নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানব মন বুঝে, সাধ্য আছে কার ! কখনো আবেগী গাঁথুনিগুলো যেন নিরেট কনক্রিট কখনো আবার গভীরে সাজানো আবেগগুলো- সৌরভে সুবাসিত হয়ে আনন্দে লীন !
নিউ ইয়র্ক থেকে বিমানে ৬ ঘন্টার ট্রাভেল ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো। এখানকার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর সুন্দর সৈকত গুলোর মধ্যে একটি। জানালা দিয়ে তাকিয়ে পড়ন্ত সূর্যের মায়াবী আলোয় মন ভরিয়ে আমাদের প্লেনটি বিমানবন্দরের মাটি স্পর্শ করে। এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সি কল করে সোজা হোটেল রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নেই।
আমি গরমের ছুটি কাটাতে স্বামীর সাথে এসেছি ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো শহরে। এই শহরটি আমেরিকার সুন্দর শহরগুলির একটি। এখানে কখনো চরম আবহাওয়া দেখা যায় না। উত্তর আমেরিকা যখন তুষারে আবৃত থাকে তখন এই শহরে বসন্তের আবহাওয়া। জুলাই আগস্ট মাসে যখন সমস্ত আমেরিকাতে গরমে সবাই অস্থির তখন এই শহরে মৃদু মন্দ বাতাস বয়ে যায়। এটা একটা বড় কারন এখানে পর্যটকদের ভীড় হওয়ার।
আমেরিকায় রিসিশনের পর ডেমস্টিক ফ্লাইটে কোন এয়ার লাইনস আর খাবার সরবরাহ করে না। অবশ্য খাবার থাকে কিন্তু ডলার খরচ করে কিনে খেতে হয়। প্লেনের টুনা ফিশ স্যানডউইচ রসনা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়, আমাদের মত ভেতো বাংগালীদের জন্য। তাই হোটেল রুমে ঢুকেই বাংগালী ফুড কোথায় পাওয়া যায় তার খোঁজে গুগল করি। গুগল সার্চ করে জেনে নেই বেস্ট ইনডিয়ান ফুড কোথায় আছে। হোটেলের বেশ কাছেই একটি ইনডিয়ান খাবার হোটেলর সন্ধানে আমরা ছুটে যাই।
রেস্টুয়ারেন্টির নাম "ইনডিয়ান শেফ"। ভেতরে ঢুকে মনোরম ডেকোরেশন দেখে মন জুড়িয়ে গেল। মনে মনে ভাবলাম খাবারের মান যেন ঠিক এমনই হয়। এই রেস্টুরেন্টেটিতে বুফে আর অর্ডার দুভাবেই খাওয়া যায়। বুফের খাবারে চোখ বুলিয়ে পছন্দ না হওয়াতে আমরা খাবার অর্ডার করতেই মনস্থির করি। খাবার অর্ডার করে বসে আছি তখনই চোখ পড়লো আমাদের টেবিলের সামনের টেবিলে বাংগালী এক মেয়ের দিকে। মেয়েটির বয়স বড়জোর বত্রিশ এর বেশী নয়। সাথে প্রায় তিন বছরের ফুটফুটে একটি বাচ্চা মেয়ে। খাড়া নাক, বড় বড় চোখের হাল্কা পাতলা মায়াবী চেহারার মেয়েটিকে প্রথম দেখাতেই বেশ আপন মনে হলো। এমনিতেই বিদেশ বিভূঁইয়ে সব বাংগালীকেই খুব আপনার আপন মনে হয় । চোখাচোখি হতেই মুচকি হাসি দিয়ে "হ্যালো" বলাটা এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।
বললাম "হ্যালো"
মেয়েটি নিজের আসন ছেড়ে উঠে এলো । হেসে দিয়ে বলল "সত্যি নিজের দেশের লোক দেখে খুব আনন্দ লাগছে। এদিকটায় বাংগালী তেমন আসেনা, আপনারা কোথায় থাকেন"?
বললাম "আমরা এখানে বেড়াতে এসেছি, থাকি নিউইয়র্ক"।
"নিউইয়র্ক" আপন মনেই বিড়বিড় করলো কিছুটা উদাসীন হয়ে।
"কতদিন থাকবেন এখানে" আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলো
"আজ একদিন চলেই গেলো, আরও চার দিন আছি"।
"আমি এখানেই থাকি একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করছি। আজ আমার মেয়ের জন্মদিন ছিল তাই এখানে এসেছি ডিনার করতে, আপনার ফোন নাম্বার টা দেওয়া যাবে"?
"অবশ্যই"।
সে আমার ফোন নাম্বার তাঁর সেল ফোনে এন্ট্রি করে নেয়। ডিনার শেস করে আমরা স্বামী স্ত্রী হোটেলে ফিরে যাই।
মেয়েটির নাম অদিতি রহমান। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর সাথে আমার পরিচয় ।
সকালের নাস্তা শেষ করে বোর্ডওয়াক ধরে হাটতে থাকি। বোর্ড ওয়াকের দুই পাশে সারি সারি দোকান বাহারী জিনিষ দিয়ে সাজানো । গাংচিলের উড়াউড়ি দেখতে দেখতে আপন মনেই হেটে চলি । আজ শনিবার হওয়াতে সকালেই পর্যটকদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করলাম।
হঠাত মুঠো ফোন বেজে---"অদিতি" নামটি ভেসে উঠে।
সালাম দিয়ে জানতে চাইলো "কি করো "।
"এই তো হাটছি, সমুদ্র দেখছি"।
"যদি তোমার কোন সমস্যা না হয় আমি আসতে পারি কি"?
"আরে না, সমস্যা আবার কি, তুমি আসলে ভালোই হবে, জমিয়ে গল্প করা যাবে"।
"আচ্ছা"। ছোট নিঃশ্বাস ফেলে ফোন রেখে দেয় অদিতি।
মেয়েটির কোথায় যেন খুব দুঃখের ছোঁয়া আমাকে উদাসী করে তোলে। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশে বাস করে সম্মানজনক জীবন জীবিকা থেকেও কেন মেয়েটির ভেতর এত বেশি হাহাকার খুব জানতে ইচ্ছে করে। হয়ত আমাকে বললে তার মনের ভার কিছুটা লাঘব হবে। আর্থিক সামজিক কোন সাহায্যর তার প্রয়োজন নেই কিন্তু মানসিক ভাবে কিছুটা শান্তি তো আমি তাকে দিতে পারি, এটাই বা কম কি!! এমন ভাবনায় পেয়ে বসে ।
প্রায় আধা ঘন্টা পর অদিতিকে দেখতে পেলাম তার মেয়েটিকে সাথে নিয়ে বালির উপর দিয়ে হেঁটে আসছে। কি যে সুন্দর লাগছে মা মেয়ে দুইজনকেই। পরনে নীল রঙের জিন্সের সাথে হাফ হাতা সাদা টিশার্টে বেশ মানিয়েছে তাঁকে। দুর থেকে হেসে হাত নাড়লো সে। বাচ্চা মেয়েটি কাঁধ পর্যন্ত চুল ঝাঁকিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে আসছে। কাছে এলে গাল টিপে দিয়ে বললাম-- কি নাম তোমার? ছোট মুখটিতে ঠোঁট ফুলিয়ে বলল----অরু।
হাটতে হাঁটতে তিনজনে অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেলাম। অনেক কথার ফাঁকে মেয়েটির চোখে আর নিঃশ্বাসে খুব শূন্যতা বুঝতে পারলাম। খুব জানতে ইচ্ছে করছে চমৎকার প্রাণ খোলা হাসিতেও এতো বিষণ্ণতা কেন লুকিয়ে আছে। সূর্য মাথার উপর উঠে গেছে। ভাবছি হোটেলে ফেরৎ যাব । ঠিক তখন অদিতি আবদারের সাথে বলে উঠলো "দিদি আজ আমার বাড়ী লাঞ্চ করবে চল"।
কিন্তু আগে থেকেই লাঞ্চের জন্য রেস্তুরাতে সিট রিজার্ভ করা আছে তাই যেতে অক্ষমতা জানালাম।
আগামী পরশু চলে যাব, ভাবলাম মেয়েটিকে কিছুটা সময় দেই হয়ত এই বিদেশ বিভূঁইয়ে আপনজন তেমন কেউ নেই।
হেসে বললাম---- "আগামী কাল রাতে তোমার বাড়ী খাবো, কি বলো"?
আনন্দে মেয়েটির চোখের কোনে চিক চিক করে উঠলো। সাথে সাথে জানতে চাইলো " তোমার পছন্দের খাবারের নাম বলো আমি সব রেঁধে রাখবো" ।
শুধু বললাম---"পাগলী আমি সব খাই। তোমার পছন্দ মত রেঁধে রেখো"।
সান ডিয়েগো এসেছি আজ তিনদিন। আজকের সকালটা ভারি মিষ্টি লাগছে। জানালার ভারি পর্দা সরিয়ে দিতেই ঝক ঝকে রোদ দেখে মন ভরে গেল। সেই সাথে বিচ ভিউ রুম হওয়াতে সৈকতের পুরোটাই হোটেল রুম থেকে দেখা যায়। সূর্য উঠে গেছে, বিচে এখনো মানুষ তেমন আসেনি। সী গালের উড়াউড়ি বেশ লাগছিল দেখতে। জানালার পাশে বসে সমুদ্র সৈকতের দিকে চেয়ে আছি আর মনের ভেতর "অদিতি" খচ খচ করতেই লাগলো।
সারাদিন আশে পাশে ঘুরেই সময় কেটে গেলো। দুপুরে ম্যাডেটেরিয়ান রেস্তোরাঁ থেকে ভুড়িভোজ সেরে হোটেল রুমে এসে ভাত ঘুম দিলাম। বিকেল পাঁচটায় তৈরি হয়ে ঠিকানা ধরে অদিতির বাড়ীর দিকে রওয়ানা হলাম। বিকেলের মিষ্টি রোদের আভায় চারদিক ঝকঝক করছে । আলিশান বলা যায় না তবে বেশ পরিপাটি রুচিশীল তিন তলা একটা বাড়ীর সামনে এসে ভাড়া করা ট্যাক্সি থামল। স্প্যানিশ ড্রাইভার জানালো এটাই সেই ঠিকানার বাড়ী। অদিতি আমার অপেক্ষাতে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর পাশে অরু।
আপ্যায়নের কোন ত্রুটি রাখেনি মেয়েটি। বাঙালী যে অতিথিপরায়ণ অদিতি আরেকবার প্রমান করে দিল। প্রায় সব ধরনের খাবারে টেবিল ভর্তি করে রেখেছে। একা হাতে এত কিছু কেমন করে করলো কিছুটা অবাক হয়েছি। মৃদু আপত্তি করি এত আয়োজনের জন্য। ডিনার করে বসে আছি তার গোছানো ড্রয়িং রুমে। কথায় কথায় জানতে চাইলাম এ দেশে কেমন করে এলো, এখানে কে কে আছে।
অদিতি যেন মূখিয়ে ছিল নিজেকে প্রকাশ করতে। একাকীত্বের শহরে মনের কথা শোনার মানুষ কই? কিশোরীর চপলতায় যেন উচ্ছল হয়ে ওঠে অদিতি- বলতে থাকে----" জানো দিদি আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি চার বছর আগে ডাইভারসিটি লটারি পেয়ে। এসেই নিউ ইয়র্ক উঠি আমার এক পরিচিত আত্মীয়ের বাসায়"।
আমেরিকা আসার পর থেকে ডিভি লটারি বিজয়ী কারোর সাথে এই পর্যন্ত আমার পরিচয় হয়নি তাই অদিতির কথায় বেশ আনন্দ পেলাম।
আমার শোনার আগ্রহ দেখে অদিতি আরও বলতে থাকে ---- "বাংলাদেশে আমি কম্পিউটার সাইন্সে গ্রাজুয়েশন করে একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করতাম। একদিন অনেকটা শখের বশে বা ঝোঁকেও বলা যায় ডিভি লটারি এপ্লাই করি। সেদিন ঘুণাক্ষরেও মনে আসেনি আমার এপ্লিকেশন এপরুভ হবে। ডিভি লটারি জয়ী অনেক বিজয়ীর মত আমিও আমেরিকার মাটিতে পা রাখি। আমেরিকার অনেক সুযোগ সুবিধার মধ্যে আমিও একটা সুযোগ পেয়ে যাই। বাংলাদেশের লেখা পড়া এখানে আমি কাজে লাগাতে পারি। ভালো একটা কোম্পানিতে আমার চাকরি হয়ে যায়"।
অর্নবের সাথে সেখানেই আমার পরিচয়। প্রথম দেখায় খুব সাদামাটা ধরনের মনে হয় তাকে । নজর কাড়া ব্যাক্তিত্ব বা চেহারা কোনটাই তাঁর ছিল না। কাপড়ে চোপড়ে খুব সাধারন। অফিসের প্রথম দিনেই তার সাথে আলাপ। এক দেশের হওয়াতে ভালোই লাগলো। সেটা ছিলো শুধুই নিজের দেশের মানুষ হিসেবে। তাঁর কথাবার্তায় নারীর প্রতি সমীহ ভাব খুব ভাল লেগেছিল।
একদিন নিউ ইয়র্ক সিটির পাতাল ট্রেনের জন্য রেল স্টেশনে একা দাঁড়িয়ে আছি। সকাল অফিস টাইমে সবারই খুব তাড়া। তারপরেও প্রচন্ড ভদ্রতার পরিচয় দেয় সকলেই। হঠাত নিজের নাম শুনে পেছন ফিরে চেয়ে দেখি --অর্ণব। সেও একই ট্রেন ধরবে। অপরিচিত একটি পরিবেশে তাকে পেয়ে ভীষণ ভাল লেগেছিল সেই মুহূর্তে। সেদিন প্রথম খেয়াল করলাম কি নিষ্পাপ হাসি তাঁর। শিশুর হাসি একেই বলে যেন!
আমার জীবনে অর্ণব অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে লাগলো। অফিসের অনেক জটিল কাজে সে আমাকে বন্ধুর মত সাহায্য করতে লাগলো। কাজ শেষে বাড়ি যাওয়ার তাড়া থাকতো না কারোরই, তাই চলে যেতাম কফি শপে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতাম । কেন যেন তাঁর সামান্য কথাতেও হেসে উঠতাম। সব চেয়ে ভাল লাগা ছিল দুজনার পছন্দ গুলো ছিল এক রকম। দুজনেই কবিতা লিখতাম, রাত জেগে পড়তাম। শহর থেকে দূরে কোলাহল মুক্ত পরিবেশ দুজনেরই ভীষণ পছন্দের ছিল।
দূর থেকে তাকে দেখলেই ভাললাগা ছড়িয়ে পড়ত আমার ভেতর। সাধারন মানুষটিকে আমার কাছে অসাধারন লাগতে থাকে। অর্ণবের মিটি মিটি হাসি চোখে লেগে থাকতো। স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর ছিলো সেই দিন গুলো।
সোম থেকে শুক্রবার কাজ শেষ করে আমেরিকার মানুষ শনি রবিবারের জন্য অধির অপেক্ষায় থাকে। শুক্রবার আসলেই সবাই খুব উত্তেজনা অনুভব করে। শনিবার রবিবার কাটানোর প্ল্যান শুক্রবারেই শুরু হয়ে যায়। অনেকে আবার শুক্রবার রাত থেকেই উৎসবের রাত ধরে থাকে।
নভেম্বরের শুরু , সুয়েটার ছাড়া বাইরে যাওয়া সম্ভব হয়না । গাছের সব পাতা লাল হয়ে যাচ্ছে, প্রকৃতির এমন পরিবর্তন মনে এক অদ্ভুত শিহরণ জাগায়। প্রকৃতির এমন ভিন্ন রুপে মুগ্ধ হই দুজনেই। নিউ ইয়র্ক সিটি থেকে দেড়-দুই ঘন্টার ড্রাইভে কান্ট্রি সাইড।
শুক্রবার লাঞ্চের পর কাজে ব্যস্ত, এলিনা আমার কলিগ তাঁর টেক্সট আসে--- "এই উইকেন্ডে চলো নিউ ইয়র্কের বাইরে বেড়াতে যাই, যাবে?"
--"আচ্ছা", উত্তর করেই অর্ণব এর কথা মনে হয়। অর্ণবের খুব ইচ্ছে কান্ট্রি সাইডে বেড়াতে যাওয়ার।
অর্ণব কে টেক্সট করি ---- "অফিসের পর হলওয়েতে অপেক্ষা করো"।
সাথে সাথে রিপ্লাই আসে---"আচ্ছা"।
সেদিন অফিস ফেরার পথে ঝুম বৃষ্টি, শীতের সন্ধ্যা ঝুপ করে নেমে আসে। আমি আর অর্ণব দুজনেই সিটি বাসে উঠে বসলাম। আমি তন্ময় হয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম। বৃষ্টি হলেই বাংলাদেশের কথা মনে আসে। অর্ণব আমার মনের কথা বুঝতে পেয়ে আমার হাতের উপর তার হাতটি আলতো করে রেখে হাল্কা চাপ দিয়ে বলে---
"আমারও বাংলাদেশের কথা মনে পড়ছে"।
আমি অর্ণবের কাঁধে মাথা রাখি নির্ভরতায়। আরও খানিকটা কাছে সরে এসে অর্ণব জানতে চায়---
"ঘরে কিছু রান্না করেছিলে, কি খাবে যেয়ে" ?
"খেয়ে নেবো কিছু একটা"।
"তুমি খাওয়ার ব্যাপারে খুব উদাসীন, এটা ঠিক না, দুপুরে তেমন কিছু খাও না, সারা দিনে অন্তত একবার ভালভাবে খাওয়া উচিত।এমন করলে শরীর খারাপ করবে। তারপর কে দেখবে"?
আমি হেসে ফেলি তার কথার সরলতায়, বলি ----"কেন তুমি আছো তো"।
"বাংলাদেশী গ্রসারী স্টোর থেকে বড় ইলিশ মাছ কিনেছিলাম, গতকাল রান্না করেছি, চল আমার বাসায়, পেট ভরে ভাত খাবে "।
ইলিশ মাছ আর ভাতের কথা শুনে সত্যি ভীষণ ভাত খেতে ইচ্ছে করলো। রাজী হয়ে গেলাম।
অর্ণব এর ফ্ল্যাটটি স্টুডিও রুম। তাঁর বাড়ি এই প্রথম আসা। ঘরে ঢুকেই ভাল লাগলো, বললাম---- "তুমি দেখছি বেশ গোছানো"।
সে আমার কাঁধ থেকে ব্যাগটা নিয়ে বলল "বাথরুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো তুমি ক্লান্ত "
অর্ণবের এই কেয়ারিং স্বভাব আমাকে আরও বেশী আকর্ষণ করে ।
মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে বের হয়ে এসেছি । অর্ণব কাছে এগিয়ে এসে আমার মুখ তার দুই হাত দিয়ে আরও কাছে নিয়ে বলল
"তুমি সুন্দর তুমি পাগল পারা আদুরে সুন্দর"।
বৃষ্টি থেমে আকাশ পরিষ্কার। জানালা গলে চাঁদের আলো আমার মুখে এসে পড়ছে। ঘরময় ফুলের গন্ধ অনুভব করলাম। অর্ণবের চোখে আমার চোখ। নিজের ভেতরে কোথায় যেন একটু নড়াচড়া অনুভব করলাম। আমার বাঙালি নারী স্বত্বা বলে এটা ঠিক না। আমি চোখ সরিয়ে নিলাম।
বললাম--- "চলো বিয়ে করি, এভাবে না"।
অর্ণব হেসে আমার কপালে ছোট্ট চুমু দিয়ে বলল ----- "ভাত খাবে চলো"।
কেমন এক অজানা আনন্দে শিহরিত হলাম। চোখে পানি চলে এলো । শুধু বললাম---"তুমি কেন এত ভালো"?
ভাত খেতে খেতে আমরা প্ল্যান করি আগামীকাল শনিবার বেশ কিছু ঘরের কাজ সারতে হবে। এই উইকেন্ডে সব গুছিয়ে পরের শনিবার এলিনার সাথে কান্ট্রি সাইডে যাওয়া যাবে।
বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছে দিতে অর্ণব আমার সাথে আসে। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে বাস আসছে। হঠাত যেন তাঁর কি হয় সে আমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে---"পাগলী তুমি ঠিক বলেছ, চল বিয়ে করি। দিন তারিখ তুমি ঠিক করো ওটা তোমার দায়িত্ব"।
আমিও তাঁকে আঁকড়ে ধরি। এই মুহূর্তে তাঁকে পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বাস যোগ্য আর আপন বলে মনে হচ্ছে ।
----------
পর্ব দুই
---------
কোন সম্পর্ক শুধু মাত্র ভালোবাসার উপর ভিত্তি করে টিকে থাকে না, সম্পর্ক টিকে থাকে দুটি মানুষের পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস সম্মান আর ভাল লাগার উপর । এই কথাটি আজ অফিস থেকে ফেরার পথে বার বার মনে পড়ে আমি যেন অন্যরকম ভাল লাগার ঘোরের ভেতরে ঢুকে যাই। এই প্রথম অর্নব এতোটা কাছে এলো। শুধুই শারীরিক আকর্ষণ? না তা নয় । আমি তাকে বিশ্বাস করি সম্মান করি , সেও আমাকে এতোটাই করে আমার মনে হচ্ছে। নইলে বিয়ের কথা কেন বলবে ! তাঁর পারফিউমের ঝাঁঝালো ঘ্রান এখনো আমার নাকে লেগে আছে।
"বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার দায়িত্ব" অর্ণবের বলা এই একটি কথা ভীষণ আনন্দিত করে আমাকে। বিয়ের জন্য সিটি ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এই মাসে কি পাওয়া যাবে! এ ব্যাপারে এলিনার সাহায্য দরকার। এ ভাবনাতে এলিনা কে ফোন করি । তার কাছে জানতে চাইলাম ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিসের নিয়ম কানুন।
আমার কথায় এলিনা প্রায় লাফিয়ে উঠলো " ওহ মাই গড-- বিয়ে ? কে করবে ? তুমি? অর্ণব কে"?
তাঁর কথায় সারা শরীরে শিহরন ছড়িয়ে পড়লো। অন্যের মুখে নিজের বিয়ের কথা শুনতে অদ্ভুত ভালো লাগায় ছেয়ে গেলো। শুধু বললাম
"হুম" এতটুকু বলতেই পানির পিপাসা পেয়ে গেলো।
সে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে বললো "করে ফেলো, করে ফেলো। অর্নব ভীষণ ভালো ছেলে। তোমরা সুখী হবে। তুমি কিছু ভেবোনা আমি সব খবর জেনে রাখবো। তা আগামী কাল যাচ্ছিতো সাউন্ড বে তে"?
--আগামীকাল না চলো পরের সপ্তাহে,
--আচ্ছা তোমার ইচ্ছে।
এলিনার সাথে কথা বলছি সে সময় স্ক্রীনে অর্নবের নাম ভেসে উঠে । অর্নব ফোন করছে । এলিনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অর্নবের কল রিসিভ করি। এই মুহূর্তে এক অজানা ভালো লাগায় তার সাথে কথা বলতে বুকের ভেতর ধুকপুক করতে লাগলো।
"হ্যালো বউ" -- "বউ" কথা শুনে কেঁপে উঠলাম শিহরন আর আনন্দে। আবেশের রেশ যেন কেটে না যায় তাই শুধু হাসলাম। সে আরও বেশী আদর মাখা গলায় বলল ---
"কি ব্যাপার কথা বলবেনা ? নাকি একদম বিয়ের দিন বলবে"? আমি আবারও কেঁপে উঠি তার কথায়।
হাল্কা অনুযোগের সুরে বলি---"বিয়ে এখনো হয়নি তবে বউ ডাকা কেনো"?
"আচ্ছা ডাকলাম না তবে বিয়ের পর কিন্তু আমি নাম ধরে ডাকবো না, বউ ডাকবো"।
আমি আবারও কেঁপে উঠি। অর্নব বুঝতে পারে। ছোট্ট আদর দিয়ে বলে--- ঠিক আছে আর জ্বালাবোনা এখন ঘুমাও ।
শনিবার অনেক বেলা করে ঘুমানো অভ্যাস। মাথায়, মনে "বিয়ে" কথাটা গেঁথে আছে যেনো। বিয়েতে শাড়ী না লেহেঙ্গা, কেমন রঙ। এ ব্যাপারে অর্ণবের সাথে কথা বলতে হবে। অর্নব কি পরবে। আমার সাথে ম্যাচ করে শেরওয়ানী? কত শত রকমের ভাবনারা আমাকে অস্থির করে রেখেছে। বিছানায় শুয়ে থাকতে্ও ইচ্ছে করছেনা।
সারা সপ্তাহের বাজার শনিবারে করে রাখি কিন্তু আজ ঘর থেকে বের হতে ইচ্ছে করছেনা। বিয়ের পর দুজনার এক সাথের জীবন---আচ্ছা তখন কি অর্নব আমর সাথে ঝগড়া করবে? কি ভাবছি এসব? ঝগড়া কেনো করবো! সুন্দর গোছানো পরিপাটি একটি গৃহকোণ হবে আমাদের।
ছুটির দুই দিন কেমন করে যেন কেটে যায়। অফিসের কাজে ব্যাস্ত আছি এলিনার টেক্সট আসে " নভেম্বর ১২ তারিখ ম্যারেজ রেজিস্টার কাছে বিয়ের এপয়েনটমেন্ট"। তারিখ মেলাই আজ নভেম্বর দুই আরও ১০ দিন বাকি। এলিনার টেক্সটের স্ক্রীন শট অর্নবকে পাঠিয়ে দেই।
অর্নব উত্তর করে --"আমার ঘরে স্বাগতম বউ"।
আনন্দ আর আনন্দ! চাপা আনন্দ আর উত্তেজনায় চোখে পানি চলে আসে। এই মুহূর্তে চিৎকার করে সবাইকে বিয়ের কথা জানিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।
এই পর্যন্ত বলে অদিতি থামে। তার চোখ বেয়ে জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছে। এক গ্লাস পানি এগিয়ে দেই। টিস্যু দেই চোখ মুছতে।
ভাবনাতে পরে যাই এতো আনন্দের ভেতরে কেনো কষ্ট লুকিয়ে থাকে! আমরা বুঝতে পারিনা জীবন কোন সময় আমাদের কি রং দেখায়। ভবিষ্যতের জন্য আমরা শুধু স্বপ্ন বুনে যাই। জীবনের স্বর্নালী দিনগুলোর হিসেব মেলাতে গিয়ে, গড়মিল আর অপ্রাপ্তির তালিকা দীর্ঘ হলেও ভেঙ্গে পড়ার উপায় থাকেনা এগিয়ে যেতে হয় নতুন জীবনের আশায়। ঘুমন্ত অরুর দিকে চোখ পড়ে। কি নিষ্পাপ! এই মেয়েটি বাবা মায়ের আদর এক সাথে কেন পাবেনা! জীবন কেন এতোটা নিষ্ঠুর হয়!
অদিতি নিজেকে সামলাতে সময় নেয় আর আমি জানতে আগ্রহী হই এমন কি ঘটনা ঘটে গেল যে বাচচাটিকে নিয়ে আজ অদিতি এত বেশী একা। আর্থিক স্বাছন্দ্য কি আর মানসিক শান্তি আনতে পারে!
"তারপর--- বিয়েটা হয়েছিলো ১২ তারিখে "? খুব নরম সুরে জানতে চাইলাম।
টিসু দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে উপর নীচ মাথা নেড়ে বলে "হ্যাঁ বিয়ে হয়েছিল মনের সাথে মনের বিয়ে আত্মার সাথে আত্মার বিয়ে। আমার সারাজীবনের স্বামী হিসেবে তাকে গ্রহন করেছিলাম সেদিন"।
আমি অস্ফুটে বোকার মত বলে ঊঠি-- "তার মানে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়নি? কেন ? এপয়েন্টমেন্ট তো নেওয়াই ছিল"।
অদিতি আবার চোখ মুছে বলে--- "সেদিন ছিলো শুক্রবার। অফিসের কাজ সারতে অর্নবের দেরী হয়ে যায় । আমরা যখন সেখানে যেয়ে পৌঁছাই ম্যারেজ রেজিস্টার অফিস বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেই কান্ট্রি সাইডে যাওয়ার। এলিনার সাথে তার বয় ফ্রেন্ড আর আমরা দুইজন এক গাড়িতেই চলে যাই।
আমেরিকার গ্রাম যে এতো সুন্দর হয় কল্পনাও ছিলো না। বিশাল আপেল বাগান পার হয়ে আংগুর বাগান। তার মাঝখানে পিচের রাস্তা । তাছাড়া ফল সিজনে গাছের রং লাল - হলুদ হয়ে অপুর্ব পরিবেশ। নভেম্বরে বিকেল চারটের পর সুর্য ডুবে যায়। সুর্য ডোবার পর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনে খুব অবাক হয়ে যাই। চাঁদের আলোয় ভেসছিল চারদিক।
অর্ণব পাশে এসে দাঁড়ায়। আমার কাঁধে হাত রেখে জানতে চায়-- "আজ বিয়ে হয়নি বলে মন কি বেশী খারাপ"?
---"খারাপ লাগছে তোমার" ? আমিও জানতে চাই ।
অর্ণব আমাকে তাঁর দুই হাত দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে চুলে মুখ ডুবিয়ে বলে---"লক্ষী আমার বিয়ে কি বাইরের না মনের."।
আবেশে চোখ বন্ধ হয়ে আসে আমার শুধু বলতে পারি--- "আমি তোমাকে স্বামী হিসেবে গ্রহন করলাম"।
স্বপ্নের রাত শেষে মিষ্টি ভোরে এক মায়াবী আবেশে, মধুর আর কিছু নতুন অনুভূতিতে নিজেকে আবিষ্কার করি অর্নব এর উষ্ণ আলিঙ্গনে।
খুব হিসেব করতে ইচ্ছে করে মানুষের জীবনের আনন্দ আর সুখের সময়ের ব্যাপ্তি কতক্ষণ ? কেউ কি জানে কতক্ষণ ? মহাকালের গহ্বরে এই সময়টুকু খুব অল্প। যেন চোখের পলকে চলে যায়। তাতেই আমরা পরিপূর্ণ হয়ে যাই। মনে হয় সব পাওয়া হয়ে গেলো।
তাই বোধহয় জীবনকে আরও গভীরে ভালবাসি। এক অলিক আবেশে শনি/রবি দুটি দিন কেটে যায়। রবিবার সন্ধেতে তৈরি হতে থাকি নিউ ইয়র্ক ফিরে যাওয়ার। যদিও সন্ধ্যার পর রাতের খাবার খেয়ে বের হয়ে যাই কিন্তু হাইওয়েতে খুব ট্র্যাফিক থাকায় রাত দশটা বেজে যায় নিউ ইয়র্ক ফিরে আসতে । আমরা দুজনেই খুব ক্লান্ত ছিলাম । রাতে অর্নব নিজের বাড়ি যাওয়ার তেমন আগ্রহ দেখাল না আমারও তাকে ছেড়ে থাকতে ইচ্ছে করছিল না।
সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই দুজনে যে যার মতই অফিসে চলে যাই। অফিসে দুপুরের খাবারের সময় অর্ণব কে টেক্সট করি । উত্তর আসে ----"ভীষণ ব্যস্ত পরে কথা হবে"।
অফিস ছুটির পর অর্ণব কে খুঁজতে তাঁর ডিপার্টমেন্টে যাই। যেয়ে শুনি অর্ণব ফ্লোরিডা অফিসে দুই সপ্তাহের জন্য আজ দুপুরের ফ্লাইটে চলে গিয়েছে। কিছুটা অবাক হই এই ভেবে আমাকে একটা টেক্সট না করেই চলে গেল! বিকেলে বিষণ্ণ মনে বাড়ি ফিরে আসি। তাকে ভীষণ মনে পড়ছে। গত দুই দিন এক সাথে কাটানোর সময় গুলো মনে ভীড় করছিল।
এমন সময় অর্ণবের টেক্সট আসে--"খুব বেশী ব্যস্ত ছিলাম তাই বলে আসতে পারিনি। আমি এখনও অফিসে আছি বের হতে দেরি হবে।তুমি ভাল থেক, ভাল রেখ সবাইকে, আমার নিউ ইয়র্ক ফিরতে দেরি হবে"।
সেদিন রাত দশটায় ঘুমানোর আগ পর্যন্ত তাকে প্রায় চল্লিশটা টেক্সট করি । কিন্তু কোন উত্তর আসেনা। এভাবেই এক সময় ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে অফিসে যেয়ে অর্ণব এর জন্য অস্থির লাগতে থাকে। ২৫ তলা অফিস বিল্ডিঙয়ের অসংখ্য মানুষের ভেতর নিজেকে খুব একা আর নিঃসঙ্গ মনে হতে লাগলো। দিন গুনে গুনে ৬ দিন পার হয়ে যায় । আমি অস্থির হয়ে উঠি জানার জন্য সে কোথায়। ফ্লোরিডা অফিসে হিউম্যান রিসোরসে ফোন করে জানতে পারি অর্নব অফিসের কাজে আটলান্টা অফিসে ট্র্যান্সফার হয়েছে। খুব অবাক হলাম আমাকে জানালো না কেনো? আটলান্টা অফিসের ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করি। সে ফোন রিসিভ করেনা । এভাবে ২০ দিন কেটে যায় । মনের মাঝে অজানা শঙ্কা কাজ করে। মনে হয় সে ইচ্ছে করেই এমন করছে। মেইলের পর মেইল করি কোন উত্তর নেই।
এভাবেই প্রায় একমাস পার হয়ে যায়। গত একমাসে অর্ণব সম্পর্কে অনেক তথ্য সংগ্রহ করে নিজেকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গাধাদের একজন বলে মনে হচ্ছে। আটলান্টায় অর্ণবের বউ আর দুটি বাচ্চা নিয়ে সংসার আছে। দিনের শেষে সে তাঁর স্ত্রী আর সন্তানের কাছেই ফিরে গেছে। আসলে দোষ আমারও ছিল । আমি কখনো জানতে চাইনি সে বিবাহিত কিনা! আসলে আমার প্রতি তাঁর আকর্রষণ এতোটাই তীব্র অনুভব করেছিলাম যে গত দুই মাসের পরিচয়ে আমার মনে একবারের জন্য এই প্রশ্ন আসেনি।
এই জীবনে অনেক কিছুই শেষ হয়েও, নিঃশেষ হয় না! কোথাও না কোথাও আরও বেশী অনেক গভীরে থেকে যায়।
এক মাস পর হঠাত বমির দমকে ঘুম ভেঙ্গে যায় । বিছানা ছেড়ে উঠতে যেয়ে মাথটা চক্কর দিয়ে উঠে। কিছুক্ষণ যেন নিঃশ্বাস আটকে থাকে, জোরে শ্বাস নেই। কি ঘটছে নিজের শরীরে বুঝতে পারছিনা কিছুই। ঘড়িতে সময় দেখি ভোর ছটা। সকাল আটটায় ছুটতে হয় অফিসের উদ্দেশ্যে। কিন্তু আজ শরীর চলছে না। বিছানা থেকে উঠতে যেয়ে মাথা চক্কর দিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম, খাটের কোনা ধরে ঠিক থাকি। হঠাত বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠে। এই সময়ে যদি অর্ণব আমার পাশে থাকত! যদি পরম নির্ভরতায় আমার হাতটা ধরে পাশে থাকত ! ভীষণ মনে পড়ে তাকে।
সেই রাতে এক সাথে কাটানোর সময়, উষ্ণতা, অনুভূতি আজ দুচোখ ভিজিয়ে দিয়ে যায় । ভীষণ একা লাগতে লাগলো। বিকালে ডাক্তারের কাছে যেয়ে জানতে পারি আমি সন্তান সম্ভবা । অর্ণবের সন্তান আমর গর্ভে । কি আনন্দ !! কিন্তু কোথায় অর্নব!! ভীষণ অভিমানে বুক ভারি হয়ে উঠলো। প্রতিজ্ঞা করি একাই আমি এই সন্তান জন্ম দিবো। এই সন্তানের কথা কখনোই তাঁকে জানাবো না।
তাই আমি নিউ ইয়র্ক ছেড়ে চলে আসি সান ডিয়েগোতে। অরুর জন্ম এই শহরেই হয়। আমরা মা মেয়ে ভাল আছি।
ছল ছল চোখে আমি অদিতির দিকে তাকিয়ে থাকি। মেয়েটির গাল বেয়ে অভিমানের জল গড়িয়ে তার জামা ভিজে যাচ্ছে। সত্যিইতো মুখের বিয়ে আর ধর্মীয় ও আইনগত বিয়ের পার্থক্য অনেক। মুখের বিয়েতে কোন প্রমাণ থাকেনা তাই ছেড়ে যাওয়া বা অস্বীকার করা সহজ হয়। কিন্তু প্রশ্ন জাগে মনে --প্রেম , ভালবাসা কি দলিল পত্রে হয়ে থাকে? মনের টান, এক জনের জন্য আরেক জনের ব্যাকুলতা এসবের জন্য কি দলিল পত্র লাগে? জীবন সত্যিই অদ্ভুত!!
শুভরাত্রি জানিয়ে বিদায় নেই অদিতির কাছ থেকে। সে তাঁর ইচ্ছে মতন বাচুক। তাঁর জন্য অনেক শুভ কামনা।
(ছবি--গুগল থেকে নেওয়া)
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:৫৭
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অদিতি বাঁচুক তার ইচ্ছে মতন। অর্ণবের জন্য এক বুক ভালোবাসা সঙ্গী করে কখনো অভিমান ।
অনেক ধন্যবাদ দীর্ঘ লেখাটি ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য ।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:০৫
রাফা বলেছেন: আদিতি'রা কেনো শুধু ঠকবে !ভালো লেখা বড় হোলেও ছোটই মনে হয়।মনে হয় কেনো আরো একটু বেশি নেই কেনো।
ধন্যবাদ,রা.রাহীম।(কেমন আছেন আপনি?)
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:০৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
আমি ভালো আছি।
আপনার সরবাংগিন মঙ্গল কামনা করছি
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:২৯
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:
জীবন সত্যি অদ্ভুত। মঙ্গল কামনা সকল নিষ্কাম প্রেমীদের জন্য। ভাল থাকুক সবাই সবার মত। আপনিও ভাল থাকুন, আর আমাদের জন্য নতুন নতুন লেখা প্রকাশ করুন।
চিরন্তন শুভকামনা আপনার জন্য।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:০২
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: শুভ কামনা আপনার জন্য থাকলো।
৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫১
আটলান্টিক বলেছেন: বড় গল্প লিখেছেন
অভিনন্দন আপনাকে।অনেকদিন পর লিখলেন।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:০১
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: গল্পটির উপর যদি কোন রকম আলোচনা বা সমালোচনা করতেন তবে অনেক আনন্দ পেতাম।
পর্বে ভাগ না করে পুরো গল্পটি একবারেই দিয়ে দিলাম তাই বড় লাগছে। পর্বে ভাগ করে দিলে আমার শেষ করতে ইচ্ছা করেনা ।
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যর জন্য
৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:০৩
জাহিদ অনিক বলেছেন:
অর্নব অদিতি অরু-- অ-আদ্যাক্ষর বিশিষ্ট এই নাম তিনটির ভিতরে অজানা একপ্রকার ভালোলাগা কাজ করছে। গল্পে অর্নব একজন প্রতারক। তবুও তাকে কেন যেন ভালো লাগছে। মনে হয় গল্পের অদিতিকে আমার ভালো লেগেছে তাই তার প্রিয় অর্নবকেও অপ্রিয় করতে পারছি না।
আমারও ইচ্ছে করছে অরুর গাল টেনে জিজ্ঞেস করি, কেমন আছো অরু?
ভালো লাগলো গল্প।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:০৬
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ভাইজান , নাস্তার দোকান খুলছে?
তোমার করা মন্তব্য সবসময় ইউনিক
বাই দা ওয়ে—- অদিতির ফোন নাম্বার লাগবে ?
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:০৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ভাইজান, লাইক দিলা না যে?
ভালো যে লাগালো প্রমান পাইলাম না তো
৬| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৩২
জাহিদ অনিক বলেছেন:
না না না- অদিতির ফোন নাম্বার লাগবে না।
অ-দিতি ভালো থাক। আমি অর্নবের মতই খারাপ।
অ-দিয়ে নাম শুরু তো আমারও!
তবে তোমার অনিকেত খুব ভালো।
লাইক/প্লাস দিতে চেয়েছিলাম তো! নেট চলে গেল!
আবার এলো! আবার মনে হয় একটু পরেই নেট ভলে যাবে।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনিকেত তো ভালো হবেই ঝিলমিল যে তার সাথে থাকে।
ঝিলমিলের কারনে অনিকেত ভালো।
৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৪
সোহানী বলেছেন: হাঁ এরকম বোকা অদিতি অসংখ্যই আছে.........
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই মন্তব্যর জন্য।
খুব ভালো থাকবেন
৮| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৫৪
জাহিদ অনিক বলেছেন:
হাহাহা- অনিকেত ঝিলমিল ; দুটো ফিকশনাল ক্যারেক্টার দিব্যি সুখে আছে। এটাই তো আমাদের পরম পাওয়া।।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪১
রাবেয়া রাহীম বলেছেন:
৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:০০
সামছুল আলম কচি বলেছেন: মানুষ কিছু সময়ের জন্য কোন কোন পরিচিত মানুষকে ‘মিস’ করে।
সব সময়ের জন্য সব পরিচিত মানুষকে ‘মিস’ করেনা
....অার এ ভাবেই বয়ে চলে জীবনের সময়। তারপর একদিন...ডুব !!
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
১০| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:০৪
পার্থ তালুকদার বলেছেন: গল্পটা সময় নিয়ে পড়তে হবে। এখন অফিস যাচ্ছি। :-)
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
১১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: ভালোই করেছেন এই দেশে না থেকে।
এখন প্লেনে বসে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ, দারুন!
নিজ দেশে একজন বিপদে পড়লেও সেদিকে খেয়াল থাকে না। কিন্তু দূরদেশে বাঙ্গালী হলেই আমরা বুকে জড়িয়ে ধরি।
অদিতি ভালো থাকুন।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনিও খুব ভালো থাকুন
অনেক ধন্যবাদ
১২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন, তবে এত বড় গল্প পড়তে পড়তে হয়রান হয়ে গেছি, 'জল খামু'
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: জলের সাথে কিছু বরফ কুচিও নিয়েন
অনেক ধন্যবাদ ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য। জেসনের তো ধৈর্য্য ই হইলো না
১৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনিও খুব ভালো থাকুন
অনেক ধন্যবাদ
আমার মন্তব্যের উত্তর দেয়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
১৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৬
সামিয়া বলেছেন: আপু আপু এত ভালো লিখেন আপনি!! এত অদ্ভুত সুন্দর বিশ্লেষণী মন আপনার, এত সুন্দর প্রকাশ করার ক্ষমতা!! অসাধারণ !! আমি সত্যিই ভীষণ ভীষণ মুগ্ধ আপনার লেখা পড়ে।। আপনাকে এই লেখাটির জন্য তো এ্যাওয়ার্ড দেয়া দরকার। প্রিয়তে নিলাম।।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪২
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: যে মন্তব্য খুব বেশী মন ছুয়ে যায় সেটার উত্তর দিতে একটু সময় নেই। সময় নেই এ কারনে প্রশংসাটুকু হৃদয়ে ধারন করে রাখতে খুব ভালো লাগে।
তোমার বোঝার ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
তুমিও অনেক ভালো লিখে থাকো।
তোমার বই কেমন করে কালেকট করবো? রকমারি তে আছে কি? লিংক দিও।
অফুরন্ত ভালোবাসা তোমার জন্য
ও হ্যা এওয়ারড কিন্তু আমি তোমার হাত থেকে নিতে চাই।
ভালোবাসার ছোয়া
১৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২২
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালো থাকুক আদিতি অরু !
চমৎকার লেখা আপু ।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ভালোবাসা তোমায় মনিরা
১৬| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০৩
তারেক ফাহিম বলেছেন: ধৈর্য ধরে পুরুটাই পড়লাম।
আদিতি আর অরু’র জন্য শুভকামনা।
চমৎকার লিখলেন, বড় হলেও পড়তে খারাপ লাগেনি, মনে হয়েছে অর্ন ব যদি আদিতির নিকট আরও এক সপ্তাহ থাকতো তাহলে গল্পও বড় হতো
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: মুল্যবান মন্তব্যর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই
শুভকামনা আপনার জন্যও
১৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯
আখেনাটেন বলেছেন: সমাজে এই দুষ্টুক্ষত অর্ণবদের সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। মুখোশের আড়ালে এরা যুগ যুগ ধরে অদিতিদের এক সাগর বেদনাতে ভাসিয়ে দিয়ে চলেছে।
ভাবছি এই অরুদের কাছে পাষণ্ড অর্ণবেরা পরবর্তীতে কী জবাব দেবে? অলিখিত সম্পর্ক যে এখানে এসে চিরন্তন লিখিত রূপ নিয়েছে। এ কালি তো মুছে ফেলার নয়। করুণা অর্ণবের জন্য।
লেখনি চমৎকার লেগেছে ব্লগার রাবেয়া রাহীম।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অলিখিত সম্পর্কের লিখিত রুপ অরু —— খুব সুন্দর করে বললেন । সত্যিই আনন্দ পেলাম আপনার মনতব্যে । এমন মন্তব্যগুলো লেখার উৎসাহ অনেক গুন বেড়ে যায়। আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
আপনিও খুব ভালো থাকবেন
১৮| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: জেসন কে?
তবে সামুতে 'কি করি---' নামে এক ফাঁকিবাজ আছে -----
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: বদের বদ টা জানি কৈ ডুব দেয়।
১৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: রাবেয়া রাহীম ,
মূল গল্পটি গতানুগতিক । শুরুতেই বোঝা গিয়েছিলো প্রতারণা বা বেদনাদায়ক কিছু নিয়ে গল্প । তবে যে ভাবে সাজিয়ে লিখেছেন তাতে একটানে পড়ে যাওয়ার মতো ।
ভালো লাগলো ।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনার ভালো লাগায় আনন্দিত
অনেক ধন্যবাদ
২০| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪২
জাহাঙ্গীরএকা বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে। এই নিয়ে দুই বার পড়লাম। অদিতি, অরু ভালো থাকুক দোয়া করি।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৪
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনিও খুব ভালো থাকবেন
অনেক ধন্যবাদ
২১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৪
ধ্রুবক আলো বলেছেন: ভালো থাকুক অদিতি অরু.....
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৩৪
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনিও খুব ভালো থাকবেন
অনেক ধন্যবাদ
২২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৮
কাতিআশা বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা..মন ছুঁয়ে গেল!
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৩৫
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
২৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০১
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি পড়েতে এসে দুইবার জামেলায় পড়ছিলাম একটু বড় হওয়ায় বিরতি দিয়ে শেষ করতে পেরেছি। গল্পটি অপূর্ব।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৩৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: সিরিজ গল্প লিখতে গেলে কয়েক পর্ব লিখে লিখার আগ্রহ গারীতে ফেলি তাই এবার পুরো গল্প টি লিখে একবারেই পোস্ট করে দিলাম । এ কারনেই বড় হয়েছে।
আপনাকে ঝামেলায় ফেলার জন্য দু:খ প্রকাশ করছি।
অনেক ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
২৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:১৯
শামচুল হক বলেছেন: গল্পটি বড় হলেও পড়ে ভালো লাগল।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৩০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনার ভালো লাগায় আনন্দ পেলাম
অনেক ধন্যবাদ
২৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫৫
প্রামানিক বলেছেন: গল্পটি দুই পর্ব করে দুইবার দিলেই ভালো হতো। একবারে পড়তে অনেক সময় লাগে তারপরেও পড়লাম, ভালো লাগল।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:২৫
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ধৈর্য ধরে বড় গল্পটি শেষ করার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
আপনার ভাল লাগা প্রেরণা হয়ে রইল ।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
২৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৫
কানিজ রিনা বলেছেন: রাবেয়া একটানে গল্পটা পড়লাম, খুন সুন্দর
করে অদিতির বেদনা তুলেছ। প্রথমেই শুভ
কামনা অদিতি অরুর জন্য। অর্নবরা বানর
কুকুর জাতীয় পুরুষ দেখতে মানুষের মতই।
এদের অভিনয় ফেরেস্তার মত। অরুর জন্য
কষ্ট হোল বাবার স্নেহ আদর থেকে বঞ্চিত
শিশু বাবা কি বস্তু তা হয়ত ওর অজানা
থেকে যাবে।
অদিতি ভিষন বোকা অর্নবের ফ্যামিলির
সাথে যোগা যোগ করে আগে জেনে নেওয়া
দরকার ছিল, এটা হয়ত খুব একটা কঠিন
কিছু না। এসব বোকা মেয়েরা জীবনে এমন
কঠিন কষ্ট সারাজীবন বয়ে বেড়ায়। বিয়ের
সময় অজুহাত দেখিয়ে সময় নষ্ট করা হয়েছে
কেন তা বুঝতে পারা দরকার ছিল।
আমেরিকায় এসব ব্যাপারে বিদেশীরা আইনে দাঁড়াতে
পারেনা। বিবাহীত নারীরা স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত
হলেও না। খুব খুব দুঃখ জনক ঘটনা।
রাবেয়া তোমাকে রইল ভাল থাকার কামনা।
ছেলে বৌমা নিয়ে কেমন আছো জানলে খুশি
হতাম।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৩৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপা সালাম নিও।
অদিতি ভিষন বোকা অর্নবের ফ্যামিলির
সাথে যোগা যোগ করে আগে জেনে নেওয়া
দরকার ছিল, ------ আপা আবেগের জোয়ারে যখন দুইজন ভাসতে থাকে তখন জাগতিক কোন কিছুই মনে আসেনা। অর্ণবের উচিত হয়নি কিছুই গোপন করার।
সে যাক --যার যার জীবনের ফয়সালা সে করবে। আসলে ভাগ্য বলেও একটা কথা আছে। অদিতি আর অরুর ভাগ্য এমন করেই লেখা ছিল।
ছেলের বউয়ের ম্যখ দেখার সৌভাগ্য এখনও হয়নি আপা। তবে প্রতিদিন লাইভ ভিডিওতে দেখে থাকি। বড় লক্ষ্মী আমার বউ মা। আমার কিছু পুন্য ছিল বলেই এমন বউয়ের শাশুড়ী হতে পারলাম। দোয়া করো আপা এমন আদরের যেন সে থাকে সব সময়। আমিও যেন থাকি।
২৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৩৩
শকুন দৃিষ্ট বলেছেন: এটি কি স্রেফ গল্প! নাকি বাস্তবতা!! যদি গল্পও হয়, বাস্তবতার তাতে সাঁয় আছে।
গল্প হলে বলব - আপনার গল্পের চেসিসটা বেশ মজবুত যদিও কাহিনী নূতন নয়। আর বাস্তব হলে মেয়েটির জন্য একরাশ সমবেদনা। আমি মেয়েটিকে বোঁকা বলে বিষয়টিকে হাল্কা না করে অর্ণবদের ধুর্ত, কালপ্রিট বলব যারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অদিতিদের মত সহজ সরল মেয়েদের সর্বশ্য নিয়ে কেটে পড়ে।
বিয়ের অভিনয়টা ছিল সাজানো নাটক।
গল্পে ভাললাগা, ভাল থাকবেন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৩৯
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: যদি গল্পও হয়, বাস্তবতার তাতে সাঁয় আছে। --- এই কথাটিই সত্যি ।
আপনি দারুণ বিশ্লেষণ করেছেন ।
বিয়ের অভিনয়টা ছিল সাজানো নাটক। --- অরণবের দিক থেকে সাজানো হলেও অদিতি তো মনে থেকি তাকে গ্রহণ করেছিল। এটাই আসল । নিজের মুখোমুখি যেদিন হতে হয় হিসাব সবাইকেই দিতে হয় একদিন ।
আপান্র করা মন্তব্য সব থেকে ভাল লাগলো । অসংখ্য ধন্যবাদ।
বসন্ত শুভেচ্ছা রইল।
২৮| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৫৮
সাফাত আহমদ চৌধুরী বলেছেন: অসাধারণ গল্প । সত্যিই, গল্পটা পড়ে অনেক কষ্ট পেলাম । আপু, তুমার লিখার হাত সেইরকম ভালো । এইভাবে লিখে যান, যাতে আমরা পড়তে পারি । সামুতে এই প্রথম পড়লাম আপনার লিখা, আগের লিখাগুলো পড়ে নেব ।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৩৬
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।
শুভ কামনা রইল
২৯| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:১০
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন আপু, গল্পটিও চমৎকার।
সম্পর্ক অলিখিতই হয় গো আপু।
শুভ সকাল,
বসন্ত শুভেচ্ছা রইল
বসন্তের ওই বৃক্ষ লতায়
ফুলের সুবাস মন কেঁড়ে যায়,
দুখ যাতনা যাক না মুছে
সুখ ধরা দিক হৃদয় ঘরে;
হিয়ার মাঝে বাজছে যে সুর
রাখবো ধরে যাই যতদূর,
থাকবো যেথা ভালোবাসায়
করবো স্মরণ সুখ কামানায়।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৩৫
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: সম্পর্ক অলিখিতই হয় গো আপু। ----
খুব ভাল লাগলো আপনার এই কথা। অলিখিত সম্পর্কের জোর অনেক বেশী থাকে লিখিত কিছুর চেয়ে। হয়ত সামাজিক কোন মর্যাদা থাকেনা। কিন্তু মনের ভেতরে ক্ষরণ চলতেই থাকে।
আপনাকেও বসন্তের শুভেচ্ছা ।
৩০| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: অদিতি ও অরু'র জন্য মায়া হচ্ছে। অর্ণবের জন্য ঘৃণা।
বাবার স্নেহবঞ্চিত অরু'র মনে হয়তো তার মনের অজান্তে ধীরে ধীরে শেকড় ছড়াবে সমগ্র পুরুষকূলের বিরুদ্ধেই এক প্রচন্ড ঘৃণাবোধ।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫৯
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আমার লেখার আবেদন আপনাকে ছুয়ে গেছে এটা ভাবতেই ভাল লাগছে।
সালাম জানবেন খায়রুল ভাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
বসন্ত শুভেচ্ছা রইল
৩১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০১
সামিয়া বলেছেন: সে যে আমার বড় সৌভাগ্য হবে আমার হাত দিয়ে আপনাকে এ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া।। হুম বেঁচে থাকলে অবশ্যই তা সম্ভব হলেও হতে পারে।। আমার বই নিয়ে আমি উদাসীন কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই খোঁজ নেই না, এখন পর্যন্ত মেলায় ও যাইনি। বই এর আপডেট আপনাকে জানিয়ে দেবো আপু।। অনেক অনেক ভালো থাকুন।। শুভকামনা।।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৪৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: তোমার বইয়ের আপডেট জানার অপেক্ষায় ।
অনেক শুভ কামনা তোমার জন্য।
৩২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫৬
মলাসইলমুইনা বলেছেন: জীবনের জটিলতা সুন্দর করে ফুটে উঠেছে আপনার এই গল্পে | সব কাজ শেষ করে এক বসায় পড়লাম | খুব ভালো লাগলো আপনার গল্প | ভালো থাকুন।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫৭
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: খুব সুন্দর করে বললেন
ভাল লাগলো । আপনিও খুব ভাল থাকবেন।
অনেক ধন্যবাদ।
৩৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২৩
বিজন রয় বলেছেন: লিখিত সম্পর্ক তবে কোনটা?
সেটা নিয়ে কি একটি গল্প হবে?
অলিখিত সম্পর্কের গল্পটা যে বুকে মোচড় দিয়ে গেল।
সম্পর্কের আসলে উল্টোপিট আছে।
শুভকামনা রইল আপা।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: সম্পর্কের আসলে উল্টোপিট আছে। == আপনার এই কথা ভীষণ ভাল লাগলো ।
সব কিছুরই উল্টোপিঠ থাকে । সম্পর্কের আরও অনেক বেশী।
অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
৩৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:০৭
কালীদাস বলেছেন: ভালই হয়েছে গল্পটা
০৫ ই মার্চ, ২০১৮ ভোর ৪:৪৫
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৩৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯
আমি ৎৎৎ বলেছেন: অনেক ভাল লাগল, আমার মনে হয় আপনি বাংলাদেশ, আর বাংলাদেশিদের খুব মিস করেন।
শুক্রবার সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা আছে, কারন ক্রেইগলিস্টের আমি নিজেই পোষ্টার ।
ভাল থাকুন, সবসময়।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৫
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:৫৪
রাফা বলেছেন: খুব ভালো হইছে....।
আদিতির ফোন নাম্বারটা একটু দেওয়া যাবে? আমি কিন্তু অর্ণবের মত নই-হি..হি...হি