একজন রমিজ মাস্টারের ঈদ আয়োজন

১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০১

বেতনটা তো এবছরও হল না । রমজান মাস এসে গেল । দুটো টিউশনি আর স্কুলের সামন্য কয়েকটা টাকা এ দিয়ে কিভাবে যে ঈদটা পাড়ি দিব আল্লাই মালুম । সরকার এ বছরটাতে যদি এমপিও টা ছাড় দিত ! তাহলে স্ত্রী, আগত সন্তান, মা – বাবা, ছোট ভাই, বোন দুটো কে অন্তত একটা টুকরা হলেও ঈদে ওদের নতুন কিছু দিতে পারতাম । তা আর এবছরও হল না ।
-সাবান ফুরিয়ে গেছে । অনেক কাপড় চোপড় ধুতে হবে । স্ত্রী’র চাহিদাতে রমিজ মাস্টার ভাবনার আঙ্গিনা থেকে বের হল ।
- সাবান? কি সাবান ?
- গুড়া সাবান , গা- ঘষা সাবান দুই’ই লাগবে । রমজান মাস এসে গেল না । পুরনো কাপড় চোপড় পরিস্কার করতে হবে ।
- হা, তাতো বটেই । আচ্ছা দেখি টিউশনি থেকে ফেরার পথে চাইদার দোকান থেকে নিয়ে আসব ।
- ও হ্যা ভাল কথা, শুনছ, আব্বা বলছে রমজান মাসে প্রতি বিকালে ১/২ সের করে দুধ-রোজ করতে ।
- রমিজ সাহেব একটু হচকচিয়ে স্ত্রীকে বলল হা নিও ।
স্বামী-স্ত্রীর টুক টাক কথা বার্তার মধ্যেই রমিজ সাহেব প্যান্ট- শার্ট পড়ে পড়ন্ত বিকালে টিউশনীতে বের হবে বলে – স্ত্রী রুনা কে বলল –
- টিউশনী দুটো সেরে আসছি । এই বলে রমিজ সাহেব শাহবাজপুরের দিকে রওনা হল ।
রমিজ একজন সদ্য এম, এ সম্পন্ন করা একজন যুবক, গ্রাজুয়েশন শেষ করেই দরিদ্র বাবার ঘাড় থেকে সংসারের বোঝাটা একটু লাঘব করার জন্য কত রকম চাকুরি -বাকরি যে করেছে তার কোন ইয়াত্তা নাই । তবে সব গুলোই বে- সরকারী আর কোম্পানী । সরকারী চাকুরীতে সে প্রস্তুতির অভাবে আবেদনই করতে পারে নাই। যে হাতে গোনা কয়েকটিতে আবেদন করা গেছে তা (দূর)-নীতি, অর্থ-বিত্ত, ব্যাক আপ ইত্যাদির জোরে কখনও আলোর মুখ দেখেনি । তাই সে বাধ্য হয়ে স্থানীয় একটি বেসরকারী হাই স্কুলে “তথ্য প্রযুক্তির” শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেছে বড় অঙ্কের অনুদান দিয়ে । কিন্তু এমপিও প্রসেস এখও হয় নাই । তাই সে বর্তমানে দুটো টিউশনি আর স্কুল থেকে পাপ্ত সামান্য কয়েকটি টাকায় তার পাঁচ সদস্যের সংসার চলে । রমাজান মাসের বাড়ী খরচে তাই হিমশিম খাচ্ছে... (চলবে)

০ টি +০/-০