নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ধ্যা প্রদীপ

আমার সমস্ত চেতনা যদি শব্দে তুলে ধরতে পারতাম

সন্ধ্যা প্রদীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুকের ভেতর মৃত নদী (পর্ব পাঁচ)

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৮

আগের পর্ব


ছয়

বর্তমানের প্রেমের সম্পর্কগুলোর একটা অদ্ভুত বিষয় আছে।এ যেন এক প্রেমের জেলখানা!দুজন দুজনকে নানা রকম নিষেধের বেড়াজালে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলে।প্রথম প্রথম হয়ত কিছুই মনে হয়না কিন্ত একসময় তা গলার ফাঁসের মত হয়ে যায়।স্বকীয়তা বা স্বাধীনতা থাকে না নিজেদের।যখন সবকিছু অসহ্য হয়ে যায় তখন একে অন্যের থেকে মুক্তি পাওয়াটাই হয়ে যায় একমাত্র চাওয়া।কিন্ত তাই কি হওয়ার কথা?
একজনকে ভালবেসে তার কাছ থেকে অন্যসব কিছু,সব মানুষ, সব সম্পর্ক ছিনিয়ে নিতে হবে এটা কেমন অবিচার?ছেলেটি ভাবে মেয়েটি তার সব কথা শুনবে তার কথা মত চলবে।মেয়েটি ভাবে সে ছাড়া ছেলেটির জীবনে আর কিচ্ছু টি থাকবেনা,অন্যান্য সব বাদ দিয়ে তাকে ঘিরেই চলবে ছেলেটির জীবন।


বরাবর এই জিনিসগুলো দেখলে শ্রাবণী মহা বিরক্ত হয়।সে মনে মনে বলে, তুষার আমি তোমার জন্য খাঁচা হবো না,তোমাকে আমার হাতে বাঁধা ঘুড়ি হতে হবেনা।আমি বরং খোলা আকাশ হবো,আলতো করে জড়িয়ে রাখব, তুমি ইচ্ছে মতো উড়ে বেড়াবে।

একারনেই তুষারের বান্ধবী স্বর্নার ব্রেক আপ হওয়ার পর সে যখন ঘনঘন তুষারের সঙ্গ প্রার্থনা করতে লাগল তখন শ্রাবণী মন খারাপ করেনি।তারা বরাবরই নিজের নিজের বন্ধুদের সাথে প্রচুর সময় কাটায়।এ নিয়ে দুজনের কারো কোনো অভিযোগ নেই।কিন্ত এই স্বর্না মেয়েটি বেশ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে লাগলো দিনে দিনে।

আসলে সে একসময় ছিল তুষারের বেস্ট ফ্রেন্ড।মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর থেকে সে তুষারের সাথে মেলামেশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিল।কারন তার প্রেমিক সেটা পছন্দ করে না।এই মেয়েটির প্রেমিক ছেলেটি খুবই স্বেচ্ছাচারী আর খারাপ স্বভাবের।নানা রকম যন্ত্রণা লেগেই থাকতো সবসময় তাদের মধ্যে। ছেলেটি অনেকবার স্বর্নার গায়ে হাতও তুলেছে।এখন কিভাবে কিভাবে যেন তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে।ভাঙ্গা মন নিয়ে তাই সে তুষারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছে।

তুষার মেয়েটিকে প্রায়ই সঙ্গ দেয়,শ্রাবণী আপত্তি করেনা।একদিন বিকেলে সে সেজেগুজে তৈরি তুষারের সাথে বাইরে যাওয়ার জন্য এমন সময় তুষার ফোন করে বলল যে স্বর্না তাকে ফোন করে ডাকছে যাওয়ার জন্য,তাই সে এখন আসতে পারবে না।এইদিন শ্রাবণীর বেশ মন খারাপ হলো কিন্ত সে তুষারকে কিছুই বলল না।

সে এইগুলোকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও ব্যাপারটা দিনে দিনে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে লাগল।শ্রাবণী আর তুষারকে একসাথে দেখলেই স্বর্না কেমন হিংসায় জ্বলে ওঠে। তুষার তার বান্ধবীকে প্রায়ই আলাদাভাবে সময় দেয় তবুও তুষারের সাথে শ্রাবণীকে দেখলে সে সরু চোখে তাকিয়ে থাকে।হয়ত তারা এক জায়গায় বসে গল্প করছে , স্বর্না এসে তাদের দুজনের আলাপের মধ্যে বাগড়া দেবে।শ্রাবণী স্পষ্ট বুঝতে পারে মেয়েটা তাকে হিংসা করতে শুরু করেছে। তুষার এগুলো খেয়াল করে কিনা কে জানে?

শ্রাবণীর মেজাজ সপ্তমে উঠলো সেদিন যেদিন সে জানতে পারলো স্বর্না তুষারকে বলেছে-- 'আমি মনে মনে দোয়া করি তোদের সম্পর্ক যেন ভেঙে যায়।'তুষার হেসে হেসে যখন এই গল্প শ্রাবণীর কাছে করছিল তখন তার ইচ্ছা হচ্ছিল তুষারের মাথায় একটা বাড়ি দিয়ে মাথাটা চৌচির করে দিতে।এত দাঁত কেলানোর কি আছে?এটা কি কোনো হাসির কথা?

এইদিনের পর থেকে মেয়েটাকে দেখলেই রাগ হতো তার কিন্ত তাও সে তুষারকে বান্ধবীর সাথে মিশতে মানা করত না।স্বর্না মেয়েটি হিন্দু ধর্মের। তাই খুব সহজে অন্যরকম কিছু হয়ে যাবে এই ভয় তার ছিলনা।হ্যাঁ এছাড়াও তুষারের প্রতি তার বিশ্বাস তো ছিলই কিন্ত তার চেয়েও বেশি ছিল নিজের প্রতি বিশ্বাস।সে ভেবে দেখেছে কেউ যদি সম্পর্কে না থাকতে চায় তবে তাকে জোর করে ধরে রাখা যায় না।আর যে তার সাথে থাকতে চাইবে না তাকে তার ও দরকার নেই। কারন কাওকে হারানোর কষ্টের চেয়ে সম্পর্কে তিক্ততার কষ্টটা বেশি খারাপ।


দিন এভাবেই কেটে যাচ্ছিল কিন্ত কে জানত শ্রাবণীর জীবনে খুব বড় পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে।একদিন সকালে তুষার শ্রাবণীকে বলল দেখা করতে।রেডি হতে না হতেই সে ফোন দিয়ে জানালো স্বর্না জরুরীভাবে ডেকেছে তাই সে ওদিকে যাবে।কি আর করা!শ্রাবণী ভাবলো ডিপার্টমেন্টের দিকে গিয়ে কিছু কাজ সেরে আসবে।


সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই শ্রাবণীর বেশ বড়সড় এক্সিডেন্ট হয়ে গেল। এম্বুলেন্স, ডাক্তার, হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি সব মিলিয়ে এক ভয়ানক অবস্থা।শ্রাবণীর আত্মীয়স্বজনরা খবর পেয়ে অল্পক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালে হাজির হলো।অবস্থা খারাপ দেখে তাকে আর ও ভাল হাসপাতালে ভর্তির জন্য এম্বুলেন্সে করে নিয়ে চলে গেল।

চলবে---

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৪৩

ওমেরা বলেছেন: উদারতা ভালো তবে শ্রাবনীর এতটা উদারতা দেখানো ঠিক হয়নি। ভালোবাসা যত গভীর ভালোবাসার ভালোবাসার মানুষের জন্য মনে ততটাই হিংসা তৈরী হয়।
গল্প ভালো লিখেছেন ধন্যবাদ ।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবা। পরের পর্বে আমন্ত্রণ রইল।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: উদার হওয়া মানবিক হওয়া চরিত্রের ভালো দিক । তবে অন্যজন এইসবের সুযোগ না নিতে পারে তা লক্ষ্য রাখাও দরকার ।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৮

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: একদম ঠিক।তবে বোকামি মানুষই করে--

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রাবনীর মতো বাস্তবে কোনো নারী নেই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: কি জানি?হতে পারে-

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৩

শোভন শামস বলেছেন: ভালো লিখেছেন ধন্যবাদ ।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: কেউ যদি সম্পর্কে না থাকতে চায় তবে তাকে জোর করে ধরে রাখা যায় না।আর যে তার সাথে থাকতে চাইবে না তাকে তার ও দরকার নেই। কারন কাওকে হারানোর কষ্টের চেয়ে সম্পর্কে তিক্ততার কষ্টটা বেশি খারাপ।

১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৪

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: হ্যাঁ ---

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.