নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিরাজগঞ্জে জন্ম, পৈতিৃক নিবাস মাগুরা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি। সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলাম। কবিতা, গল্প ও ফিচার লিখি।

সুদেব চক্রবর্তী

ঢাকা।

সুদেব চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের আরেক মাত্রা ১০% ভ্যাট !

০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:২৬

শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার হলেও এটা যেন সুযোগে পরিণত করা হচ্ছে দিন দিন। কেবলমাত্র যাদের টাকা আছে তারাই এটা কিনে নেবার সুযোগ পাবে। বলা চলে বর্তমানে শিক্ষাও একধরনের পণ্য। একদিকে বিনামূল্যে বই দেয়া হচ্ছে অন্যদিকে যাবতীয় শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়গুলোর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার শিক্ষাখাতে বরাদ্দও কমে যাচ্ছে দিন দিন। গত পাঁচ বছরে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমেছে ৩ শতাংশ। জাপানি এক নেতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাদের দ্রুত উন্নতির প্রধান কারণ কী ? তিনি বলেছিলেন, ‘কিছুই না, আমরা কেবল শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছিলাম’। আজকে ঘানা, কেনিয়ার মত দেশগুলোও যেখানে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করছে সেখানে আমরা তার ধারে কাছেও যেতে পারছি না। এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ নিয়ে খোদ শিক্ষামন্ত্রী নিজেই হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাহলে কীভাবে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব ? কীভাবেই বা আমাদের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব ?
দিন দিন রাষ্ট্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় উৎসাহিত হচ্ছে শিক্ষা বানিজ্য। এই বাণিজ্যিকীকরণ শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সাল থেকে। দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ শিক্ষার নোংরা বানিজ্যিকীকরণ চলছে। কিন্তু শিক্ষা আর ব্যবসা এক সঙ্গে চলে কি ? অথচ শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ এর বিরুদ্ধে আমাদের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিতাস। ১৯৬২ এর ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন আইয়ুব সরকারের শিক্ষানীতি যেখানে বলা হয়েছিল যারা টাকা দিতে পারবে কেবল তারাই পড়তে পারবে- এর বিরোধীতায় রাজপথে নেমে পড়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে সাধারণ ছাত্ররা। আজকের শিক্ষামন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও সেদিন ছাত্রাবস্থায় সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। সেদিন প্রতিবাদী মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে মোস্তফা, বাবুল ও ওয়াজিউল্লাহকে। সেদিন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র সমাজ অধিকার আদায় করেছিল। সেই থেকে আমরা দিনটিকে প্রতিবছর শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করি। কিন্তু রাষ্ট্র সেই চেতনা থেকে সরে এল কেন ? সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটল এবারের বাজেটে। যখন শিক্ষা খাতে ১০% ভ্যাট আরোপ করা হল। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী পরে এই ভ্যাট কমিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশের কথা বলেছেন। শিক্ষা যেন আলু, পেঁয়াজ, সাবান, শ্যাম্পু যার দরুন এই ভ্যাট আরোপ। তার মানে যারা অতিরিক্ত অর্থ দিতে পারবে তারাই শিক্ষা লাভ করবে, এক কথায় তারাই সার্টিফিকেট কিনে নিতে পারবে। তাহলে শিক্ষা কি সবার জন্য মানে সার্বজনীন হল ? শিক্ষা কি মানুষের মৌলিক অধিকার থাকল ? কতজন পারবে সেই অতিরিক্ত অর্থ দিতে ? আর টাকায় কেনা সার্টিফিকেট কীভাবে জাতির অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে ?
ইতিমধ্যেই ছাত্র ইউনিয়ন রাজপথে নেমেছে এই ভ্যাট বাতিল ও শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবীতে। ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে পুলিশি বাধা ও গ্রেফতারের খবর এসেছে। তারা নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে। সুতরাং ছাত্রদের দাবিয়ে রাখা যাবে কি ? ৫২ থেকে অদ্যাবধি প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্ররাই ছিল অগ্রবাহিনী। এই ছাত্রদের রয়েছে ৬২-এর চেতনা যা তারা ধারণ করে চলেছে। এর আগেও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছিল। আন্দোলনের চাপে ধোপে টেকেনি। আবার এই নোংরা পায়তারা চলছে।
তাই রাষ্ট্রকে শিক্ষা খাতে বৈষম্য দূর করতে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে। শিক্ষাখাতে কমপক্ষে মোট জাতীয় আয়ের ২৫ শতাংশ বরাদ্দের পাশাপাশি ঘোষিত ভ্যাট বাতিল করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার অধিকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.