নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ধ্যা প্রদীপ

আমার সমস্ত চেতনা যদি শব্দে তুলে ধরতে পারতাম

সন্ধ্যা প্রদীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এটা কি সম্ভব???

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩২

আজকাল ফোন কোম্পানিগুলোর অত্যাচারে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।যখন তখন বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করে এই অফার সেই অফার নানা পেচাল।আর দিনের মধ্য এক হাজারটা এস এম এস তো আছেই।মেসেজ বক্স জ্যাম হয়ে যায় নানা রকম মেসেজে---কৃষি জিগাসা,নিউস আপডেট, খেলার খবর,আবহাওয়ার খবর,আজানের টাইমিং,হ্যালো টিউন সেট করুন,গান শুনতে চান?বন্ধু বানাতে চান?প্রিয় চিত্র তারকার খবর জানতে চান?ইদানিং আবার দেখি পাত্রপাত্রিও পাওয়া যাচ্ছে!!!!!!!!জরুরি কাজের সময় ফোন,খুব আগ্রহ নিয়ে অন্যকারো ফোনের অপেক্ষা করার সময় ফোন ,আর সবচে যেটা অসহ্য সেটা হলো সুখনিদ্রার সময় ফোন করে ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে দে্যা(আমার সাথে এটা প্রায়ই হয়,তখন ইচ্ছা করে যে মার্ডার কেসের আসামি হয়ে যাই) এর মাঝে ভুলে কোনো বাটনে চাপ পরে গেলেই হয়েছে দেখবেন আপনার একাউন্ট থেকে বিপুল এমাউন্ট এর টাকা গায়েব সেই সাথে হয়তো ‘ঘুম ভাঙ্গায়ে গেলো গো মরার কোকিলে…’ টাইপের কোনো হ্যালো টিউন সেট হয়ে গেছে।সেটা ইনএক্টিভেট করতে আবার কাস্টোমার কেয়ারে ফোন করা,আবার টাকা খরচ।



আসল কথায় আসি,আমাদের দেশে মোবাইল নেটইয়ার্ক বিপুল সংখ্যক মানুষের নেটঅওার্ক।এটা কি মানুষের সাথে মানুষের সহজে যোগাযোগ ঘটানো ছাড়া আর কোনো সত্যিকারের প্রয়োজনে আসতে পারেনা? আমার মনে হয় পারে।হয়তো অনেক উন্নয়ন করা সম্ভব এটা দিয়ে।আমদের দেশে যেহেতু উন্নয়নের জোয়ার বইছে সেসব কথায় নাই বা গেলাম।আমাদের এই স্বল্প আয়ের দেশে অনেকেই সাধ্যের অতীত কোনো মারাত্বক ব্যধিতে আক্রান্ত হন হঠাত করে।যার চিকিতসা ব্যয় বহন তার পরিবার করতে পারে না।তখন মৃত্যুর দিন গোনা ছাড়া আর কিছু করার থাকেনা যদি না কিছু মমতাময়ী মানুষ তাদের পাশে এসে দাড়ান।সবচে খারাপ লাগে যখন কচি,তরুন,সম্ভবনাময় মুখগুলো এভাবে হারিয়ে যায় অকালে।

আমি একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি তে পড়ি।এখানে আসার পর প্রায় প্রতি বছর ই দেখতাম বিভিন্ন ব্যচের ছাত্রছাত্রীরা তাদের কোনো মুমুর্ষ সহপাঠির জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে।আমরা অক্ষম,আমাদের পক্ষে যেটুকু করা সম্ভব সেটুকু আমরা আপ্রান চেষ্টা করি।এভাবে লোকের কাছে চেয়ে,ফ্লিম ফ্যাস্টিব্যাল এর আয়োজন করে,হলের প্রতিটা রুম আর প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ছাত্রদের কাছে থেকে টাকা সংগ্রহ করে সে টাকা দিয়ে তাকে বাচাতে চেষ্টা করি।সবসময় সে টাকা প্রয়োজনের সবটুকু পুরন করতে পারে না।তাই এই চেষ্টায় কখনো সফলতা আসে,কখনো না।লোকের কাছে হাত পাতাও সহজ কাজ নয়।নানা মন্তব্য শুনতে হয়,লোকে সন্দেহ নিয়ে তাকায়।এবারে ভর্তি পরিক্ষার সময়ের আমার এক বন্ধুর অভিজ্ঞতা বলি—তারা তাদের সহপাঠি এক বন্ধুর জন্য গেটে বক্স নিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছে,কোন প্রকার জোর নেই যে যা পারে দেবে না চাইলে দেবেনা।প্রাডো নামক বিশালাকার গাড়ি থেকে নেমে এক ভদ্রলোক দিয়েছেন ২০০পয়সা(২টাকা)!!!!!!!আর এক ভদ্রমহিলা কিছু না দিয়ে জিগাসা করেন ছেলেটার কি অসুখ ইত্যাদি।যখন শুনলেন তার পেশি দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে দেশে যার কোনো চিকিতসা নেই অসুধ দিয়ে তাকে মোটামুটিভাবে বাচিয়ে রাখা যাবে এবং সে চেষ্টাই হচ্ছে তখন বললেন-এ তো এমনিতেও বাচবে না তোমরা এত কষ্ট করছো কেন?এসব বাদ দাও।



উনি একথা বলতে পারেন কিন্ত আমরা তো জানি সে মায়ের একমাত্র ছেলে,জানি যে তার বাবা নেই,জানি যে মা তার সমস্ত সম্পত্তি বেচে এতদিন ছেলের চিকিতসা করেছেন এইবার তার হাত শুন্য,জানি সে আমাদের প্রিয় একজন বন্ধু হাসি গল্পের সাথি।তার এই অসুখ না হলে আমাদের সাথেই সে গ্রাজুয়েট হয়ে বের হতে পারত,কর্ম জীবনে ঢুকে সংসারের ভার নিতে পারতো,সুন্দর একটা জীবন গড়তে পারত।

এমন হাজারো গল্প আছে চারিদিকে।গল্পগুলো বড় করুন।কিছু করতে ইচ্ছা করে।কিন্ত পারিনা কারন আমি যে অক্ষম।আর যাদের অনেক আছে তারা ফিরেও তাকায় না।তাই মনে হয় এদেশে ১৬ কোটি মানুষ প্রত্যকে যদি এক টাকা করেও দিতে পারে তবে ১৬কোটি টাকা।আর একটাকা তো ফকির ও দিতে পারে।এই টাকাগুলো দিয়ে কত মানুষ্ কেই না সাহায্য করা যায়।আসলে এটা আমার অনেক ছোটকালের একটা ছেলেমানুষি আইডিয়া।তখন একবার ঠিক করেছিলাম আমি ১কোটি লোকের কাছে মাত্র একটাকা করে নিয়ে ১কোটি টাকা সংগ্রহ করবো।তারপর যে সব মানুষ খেতে পায় না সবাইকে পেট ভরে ভাল ভাল খাবার খাওয়াব।

গতবছর সেই সহপাঠির জন্য টাকা সংগ্রহের গল্প শুনে খুব অসহায় লাগছিল।আবার সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ছিল।মনে হচ্ছিল দেশের প্রযুক্তির তো বেশ অগ্রগতি হয়েছে।মোবাইল কোম্পানির মাধ্যমে কি এমন কিছু করা সম্ভব না যাতে এইসব মানুষের জন্য অন্যরা নিজ মোবাইল থেকে টাকা পাঠাতে পারে।যার যত ইচ্ছা তত।১কোটি গ্রাহক ১টাকা দিলেও তো ১কোটি টাকা হয়।ছোটবেলায় এটা অনেক মনে হত এখন জানি এই পরিমান টাকা আসলে তেমন কিছু নয়।কিন্ত সাহায্যপ্রার্থি লোকের জন্য তা অনেক।

আজ দৃষ্টি আকর্ষনে সাব্বির ভাইয়ের কথা পড়ে আবার সেটা মনে হলো।ভাবুনতো এমন একটা পদ্ধতির কথা যেখানে আপনার মোবাইলে এসএমএস আসল ‘ক’ কে সাহায্য করুন।আপনি টাকার পরিমান লিখে ওকে করলেন আর টাকা সেই একাউন্টে চলে গেল।জানি এখন বিকাশ আছে।তবে বাঙ্গালী বড় অলস জাতি।খুব উতসাহি মানুষ ছাড়া কেউই এতসব হাঙ্গামা করে কাওকে সাহায্য করতে যায় না।অনেকে নিজেরাই অভাবি তাই কিছু দিতে পারেনা,অনেকে সামর্থ অনুযায়ি স্বল্প পরিমান সাহায্য পাঠাতে লজ্জা পায়(যেমন আমি),অনেকে টাকা ‘ফালতু’ কাজে খরচ করতে চায় না,অনেকে টাকা কিভাবে পাঠাবে সেটাই বুঝে না।নিজের মোবাইলের মাধ্যমে দেয়া গেলে সব সমস্যার ই সমাধান সহজে হয়।মানুষ হয়তো ১০টাকা দিতে পারবেনা।৫টাকা পারবে না কিন্ত ১টাকাতো পারবে?????আমি মানুষের কাছে সেই একটাকাই চাই।পারবেন না দিতে একটি টাকা অনেকগুলো জীবন বাচানোর জন্য???আমি টেকনিকাল বিষয় ভাল বুঝিনা।এমন কোনো সিস্টেম ডেভেলপ করা কি সম্ভব????খুব সহজ কোনো সিস্টেম যাতে এক দুই ক্লিক করেই কাজ সম্পন্ন হয় আবার স্বল্পশিক্ষিত লোকও বুঝতে পারে কি করতে হবে।



যদি সেটা সম্ভব হয় তো আমি চাই সেটা করা হোক।টাকা খরচ করে তারকাদের কেচ্ছাকাহিনি শোনার চেয়ে কারো জীবন বাচানো যে অনেক জরুরি কাজ এটা নিশ্চয় সবাই বুঝবে?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

শূন্য পথিক বলেছেন: অত্যাচার থেকে বাঁচার উপায় কি?

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৯

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: সেটাতো জানিনা ভাই।তবে ফোন ইউজ না করা একটা উপায় হতে পারে---- :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.