নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ধ্যা প্রদীপ

আমার সমস্ত চেতনা যদি শব্দে তুলে ধরতে পারতাম

সন্ধ্যা প্রদীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাবনা যত,আমার মতো -১

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬

নিজের মনের এলোমেলো ভাবনা আর অজস্র অর্থহীন প্রশ্নগুলো প্রকাশ করব বলেই এই টাইটেলে পর্ব আকারে একান্তই নিজের চিন্তা নিয়ে এই লেখাটা দিচ্ছি।বেশি সিরিয়াস ভাবে এ্টা নেয়ার দরকার নেই আবার মত না মিললে বেশি রেগে যাওয়ার ও দরকার নেই।তবে প্রশ্নের উত্তরগুলো যদি দিতে পারেন তবে বাধিত।



এ আর রহমান।আমার খুবই প্রিয় একজন মিউজিশিয়ান।যদি আমাকে বলা হয় পৃথিবীর মাঝে প্রিয় তিনজন মিউজিশিয়ানের নাম বলতে তবে তার মাঝে উনার নাম অবশ্যই থাকবে।তার গানগু্লো আমার প্লে লিস্ট এ প্রায় সবসময় থাকে আমার মনেহয় নতুন যে গান আসবে সেগুলোর মাঝেও অনেকগুলো ভবিষ্যতে থাকবে।



উনি আমার প্রিয় একজন ব্যক্তি হলেও উনার উপস্থিতিতে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনে যেভাবে আমার দেশি শিল্পীদের অপমান করা হয়েছে তা কেন যেন মেনে নিতে পারছিনা।সত্যি বলতে আমার মনে হয় এটা মেনে নেয়ার মত কোনো বিষয় নয়।আমরা অসভ্য জাতি নই।আমরা গুনি লোকের কদর করতে জানি।এমন গুনি একজন অতিথিকে নিজের দেশে ডেকে এনে অবশ্যই আমরা তার যথাযথ সন্মান করবো কিন্ত তাই বলে নিজের শিল্পীদের অসন্মান করবো কেন?



আমি বুঝিনা টি টোয়েন্টি যতই আন্তর্জাতিক জিনিস হোক এর আয়োজক তো বাংলাদেশ।এর জন্য বাইরে থেকে কেন শিল্পী ভাড়া করে আনতে হবে।আমাদের দেশে গুনি শিল্পী কিছু কম আছে তা তো নয়।আর যদি কমই থাকে তাতেই বা কি?এটা অনেক ভাল সুযোগ ছিল নিজের দেশ কে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার।আজ সকালে ক্লাসে আমাদের এক স্যার বিষয়টা নিয়ে খুব দুঃখ প্রকাশ করছিলেন।উনি ছিলেন আমাদের মাঝে একমাত্র মানুষ যার ঐ প্রোগ্রাম লাইভ দেখার সৌভাগ্য(!!) হয়েছে।উনি সরাসরি বললেন যে তার অনুষ্ঠান্টা ভাল লাগেনি কারন একেতো তিনি হিন্দি বোঝেন না তারউপর তিনি এমন একটা আয়োজনে দেশি সংস্কৃতির অভাব মেনে নিতে পারছিলেন না।তিনি বললেন যে যতক্ষন ওখানে ছিলেন ততক্ষন অপেক্ষা করেছেন দেশি কিছু দেখার জন্য কিন্ত তা পাননি।তিনি বললেন,কারো যদি বহুমূল্য পোশাক না থাকে বরং স্যান্ডোগেঞ্জি পরার মত যোগ্যতা থাকে তবে তো তাকে সেটা পরেই সকলের সামনে উপস্থিত হতে হবে।অর্থাত আমার দেশের শিল্পী যেমনই হোক বিশ্বের সামনে সেটাই সগর্বে তুলে ধরতে হবে।আমি বুঝলাম না এমন সুযোগটা কেন হেলায় হারানো হলো।



আচ্ছা আপনারা কি কেউ বলতে পারবেন শিল্প,সংস্কৃতি,ভাষা,সাহিত্য এগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব পরিমাপের সত্যিকার কোনো প্যারামিটার আছে কিনা?আমি বলতে চাইছি কি দিয়ে নির্নয় হয় যে অমুক দেশের কালচার তমুক দেশের চেয়ে ভাল।গবেষকরা সুবিধার জন্য হয়ত কিছু মাপকাঠি তৈরী করেছেন বটে কিন্ত সেগুলো কি আসলেই ধ্রুব?আমার মনে হয় এসব জিনিস এক একজন মানুষের চোখে এক এক রকম।যেমন অনেকের কাছে মমতাজের গান একেবারে ফালতু লাগলেও দেশের বড় অংশের একটা জনগন এইগান খুবই দরদ দিয়ে শোনে।তাই এমন কিছু কি আছে যা মমতাজের গানের আসল মূল্য নির্ধারন করতে পারে?আমার মনেহয় নেই।যদি কালচারের শ্রেষ্ঠতা পরিমাপের কোনো প্যারামিটার নাই থেকে থাকে তবে কিভাবে আয়োজক কমিটি নির্নয় করল যে আমাদের দেশের সমস্ত শিল্পী মিলেও এক এ আর রহমনের সমকক্ষ হতে পারবে না?কোন সাহসে তারা দেশের শিল্পীদের অপমান করল?আমার তো মনেহয় না বাইরে থেকে শিল্পী আনার কোনো দরকার ছিল।আর যদি বৈচিত্রের জন্য আনা হলোই তবুও কেন দেশি শিল্পীদের প্রাধান্য দেয়া হলো না বরং ছোট করা হলো?গুনি মানুষকে সন্মান দিতে আমার আপত্তি নেই তবে নিজের দেশকে ছোট করে অন্যকে বড় করলে কি নিজেদের সন্মান বাড়ে?বিশ্বের কাছে মুখটা কি বেশি উজ্জ্বল হয়?



গতকিছুদিন ধরে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনা আমার মনের মাঝে বেশ বড় ধরনের ঝড় তুলেছে।আর সেখান থেকে শুধু একটাই প্রশ্ন উঠে আসছে সেটা হলো আমরা আসলে কি?গুন্ডে নামক আজগুবি মুভির মুক্তির পর যে প্রতিবাদের ঝড় উঠল এবং যেভাবে সেটাকে সবচেয়ে বাজে মুভি হিসাবে রেটিং করা হলো তাতে তো মনেহয় আমরা তীব্রভাবে বাংলাদেশী।আবার এশিয়া কাপের আফ্রিদি ম্যানিয়া দেখে নিশ্চিতভাবে মনে হয় আমরা আসলে পাকিস্থানি আবার টি টোয়েন্টির ঘটনাটা দেখে মনে হচ্ছে আমরা অবশ্যই এবং অতি অবশ্যই ভারতীয়।সাবাস বাঙ্গালী!!চামড়ার নানা রঙের মত আমাদের জাতীয়তাবোধেও কত্তো রং!গুন্ডে মুভির সময় আমরা যে রঙ দেখালাম বিশ্বকে,ভাবলেই লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যায় যে তার কিছুদিন পরেই আমরা পাকিস্থানের জার্সি গায়ে দিয়ে পতাকা হাতে খেলা দেখতে গিয়েছি আর চিল্লিয়ে বলেছি,উইল ইউ ম্যারি মি আফ্রিদি??আবার তার কিছুদিন পরেই সারাবিশ্বের সামনে দেশের মাটিতে দেশি ব্যান্ডের গান শুনে হাত তালি দিতেই আমাদের কষ্ট হয়েছে!!



এবিষয়ে আমার একটা দুঃখজনক থিওরী আছে।আসলে আমাদের এই সুজলা সুফলা ভূমিতে আদিকাল থেকে নানা বর্নের মানুষ নানা ফন্দিতে এসেছে।আদিবাসিদের সাথে কালে কালে তাদের মিশ্রনে আমাদের জাতিটা তৈরী হয়েছে।আমাদের রক্ত বিশুদ্ধ নয় তাই আমাদের জাতীয়তা বোধ বিশুদ্ধ নয়।একারনেই আমাদের রক্তের টান কখনোই একদিকে থাকে না।একেক দিকের রক্ত ভিন্ন ভিন্ন দিকে টানে তাই আমরা এক এক দিকে চলে যাই।তাছাড়া এখানে বাইরের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বেশি এসেছে সেকারনেই হয়ত আমাদের মধ্য সততার এত অভাব।আত্মসমালোচনা করছি বলে কেউ যেন বেশি দুঃখিত হবেন না।নিজেদের ভালকে ভাল বলে সগর্বে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার সাহস যে আমাদের নেই তা আমরা প্রমান করেছি তবে আমার মত অধমের নিজেদের খারাপকে খারাপ বলার সাহস আছে এখনও।তাই এত কথা।



আমাদের দেশের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের এখন স্পষ্ট দুইটা ভাগ হয়ে গেছে।অর্ধেক হিন্দীতে আসক্ত আর বাকিরা ইংলিশে আসক্ত।যদিও বাংলা উভয়ের জন্যেই কমন টপিক তবে লক্ষ্যনীয় যে উভয়ের ক্ষেত্রেই বাংলার অবস্থান ২য়।এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে আমরা কি তাই বলে বাইরের গান শুনবোনা,বই পড়বোনা,মুভি দেখবো না?শুধু কি নিজেদের কালচার কে আঁকড়ে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখব?অবশ্যই না।আমরা শুধু একটা দেশের না বিশ্বের সদস্য।আমরা ভিন্ন ভিন্ন কালচারের সাথে পরিচিত হব।দেখব,শুনব,মিশবো এবং নিজেদের কালচারকে সমৃদ্ধ করবো কিন্ত ভুলেও যেন আমাদের মনে এমন চিন্তা না আসে যে আমাদের কালচারকে আমরা ছোট করে দেখতে পারি।নিজের কালচারের প্রতি ভালবাসা এবং শ্রদ্ধাবোধ উভয়ই থাকতে হবে।দেশের কোনো নাগরিকের যেন এই স্পর্ধা না হয় যে সে নিজের সংস্কৃতিকে উপহাস করতে পারে বা ছোট করতে পারে।





একটা কালচারের সাথে অন্য কালচার একটু একটু করে মিশবে,মিশে সেটাকে হয় সমৃদ্ধ করবে কিংবা নষ্ট করবে অথবা একই সাথে উভয়টাই করবে এটাই নিয়ম।আর সত্যি বলতে এই বিষয়টা পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব নয়।সাংস্কৃতিক আগ্রাসন কখন মহামারী আকার নেয়?যখন দেশীয় কালচার মানুষকে তার চাহিদা অনুযায়ী বিনোদন দিতে পারেনা।অনেকে বলবেন,কৌশলে অন্য দেশ তাদের কালচার আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।এক্ষেত্রে বলি কৃষ্টি-কালচার অনেকটা আলোর মত।এর ধর্মই বিকিরিত হওয়া।একটা সংস্কৃতির আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে চাইবে এটাই স্বাভাবিক কিন্ত এটা সম্পূর্নই আমাদের উপর নির্ভর করে যে আমরা সেটা আমাদের নিজেদের কালচারের উপর চেপে বসতে দেব কিনা।



ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় মনের ভাব ভিন্নভাবে প্রকাশ করা যায়।তাই ভিন্ন কালচার মানুষকে ভিন্ন ধরনের বিনোদন দেয়।এক ভাষায় যে কথা বললে কটু শোনায় অন্য ভাষায় সেটা হয়ত এত খারাপ শোনায় না।তাই হয়ত আমরা হিন্দিতে ইশক কামিনা,গান্দি বাত,গোরে গোরে রাউন্ড রাউন্ড টুহ!!!!!!????? ইত্যাদি গান সহজভাবেই নিতে পারি এবং চিল্লায়ে গাইতেও পারি কিন্ত বাংলাতে হুবুহু এমন ভাষায় গান তৈরী করার কথা কল্পনাতেও নেয়া যায় না।আবার ইংরেজি সরি কথাটির একেবারে সঠিক প্রতিশব্দ বোধ হয় বাংলাতে নেই।বিনোদন পর্যন্ত ঠিক আছে কিন্ত অন্য একটা কালচার যখন ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভুতের মত চেপে বসে এবং জীবনযাপন পদ্ধতি ধ্বংস করে দেয় তখন কিন্ত সবকিছু নতুন করে ভাবার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।





ভেবে দেখুন তো কেন আমাদের এই হিন্দি প্রীতি?শুধু কি ভারতীয়রাই দায়ী?তারা তো চাইবেই তাদের তৈরী মুভি,গান,সিরিয়াল মানুষ দেখুক।আমাদের দেশের মানুষগুলো কেন এত হিন্দির পেছনে ছুটছে?আমার কথা হচ্ছে ছুটবে না কেন?পাশের দেশ বলে জনগন থেকে শুরু করে সাহিত্য সংস্কৃতিতে যথেষ্ট মিল আছে।বেশ মিল আছে ভাষায়।সেইসাথে তার জানে কিভাবে মানুষকে বিনোদন দিতে হয়।দেখুন তাদের দেশে চ্যানেলের বৈচিত্র এবং চ্যানেল অনুযায়ী অনুষ্ঠানের বৈচিত্র।সিরিয়াল,মুভি,গান,নিউজ,ফ্যাশন,জ্ঞান এই সবকিছুর জন্যই রয়েছে আলাদা চ্যানেল।এমনকি প্রাদেশিক ভিন্ন ভিন্ন ভাষার জন্য আছে ভিন্ন ভিন্ন একাধিক চ্যানেল।অপরদিকে দেখুন আমাদের টিভির অবস্থা।বিটিভি তো তোতা পাখি তাই সেটার কথা বাদ।অন্যগুলো যদি কখনো খুলেন তবে দেখবেন টক শো বা নিউজ কিংবা ভাগ্য ভাল হলে বিজ্ঞাপন হচ্ছে।আমি বুঝিনা এত্তগুলো চ্যানেল কেন শুধু খবরের পেছনে ছুটছে।খবর দেখার জন্য ২৪ঘন্টার বেশ কয়টা চ্যানেল আছে।অন্য চ্যানেল গুলোর প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় এত খবর দেখানোর কি দরকার?আমি তো দেখতেই পাইনা কখন এইসব চ্যানেলগুলিতে অন্য অনুষ্ঠান হয়। এগুলো চ্যানেল না নিউজপেপার তাই আমি বুঝতে পারিনা মাঝে মাঝে।সামনে পেছনে নিচে সবসময় হেডলাইন এবং ব্রেকিং নিউজ সরসরিয়ে চলছে।সেসব নিয়ে টক শো হচ্ছে আবার প্রতি ঘন্টায় সেটা নিয়েই খবর দেখাচ্ছে।সারাদিনের ধকল শেষে যখন মানুষ বাসায় ফেরে তখন স্বভাবতই সে বিনোদন্ মূলক হালকা কিছু দেখতে চাইবে।ভেবে বলুন তো দেখি দেশি চ্যানেলে কি সেটা দেখার সুযোগ আছে?যদিও ভাগ্যক্রমে একটা নাটক পেয়ে যান সেটা দেখতেই পারবেন না বিজ্ঞাপনের যন্ত্রনাতে।তখন লোকে কি করবে রিমোট টিপে অন্য দেশের চ্যানেল গুলো দেখবে।চাইনিজ চ্যং চুং দেখবে না কারন ওগুলোর সাথে আমাদের কিছুই মিল নেই।কেউকেউ ইংলিশ চ্যানেল দেখলেও সাধারনেরা সেটা এড়িয়ে যাবে কারন স্কুল কলেজে আমরা ইংলিশ যথাকিঞ্চিত শিখি বটে কিন্ত সেই বিদ্যা দিয়ে ইংলিশ মুভি বুঝতে জনসাধারনের বেশ কষ্টই হয়।হবেইবা না কেন যাহা আমাদের কাছে শিডিউল তাহাই তাদের কাছে স্ক্যজিউল!!আমাদের শেখা আর ইংলিশ উচ্চারনের বিভ্রাটে পরে তাই মানুষ মানে মানে পালিয়ে এসে স্টার প্লাসে দেবে। আর করার মধ্যে এটাই যে ঐ চ্যানেল আপনাকে শুধু দিতে হবে।যদি পাঁচ মিনিটের মাঝে আপনি চ্যানেল থেকে সরে না যান তবে সেখানেই আটকে যাবেন।সে আপনি যত বড় সিরিয়াল বিদ্বেশিই হন না কেন।তবে এখানে দোষটা আপনার নয়।সেখানে আপনি নিজেদের সাথে মিলতো পাবেনই সেইসাথে ভাষা বুঝতেও খুব বেশি সমস্যা হবে না।আর সিরিয়াল গুলো তৈরীই হয় এমন ভাবে যাতে আপনি মাকড়শার জালের মত আটকে পড়েন।





হয়ত এসকল কারনেই হিন্দি প্রীতি দিন দিন বাড়ছে কিন্ত তাই বলে কি আমরা আমাদের জিনিসের কদর বুঝি না?চ্যানেলের মালিকদের বলছি,আপনার কথা দিয়ে হাতি ঘোড়া না মেরে একটা চ্যানেল সাজান রুচিশীল জিনিস দিয়ে।দয়া করে বিরক্তিকর টক শো,খবর,বিজ্ঞাপন আর পরকীয়ায় ভরপুর বমি উদ্রেক্কারী নাটক বাদ দিন।শংসপ্তক,কোথাও কেউ নেই,রঙ্গের মানুষ বা ভবের হাটের মত বাংলা সিরিয়াল দিয়ে প্রোগ্রাম সাজান।আচ্ছা মত প্রচারনা করুন।তারপর দেখুন তো মানুষ হিন্দি ছেড়ে বাংলা চ্যানেল দেখে কিনা।আমার বিশ্বাস নয় শুধু,আমি জানি মানুষ অবশ্যই দেখবে।কারন আমি আমার ক্যাম্পাস লাইফের পুরোটাতে মুক্তমঞ্চে উপচে পড়া ভীড়ের মাঝে নাটক দেখেছি অসংখ্যবার।এই ছেলেমেয়েদের মাঝেই কিন্ত অনেকে হিন্দি বা ইংলিশে আক্রান্ত।তবুও বাংলা নাটক হলে তার দেখতে যায়।এল আর বি,নগরবাউল,শিরোনামহীন,জলের গান কনসার্ট করলে চিতকার করে গলা মিলিয়ে গান গায়।বসার জায়গা না পেলে দাঁড়িয়ে,সে জায়গা না পেলে মুক্তমঞ্চের পাশের তেতুল আর কাঁঠাল গাছে চড়ে কনসার্ট দেখে।দেশের জিনিসের প্রতি হয়ত আমাদের টান আছে কিন্ত আমাদের আগ্রহ প্রতিনিয়ত নষ্ট করছে যারা বিনোদনের দায়ীত্বে আছে তারা।উপযুক্ত উপকরন পেলে আমরা হয়ত ফিরে আসব।হতে পারে কিছুটা সময় লাগবে কিন্ত ফিরে যে আসব সেটা নিশ্চিত।





একটা টিভি চ্যানেলের মূল বিষয় হচ্ছে বিনোদন।অন্যান্য বিষয়গুলো যদি সেইসাথে থাকে তাহলে ভাল কিন্ত বিনোদন না থাকলে সেই চ্যানেল সম্পূর্ন ব্যার্থ।কালচার কিন্ত এমন জিনিস নয় যেটা মানুষকে ধরে টেবলেটের মত খাওয়ানো যায়।দেখুন আমাদের চ্যানেলগুলো আমাদের জোর করে টক শো খাওয়াতে চেয়েছে তাই আমরা অন্য দিকে চলে গিয়েছি,স্টারপ্লাসের কিন্ত সিরিয়াল খাওয়াতে জোর করতে হয়নি কারন সে শুধু বিনোদন দিয়েছে।আর আমরাও বেস্ট মনে না হলেও কানা মামা হিসাবে তাকে আঁকড়ে ধরেছি।



শেষ করার আগে একটা কথা মনে করিয়ে দিই শিক্ষিত সমাজের এই হিন্দি আর ইংলিশ গ্রুপের বাইরে কিন্ত একটা গ্রুপ আছে।সেটা হচ্চে অশিক্ষিত সমাজ।তারা কিন্ত এখনও মমতাজের বাংলা গান শোনে,সাকিব খান ডিপজলের বাংলা মুভি দেখে।ভাবে দেখুন তো তাহলে কি তারাই আসল দেশ প্রেমিক?তারাই কি মায়ের ভাষার কদর আর সন্মান ধরে রাখছে?তাহলে কি শিক্ষিত আর ক্ষমতাবান হয়েও আমরা নিজেদের কালচার ধারন করার ক্ষেত্রে অনেক অনেক পিছিয়ে পড়ছি এই অতিসাধারন মানুষদের থেকে?নিজের কালচার কে যদি নিচেরা ছোট করি তবে শিক্ষিত হয়ে আমাদের কি লাভ?

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০৯

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: শেষের লাইনগুলা দারুন ভাববার মতো । শাকিব খান ডিপজলের মুভি দেখলে নিন্মরুচির , মমতাজের গান শুনলে রুচিই নাই । আবার আমরাই কিন্তু হলিউডি সিনেমা দেখে ভাবছি, আহা কি হনুরে । তখন কিন্তু আমাদের বিজাতীয় আগ্রাসন গায়ে লাগে না । ভাব এমন, হলিউড তো আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ । আমাদের মনই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ! আমাদের নিজেদেরই ঠিক নেই অন্যদের নিয়ে টানাটানি করি ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩৪

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন।
আমি বাইরের কিছু দেখা বা এঞ্জয় করাকে খারাপ বলে ভাবিনা কিন্ত নিজ কালচারকে সন্মান না করা বা হেয় করা সত্যিই খুব খারাপ।কারন কাক ময়ুরের পেখম লাগালেও কাকই থাকে।আমরা যতই ইংলিশ হিন্দি দেখি থাকবো বাঙ্গালীই।আর সেটাতো লজ্জারও কিছু নয় কারন আমাদের গর্ব করার মত অনেক কিছুই আছে।

২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৩২

হু বলেছেন: বাঙ্গালী জাতিকে লজ্জা দিয়ে লাভ নাই। কারন আমাদের লজ্জা নাই। দোষ ভারতীয় দের নয়। দোষ আমাদের রক্তের।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:২৫

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: আসলে কালচারাল আগ্রাসনের জন্য অন্যদের চেয়ে নিজেদের দোষ বেশি দেয়া উচিত।কারন আমরাই অন্যজিনিস গ্রহন করি, আমরাই নিজেদের কালচারের ১২টা বাজাই।

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২১

মামুন রশিদ বলেছেন: দোষ তো এআর রহমানের নয় । দোষ বিসিবির, দোষ বিসিবি যাদের দিয়ে ইভেন্ট ম্যানেজ করিয়েছে ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:২০

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: না মামুন ভাই আমি মোটেও এ আর রহমানের দোষ দিচ্ছিনা।উনি শিল্পী উনাকে ডেকে নিলে উনি তো আসবেনই।

প্রশ্নটা তো এখানেই যাদের হাতে ইভেন্ট ম্যনেজ করার ভার ছিল তারা কোন দেশী জীব??নিজের দেশের শিল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরার এটা যে কত বড় সুযোগ ছিল সেটা মনে হয় দেশের হাঁস মুরগীও বোঝে। :(

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: লেখাটা মন ছুঁয়ে গেল--------আপনার সাথে একমত

১৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: আপু কথাগুলো খুবই দুঃখ নিয়ে লেখা।হয়ত এমন একদিন আসবে যখন আমাদের এমন কথা আর লিখতে হবেনা।সেই দিনের অপেক্ষায় রইলাম ----

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.