নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুকনো পাতার ধ্বনি

কখনো সুরের ছন্দ মেলেনা,তো কখনো তাল তবু গেয়ে যেতে হয় মিলিয়ে সাথে সময়ের সুর-তাল!

শুকনোপাতা০০৭

আমার 'কলম' আজো আছে আমার সাথে, আমার কষ্টের সঙ্গী হয়ে,আমার সুখের ভাগ নিয়ে দেনা-পাওনা চুকিয়ে,এক চিলতে হাসি হয়ে...

শুকনোপাতা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রজেক্ট ''হেলদি বাচ্চা ''...!!!

১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:২৬



আজকে কোন এক্সাম ও নেই,ক্লাস ও নেই তারপরেও বেশ তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠলাম,খুব সম্ভবত স্বপ্ন ভালো দেখছিলাম না!শুধু শুধু শুয়ে শুয়ে ফালতু স্বপ্ন দেখার কোন মানে নাই,তাই উঠে পড়লাম।ঘর গুছানো শেষ করে নাশতা করলাম,চা বানাবো কি বানাবো না এ ব্যাপারে কনফিউসড!

কারন এরই মধ্যে আম্মুর কাছে এক আন্টি এসেছেন দেখলাম,এখন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা আন্টি চলে যাওয়ার পর চা বানাবো নাকি আন্টি থাকতেই চা বানাবো...!

আর আমার বাসায় চা বানানোর পটভূমি সম্পর্কে তো সবাই জ্ঞাত...!

তিনজনের জন্য চা বানানোর একদম শেষ পর্যায়ে এসে দেখি আরো দুইজন আন্টি এসেছেন!বহু কষ্টে একখান স্মাইল মুখে ধরে রেখে আবারো নিজের জন্য চা বানালাম,চা নিয়ে নিজের রুমে আসার সময় শুনতে পেলাম এক আন্টি বলছে,''আপা,বাচ্চাদের খাওয়ার রুচি কি করলে বাড়ে বলবেন একটু?আমার বাচ্চাটা না খেতেই চায় না..এতো শুকনা বাচ্চা কি ভালো লাগে বলেন?!!"আন্টির এই কথা শুনে আমার আম্মু যা মন্তব্য করল টা শুনে অনেক কষ্টে হাসি চেপে নিজের রুমে আসলাম!

চা খেতে খেতে হাসছিলাম আর বারবার শুধু নিজের ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল...আহারে!হাহাহাহা



আমার আম্মুরা দুই বোন।পিঠেপিঠি না কিন্তু আমাদের দুই বোনের মতো অনেক বয়সের পার্থক্য নেই। দু'বোনের মধ্যে যথেষ্ট মিল,ভালোবাসা আর খাতির যা ই বলি না কেন সব টা বিদ্যমান।তাদের দুই বোনেরই খুব শখ ছিল তাদের বাচ্চা গুলা খুব হেলদি হবে!আইমিন,নাদুস-নুদুশ,গুল্লু গুল্লু টাইপের...!

কিন্তু আফসুসের ব্যাপার হইলেও সত্য তাহাদের সেই স্বপ্ন পূরন হয় নাই/:)

আমার জন্মের পর থেকে আম্মু,নানু,খালামনি তাহাদের অনেক দোয়া আর শখ ছিল যে তাদের মেয়েটা হবে সেই রকম গুল্লু গুল্লু টাইপের,যার বয়স এক বছর হলেও স্বাস্থ্য দেখে মনে ৩/৪বছর!বাচ্চা একবেলা না কম করে হলেও তিন চার বেলা খাবে,যা পাবে তাই খাবে...!খাওয়া নিয়ে কোন কথাই বলবে না..................!আহা!কতো সুন্দরই না ছিল স্বপ্ন গুলো...!

কিন্তু আমি আর আমার ভাই আমরা দু'জনেই ছোট বেলা থেকে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে ছিলাম মাশায়াল্লাহ,সেই রকম সচেতন!

একবেলা খাইলেই আমাদের হয়ে যায়...!আর সে জন্য আমাদের স্বাস্থ্য ও সেই রকম...:)

এই অবস্থায় আমার আম্মুর স্বপ্নের কি হবে?!!!তার নাদুশ-নুদুশ,মোটা বাচ্চার স্বপ্ন কি ভেস্তে যাবে?...না না না...তা হতে পারে না...X(

আর সেই জন্যে আমার আম্মু ব্যাপক মরিয়া হয়ে উঠলেন...!



আমার যতটুকু মনে পড়ে,হেন কোন কাজ বা উপায় নাই যা আমার আম্মু করে নাই শুধ মাত্র তার বাচ্চাদেরকে মোটা বানানোর জন্য!!যে যখন যা বলছে,যেই ভাবে করতে বলছে আম্মু সেটাই করেছেন...উদ্দ্যেশ্য একটাই...হেলদি বাচ্চা!

একবারের ঘটনা খুব বেশি মনে পড়ে,

আম্মুর এক ভাই আছে তিনি তখন সদ্য পাশ করা ডাক্তার,সেই তুহিন মামা আম্মুকে বুদ্ধি দিল,''বড়'পা,বাচ্চাদেরকে তিন বেলা খাঁটি ঘি খাওয়াবেন তাহলে দেখবেন একমাসেই আপনার বাচ্চারা কেমন নাদুশ-নুদুশ হয়ে যায়...!'

ব্যাস...আর পায় কে, সেই দিনই আম্মু ইয়া বড় একটা ঘি এর কৌটা কিনে আনলেন।

এবং তিনবেলা আমরা যাই খাই,আম্মু তার সাথেই ঘি খাওয়ানো শুরু করলেন...!এদিকে আমি ঘি এর গন্ধ সহ্যই করতে পারিনা,খাবো দূরের কথা! আর আমার ভাই...সে বেচারর তো আরো খারাপ অবস্থা!ভয়ের চোটে আমরা খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেই,খেতে বসলেই খালি চোখ মুছি!নাকের পানি চোখের পানি এক করে একাকার অবস্থা...!কিন্তু আমাদের টিচার আম্মুর একই কথা ঘি দিয়েই আমাদের খেতে হবে...এই রকম ভয়াবহ অবস্থা থেকে আল্লাহর রহমতে আমাদের কে উদ্ধার করল আব্বু।আম্মুকে বোঝালেন,'তুমি যা করতেছো তাতে করে বাচ্চা গুলো বেশী খাবে দূরের কথা উল্টা না খেয়ে মরে যাবে...!'

শেষে রাগে দূঃখে আমার মা ঘি খাওয়ানো প্রজেক্ট বন্ধ করলেন!:) কিন্তু হাল ছাড়েননি আম্মু...একের পর এক চেষ্টা করেই গেছেন,করেই গেছেন,করেই গেছেন...

কিন্তু আম্মুর চেষ্টা বিফল অবস্থা দেখে ছোট খালা খুবই প্রিপারেড হলেন,

বড়'পা ফেইল হতে পারে কিন্তু আমি না...আমি আমার বাচ্চা কে হেলদি বানিয়েই ছাড়বো!!

আল্লাহর অশেষ রহমতে দুনিয়াতে আসল আমার খালাতো বোন সায়মা।

আহারে বেচারী...!ছ'মাস যেতে না যেতেই আমার খালা শুরু করলেন তার হেলদি প্রজেক্ট!

বাইরের দুধ ওর পেটে সহ্য হয়না,মহা পন্ডিত তুহিন মামা তাই বুদ্ধি দিলেন,দুধ ছাড়া অন্য কিছু খাওয়াতে...অল্প অল্প করে একটু পর পর...

এই 'একটু পর পর কথাটাই' দিল যত ১২টা বাজিয়ে...! আমার ছোট মামার ভাষ্য মতে,''যেই না আমি ক্লাসের বই পড়ার ফাঁকে গল্পের বইটা মাত্র পড়া শুরু করছি,অমনি,ছোট আপার বাচ্চাটা কান্না শুরু করে দিছে!তাও কি জন্যে?তার মা তারে খাওয়ানো শুরু করছে সেই জন্য!উফফ...এই ভাবে বলে মানুষ বাচ্চা পালে...? যখনই বাসায় থাকি একটু পরপর সায়মার কান্না শুনি...আরে?বাচ্চা মানুষ খেলবে,হাসবে তা না...হাসি খুশী বাচ্চাটাকে ছোট'পা কান্না করাচ্ছে!!''

ছোট খালা যে কি পরিমান সিরিয়াস ছিলেন তা সত্যি ভাবা দায়!

সে সত্যি সত্যি ঘড়ি ধরে ধরে তার বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করেছিল।

আমাদের সায়মা অসম্ভব কিউট একটা মেয়ে,আর খুব কৌতুহলি,সে সব কিছু দেখতে খুবই পছন্দ করতো,তবে খাওয়া নিয়ে তার কৌতুহল খুবই কম ছিল,আর সে জন্যই সে খাওয়া মুখে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পাড় করে দিতে পারতো...!কিন্তু তার একটা প্রবলেম ছিল,খাওয়া সে গিলতো না।আর এ জন্য তাকে খাওয়ানোর প্রসেস টা ছিল এই রকম,

এক কিল পিঠে পড়লে সে হা করতো,আরেক কিল পিঠে পড়লে সে চাবাতো,আরেক কিল পিঠে পড়লে গিলতো,এবং...আরেক কিল পিঠে পড়লে সে আবারো খাওয়ার জন্য হা করতো...!

সে যতোক্ষন খেতো ততোক্ষন ভ্যা ভ্যা করে গান গাইতেই থাকতো গাইতেই থাকতো...আর সে গান শুনে বাসার বাকী সবার মাথা ব্যাথা হয়ে যেতো!

বড় দুই বোনের বাচ্চাদের সাথে এমন যুদ্ধ দেখে মামারা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলছে আর যাই হোক,বিয়ে করবো না আর করলেও বাচ্চা দরকার নাই...!

নানা ভাই প্রায়ই আম্মুদেরকে বলতো,দেখ মা,হাড্ডি থাকলে মাংস হবে,মাইরা ধইরা বাচ্চা খাওয়ানো যায় না...!কিন্তু কে শুনে কার কথা...!



আম্মু,পড়াশুনা,চাকরী আরো অনেক কাজ নিয়ে যতোই ব্যাস্ত থাকতেন না কেন,আমরা তার সামনে খেতে বসলেই হইল,শুরু হয়ে যেতো তার হেলদি বাচ্চা প্রসেস...! তার বাচ্চা গুলো মোটা না সেই আফসোস সে কোথাও রাখার জায়গা পেতো না,খালি বলতো,''আমার বাচ্চা গুলো কার মতো হইল বুঝি না,সবাই ভাববে যা খাবার সব আমি আর ওদের আব্বুই খাই!ওরা কিচ্ছু খায় না,অথচ মানুষের বাচ্চারা...কত্তো নাদুশ-নুদুশ দেখতে!আর আমার গুলো কি হইল...!''

আমার মাথায় ছোট থেকে এই জিনিসটাই ঢুকে ছিল যে,হেলদি বাচ্চা মানেই ইয়া মোটা বাচ্চা!আর মোটা বাচ্চা মানেই ভালো বাচ্চা!আমরা মোটা না,আর তাই আমাদের নানু,আম্মু,খালা কেউ আদর করে না!/:)



দেখতে দেখতে বছর পাড় হলো,নানু বাসায় এখন আমরা মামাতো-খালাতো মিলিয়ে প্রায় দশ ভাই বোন।এবং আমরা সবাই একই রকম স্বাস্থ্যবান!

তবে আমাদের মা-খালা-নানিরা এখন আর মোটা বাচ্চা নিয়ে আফসোস করেন না,কারন তাদের আফসোস ভালো ভাবে মিটে গেছে...!

আমার ছোট বোন,নাহিয়ান।আমার থেকে অনেক অনেক ছোট ও।এবং কাজিনদের মধ্যেও অনেক ছোট সে...জন্মের পরেও যে খুব একটা স্বাস্থ্যবান সে ছিল তাও না।কিন্তু ওর বয়স বাড়ার সাথে সাথে আল্লাহ পাক আম্মুর দোয়া কবুল করে আমাদের বাকী দুই ভাই-বোনের খাওয়ার রুচি ওর মুখে দিয়ে দিলেন...!

ব্যাস...আর কি?এখন আমরা নয় ভাই-বোন একদিকে আর সে একাই একশ হয়ে একদিকে...:)

সবাই খুশী...আম্মু সব চেয়ে বেশী খুশী।তার এই মেয়ে হয়েছে তার মনের মতো,নানু খুশী,অন্তত তার একজন নাতনী তো হয়েছে হেলদি!যেখানেই যায় সবাই খুব প্রশংসা করে,আম্মুর বান্ধবী,কাজিনরা আফসোস করে,''ইশ তোর বাচ্চাটা কি সুন্দর যা পায় তা ই খায়...আর আমার টা...?'' ''বাহ,কি সুন্দর নাদুশ-নুদুশ বাচ্চা তোর!''আম্মুর সাথে সাথে আমরাও খুশী...



কিন্তু ঝামেলা হলো আরেক জায়গায়...!:|

আম্মুদের এক ভাবী ছিলেন,যিনি এই ফ্যামিলিতে প্রথম হেলদি বাচ্চা প্রজেক্ট শুরু করেছিলেন এবং সফল ও হয়েছিলেন,অনেক বছর পর তার সাথে আম্মুর দেখা হলো।

তিনি আমাদের নাহিয়ান কে দেখে আম্মুকে বললেন,'বাহ,তোমার এই বাচ্চাটা তো বেশ হেলদি হয়েছে।'

আম্মু খুশী হয়ে বললেন,'ভাবী,আল্লাহর ইচ্ছায় আমার মেয়েটা আপনার সেতুর মতো নাদুশ-নুদুশ হয়েছে...'

ঠিক তখনই আন্টি মুখ আঁধার করে বললেন,

--''ভাইরে...নাদুস-নুদুশ বাচ্চার শখ আমার শেষ...''

আম্মু বলনে,

--''কেন ভাবী?কি হইছে?''

--কি আর হবে?ছোট থেকে খেতে খেতে তোমাদের সেতু এখন এমন মোটা হয়েছে যে আর কমানো সম্ভব হচ্ছে না,এই মেয়ের ভবিষত নিয়ে আমি এখন চিন্তায় আছি!মেয়ের খাওয়া তো কোন ভাবেই কমাতে পারছি না,মোটা মেয়ে বিয়ে দিবো কিভাবে?ভাই,বাচ্চাকালে মোটা ভালো বড় হইলে না...''

হেহেহেহেহেহেহে............!!!





এখন আমাদের বাসায় আম্মু একটা নিউ প্রজেক্ট শুরু করেছেন।

''স্লিম বাচ্চা''প্রজেক্ট।

আমরা বড় দুই ভাই বোন অত্যন্ত আশা বাদী যে আগের বার ফেইল করলেও আম্মু এইবার পাশ করবে ইনশা'ল্লাহ।

কিন্তু কাজটা খুবই কঠিন,নাহিয়ান ম্যাডাম হয়েছেন একেবারেই আমাদের উল্টা!আমরা ফাস্ট ফুড খুবই অপছন্দ করি আর সে...?যতো দেয়া হোক কোন সমস্যা নাই...ঘি দু'চোখে দেখতে পারিনা আমরা,আর সে...?ঘি যেনো তার কাছে মধু...!তৈল,চর্বি জাতীয় খাবার তার সে রকম প্রিয়!আর খাওয়া নিয়ে তার কোন কমপ্লেইন নাই...!উল্টা সে আমাকে শুনায়,আপু তুমি দেখি কিছুই খাওনা...!!।

কয়দিন আগে আমার এক মামা বললেন,''আপা মেয়েকে বেশি খাওয়ানোর দরকার নাই,কম করে ভালো ভাবে খাওয়ান,যাতে সূস্থ থাকে,আমার মেয়েকে তো দেখেন নাই,৫বছর পর দেশে এসে মেয়েকে তো কোলে নিতেই জান বের হয়ে যাচ্ছে,ওর মা এতো মোটা বানাইছে খাওয়ায়ে খাওয়ায়ে কি বলব...!!"হিহিহি

তবে নাহিয়ানের এই হেলদি স্বাস্থের অনেক ভালো দিকও আছে...!সে আমার বাকী সব শুটকা-শুটকি টাইপ কাজিনদের কে এক ধাক্কাতেই কুপকাৎ করে ফেলতে পারে...!এবং সে এক নাগারে অনেক কাজ করতে পারে...যার জন্য আমার নানু তাকে অনেক আদর করে।

সে নাদুশ-নুদুশ দেখতে তাই তাকে সবাই খুব আদর করে,যতো গম্ভীর মানুষই হোক না কেন...!

তবে আমার মা এর শুধু একটাই চিন্তা এখন...!মেয়ে যেনো বড় হয়ে মোটা না থাকে...! তার মোটা বাচ্চার শখ ভালো মতোই এখন শেষ...আর সে জন্য

আমরা ব্যাপক খুশী......... :D:)

তাও ভালো যে আমার মা শুধু মোটা বাচ্চা চেয়েছিল,ফর্সা বাচ্চা চাননি,সেদিন এক বান্ধবী বলল,ওর ভাতিজি ১বছর বয়স, দেখতে নাকি কালো হয়েছে তাই ওর ভাবি এখন থেকেই কাঁচা হলুদের রস খালি পেটে খাওয়ানো শুরু করেছে!যাতে মেয়েটা ফর্সা হয়!!

আমি ঠিক জানিনা,বাচ্চা কালো বা মোটা নিয়ে মায়েদের এই অস্থিরতা কেন হয়...?তবে এতটুকু বুঝি,মায়ের এমন মানুষিকতা বাচ্চাটাকে মানুষিক ভাবে অনেক আঘাত দেয়।যেমনটা আই ফিল করেছি ছোট বেলায়,যদিও আম্মুর সামনে,'তোর বাচ্চাটা কালো' এই কথাটা কেউ বলতে পারেনি,সেদিক থেকে আমি অনেক শান্তি পেয়েছি বলবো,কিন্তু সেদিন এক এমফিল করা মায়ের মুখে শুনতে পেলাম,সে বলছে,''আমার বড় মেয়েটা কালো হয়েছে দেখে ছোটটা হওয়ার সময় আমি অনেক ভয়ে ভয়ে ছিলাম,এমনকি একদিন স্বপ্নেও দেখেছিলাম,আমার ছোট বাচ্চাটা কালো হয়েছে,সে জন্য অনেক কেঁদেছিলাম,আল্লাহর শোকর যে ছোট মেয়েটা কালো হয়নি,আমার মতো ফর্সা হয়েছে...!!''

কথা গুলো শোনার সময় আমি খেয়াল করছিলাম,তার বড় মেয়েটা পাশে আছে কি না,ছিলনা দেখে শান্তি পেয়েছিলাম,কারন যদি থাকতো মা এর এমন অনুভূতি শুনলে বাচ্চা অসম্ভব কষ্ট পেতো...!

এমন মানুষিকতা যে শুধু আজকাল কার মা দের এই কথাটা বললে ভুল হবে,যুগ যুগ ধরেই আমাদের সমাজে মায়েদের,খালাদের,নানীদের মাঝে এই মানুষিকতা চলে আসছে,তাও আল্লাহর শোকর যে এখন মেয়েরা অনেক কিছু করতে পারছে,নিজেকে শুধ বাহ্যিক রুপ দিয়ে না,যোগ্যতা দিয়েও প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে,যেটা আগে করতে পারতো না।

মা হলো,সন্তানের জন্য বটবৃক্ষের ছায়াতলের শীতল পরশ।এমন মানুষিকতা মায়েদের রাখা ঠিক না...জানি,কেউ যখন তার বাচ্চাকে কালো বলে রোগা বলে মায়ের তখন অনেক খারাপ লাগে,কিন্তু সন্তানেরও নিশ্চয়ই শুনতে অনেক ভালো লাগে না...আর দশজন বললেও সহ্য করা যায়,কিন্তু মা বললে সহ্য করা যায় না...













মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৪০

মেহেরুন বলেছেন: ''আমার বাচ্চা গুলো কার মতো হইল বুঝি না,সবাই ভাববে যা খাবার সব আমি আর ওদের আব্বুই খাই!ওরা কিচ্ছু খায় না,অথচ মানুষের বাচ্চারা...কত্তো নাদুশ-নুদুশ দেখতে!আর আমার গুলো কি হইল...!''

এই কথা যে জীবনে কতবার শুনলাম :( আজকেও শুনেছি :)

লেখা দারুন লাগলো। ++

কেমন আছেন?

২০ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:৩২

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: ভালো আছি আপু,আপনি কেমন আছেন?..

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:০৭

রঙ তুলি ক্যানভাস বলেছেন: " আর এ জন্য তাকে খাওয়ানোর প্রসেস টা ছিল এই রকম,
এক কিল পিঠে পড়লে সে হা করতো,আরেক কিল পিঠে পড়লে সে চাবাতো,আরেক কিল পিঠে পড়লে গিলতো,এবং...আরেক কিল পিঠে পড়লে সে আবারো খাওয়ার জন্য হা করতো...!
সে যতোক্ষন খেতো ততোক্ষন ভ্যা ভ্যা করে গান গাইতেই থাকতো গাইতেই থাকতো...আর সে গান শুনে বাসার বাকী সবার মাথা ব্যাথা হয়ে যেতো! " =p~ =p~

পোস্ট +++++।
অনেক সুন্দর একটা পোস্ট,পড়তে যেমন মজা পেয়েছি তেমনি ম্যাসেজও আছে পোস্টে ।

আমার নিজের কথা মনে পড়ে গেল,আমিও সেই ছোটবেলা থেকেই সেইরকমের সাস্থ্যের অধিকারিনী :P
শোনা কথা,আমাকে খাওয়াতে ৩জন মানুষ লাগতো,একজন কোলে নিয়ে ঠেসে ধরতো হাত-পা,আরেকজন খাবার বাটি নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকত যাতে কোনাভাবেই আমার হাত পা ছাড়িয়ে নিয়ে বাটী ফেলে দিতে না পারি,আরেকজনেক হাতে মুখ চেপে ধরে হা করিয়ে খাবার পুরে দিতো মুখে,তারপর আবার মুখ বন্ধ করে রাখতো হাত দিয়ে যাতে থু মেরে খাবার ছিটায়া না ফেলি =p~
এই গল্প শুনে আমি বলতাম আফসোস তোমরা খালি দুর্নাম হিসেবে আমার এই গল্পটা কর,অথচ একবার ও ভাবলানা পিচ্চি আমার কত শক্তি ছিল!!!আমার একার সাথে তিন তিনটা মানুষ!!আর কি বুদ্ধি আমার তখনই!!চান্স পাইলেই খাবারে বাটি ফেলে ফেয়া,থু মেরে ফেলে দিয়ে না খাওয়ার পথ বের করা,কত বুদ্ধি ছিল আমার :P
আরেকটা গল্প হল,যখন মাত্র নিজে নিজে বসতে পারি,হামাগুড়ি দেই,বাইরের খাওয়া শুরু করি তখন নাকি আমাকে একটা ডিম দিলে আমি প্লেট ভেঙ্গে ফেলতাম,দুইটা ডিম দেয়া লাগতো এক্সাথে!!!তাই আমাকে স্টীলের প্লেটে দিত :P এই গল্প শুনে বলতাম দুইটা ডিম খেয়ে এত শক্তি হয়ে গেছিল যে পরে আর খাইতেই চাইতাম না কিছু :P

২০ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:৩৩

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: হাহাহাহা..আপনার মন্তব্য টা পড়ে খুব মজা পেলাম..অনেক ধন্যবাদ :)

৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:০৫

লুমেন বলেছেন: ভিষণ ভালো লাগলো. সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক

২১ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:০৭

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: হুম.. সেই দোয়াই করি.. :)

৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:২২

আমি ইহতিব বলেছেন: মায়েরা এমনই হয়, ছেলেমেয়েদেরকে মোটা তাজা করতে পারলেই তারা নিজেদের স্বার্থক মনে করে। আমার মেয়েটাকে নিয়ে আমি এই যন্ত্রণায়ে যাইনা। আমি ওকে খাওয়ানোর কথা মনে হলেই জ্বর আসে, একজনের বুদ্ধিতে তাকে এখন ৩/৪ ঘন্টা পর পর খাবার দেই, তাও তাকে খাওয়াতে ১ঘন্টার উপরে সময় লাগে। আর স্বভাবতই তার স্বাস্থ্য তেমন টিং টিঙে। অনেকেই অনেক কিছু বলে কিন্তু আমি গায়ে লাগাইনা, আমি চাই আমার মেয়েটা স্বাস্থ্যবান না হয়ে সুস্থ থাকুক।

ভালো লাগলো আপনার লেখা ও লেখার মেসেজ।

২১ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:০৯

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ..আপনার কথার সাথে আমিও একমত।স্বাস্থ্যবান নয়,সূস্থ বাচ্চা হলেই হয়.. :) আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইল

৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৪:১৪

সান্তনু অাহেমদ বলেছেন: উপকারী পোস্ট। যথার্থ।

শুভ কামনা রইল আপু।+++

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৫৫

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :)

৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:২৮

সায়েম মুন বলেছেন: দেশে যে হারে মোটকা মানুষ বাড়তেছে তার উপর আবার প্রজেক্ট #:-S

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৫৬

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: হাহাহা ..ভালোই বলেছেন

৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:২৬

একজন আরমান বলেছেন: হুম। বুঝিলাম। আনটিকে বলবেন আপনাদের কমপ্লান খাওয়াতে :P
আমার মা আমাকে ছোটো বেলায় জোর করে খাওয়াতেন বলতেন তুই তো পিচ্চিই থেকে যাবি। এমনকি এখনও বাসায় গেলে বলে একটু বেশী বেশী খা, সেই খাটোই রয়ে গেলি! অথচ আমি ৫" ১১' !! আমি বলি মা তাহলে এখন আমাকে কমপ্লান খেতে হবে। :P

আর কালো হলে কি সমস্যা আমি বুঝি না।
আমার পারসোনালি কালোতে কোন সমস্যা নেই। :)
কারণ একজন মানুষের বাহ্যিক দিকটিই সব নয়, আসল হল তার মন। :)

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৫৬

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: কমপ্লান খাওয়ানো হইছে /:)

৮| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১:০৯

ছোট নদী বলেছেন: এক কিল পিঠে পড়লে সে হা করতো,আরেক কিল পিঠে পড়লে সে চাবাতো,আরেক কিল পিঠে পড়লে গিলতো,এবং...আরেক কিল পিঠে পড়লে সে আবারো খাওয়ার জন্য হা করতো...! ;)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:২৬

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: :)

৯| ০৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৩

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: হি হি......... মজা পাইলাম

১৭ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.