নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সভ্যতার সংকট

সভ্যতার সংকট › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান সরকার আধুনিকতার নামে তরুণ সমাজকে কোন পথে পরিচালিত করছে !(পার্ট–১)

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৪

### রোমান্টিসিজম বা রোমান্টিক লাভ বা প্রেমধর্ম।

### প্রেম ধর্ম যে ভাবে তরুণ সমাজের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছে।

### কেন শুধু রোমান্টিক প্রেমকে কেন্দ্র করে নাটক, সিনেমা ও গান তৈরি করা হচ্ছে ।

### ইসলাম বনাম স্যাকুলার প্রেমধর্মের একটি তুলনামুলক পর্যালোচনা ।


রোমান্টিসিজম বা রোমান্টিক লাভ বা প্রেমধর্মঃসাধারণভাবে বিবাহ পূর্ব যুগল সম্পর্ককে রোমান্টিসিজম/রোমান্টিক লাভ বলা হয়।একে আবেগপ্রবন বা সেন্টিমেন্টাল লাভ ও বলা হয়। কিশোর–কিশোরীরা তের চৌদ্দ বছর বয়স থেকেই তার বিপরীত লিঙ্গের প্রতি টান/আবেগ অনুভব করে থাকে। তের চৌদ্দ বছর থেকে পূর্ণ যৌবনে পদার্পণ অর্থাৎ ম্যাচুরিটি আসার আগে সাধারণত বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। যদি না ছোট কাল থেকেই পরিবার থেকে তরুণ-তরুণীরা বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা অর্জনের প্রশিক্ষন পায়। তের চৌদ্দ বছর বয়স থেকেই তার বিপরীত লিঙ্গের প্রতি টান/আবেগ অনুভব করা শুরু হয়। আর আট নয় বছর থেকেই বিচার বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা তৈরি হয়। এই জন্য আগে বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা(Judgement power)অর্জন না করলে আবেগ প্রবনতাই বেশী কাজ করবে । ফলে সমাজ যে দিকে তাকে পরিচালিত করবে সে সেই দিকেই পরিচালিত হবে । কারন “বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা” অর্জন না করলে ব্যাক্তির এই আত্মশক্তি চিরতরে হারিয়ে ফেলে সমাজের (পরিবার,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,শিক্ষা ব্যবস্থা, গন মাধ্যম তথা টেলিভিশন,ইন্টারনেট জগত,চলচিত্র-হিন্দি,সিনেমা,সিরিয়াল,হিন্দি নাচ-গান, অশ্লীলতা) দাশে পরিনত হবে ।ফলে এই সমাজ যে পথে পরিচালিত করবে তা ভাল না মন্দ, মানব সমাজের জন্য কল্যাণকর না অকল্যানকর এই বোধশক্তিটুকু হারিয়ে ফেলে আবেগ তাড়িত হয়ে অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে এমনকি হচ্ছে।জগত সংসার আবেগ দিয়ে চলে না, জগত সংসার চলে জ্ঞান দিয়ে। কিন্তু আজকের এই নোংরা সমাজ ব্যবস্থায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বা আধুনিকতার নাম দিয়ে তরুণ সমাজকে রোমান্টিক লাভ বা প্রেমের মোহমায়ায় ডুবিয়েরেখেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকারা পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের উৎসাহিত করছে প্রেম চর্চা করার জন্য।প্রতিটি নাটক সিনেমা, গান তৈরি করা হচ্ছে রোমান্টিক লাভ বা প্রেমকে কেন্দ্র করে।কেন প্রেমকে কেন্দ্র করে প্রতিটি নাটক সিনেমা, গান তৈরি করা হচ্ছে?কেন ভারতীয় অপসংস্কৃতি প্রচারের জন্য ভারতীয় চ্যানেল গুলো বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে?

প্রেম ধর্ম যেভাবে তরুণ সমাজের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছেঃ রোমান্টিক প্রেম তরুণ-তরুনীদের মধ্যে পারস্পারিক তীব্র মোহ তৈরি করে।তখন প্রেমিক প্রেমিকাকে কল্পনা করতে ভাল লাগে, সবসময় ভাবতে ভাললাগে, কথা বলতে ভাল লাগে,দেখার জন্য উদ্বেগ অস্থিরতা কাজ করে,একে অপরকে কাছে পেতে মন চাই,রোমান্টিক গান, সিনেমা নাটক যখন তাদেরকে আরও প্রেমের উস্কানী দেয় তখন তারা আরও বেশী আবেগ তাড়িত হয়ে পরে। তাদের মধ্যে সারাক্ষণ একটায় চিন্তা চেতনা কাজ করে শুধু ঐ ছেলে বা মেয়েটিকে নিয়ে।অনেকেই মনের অজান্তেই বলে ফেলে- শয়নে তুমি, স্বপনে তুমি,ধ্যান-জাগরনে তুমি,সবসময় তুমি। এতে সবসময় এই “তুমি”কে নিয়ে চিন্তা করতে করতে ব্যক্তি তখন “আমি” কে হারিয়ে ফেলে।

আমি মানে হচ্ছে ব্যক্তির“বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা” যা হারিয়ে ফেলে নিজের খেয়াল খুশি অনুযায়ী চলে অথবা তার প্রেমিক বা প্রেমিকা যে নির্দেশনা দেয় সেই অনুযায়ী চলে।ব্যক্তির আর নিজস্বতা বলতে কিছুই থাকে না সব কিছুই প্রেমিকার কাছে সমর্পণ করে দেয়।ফলে ব্যক্তি হয়ে পরে আত্ম বিচ্ছিন্ন। এই আত্ম বিচ্ছিন্নতার প্রাথমিক ক্ষতি হল,মন বসেনা পড়ার টেবিলে,তাতে লেখা পড়ার ক্ষতি হয়,অন্য কোন কাজে মন বসে না,অর্থ সম্পদের অপচয় হয়,শারীরিক ক্ষতি হয়,মানসিক টেনশন কারন ব্লেকমেইল বা পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এই রোমান্টিক প্রেমে জড়িয়ে পড়েব্লেকমেইলের স্বীকার হয়ে অনেক মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা অকালেই তাদের শিক্ষা জীবন থেকে যেমন ঝরে পড়ছে,তেমনি তাদের সারা জীবন অন্ধকারের অতলে ডুবে যাচ্ছে। অনেক মেয়ে প্রেমিকের কাছে জীবন যৌবন বিলিয়ে দিয়ে,প্রতারণার স্বীকার হয়ে পতিতালয়ের মত অন্ধকার জগতের জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।

প্রেমিক বা প্রেমিকা পালিয়ে যাতে না যায় এই ভয়ে মিথ্যা কথা বলা থেকে শুরু করে যত ধরনের পলিসি আছে সব ধরনের পলিসি গ্রহন করে থাকে।ডিজিটাল যুগে এসে মোবাইল ফোন,ফেসবুক,টুইটারের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো মিথ্যা আর প্রতারনা ডিজিটাল মাত্রাই বাড়িয়ে দিয়েছে। তরুণ তরুণীরা একে অপরকে বাগিয়ে আনার জন্য নিজে যা না তার চেয়ে বহুগুন বেশী মাত্রায় নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করে। পরে যখন ভুলিয়ে ভালিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তখন তারা নিজেদের ভালভাবে চিনতে পারে এবং বলে- “তোমাকে আগে যা ভেবে ছিলাম তুমি তা নও”শুরু হয় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য এবং ঝগড়া বিবাদ। আজকের যুগে অধিকাংশ প্রেম করে যারা বিয়ে করে তারা থাকে পারিবারিক অশান্তিতে। এই পারিবারিক অশান্তি থেকেই ডিভোর্সের হার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।ঢাকা শহরের মত শহরাঞ্চলে ডিভোর্সের হার গ্রামাঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশী।

প্রেম করে আত্ম বিচ্ছিন্নতার ক্ষতির চূড়ান্ত দিক হল-রোমান্টিক প্রেমে পড়ে প্রতারনা বা ব্লেকমেইলের স্বীকার হলে অথবা পারিবারিক অশান্তি চরম মাত্রায় পৌঁছুলে-তখন ব্যক্তির মধ্যে হীনমন্যতা কাজ করে, উদাসীনতায় একাকীত্ব/নীরব থাকতে ভাল লাগে।ঘরে থাকতে ভাল লাগে না। নির্জন জায়গায় গিয়ে একাকী বসে থাকতে মন চায়।ব্যক্তি নিজেকে নিঃস্ব, শূন্য মনে করে।এতে ব্যক্তিকে বিষণ্ণতা আচ্ছন্ন করে ফেলে। ফলেআত্মবিচ্ছিন্নতা আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে ফেলে।

কেন শুধু রোমান্টিক প্রেমকে কেন্দ্র করে নাটক, সিনেমা ও গান তৈরি করা হচ্ছে এবং কারা এইসব তৈরি করছেঃ

১। আদর্শ পরিবর্তন করাঃপ্রথমত, রোমান্টিক প্রেমকে কেন্দ্র করে নাটক, সিনেমা ও গান তৈরি করাপ্রধান উদ্দেশ্য আদর্শিক। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আদর্শ নির্মাণমাতা হয়ে আবির্ভূত হয়েছে এবং নতুন প্রজন্মের তরুণ তরুনীদের আদর্শ নির্মাণ করে সেই দিকেই পরিচালিত করছে।নাট্যকার ও সাহিত্যিক উইলিয়াম সেক্সপিয়ার একসময় ওয়েস্টার্ন বুদ্ধিজীবী সমাজে খুব একটা জনপ্রিয়তা ছিল না।কারন তার সাহিত্যে রোমান্টিসিজম কমেডি- ট্রাজেডি ছাড়া জ্ঞানগভীর মুলক কোন দিক নাই (ঠিক বাংলাদেশের হুমায়ুন আহমেদের মত শুধু হাসি, ঠাট্ট্ আবেগ, অনুভুতি ছিল সাহিত্যের মুলউপজীব্য)কিন্তু পরবর্তীতে সেক্সপিয়ার নিজেও জানত না যে তার নাটক ও সাহিত্য ওয়েস্টার্ন সমাজে এত জনপ্রিয় হবে। এই ভাবে জনপ্রিয়তার বাড়ানোর কারন হল- ইংল্যান্ডের শাসক ও নীতি নির্ধারকেরা দেখল যে সেক্সপিয়ারের রোমান্টিক ধর্মী চেতনা যদি বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায় ।তবে তাদের কলোনি বিস্তার করা সহজ হবে।কারন রোমান্টিসিজমের মধ্যে তরুন সমাজকে ডুবিয়ে রাখলে দেশে দেশে সামাজিক নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পরবে যেহেতু তরুন প্রজন্মই দেশের কর্ণধার। তখন বিভিন্ন জাতি গুলোর উপর আধিপত্য বিস্তার করা যাবে। এরপর বিশ্ব ব্যাপী সেক্সপিয়ারকে নিয়ে জোর প্রচারনা শুরু করা হল।

সেক্সপিয়ারের ট্র্যাজিক ও কমেডিক নাটক গুলোতে রোমান্টিসিজমকে সবার উর্ধে তুলে ধরা হয়েছে।সেক্সপিয়ারের রোমিও ও জুলিয়েট নাটকে লিখেছেন- প্রেমিক রোমিও প্রেমিকা জুলিয়েটকে বলে-“ ওগো আমার উজ্জ্বল পরী, তুমি যে আমার স্বর্গের নারী(দেবী)। অন্য আরেক জায়গায় রোমিও বলে-“ তোমার ঠোঁটের স্পর্শ করে আজ আমি পাপ মুক্ত হলাম”। এভাবে প্রেমিক প্রেমিকাকে দেবীর সঙ্গে তুলনা করে নিজেকে সমর্পণ (Prostation) করেছে।

রোমিও(প্রেমিক) জুলিয়েটকে(প্রেমিকা) উদ্দেশ্য করে বলেছে-“জুলিয়েট আমি চাদের নামে শফত করে বলছি আমি তোমাকে ভালবাসি”। রোমিও কথা শেষ করতে না করতেই জুলিয়েট বলে উঠে-“না, চাদের নামে নয় সে প্রতিনিয়ত বদলায়। তোমার ভালবাসা তাহলে অনিশ্চিত হয়ে উঠবে”। রোমিও বলে- “ তাহলে কার নামে শফত করবো”।

জুলিয়েট বলে- “যদি করো তো তোমার নিজের সুন্দর সত্তার(পবিত্র মন) নামে করো। কারন সেটিই হল আমার আরাধ্য দেবতা, আমি তাকেই বিশ্বাস করবো”।( সুত্র- উইলিয়াম সেক্সপিয়ার- রোমিও ও জুলিয়েট)।

এটাই রোমান্টিসিজমের চরম পর্যায়। যেখানে প্রেমিকা প্রেমিককে দেবতা তথা ঈশ্বরের পর্যায়ে দাঁড় করিয়েছে। ঈশ্বরের জায়গায় প্রেমিককে আরাধ্য বিষয়(Object)গ্রহন করে ইবাদত শুরু করেছে। বাংলাদেশের নাটক,সিনেমা ও গানেও রোমান্টিক সম্পর্ককে মোহনীয় করে তুলে ধরেছে। বাংলা সিনেমার গানে বলা হয়েছে- “ আমার জিবনেও তুমি মরনেও তুমি, তুমি শুধু তুমি, তুমি শুধু তুমি” । আরেকটা সিনেমার গান হল- “তুমি আর আমি আর কেউ নয়, এমন একটা যদি পৃথিবী হয়। মিলনের সুরে ভরে যায় বুক সেখানে আছে শুধু সুখ আর সুখ” । অন্য আরেকটা গানে বলা হয়েছে-“ একদিকে পৃথিবী অন্যদিকে তুমি যদি থাকো, আমি তোমারি কাছে যাবো অন্য কোথাও যাবো নাতো।

এই গানে রোমান্টিসিজমকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে- বাবা-মা, ভাইবোন, আত্মীয় স্বজন ও সমগ্র পৃথিবী শুধু ব্যক্তির কামনা বাসনা ও আত্ম সুখের কাছে সবই তুচ্ছ। রোমান্টিসিজম বলে যে এমন একটা পৃথিবী রচনা করতে হবে যেখানে তুমি আর আমি ছাড়া আর কেউ থাকবে না এবং তোমার জন্য আমি এই পৃথিবী ছাড়তে পারব,আর যত সুখ প্রেমের মধ্যেই রয়েছে। এভাবে মোহনীয় করে ব্যক্তিগত স্বার্থ সুখকে আল্লাহ,খোদা, জান-প্রান,মরন ইত্যাদির সমপর্যায়ে উপনীত করেছে। এই পর্যায়ে উপনীত হলে প্রেম হয়ে যায় প্রেমিক প্রেমিকার ধর্ম। আর সেটা হল প্রেম ধর্ম। তখন অনেকেই বলে- “প্রেম কোন ধর্ম,ধনী- গরিব, জাত-বংস কিছুই মানে না”। কারন তাদের কাছে প্রেম নিজেই একটা ধর্ম। সাধারণত এক ধর্ম আরেক ধর্মকে মানতে চায় না। পশ্চিমা সমাজ বিজ্ঞানী উলরিচ বেক ও এলিজাবেথ বেক তাদের রোমান্টিক প্রেম সম্পর্কিত গবেষণাগ্রন্থ “The Normal Chaos of Love” বইতে বলেছেন-“Romantic love is secular religion”রোমান্টিকপ্রেম হল ইহজাগতিকতাবাদীদের ধর্ম।অর্থাৎ রোমান্টিক প্রেম হল যারা পৃথিবীকে শেষ মনে করে এবং পরকালযে আছে এই যৌক্তিক মহাসত্যকে অস্বীকার করে তাদের ধর্ম। সহজ ভাষায় বলা যায়- রোমান্টিক প্রেম হল নাস্তিকদের ধর্ম।তারা পৃথিবীর যত সুখ খুজে পায় রোমান্টিক প্রেম ও পরক্রিয়া প্রেমের মধ্যে।

আমাদের সমাজের তরুণদের সবচেয়ে দুর্বল পয়েন্ট হল তাদের কিশোর বয়সের আবেগ । এই দুর্বলতাকে পুজি করে এদেশের তরুনদের স্যাকুলার আদর্শ/নাস্তিকতাবাদী আদর্শ কৌশলে গ্রহন করিয়ে পথভ্রষ্ট করার জন্য গনমাধ্যম গুলো উঠে পড়ে লেগেছে এবং প্রেম রোমান্টিককে কেন্দ্র করে যত নাটক,সিনেমা, গান তৈরি করে যাচ্ছে।

ইসলাম বনাম স্যাকুলার প্রেমধর্মের একটি তুলনামুলক পর্যালোচনা নিচে দেয়া হলঃ



এভাবে আজকের তরুন প্রজন্ম প্রেমে ডুবে থেকে স্যাকুলার প্রেমধর্মের ইবাদত করে যাচ্ছে।

২। অবাধ যৌনাচার(Free sex) কালচার চালু করাঃ দ্বিতীয়ত, প্রেমধর্মের চর্চা করার কারনে প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে পারস্পারিক আকর্ষণ অনুভব থেকে তাদের মধ্যে অবাধ মেলামেশার একটা অবস্থা/ পরিবেশ তৈরি হয়। ফলে তারা যৌবনের আকর্ষণে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। ফলে তরুন তরুনীদের মধ্যে ব্যভিচারী অবৈধ সংস্কৃতি/ কালচার চালু হয়। রোমান্টিক প্রেমকে কেন্দ্র করে নাটক, সিনেমা ও গান তৈরি করা আরেকটি মুখ্য উদ্দেশ্য হল ব্যভিচারী অবৈধ সংস্কৃতি/ কালচার চালু করা ।এর ফলে সমাজের নীতি নৈতিকতা যেমন সমাজ থেকে তিরোহিত তেমনি মানুষ হয়ে পড়ে ইন্দ্রিয়প্রবণ বা পশুপ্রবৃত্তি প্রবণ। এই ইন্দ্রিয় প্রবনতা থেকে মানুষ পশুতে রুপান্তরিত হয়। পশুদের যেমন কোন নীতি নৈতিকতার দরকার হয় না তেমনি মানুষও নৈতিকতাহীন হয়ে পড়ে। যারা ব্যভিচার কালচারে নিমজ্জিত তারা প্রকৃত পক্ষে মানুষরুপী পশু।

বিয়ে প্রথার যে সিস্টেমটা ব্যভিচার না করার জন্যই দেওয়া হয়েছে। পশু পাখিদের মধ্যে বিয়ে সিস্টেম নাই। তাদের বিয়ে করতে হয় না। কিন্তু মানুষ তো আর পশু না এই জন্য মানুষের জন্য বিয়ের সিস্টেমরয়েছে। বিয়ে সিস্টেম মানুষকে পশু থেকে মানুষে রুপান্তরিত করে। পশু পাখির মধ্যে বিয়ে ছাড়া অবাধ যৌনাচার রয়েছে, মানুষের মধ্যেও যদি বিয়ে ছাড়া অবাধ যৌনাচার থাকে তাহলে মানুষ ও পশু পাখির মধ্যে পার্থক্য কোথায়? বিয়ে প্রথায় মানুষ ও পশুর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে।আজকের সমাজে বয়ফ্রেন্ড,গার্লফ্রেন্ড, দোস্ত কালচারের(বিবাহপূর্ব সম্পর্কব্যভিচার/অবৈধ যৌন সম্পর্ক) মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আধুনিকতার নাম দিয়ে মানুষকে পশুতে রুপান্তর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

৩। পরিবার প্রথা উচ্ছেদঃ তরুন বয়সে যখন বিভিন্ন ছেলে মেয়ের সঙ্গে ব্যভিচারী কালচারে লিপ্ত হয়। যে বয়সটা সুন্দর চরিত্র গঠন করার উপযুক্ত সময় সেই বয়সেই প্রেমকরে ব্যভিচারী কালচারে লিপ্ত হয়ে চরিত্রহীন হয়ে পড়ে। এই বহুগামী কালচার প্র্যাকটিস করার কারনে বিয়ের পরে একজন মাত্র স্ত্রী/ স্বামী দিয়ে সন্তুষ্ট(satisfaction) থাকতে পারে না। ফলে বিয়ের পরে এই তরুন তরুনীরাই(অফিস আদালতে তাদের সহকর্মী, কলেজ ভার্সিটিতে তাদের সহপাঠী বা বন্ধু বান্ধবের দিকে প্রভাবিত হয়ে) পরকীয়া দিকে ঝুঁকে পরে। সাধারন ভাবেই স্বামী বা স্ত্রী যখন পরকিয়ার দিকে ঝুঁকে তখন তাদের কিছু অনিয়মিত ও অস্বাভাবিক আচার- ব্যবহার, চালচলনে কিছুটা পরিবর্তন বা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এই পরিবর্তনের তখন ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে সন্দেহ প্রবনতার তৈরি হয়। এই সন্দেহ প্রবনতা থেকে আস্থাহীনতার তৈরি হয়। তখন যদি স্বামী বা স্ত্রী ভাল কাজেও যায়, একে অপরকে সন্দেহের তীর বিদ্ধ করে মনে করে কোন অপকর্মে জানি গেলোরে!!!!!!!!!!!ফলে স্বামী বা স্ত্রী যখন বুঝতে পারে কেউ একজন পরকিয়া সাথে জড়িত। তখন শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। অবশেষে সন্তান সন্ততির জীবন বিপন্ন করে বিবাহের বিচ্ছেদ ঘটে যায়। অথবা পারিরারিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে আত্ম হত্যার পথ বেছে নায়।এভাবে পরিবার ভাংতে ভাঙতে ইউরোপ আমেরিকার মত পরিবার প্রথা ধীরে ধীরে উচ্ছেদ হতে থাকবে।

বাংলাদেশের স্যাকুলার বা নাস্তিকরা(হুমাউন আজাদ,কাজী মোতাহের হোসেন চৌধুরী,মুহম্মাদ জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবির,মুন্তাসির মামুন)এমন একটা সমাজ গঠন করতে চায় যেখানে কাউকে বিয়ে করতে হবে না কোন পরিবার প্রথা থাকবে না, শুকরের মাংস(বেকন) জায়েজ,মদ জায়েজ, পরকীয়া প্রেম জায়েজ,কোন নীতি নৈতিকতা থাকবে না। । অর্থাৎ মানুষকে তারা চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদী চেতনা মনে করে-“মানুষ পশুর মত। তবে অন্যান্য পশুর তুলনায় উন্নত মানের পশু”। তাই পশুর সমাজে নীতি নৈতিকতার দরকার কি। অথচ ইসলাম মনে করে নীতি নৈতিকতা মানুষকে উন্নত মানের জীবে পরিনত করে। এত উন্নত যে ফেরেশতারা পর্যন্ত মানুষকে সিজদা করেছে এবং মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি(নেতাবাইমাম) স্বরূপ পৃথিবীতে মানুষের কল্যাণের প্রতিনিধিত্বকরবে।

আজকাল পেপার পত্রিকায় যে হারে আত্মহত্যা ও ডিভোর্সের রিপোর্ট আসতেছে, যা পাছ-সাত বছর আগে ছিল না।এর প্রধান কারন হচ্ছে- রোমান্টিক প্রেম ও পরক্রিয়া প্রেম আর মুল কারন হচ্ছে- ইসলামী জীবন বিধান থেকে সরে এসে ইউরোপ আমেরিকার আধুনিকতাবাদকে ধর্ম হিসেবে গ্রহন করা। বাংলাদেশ ডিজিটাল হওয়ার সাথে সাথে ডিজিটাল বিপদ চলে আসতেছে।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫২

নিলু বলেছেন: আপনার কথা , যুক্তি উপস্থাপন পড়লাম , যে কথা আপনি বলতে চেয়েছেন তার মুল কথা বোধ হয় ডিজিটাল যুগ , কিন্তু দুনিয়া ব্যাপী ডিজিটাল এর যুগ আগমন হয়েছে তার থেকে আমরা ফিরে আসবো কিভাবে ? আর ফিরে বা বিরত থাকলেই কি আমরা এগুতে পারবো ? স্বভাব , চরিত্র , ভালো / মন্দ গ্রহন করা না করা একান্তই নিজের উপর নির্ভরশীল ব্যাপার , তাই উগ্রবাদ , অশ্লীলতা , বিধর্মী কাজ থেকেও বিরত থাকার জন্য, যার যার ধর্মের অনুশাসন রয়েছে , আবার চাহিদার সাথে যোগানের সম্পর্ক অঙ্গাওঙ্গি ভাবে জড়িত , কোনটি গ্রহণযোগ্য আর কোনটি না তা আমাদেরই বেছে নিতে হবে নিচ্চয় , তাই প্রবাদে আছে --- দেখাদেখি চাষ আর দেখাদেখি বাস , এককালে এদেশে ভারতিয় শাড়ী এবং বিড়ি খুব জনপ্রিয় ছিলও কিন্তু এখন আর চলে না , তা যদি এখন মাংনাও দেন , তা আর চলবে না , তবে আবার প্রবাদে আছে == বাঙ্গালী মাংনা পেলে নাকি আলকাতরাও খায় ==। সৃষ্টি কর্তা দুনিয়া ব্যাপী সব কিছু সৃষ্টি করে দিয়েছেন তার মধ্যে থেকে দেখে শুনে ভোগ করতে হবে বা করতে হয় । মাকাল ফল পাকলে দেখতে এতো সুন্দর যে তার থেকে লোভ সামলানো খুব কঠিন , কিন্তু তা আমরা খেতে চাই না বা তার লোভ থেকে বিরত আছি কিভাবে ?

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:০৩

সভ্যতার সংকট বলেছেন: ডিজিটাল কেন অন্য কোন যুগই চির কাল থাকে না থাকবে না। দেশে দেশে সামাজিক কাঠামো পরিবর্তন হলে পুরো যুগটায় পরিবর্তন হবে। এই জন্য (ইরানের মত) প্রচলিত নোংরা সমাজকে সংস্কার করার জন্য, জালিম শাসকদের গন আন্দোলনের মাধ্যমে উৎখাত করতে হবে।তখন ডিজিটাল যুগ কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.