নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একমাত্র সোস্যালিষ্ট অর্থনীতি বাংগালী জাতিকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।
স্কুল ক্লাশমেটের অনুরোধে, তার মায়ের জন্য ঔষধ দিতে গিয়েছিলাম সোনাগাজী; রওয়ানা দিতে দেরী হওয়ায়, খেয়ার নৌকা পাইনি; আমার অনুরোধে ১ মাঝির ছেলে, রাত ১১টার পর আমাকে মুহুরী নদী পার করেছিলো; আসলে, এটি ছেলে ছিলো না, ছিলো ১টি যুবতী মেয়ে।
১০ম শ্রেণীতে আমাদের হেড মাষ্টার সাহেব ফেনী থেকে ১জন ভালো ছাত্রকে আমাদের স্কুলে নিয়ে আসেন; সে এসএসসি'তে ফাস্ট ডিভিশন পাবার সম্ভাবনা আছে; তার পড়ালেখা ফ্রি, হোষ্টেলও ফ্রি। তার নাম ছিলো শাহ আলম; তার কাজ ছিলো, ক্লাশ করা, পড়ালেখা করা; সে অন্য কিছুতে ছিলো না। আমার সাথে খুবই বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক, তার সাথে তাদের বাড়ী গিয়েছিলাম। টেষ্ট পরীক্ষা শেষ করে বাড়ী যাবার কথাছিলো; কিন্তু ভয়ংকর জ্বরের কারণে, শেষের ২টি পরীক্ষা সে দিতে পারেনি। ৭/৮ দিন পরে জ্বর কমলো, কিন্তু সে খুবই দুর্বল। আমি তাকে দেখার জন্য সন্ধ্যার একটু আগে হোষ্টেলে গেলাম। তার চোখে পানি, বিকেলে ঘুমায়েছিলো, মাকে স্বপ্নে দেখেছে; মায়ের অসুখ, ঔষধ নেই।
শাহ আলমের বাবা ছিলো না; তার একটি ছোট বোন ও মা আছে; মায়ের হাঁপানী রোগ আছে; সে ঔষধ নিয়ে গত সপ্তাহে বাড়ী যাবার কথা ছিলো; নিজের অসুখের কারণে যেতে পারেনি। আমি বললাম,
-ঠিক আছে, আমি ঔষধ দিয়ে আসবো।
ফার্মেসী থেকে ঔষধ নিয়ে, আমি বাড়ি গিয়ে ভাত খেয়ে রওয়ানা দিলাম; লোকেল বাসে করে মিসরসরাই থানার জোরারগন্জ বাজারে নেমে, সেখান থেকে রিকসা নিয়ে মুহুরী নদীর ঘাট, "মিয়াজান ঘাটে" পৌঁছলাম রাত সাড়ে ১০টায়; ১টা চা'দোকান ব্যতিত সবই বন্ধ; জোর বাতাস ও বৃষ্টির কারণে সন্ধ্যার পরপরই নাকি মাঝিরা বাড়ী চলে গেছে। চা-দোকানী বাজারের পুর্বদিকে দ্বিতীয় বাড়ীতে গিয়ে চেষ্টা করতে বললো; উহা মনু মাঝির বাড়ী। বাড়ী পেলাম, কাছারী ও পুরো বাড়ী অন্ধকার, সবাই ঘুমিয়ে গেছে। আমি উঠানের মাঝখানে দাঁড়ালাম; সামনের ঘরের বারান্দা থেকে অন্ধকারে ১ নারী জানতে চাইলেন আমি কে ও কি দরকারে এসেছি।
আমি আসার কারণ বর্ণনা করলাম, আমার দরকার মনু মাঝি, নদী পার হতে হবে, চাচী অসুস্হ, আমি ঔষধ নিয়ে যাচ্ছি। সে জানালো, তার বাবা ঘুমিয়ে গেছে, খুব বেশী জরুরী হলে সে যাবে। আমি আবারো জানালাম যে, চাচী খুবই অসুস্হ, ঔষধ না'হলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে। কয়েক মিনিটের মাঝে সে বেরিয়ে এলো, অন্ধকারের কারণে ও জংগুর মাথায় দেয়ায় আমি তার মুখ দেখছি না সঠিক মতো। সে বললো,
-সোনাগাজী ঘাটের থেকে কত দুরে বাড়ী?
-১মাইলের চেয়ে কম হবে।
-ঠিক আছে, তুমি দৌঁড়ে গিয়ে ঔষধ দিয়ে, আরেক দৌঁড়ে ফিরে আসবে নৌকায়, আমি ঘাটে নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করবো।
-আমার তো ঐ বাড়ীতে থেকে যাবার কথা; ফিরে এলে রাতে আমি কোথায় যাবো?
-এত রাতে, বৃষ্টি ও বাতাসের মাঝে আমি একা ফিরতে পারবো না; যদি যেতে চাও, তোমাকে ফিরে আসতে হবে; রাতে আমাদের বাড়ীতে থাকিও।
-ঠিক আছে, চলেন।
-তুমি খেয়েছ?
-আমি খেয়ে এসেছি।
-চল।
-আপনি মেয়ে মানুষ, কখনো নৌকা চলায়েছেন?
-কি বললে? আমি মনু মাঝির ছেলে! আমি সব সময় নৌকা নিয়ে এপার ওপার করি; বাবার বয়স হয়েছে, দাঁড় টানতে পারেন না।
আমি নীরবে তাকে অনুসরণ করে গিয়ে নৌকায় উঠলাম; তার পরনে লুংগি, গায়ে চাদর; তার টর্চের হালকা আলোয় তার পা দেখে সহজে বুঝা সম্ভব যে, এটি একটি শক্তিশালী যুবতী মেয়ে। আমি এত কৌতুহলী উঠলাম যে, বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সে নৌকা ছাড়লো, ২ হাতে বৈঠা টানছে; ফাঁকে ফাঁকে আমার বাড়ীঘরের ঠিকানা, কি করি, সোনাগাজীর মানুষ কি করে আত্মীয় হলো, সব জেনে নিচ্ছে। তার কথা শোনার জন্য আমি নদী, মাছ, তার বাবার কথা তুলছিলাম বারবার। সে ১০০ ভাগ মেয়েলী কন্ঠে কথা বলছে, আর এদিকে বলছে, সে মনু মাঝির ছেলে।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯
সোনাগাজী বলেছেন:
বাংগালী সংস্কৃতি ভালোর দিকে যায়নি
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৪
বিষাদ সময় বলেছেন: আপনার নারী ভাগ্য বেশ ভাল !
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২০
সোনাগাজী বলেছেন:
স্কুলে আমি ফুটবল খেলতাম, বেশ দুরের এলাকার ছেলেদের সাথেও অনেক আড্ডা হতো; তবে, তখনকার ছেলেদের থেকে মেয়েরা বুদ্ধিমতি ছিলো।
৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: কোনো নদীর আগের সেই রূপ নাই ঠিক তেমন মুহুরী নদী মিয়াজান ঘাটও নাই। বালুখোরদের কারণে সব সব শেষ।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:১৩
সোনাগাজী বলেছেন:
সুইসগেইট ও ব্যারেজ করায় নদী এখন হৃদে পরিণত হয়েছে।
৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৭
বিষাদ সময় বলেছেন: মেয়েদের আমার কোনদিনই খুব বুদ্ধিমতি মনে হয়নি। আমার সাথে দু-চারজন কলেজ, ইউনিভার্সিটির শিক্ষকেরও ওঠা বসা, কথাবার্তা আছে তাদেরও জ্ঞান বুদ্ধি আমার কাছে মনে হয় যেন একটা গণ্ডিতে আবদ্ধ।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:১৫
সোনাগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইরানের পুরষদের থেকে নারীদের বুদ্ধিমত্তা বেশী।
৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৪২
রানার ব্লগ বলেছেন: ঔষধ দিতে পেরেছিলেন? তারপর কি হলো??!
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৪৭
সোনাগাজী বলেছেন:
ঔষধ দিয়ে মাঝির সাথে ফিরে এসে, মাঝিদের বাড়ীতে রাতে ছিলাম।
৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২৩
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
উপমহাদেশের মেয়েদের বুদ্ধিমত্তা ছেলেদের তুলনায় ভালো...একটু বুঝিয়ে বলুন।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৩
সোনাগাজী বলেছেন:
বাংগালী পরিবারের হাল ধরেন মেয়েরা, বেশীরভাগ পুরুষের ব্যক্তিত্ব-সমস্যা আছে।
৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২৩
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
উপমহাদেশের মেয়েদের বুদ্ধিমত্তা ছেলেদের তুলনায় ভালো...একটু বুঝিয়ে বলুন।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৪
সোনাগাজী বলেছেন:
স্কুলে কো-এডুকেশন ছিলো? থাকলে, আপনার বুঝার কথা ছিলো। ছেলেরা সামান্য পরিমাণ ষ্টেবল হয় মাষ্টার ডিগ্রিতে গেলে।
৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৯
কলাবাগান১ বলেছেন: ঐ ছেলে ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছিল??? আগেরকার হেডমাস্টার দের চিন্তা ধারাই ভিন্ন ছিল....।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৫
সোনাগাজী বলেছেন:
না, বেচারা পায়নি। তখন হেডমাষ্টারেরা ভালো ছেলে ইমপোর্ট করতো।
৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: যেখানে মিয়াজন ঘাট ছিল সেখানে এখন আঞ্চলিক হাইওয়ের বিশাল ব্রিজ হচ্ছে।
তখনকার রক্ষণশীল সমাজে রাত ১১টায় একটি মেয়ের এরুপ কর্ম কি আসলেই সম্ভব ছিল? ধরে নিলাম মেয়েটি দু:সাহসি। আবার মেয়েটি একা ফিরতে পারবেনা বলায় দু:সাহসিও ভাবতে পারছিনা।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৮
সোনাগাজী বলেছেন:
তখন মিয়াজান ঘাট এলাকায় নদীর বাঁক ছিলো, এজন্য পানিতে ঘুর্ণি হতো, ভয়ের ব্যাপার ছিলো। আমি যা সন্দেহ করেছিলাম সেটাই সঠিক ছিলো; পরে জেনেছিলাম, মনু মাঝির ছেলে ছিলো না, ৩ মেয়ে ছিলো। ঔষধের কথা বলায় সে গিয়েছিলো।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৪৮
সোনাগাজী বলেছেন:
সোনাগাজীতে তো ব্লগারদের আত্মীয় বাড়ী আছে।
১০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৪
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
কো-এডুকেশন ছিলো না। তবে সময়ের সাথে বাঙালীর মেয়েদের বুদ্ধিমত্তা কমতির দিকে নয় কি?
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৪৬
সোনাগাজী বলেছেন:
না, মেয়েরা সব সময় বুদ্ধিমতি; সমাজের চাপে ওদের ভুমিকা ছোট ও পরিবারে তাদের মতামত তেমন থাকে না। স্কুলে কলেজে পড়াে সময় বুঝা যায়, ছেলেরা বানরের মত লাফালাফি করে, মেয়েরা সমস্ত প্রশান্তি হয়ে বিরাজ করে।
১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:২৫
নিমো বলেছেন: লেখক বলেছেন:না, মেয়েরা সব সময় বুদ্ধিমতি; সমাজের চাপে ওদের ভুমিকা ছোট ও পরিবারে তাদের মতামত তেমন থাকে না।
এই একটা বাক্যেই যা বলার বলে দিয়েছেন।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩৬
সোনাগাজী বলেছেন:
ছেলেদের লাফালাফি সহজে চোখে পড়ে, মেয়ারা পরিবারকে ধরে রাখে যতনে।
১২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: কোলকাতার লেখক সমরেশ মজুমদার একটা বই লিখেছেন। বইয়ের নাম- 'মেয়েরা যেমন হয়'।
বইটা আমি পড়েছি। বইতে লেখক তার জীবনে যত মেয়ে এসেছে তাদের কথা লিখেছেন। আপনি ইচ্ছা করলে এরকম একটা বই লিখতে পারেন।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৩
সোনাগাজী বলেছেন:
বই লেখা হয়ে হয়ে উঠলো না; এটা সেটা করে সময় চলে যায়।
১৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫০
রেজাউল৬৭ বলেছেন: লেখক বলেছেন:
তখন মিয়াজান ঘাট এলাকায় নদীর বাঁক ছিলো, এজন্য পানিতে ঘুর্ণি হতো, ভয়ের ব্যাপার ছিলো।
সকলে অপুর মত নির্মম নহে যে আপনাকে দেখলেই লাথি মারবে। কেহ কেহ ভর্সাও পেয়েছে। এরা ভাল মানুষ।
১৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫২
রেজাউল৬৭ বলেছেন: কলাবাগান১ বলেছেন: ঐ ছেলে ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছিল??? আগেরকার হেডমাস্টার দের চিন্তা ধারাই ভিন্ন ছিল....।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৫
লেখক বলেছেন:
না, বেচারা পায়নি।
ঐ ছেলের উচিত ছিল হেডমাস্টার বাদ দিয়ে আপ্নার কাছে কিছুদিন পাইভেট পরা। তাইলে হয়তো জিবনে কিছু কর্তে পার্তো।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৯
সোনাগাজী বলেছেন:
সামু কি করণে আপনার মতো ক্রিমিনালকে লালন পালন করে, ইহা আমার কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭
কামাল১৮ বলেছেন: সেই সমাজ সেই মানষিকতা আজ আর নাই।এখন মানুষ অনেক যান্ত্রিক।তাই তো ফরিদা পারভিন গায়,যে দিন গেছে সেদিন কি আর ফিরিয়ে আনা যায়।