বিপদে সফলতা সৌভাগ্যের প্রতীক

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৮

প্রতিটি মানুষের ভাগ্যেই সুখ-দুঃখের মিশ্রণ রয়েছে। কিন্তু মুসলমান হিসেবে আমরা এর যে প্রতিদান আশা করতে পারি- অন্যরা তা থেকে বঞ্চিত। কারণ এ বিপদ শুধু আমাদের গোনাহগুলো মাফ হওয়ার কারণ নয়, বরং এর সাথে সাথে আমাদের মর্যাদাও বৃদ্ধি হয়। পূণ্যের খাতায় যোগ হয় অনেকগুলো নেকি, যা হয়তো সাধারণভাবে আমল করে অর্জন করা সম্ভব হতো না।



আমাদের আশেপাশে এমন অনেকে আছে, যারা সামান্য বিপদে পড়লে হায় হায় করে কপাল চাপড়ে বলতে থাকে আল্লাহ কি আমাকে ছাড়া আর কাউকে দেখল না! তবে আমরা সবাই মুসলমান হিসেবে বিশ্বাস করি ভাল মন্দ সবকিছু আল্লাহপাকের নিয়ন্ত্রণে। তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা-ই হয়ে থাকে। তার ইশারা ছাড়া কিছুই হতে পারেনা।



আমাদের প্রিয় নবী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সা.) বলেছেন, বিপদ মুসীবত যত বড়, এর প্রতিদানও তত বড়, আর আল্লাহ পাক যখন কাউকে ভালোবাসেন তখন তাকে পরীক্ষা করেন। এ পরীক্ষায় যে খুশী থাকে তার জন্য আল্লাহ পাকও খুশী হয়ে যান, আর যে রাগান্বিত হয়, তার জন্য তিনিও রেগে যান। (তিরমিযী)



এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, বিপদ আপদ রোগব্যাধি যা কিছুই হোক না কেন, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা স্বরূপ। এ পরীক্ষায় টিকতে পারলে পরিণতি শুভ হয়, আর হেরে গেলে পরিণতি মন্দ হয়। এই একটি হাদীসই বিপদগ্রস্তদের সান্তনার জন্য যথেষ্ট।



ইবনে মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, কোন মুসলমানের সামান্যতম কষ্ট হলেও, চাই তার পায়ে একটু কাঁটা ফুটুক বা এর চেয়েও ছোট কিছু হোক, এর বিনিময়েও আল্লাহ পাক তার গোনাহগুলোকে মাফ করে দেন যেভাবে গাছ থেকে পাতা ঝরে পড়ে। (বুখারী)



আরেক হাদীসে আল্লাহর রাসুল বলেছেন, আল্লাহ পাক যখন কোনো বান্দার ভালো চান- তখন তাকে দুনিয়াতে কিছু কষ্ট দিয়ে দেন, আর যার জন্য তিনি ভালো চান না- তার থেকে সব বিপদ আপদকে সরিয়ে রাখেন, যাতে কেয়ামতের দিন এগুলো দিয়ে তাকে প্রতিদান দেওয়া হয়। (তিরমিযী)



প্রখ্যাত তাবেয়ী ও বুযুর্গ হযরত হাসান বসরী বলতেন, ‘বিপদাপদ ও মুসীবতকে তোমরা অপছন্দ করো না, অনেক বিষয় যা তোমাদের অপছন্দ- তাতেই হয়তো তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে, আর কোনো বিষয় হয়তো তোমাদের কাছে ভালো মনে হচ্ছে অথচ এর মধ্যেই অকল্যাণ লুকিয়ে আছে।’

০ টি +০/-০