![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য এটি সুসংবাদ। বিশাল খুশির খবর। বিশাল আনন্দের খবর। বীর বাঙালির গর্বিত মুহূর্ত। ৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরে যে বিজয় বাঙালি জাতি অর্জন করে তাকে পরিপূর্ণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে এ সংবাদটি। সেই হানাদার বাহিনীদের সহযোগি ঘাতক যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকারের বিচারের রায়। বাচ্চু ছাড়া অন্য শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও চলছে এখন। হয়তো আর বেশিদিন দেরি নেই তাদের বিরুদ্ধে শুধু রায় প্রদান নয় আমরা বিচারের রায় কার্যকর হতেও দেখব। সেই দিনটি হবে বাঙালি জাতির জন্য আর একটি মাহেন্দ্রক্ষণ।
কিছু সংঘবদ্ধ লোক গর্হিত অপরাধ করার পরও যখন তার বিচার হয়না অপরাধীরা বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায় আর রাজনীতির নামে কোন কোন দল ঘাতকদের পক্ষ নেয় তখন সেখানে বা সেদেশে এ ধরনের গর্হিত অপরাধীদের বিচার চালানো ও বিচার এগিয়ে নেয়া বা বিচারের রায় ঘোষণা চারটিখানি কথা নয়। সেই কঠিন কাজটি বর্তমান সরকার সফলভাবে শুরু করেছে। ১৯৯২ সালের আগে এদেশে যুদ্ধাপরাধী বলতে কেউ আছে বা তাদের বিচার হবে এমন ভাবনা এ জাতির ক’জনই ভাবতে পেরেছিল। তখনকার প্রজন্ম এটা সেভাবে ভাবারও চেষ্টা করেনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল বড়জোর জামাত - শিবির পাকিস্তানের দোসর ছিল- হত্যা,লুণ্ঠণ, ধর্ষণে জড়িত ছিল ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে। এটুকুই সাধারণ নাগরিকদের কাছে তাদের অপরাধ। এছাড়া ভূক্তভোগি ও প্রত্যক্ষদর্শী ও সচেতন মানুষ ছাড়া কেউ তাদের অপরাধের ব্যাপকতা জানত না। তাদেও বর্বরতার মাত্রা। জামাতের সেই বর্বরতাকে অপপ্রচার ও মিথ্যা বলে ছড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের জামাত-শিবির চক্র ও জামাতকে লালন-পালনকারিরা। সেই ৮০ দশকে যারা জানতে ও বুঝতে শিখছে তাদের অনেকেই পাঠ্যবই বা অন্যত্র মুক্তযুদ্ধের ইতিহাস কতটুকুন পড়ানো হয়েছে। সেটা আজকের তুলনায় দেখলে বিশাল একটা গ্যাপ। তখন কোথাও কোথাও আলোচনায় শুনতাম বঙ্গবন্ধু যেন একটা ফেরাউন। এমনি অনেক অনেক কথা। সেই গা ছমছম করা অন্ধকার একটা পরিস্থিতি থেকে এই ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি একজন যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় হওয়ার খবরটা আমাদের দেশের বিশাল অর্জন।
আমার নাগরিক দায়। রাষ্ট্রের সুখে দুঃখে আনন্দ ও ব্যথিত হবার বিষয় আছে। তেমনই একটা বিশাল আনন্দের দিন ২১ জানুয়ারি। আমরা যারা এদেশের নাগরিক। এদেশের গর্বিত নাগরিক তাদের প্রত্যেকের এ আনন্দ উদযাপন করা উচিত। বিশাল অন্যায় করে কেউ যদি পার পেয়ে যায় তাহলে রাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত সংগঠিত অসংখ্য অন্যায়-অপরাধের বিচার পাওয়া আরও দুরূহ হয়ে উঠবে।
তাছাড়া আমরা এমন রাষ্ট্রে বসবাস করতে পারি না যেখানে এদেশ সৃষ্টির বিরোধিতাকারি সেই অপরাধীরা যারা খুন ধর্ষন লুটপাট চালিয়েছে তারাও থাকবে। আর যারা দেশের পক্ষে যুদ্ধ করে হিংস্র ঘাতকের হাতে নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়েছে তাদের পরিবার পরিজন কোন বিচার না পেয়ে বুকে যন্ত্রণার পাথর নিয়ে ঘুরে বেড়াবে। রাষ্ট্রের কোন নাগরিক তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র সহাসুভূতি দেখাতে পারে না যদি না যাদের মা বোন ধর্ষিত হয়েছে, যাদের পরিবারে ভাই কিংবা বাবা যুদ্ধে শহীদ হয়েছে তারা না চায়। এ রকম চাওয়ার কথা আমরা কল্পনাও করতে পারিনা। কিন্তু এদেশে কোন কোন রাজনৈতিক দল আছে, বেজন্মা জারজ আছে যারা এ বিষয়টা বুঝতে চায় না। এছাড়া বিচার প্রক্রিয়া কিভাবে হবে নানাজন নানাভাবে ফতোয়া দেন। এজন্য কোন কোন মুক্তিযোদ্ধা প্রশ্ন করেন রাজাকার, আলবদর, শান্তি কমিটি, ছাত্রসংঘ গং রা ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে এদেশে মানুষের উপর যে হত্যাযজ্ঞে সহায়তা করেছে সেটা কোন নিয়মে করা হয়েছিল। সত্যিই তো সেদিন কোথায় ছিল এত নীতি নিয়ম।
এ মুহূর্তে শ্রদ্ধা অবনত চিত্তে স্মরণ করছি শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে। যিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করেন ও সারা বাংলাদেশে এদের বিচারের ব্যাপারে অক’তোভয়ে বিচরণ করেছেন। তখন ১৯৯২ সাল। তাদের এ উদ্যোগ নিয়ে তখন অনেকেই অনেক কথা বলত। বেশির ভাগই বলত হয়ত হতাশা থেকে। হতাশার কারণ ৭৫ এর ১৫ আগস্ট থেকে শুরু এ রাষ্ট্রে যা ঘটেছিল তাতে হয়ত মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মা বাংলার আকাশে বাতাসে কেঁদে বেড়াত। বাংলাদেশ সেই সব ভয়ঙ্কর দিনগুলো থেকে ফিরে এসেছে।
সেই দুঃসময়ে যারা নির্ভীকচিত্তে কলম চালিয়ে গেছেন শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুন সহ সেই যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। তাদের সেই চেতনা আজকের এমন সময় ফিরিয়ে দিতে অনেক বেশি সহযোগিতা করেছে। দুঃসময়ে জাতির মধ্যে চেতনার সলতেটুকুন জ্বালিয়ে রেখেছিলেন তাদের মত ব্যক্তিরা। যেখান থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় শোনার মত অবন্থায় আমরা পৌঁছে গেছি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:১৪
সময়একাত্তর বলেছেন: ঘাতক-দালাল কুচক্র তাদের মুখ লুকিয়েছিলো মুখোশের আড়ালে।শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তাদের মুখোশ টেনে ছিড়েঁছেন অসীম সাহসিকতায়। সালাম তোমায় মা।