নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসসালামু আলাইকুম\nআমি আপনাদের সান ড্যান্স aka স্যাম রহমান :)

সানড্যান্স

এই যে ব্যাস্ততা বাড়ছে, এই যে নিকোটিন!জ্বালিয়ে দেয়া সিগারেটে ধোয়াচ্ছন্ন বেডরুমপ্রতিদিন ভাল্লাগেনার ছাই জমে এস্ট্রেতেব্যাস্ততার কালচে লাইটার, এই যে অলস ঘুম!এক কপি স্বপ্ন আসে সৌজন্য কপি হয়েসারারাত ঘুমিয়ে থাকি প্রচ্ছদে হাত বুলিয়ে।কাশাফাদৌজা নোমান

সানড্যান্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা ছবি, কত স্মৃতি!!!

০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:১৮

ভীড় ঠেলে হুড়মুড় করে বাসে উঠে শফিক। ওঠার পর কি মনে করে হিপ পকেট এ হাত দিতেই বুকের মাঝে ছ্যাত করে ওঠে শফিকের, মানিব্যাগ টা নেই! দ্রুত হাতে বাকি পকেট গুলো চেক করে শফিক, এক বার দুবার করে বেশ কয়েকবার মানিব্যাগটা হাতড়ে হাতড়ে খুজে শফিক, নাহ কোথাও নেই মানিব্যাগ! হঠাৎ করে খুব কান্না পায় শফিকের। মানিব্যাগটা যে বাসে ওঠার সময় পকেটমার নিয়ে নিয়েছে ব্যাপারটা আত্মস্থ করতে কিছুটা সময় লাগে শফিকের। টাকা পয়সা তেমন ছিল না, বেকারের মানিব্যাগ হিসেবে ২০০ টাকার মত ছিল, মনটা খারাপ হয় আইরিনের ছবিটার জন্য। এই শেষ স্মৃতি ছিল আইরিনের, কোন এক পহেলা বৈশাখে তোলা ছবি। সারারাত কথা বলে সকাল বেলা তারা দেখা করেছিল, সারাদিন একসাথে বলেছিল অনেক না বলা কথা, দেখেছিল অনেক রঙ্গিন স্বপ্নগাথাঁ, নতুন এক রঙ্গে জীবন কে রাঙ্গায়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল শফিক আইরিন কে, আইরিন শফিক কে।



দিন শেষে তারা গিয়েছিল হলিউড স্টূডিও তে। মোবাইল কিংবা ডিজিটাল ক্যামেরা কোনটাই সহজলভ্য ছিল না তাদের যুগে, তারা ঠিক করেছিল, তারা প্ল্যান করেছিল, তারা এভাবে আসবে, শফিক পড়েছিল সাদা-কালো পাঞ্জাবী, আইরিন লাল পাড়ের সাদা শাড়ী, মেয়েদের নাকি এরকমই পড়তে হয় বর্ষবরণের এই উৎসবে। হলিউড স্টুডিওতে গিয়ে তারা ছবি তুলেছিল, শফিক ছিল আইরিনের বাহু বন্ধনে। আইরিনের নাকে নাকফুল ছিল, আইরিন জানত শফিকের নাকফুল অনেক পছন্দ। হলিউড স্টুডিওতে খাড়া করে দাঁড় করিয়ে রাখা রৌদ্রজ্জোল অরন্যের বিশাল ক্যানভাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক জোড়া কবুতরের মত লাগছিল নাকি তাদের, অন্তত আইরিন এটাই বলেছিল শফিক কে! পাখা নেই দেখে কি সেই আফসোস আইরিনের, নাকের নাকফুলে বোধহয় ক্যামেরার ফ্ল্যাশ পড়েছিল, কাচের বর্ডার দেয়া পাথর বসানো নাকফুল হীরা ভেবে ভ্রম হত মাঝে মাঝে শফিকের!



ঐ শ্যামলা মেয়ের জন্য কত কি করেছে সে!! সিগারেট খেয়ে হাজারবার কুলি করে বন্ধুদের কাছে বহুবার হাসির পাত্র হয়েছে সে, একটুখানি ঝগড়া হলে অভিমানীর মান ভাঙ্গাতে সারারাত দাঁড়িয়ে থাকত সে তাজমহল রোডে আইরিনের বাসার সামনে, এ নিয়ে আইরিনের পাড়াত ভাইদের অনেক ঝাড়ি, চোখ রাঙ্গানি নির্বিবাদে মেনে নিয়েছে সে! জীবনে প্রথম সিগারেট খরচ বাচিয়ে আইরিন কে কিনে দেয়া শাড়ীতে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুজনে ছবি তোলা!! আইরিনের টিউশনির খরচে কেনা পাঞ্জাবী, ঝুলটা একটু বড় হয়ে যাওয়াতে প্রথমবারে শফিক কে লাগছিল কাবুলিওয়ালাদের মতন! সে কী হাসি আইরিনের, এরপর সে বলেছিল আমাকে দিও, আম্মুর সেলাই মেশিনে আমি নিজেই ঠিক করে দিব তোমাকে! দিয়েছিল সে, কাঁচা হাতেই কেটে ঠিক করে সেলাই দিয়েছিল পাঞ্জাবীতে!



এরপর বহুদিন কেটে গেছে, অনেক পহেলা বৈশাখ এসে চলে গিয়েছে, স্বপ্নগুলো অনেক আগেই বিস্মৃত হয়েছে, বৃস্টি আর ঘামে ছবিটাও ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে, তবু আইরিন কে মাঝে মাঝে মানিব্যাগ থেকে বের করে সে দেখত, কখনোই তার বিরক্ত লাগত না দেখতে। ছবিতে জাদু ছিল কিনা শফিক জানেনা, ছবিটা কখনো পুরনো হয়নি শফিকের কাছে, দু একবার কি ভুলে চুমু খেয়েছিল কি শফিক ছবিতে? আইরিনের পাথর বসানো নাকফুলে, কিংবা লিপিস্টিকের রঙ আকাঁ ঠোটে,হবে হয়ত! একটা ছবি, কত স্মৃতি!!



আইরিন এভাবেই একদিন হারিয়ে গিয়েছিল শফিকের জীবন থেকে, পকেটমারের মত করেই কেউ ছিনিয়ে নিয়েছিল আইরিন কে। যেদিন আইরিন তাকে বলেছিল-শফিক আমি আর তোমাকে অনুভব করতে পারছিনা, না শরীরে না মনে, কিছু বলেনি সেদিন শফিক, বরং মৃদু হেসেছিল, বাসায় এসে টেক্সট করেছি্ল -প্রবাস জীবনে সুখী থেকো, যাকে নিয়ে সুখী হতে চেয়েছ তুমি তাকে নিয়েই সুখী থেক, তোমার সুখেই আমার সুখ, হানি! সেই শেষ!



আজ আইরিনের শেষ স্মৃতিটুকু হারিয়ে গেল তার জীবন থেকে, প্রথম দিকে না পারতে ফোন দেয়াতে আইরিন যখন মুখের উপর বলত রঙ নাম্বার, তখন থেকে ছবির আইরিন হয়ে গিয়েছিল তার প্রেমিকা। শুধু বৃস্টি আর ঘাম নয়, অনেক ফোটাঁ চোখের জল ও ভিজিয়েছিল ছবিটি, নীরবতা সম্মতির লক্ষন বলে বারংবার চোখের জলে ভিজিয়েছিল ছবিটি! কখনো কোন আপত্তি করেনি ছবির আইরিন!



ছুটে যাওয়া বাসের জানালা দিয়ে তাকায় শফিক, আকাশে মেঘ করেছে, বৃস্টি নামবে, বুকের মাঝে সব কিছু সহ্য করার ক্ষমতা জন্ম দেয়ার চেস্টা করে শফিক। মন কে প্রবোধ দেয়, রক্ত মাংসের যে আইরিন কে সে ধরে রাখতে পারেনি অন্যের কাছ থেকে, চেস্টা করেও বলতে পারেনি আইরিন তোমাকে ছাড়া আমার পৃথিবী বড় অসহায়! রাগ করতে পারেনি আইরিনের উপর, কিংবা আইরিনের নতুন সম্পর্কের উপর, আজ ছবির আইরিন কে পকেট মার নিয়ে যাওয়ায় তার উপর কি করে সে রাগ করে!



তবুও, একটা ছবি, কত স্মৃতি!!!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:০১

শিশু বিড়াল বলেছেন: একটা প্রশ্ন করব...আমার ধারনা এই গল্প শুধু গল্প না, কিছু অংশ আপনার জীবনের বাস্তব থেকে নেয়া। ঠিক বললাম কি?

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:১৮

সানড্যান্স বলেছেন: সব কিছু মিথ্যে বানানো গল্প, কি-বোর্ডে লেখা সময় কথন।

ধন্যবাদ।

পোস্ট পুরা মাঠে মারা যেতে নিছিল।

শেষ পর্যন্ত বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পেল দেখা যাচ্ছে!!!

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৪৫

ভুল উচ্ছাস বলেছেন: আইরিনরা বড্ড নিষ্ঠুর।


শফিক কে বলে দিয়েন একা থাকার মজাই আলাদা, কোন ঝুট ঝামেলা নাই, যখন তখন বন্ধুদের সাথে নিয়ে কার্ড খেলার আসর বানানো যায়, কিংবা একটা হুইস্কির বোতল একটা গ্রীল করা চিকেন। কিংবা একটা বাইক আর সেই বাইক নিয়ে ভয়াবহ গতিতে মফঃস্বলের রাস্তায় ছুটে চলা। কিংবা রাত জেগে প্রিয় কোন লেখকের বই পড়া।


আর কি চাই এই জীবনে। যা পাইনি তার আর কিসের দরকার, যে গেড়েছে মনের মাঝে দেবীর আসন সে থাক না। তবে তারপরেও হাহাকার যেন থাকে শত মাঈল দূরে।


সুখী হবার উপকরনের কি অভাব আছে?


বরং আইরিনরা একদিন নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবে কিন্তু সময়ের চেনা স্রোতে আর ফিরতে পারবে না।


লিখে যান এরকম আরো সুন্দর সুন্দর গল্প। গল্পে প্লাস।

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪

সানড্যান্স বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভুল উচ্ছাস। ভাল লাগল, উৎসাহ দেয়ার জন্য আবারো ধন্যবাদ

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৫০

ফকির সাইঁ বলেছেন: কি-বোর্ডে লেখা যায় হয়ত কিনতু সেখানে থাকে না এত আবেগ !

বেশ ভালো লাগলো ভালোবাসায়, খারাপ লাগলো কষটে----- মেয়েটা ভালো এজননে বলছি যে--- সে ওননো যদি কাউকে বিয়ে করলো, আবার এক্সবয় ফেনডের সাথেও কনটাক রাখলো----বয় ফেনডের এটা ওনেক ওনেক বেশী যনতনার ইয়ার...!

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৪২

সানড্যান্স বলেছেন: বিবাহিত মেয়েদের সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে নেই, এই ব্যাপারে নিজ থেকে সচেতন হতে হবে

৪| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৯

shfikul বলেছেন: সবই ঠিক আছে,গল্পটাও সুন্দর।কিন্তু আমার তো কোনোদিন মানিব্যাগ বাস থেকে পকেট মার হয়নি।আর আইরিন নামেও আমি কাউকে চিনতাম না।তবে তাজমহল রোড এটা ঠিক আছে।ধন্যবাদ আপনাকে,-শফিক।

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

সানড্যান্স বলেছেন: হাহাহ, তাহলে এই শফিক আপনে না, হয়ত আমি কিংবা অন্য কেউ!!!

গল্পটা লেখার সময় শফিক নামটা আপনার কাছ থেকেই ধার করেছিলাম।

অনেক ধন্যবাদ শফিকুল ভাই!

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

বিষণ্ণ বালক বলেছেন: আরে ! আপনিতো চমৎকার লেখেন ! খালি অপু তানভীর-এর রোম্যান্টিক গল্পগুলোই পরতাম। আজ থেকে মনে হয় আপনার গুলও পড়তে হবে।

৬| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

আমিনুর রহমান বলেছেন: চমৎকার লিখেছো। অনেক গোছানো ও সুন্দর ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.