![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।
জন্ম ও বংশ পরিচিতিঃ
হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহ্সালার (রহঃ) ছিলেন হযরত ঈমাম হোসেনের (রাঃ) চতুর্দশতম বংশধর । তাঁর পিতার নাম ছিল হযরত সৈয়্যদ হাসান আল আরাবী (রহঃ)। তাঁর বংশ লতিকা নিম্নরুপ-
১। হযরত ঈমাম হোসেন (রাঃ)
২। হযরত ঈমাম জয়নুল আবেদীন (রহঃ)
৩। হযরত ঈমাম বাকের (রহঃ)
৪। হযরত ঈমাম জাফর আস সাদিক (রহঃ)
৫। হযরত ঈমাম মুসা আল কাযিম (রহঃ)
৬। হযরত ঈমাম মুসা আল রেযা (রহঃ)
৭। হযরত ঈমাম আলী আত তাকী (রহঃ)
৮। হযরত ঈমাম আলী আন নাকী (রহঃ)
৯। হযরত ঈমাম হাসান আল আসকারী (রহঃ)
১০। হযরত আলী আল মাহদী (রহঃ)
১১। হযরত আবুল ফজল (রহঃ)
১২। হযরত আবুল ফাত্তাহ (রহঃ)
১৩। হযরত দাউদ আত তায়ী (রহঃ)
১৪। হযরত হাসান আল আরাবী (রহঃ)
১৫। হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ)
উত্তরাধিকারসুত্রে তিনি পেয়েছিলেন - অনমনীয় জিহাদী চেতনা এবং ইসলাম প্রচারের অদম্য বাসনা। দিল্লীর অধিবাসী হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহ্সালার (রহঃ) ছিলেন হযরত শাহ্জালালের (রহঃ) সহযোদ্ধা ও বিশিষ্ট মুরীদ। প্রথম জীবনে তিনি দিল্লীর সুলতান ফিরোজ শাহ্ তুঘলকের অধীনে সেনাবিভাগে চাকুরী করতেন। পরে তিনি সুলতান কতৃক সিপাহ্সালার পদে নিযুক্তি লাভ করেন। সুলতানের আত্মীয় ও সেনাপতি সিকান্দার শাহ্ গাজীর সহযোগীতা করার জন্য সিলেট অভিযানে প্রেরিত হন। এলাহাবাদে এসে তাঁর সাথে হযরত শাহজালালের (রহঃ) সাক্ষাত হয়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ৩৬০ জন আউলিয়া। ১৩০১ খৃষ্টাব্দে উভয়ে মিলিতভাবে সিলেটের তৎকালীন হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দকে পরাজিত করেন।
এরপর হযরত শাহজালালের (রহঃ) নির্দেশে তিনি নিকটবতী তরফ রাজ্যে অভিযান পরিচালনা করেন। তিন হাজার পদাতিক ও এক হাজার অশ্বারোহী নিয়ে হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) তরফ বিজয়াভিযানে অগ্রসর হন। বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার অংশ বিশেষ, ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া জেলার কিছু অংশ ও পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর পূর্বাংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল তখনকার তরফ রাজ্য। বর্তমান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী খোয়াই নদীর তীরে বাল্লার নিকটর্বতী বিষগাঁয়ে ছিল তরফ রাজ্যের রাজধানী ও তরফের রাজা আচক নারায়ণের রাজ-বাড়ী। প্রানভয়ে ভীত রাজা আচক নারায়ণ, হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) এর কাছে সন্ধির প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে পাশ্ববর্তী ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় নেন। ত্রিপুরার রাজার কাছে সাহায্য কামনা করেও বিফলকাম হন। হতাশ ও নিরুপায় রাজা আচক নারায়ণ অবশেষে, ভগ্ন হৃদয়ে সেখান থেকে মথুরায় তীর্থ ভ্রমনে গিয়ে তথায় মৃ্ত্যু বরণ করেন। ফলে, বিনা বাধায় বিজিত হয় তরফ রাজ্য। আচক নারায়ণের বিরুদ্ধে এ সমরাভিযানে হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) এর সঙ্গে ছিলেন বারো জন আউলিয়া।
তাঁরা হলেনঃ
১। হযরত শাহ্ গাজী (রহঃ) -বিষ গ্রাম, (সিলেট) মাজার।
২। হযরত শাহ্ মজলিস আমিন (রহঃ) - উচাইল (সিলেট) নামক স্হানে মাজার।
৩। হযরত শাহ্ ফতেহ গাজী (রহঃ) - মাজার ফতেপুর (সিলেট)।
৪। হযরত সৈয়্যদ শাহ্ সায়েফ মিন্নাত উদ্দীন (রহঃ)- লস্করপুর (সিলেট) মাজার।
৫। হযরত শাহ্ আরেফীন (রহঃ) - মাজার লাউর (সিলেট)।
৬।হযরত শাহ্ তাজ উদ্দীন কুরাইশী (রহঃ) - চৌকী পরগনায় (সিলেট) মাজার।
৭। হযরত শাহ্ রোকন উদ্দীন আসোয়ারী (রহঃ) - মাজার সরাইল, ব্রাক্ষ্মণ বাড়ীয়া।
৮। হযরত শাহ্ বদর (রহঃ) - ভারতের বদরপুরে মাজার।
৯। হযরত শাহ্ মাহমুদ (রহঃ) - উর্দু বাজার, লস্করপুর (সিলেট) মাজার।
১০। হযরত শাহ্ সুলতান (রহঃ) - বদরপুর, (ময়মনসিংহ) মাজার।
১১। হযরত শাহ্ বদর উদ্দীন (রহঃ) - চট্টগ্রামের বকসীর হাটে মাজার।
১২। হযরত সৈয়্যদ আহমদ গিছুদরাজ (রহঃ) খড়মপুর, (আখাউড়া) মাজার।
তরফ বিজয়ের পর হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) তরফের শাসক নিযুক্ত হন। হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলাধীন খোয়াই নদী বিধৌত মুড়ারবন্দে তাঁর মাজার রয়েছে। আজ থেকে প্রায় ৭০০ বছর আগে হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) এর ওফাত হয়। বর্তমান মুড়ারবন্দ তৎকালে ছিল ছায়াঘেরা বনানী। চারিদিকে কোন মানুষজনের আবাদী বিহীন, নিভৃত-নিরিবিলি এ স্হানটিকে পরম নিশ্চিন্তে ইবাদাত-বন্দেগী করার যোগ্য জায়গা হিসেবে খুবই পছন্দ হয়ে গেল হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) সাহেবের। তাই সেখানেই ঘাটি গেড়ে স্হায়ীভাবে থেকে গেলেন তিনি।
আস্তানার বর্ননাঃ
মাজার শরীফঃ পরে এ স্হানটিতেই গড়ে উঠে তাঁর মাজার শরীফ। তাঁর পবিত্র মাজার শরীফের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরো বহু সংখ্যক শহীদান, তাঁর সহযোদ্ধা এবং বংশধরগণের মাজার । এদের মধ্যে তাঁর স্বনামধন্য পুত্র হাযরত বন্দেগী শাহ্ ওরফে ইসরাইল শাহ্ (রহঃ) এবং হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) এর পৌত্র কুতুবুল আউলিয়া ওরফে হযরত ইলিয়াস শাহ্ (রহঃ) এর মাজারদ্বয় খুবই প্রসিদ্ধ। বংগের তুঘলক বংশীয় শাসক সুলতান হুসেন শাহ্ তুঘলক ছিলেন দিল্লীর
সুলতান ফিরোজ শাহ্ তুঘলকের পৌত্র। পরম ধার্মিক বাংলার এ শাসক সর্বপ্রথম মুড়ারবন্দে অবস্হিত তাঁর মাজারসহ অপরাপর মাজারগুলির সংস্কার ও উন্নয়ন সাধন করেন। প্রতি বছর ৩০ শে মাঘ তাঁর বার্ষিক উরস অনুষ্ঠিত হয়।
তথ্য সূত্রঃ সিপাহসালার হযরত নাসির উদ্দিন (রহঃ) - এস, এম, ইলিয়াস, প্রকাশকাল-১৯৮৮ খৃষ্টাব্দ।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭
এস এম ইসমাঈল বলেছেন: ধন্যবাদ! আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:৪৩
আব্দুল গণি বলেছেন: কেউ মন্তব্য করলো না কি কারণ বুঝলাম না।
লেখাটি পড়ে অনেক জানলাম, ভাল লাগল।