নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সূচনা খান

সূচনা খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাভারতের বীর যোদ্ধা ‘কর্ণ’

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯

যদি কেউ প্রশ্ন করে মহাভারতের কোন চরিত্রটি আমার ভালো লাগে, আমি বলবো কর্ণ। কর্ণ মহাভারতের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় চরিত্র। তিনি ছিলেন একাধারে জ্ঞানী এবং নীতিবোধের অধিকারী‚শক্তিশালী‚সেরা ধনুর্ধর এবং বুদ্ধিমান।লোকলজ্জার ভয়ে কুন্তী জন্মের পরেই তাঁকে নদীতে ভাসিয়ে দেন। এ থেকে বোঝা যায়, মায়ের কাছে তিনি ছিলেন অবহেলিত। অধিরথ এবং রাধার সংসারে পরম আদরে বড় হয় কর্ণ।

এদিকে সূতপুত্র হওয়ায় কোনদিনও কারো কাছে দাম পায়নি তিনি। পদে পদে তাকে অপমান সহ্য করতে হয়েছে। ক্ষত্রিয় জাতির তীব্র বিরোধী ছিলেন পরশুরাম। কিন্তু তাঁর মতো আচার্যর নিকট অস্ত্রশিক্ষা না হলে তৃপ্ত হতে পারছিলেন না কর্ণ। তাইতো মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে অস্ত্রশিক্ষায় পারদর্শী হয়। কিন্তু এখানেও বাধলো বিপদ সত্য জানতে পেরে ক্ষিপ্ত পরশুরাম অভিশাপ দিয়েছিলেন‚ যুদ্ধের অমোঘ শিক্ষা মনে পড়বে না কর্ণের‚ ঠিক যখন প্রয়োজন হবে। তার অভিশাপ বিফলে যায়নি এবং পরবর্তীতে আমরা এর দৃষ্টান্ত দেখতে পাই মহাভারতে।

কর্ণ ছিলেন এক কথার মানুষ। রাজপুত্রদের অস্ত্র প্রদর্শনীতে কর্ণ যখন অর্জুনের সাথে লড়তে চায়, তখন তাকে অপমান করে বলা হয়- রাজার ছেলের সাথে সারথির ছেলের কখনোই লড়াই হতে পারেনা। সেই সময় এই অপমান থেকে তাকে বাঁচায় দুর্যোধন। তাকে অঙ্গদ রাজ্যের রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করেন। এর বিনিময়ে কর্ণ প্রতিজ্ঞা করেন তার সাথে আমৃত্যু বন্ধুত্বের। মহাভারত যারা পড়েছেন তারা সকলেই জানেন, সারা পৃথিবীর বিনিময়েও কর্ণ তার প্রতিজ্ঞা থেকে সরে আসেনি। এমনকি তিনি জানতেন পাণ্ডবরাই ন্যায়ের পথে আছে।

কুন্তিও কর্ণকে তার আসল পরিচয় জানিয়ে অনুরোধ করেন দুর্যোধনের পক্ষত্যাগ করতে। মা ও ছেলের কথপোকথন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “কর্ণকুন্তী সংবাদ” কবিতায় দারুণভাবে বর্ণিত আছে-

কর্ণ- পুণ্য জাহ্নবীর তীরে সন্ধ্যাসবিতার
বন্দনায় আছি রত। কর্ণ নাম যার
অধিরথসূতপুত্র, রাধাগর্ভজাত
সেই আমি-- কহো মোরে তুমি কে গো মাতঃ!

কুন্তী- বৎস, তোর জীবনের প্রথম প্রভাতে
পরিচয় করায়েছি তোরে বিশ্ব-সাথে
সেই আমি, আসিয়াছি ছাড়ি সর্ব লাজ
তোরে দিতে আপনার পরিচয় আজ।

কর্ণ কুন্তিকে কথা দেয় অর্জুন ছাড়া বাকি চারজনকে তিনি হত্যা করবেন না। কিন্তু কি নির্মম ভাগ্যের পরিহাস অভিশাপের কারণে একের পর এক বাধার সম্মূখীন হয় তিনি। অবশেষে অর্জুনের হাতেই মৃত্যু হয় এই বীর যোদ্ধার। সূর্যের ঔরস্য হওয়ার পরেও পুরো মহাভারত জুড়ে এই বীরকে কতনা অপমান সহ্য করতে হয়েছে। কর্ণ চরিত্রটি আমাদের শিক্ষা দেয় জয়ী হওয়া বীরের ধর্ম নয়, পরাজয়ের মধ্যে দিয়েও বীরের মৃত্যু হয়। কর্তব্য পালনই বীরের ধর্ম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.