিসেবেও অবস্থান নিচ্ছে— অন্তত বক্তব্যে।
রাজনীতির নতুন অঙ্ক
নাহিদ ইসলাম ও নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী— এই দুই তরুণ নেতা এখন এক নতুন রাজনীতির মুখ। তারা না পুরনো বিরোধী রাজনীতির অংশ, না ক্ষমতার ধারা।
তাদের দাবি— “আমরা সংস্কারের পক্ষে, সময়মতো নির্বাচন চাই।”
কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রতীক, বিধি ও কমিশনের ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর ভেতর দিয়েই সেই রাজনীতি শুরু হচ্ছে।
শাপলা কলি হয়তো এখন কলি,
কিন্তু রাজনীতির মাটিতে যদি সত্যিই ফোটে—
তাহলে হয়তো বাংলাদেশের প্রতীক-রাজনীতিতে নতুন ফুলের ঘ্রাণ আসবে কিনা এদেশের মানুষ ইতোমধ্যে দেখে ফেলেছে।।
০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৯
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত নির্মম "অপারেশন সার্চলাইট"-এর সমর্থনে, জামাত প্রধান গোলাম আযম সহ শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় নেতারা ১৯৭১ সালের এপ্রিলের প্রথম দিকে গভর্নর এবং মার্শাল ল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে তারা কমিটিগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করেন এবং তৃণমূল পর্যায়ে ইউনিট গঠন করেন।
এই সংগঠকদের মধ্যে একজন ছিলেন ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর উপ-আমির মাওলানা আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং খুলনা জেলায় শান্তি কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন এবং তার এলাকায় প্রচারণা শুরু করেন এবং মহকুমা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি কমিটির ইউনিট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
২৮শে এপ্রিল, খাউলিয়া ইউনিয়নের সন্যাসী বাজারে এক সমাবেশে একেএম ইউসুফ বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। সমাবেশটি সম্ভবত শান্তি কমিটি কর্তৃক আয়োজিত হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন: “কোনও হিন্দু এই দেশে থাকতে পারবে না। তারা এবং স্বাধীনতার পক্ষের লোকেরা ভারতের সহযোগী। আমরা যেকোনো মূল্যে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। যুবকরা শান্তি কমিটিতে যোগ দেবে।”
তিনি শান্তি কমিটির কর্মীদের একটি রাজাকার বাহিনী (সশস্ত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দল) গঠনের নির্দেশও দিয়েছিলেন। একই সভায়, তিনি ৩০ জন যুবকের নাম সম্বলিত একটি তালিকাও তৈরি করেছিলেন এবং তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন। সভার ঠিক পরেই এই যুবকদের খুলনায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে, একেএম ইউসুফ শরণখোলায় আরেকটি সভা পরিচালনা করেন এবং আবার ৪০-৫০ জন যুবকের তালিকা তৈরি করেন। ৯৬ জন পাকিস্তানপন্থী যুবককে রাজাকার সদস্য হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য খান জাহান আলী রোডে খুলনার আনসার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এই প্রশিক্ষিত রাজাকাররা ৫ মে মোরেলগঞ্জের বারোইখালীতে একটি শিবির স্থাপন করে এবং স্বাধীনতার পক্ষের বেসামরিক নাগরিক এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট পরিচালনায় সেনাবাহিনীকে সহায়তা অব্যাহত রাখে।
যুদ্ধের কিছু উল্লেখযোগ্য গণহত্যা এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে খুলনার চুকনগর এবং বাগেরহাটের ডাকরা। জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের ১১ মে সংখ্যা অনুসারে, ১৯৭১ সালে একেএম ইউসুফকে বৃহত্তর খুলনার শান্তি কমিটির আহ্বায়ক করা হয়।
পাকিস্তান সরকার ২ আগস্ট একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজাকারকে একটি সহায়ক বাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং এর সদস্যদের পরিচয়পত্র এবং মাসিক বেতন প্রদান করে।
একেএম ইউসুফকে ১৯৭২ সালের দালাল আদেশের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর আইন বাতিলের পর তিনি মুক্তি পান। ১৪ মে, ২০১৩ তারিখে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪ তারিখে তিনি একটি হাসপাতালে মারা যান। ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলাটি সারসংক্ষেপ পর্যায়ে ছিল এবং একমাত্র আসামির মৃত্যুর কারণে তা বাতিল করা হয়।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে, একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় খুলনা অঞ্চলে আটজনকে হত্যা এবং ৭০০ জনকে গণহত্যা, ৩০০টি বাড়িঘর ও ৪০০টি দোকান লুট এবং ২০০ জন হিন্দুকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
বিচার চলাকালীন, অনেক ভুক্তভোগী, ভুক্তভোগী এবং প্রত্যক্ষদর্শী ট্রাইব্যুনালের সামনে এসে বর্ণনা করেন যে, অভিযুক্ত একেএম ইউসুফের অনুমোদন, উৎসাহ এবং প্ররোচনায় রাজাকারদের দ্বারা সংঘটিত ভয়াবহ ও বর্বর নৃশংসতার কারণে তারা কী মানসিক যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের অনেক সাক্ষী [ভুক্তভোগী] খোলা আদালতে অশ্রুসিক্ত হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং ঘটনা বর্ণনা করার সময় ন্যায়বিচার চান।
ট্রাইব্যুনাল তার পর্যবেক্ষণে বলেছে: “কেউই যুক্তি দিতে পারে না যে রাজাকার বাহিনী কেবল শান্তি রক্ষা এবং পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই আধা-সামরিক বাহিনী তৈরির উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পক্ষের বাঙালি বেসামরিক নাগরিক, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করা এবং এটি করার মাধ্যমে তারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা করেছিল।”
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ২৭ জুলাই রিপোর্ট করেছে যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সাধারণ বেসামরিক প্রশাসনের উপর চাপিয়ে দেওয়া শান্তি কমিটির একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করছে।
"শান্তি কমিটিগুলি সেনাবাহিনীর এজেন্ট হিসেবে কাজ করে, বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও অবহিত করে। তারা হিন্দু এবং স্বাধীনতার পক্ষের বাঙালিদের কাছ থেকে দোকানপাট এবং জমি বাজেয়াপ্ত এবং পুনর্বণ্টনের দায়িত্বেও রয়েছে। শান্তি কমিটি রাজাকারদেরও নিয়োগ করে... তাদের অনেকেই সাধারণ অপরাধী যারা [পাকিস্তানি] সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে।
২|
০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৫
কামাল১৮ বলেছেন: কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন।
০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩১
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: একদম সঠিক বলেছেন
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:

এনসিপি'র প্রতীক:
এনসিপি'র প্রতীক: