নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুরেশ কুমার দাশ

সুরেশ কুমার দাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কসাই কাদেরের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার বাংলাদেশ

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:২৫





সব দায় বর্তমান সরকারের। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা ওরফে কসাই কাদেরের বিচারের রায় - তাও। তাকে কেন ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিল না। সেখানে সরকার যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে আতাঁতের চেষ্টা করছে। অথবা তাদের দল জামাত- শিবিরের জ্বালাও- পোড়াও, খুন ও সন্ত্রস্ত আক্রমণের ভয়ে ভীত সরকার। অথবা আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক গেম খেলছে আওয়ামী লীগ সরকার। সাংঘাতিক কথা - এতবড় জঘণ্য অপরাধীদের অপরাধকে ধামাচাপা দিতে রাজনৈতিক গেম খেলা - তা মানা যায়না। কোন অবস্থাতেই না। আওয়ামী লীগের সাংসদরা আজ তুমুল হৈচে করেছে সংসদে বিচারের রায়কে মেনে নিতে পারেনি বলে।

রাজনীতির কথা কিছুটা বললাম। আমরা আমাদের আবেগের কথা , চেতনার কথা, বিবেকের দংশনের কথা বললাম। কিন্তু সবচেয়ে বড় বাস্তবতা হচ্ছে যারা যুদ্ধাপরাধীদের তৎকালীন নৃশংসতার শিকার হয়েছিল তাদের পরিবার- পরিজনের মনের অবস্থাটা আসলে কি। তারা কি চান। যুদ্ধকালীন সময়ে যে নারীটি ওই হায়েনাদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিল ভাই বোন মা বাবার সামনে। আর এ বীভৎস দৃশ্য দেখতে হয়েছিল পরিবার পরিজনকে। শিশু হত্যার দৃশ্য কিংবা পরিবারের সকল সদস্যরা দেখেছে আপন ভাই কিংবা পিতাকে ওই দানবদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে। এমনকি সপরিবারে। এছাড়া লুটপাট, অগ্নি সংযোগের মত অপরাধের কথা না হয় বাদই দিলাম। নিশ্চয়ই তাদের মন ও হৃদয়ের আর্তি ও আত্মনাদ আমাদের চেয়ে বহুগুণ বেশি। আমরা যারা এদেশে শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একত্রিত হয়ে যুদ্ধাপরাধের বিপক্ষে কথা বলি সেই আবেগ- ভালোবাসা আর সরাসরি নৃশংসতার শিকার পরিবারগুলোর দাবি ও চাওয়া পাওয়া এক নয়। তবে আজ নিশ্চয়ই তারা এটুকু খুশি হবেন দেশের বিশাল মানুষ ন্যায় বিচার, বিবেচনাবোধ ও বিবেকের পক্ষে একত্রিত হয়েছে। তাদের আত্মনাদ ও আমাদের আত্মনাদ আজ একই। যে বিচারপ্রক্রিয়াটি ৪১ বছর ধরে সম্ভব হয়নি তা সম্ভব হবার মত পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

সমালোচনার ঝড় উঠেছে কসাই কাদেরর ফাঁসি হলনা কেন। সেখানে প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে অভিযুক্ত কাদের মোল্লাকে সংঘটিত অপরাধের সহযোগি হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রসিকিউশন , নেতৃত্বদানকারি হিসাবে নয়। যে কারণে ট্রাইব্যুনাল তাকে যাবজ্জীবন জেল দিয়েছেন। এসব আইনের বিষয়। আইনের বিষয়টাকে দুর্বল করেছে সরকার নাকি প্রসিকিউশন- সেটা নিশ্চিত নয়। এটা নিয়েই কথা- প্রসিকিউশনে নিশ্চয়ই সরকার হস্তক্ষেপ করেছে। কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। এসবই বিশ্লেষণ কোন কোন বিশ্লেষকের। তবে এসব শোনার সময় নেই- যারা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় শুনতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিল। এটা কিছু নীতিভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল ও তাদের কতিপয় কর্মি সমর্থক ও জামাত -শিবির ছাড়া বাংলাদেশের সকল মানুষ এমন অধীর অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু এত বিশাল মানুষের আশাকে হতাশ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

যদি আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় নিয়ে কোন কৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকে তাহলে সেটা -কেন। আওয়ামী লীগ কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই না। চাইলেও তা কি নির্বাচনি বৈতরণী পার হবার কাজে লাগাতে চায়। আর আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের প্রকৃত বিচার চাইনা এটা অধিকাংশ মানুষকে বিশ্বাস করানো কষ্টকর হবে। আর আওয়ামী লীগ নির্বাচনি হাতিয়ার কেন করতে চায় তাও তলিয়ে দেখা দরকার। সরকার জনগণ ও জনমন বিচ্ছিন্ন কোন অংশ নয়। জনগণের মনের প্রতিফলন সরকার। জনগণ যদি কোন কারণে বিভ্রান্ত থাকে তাহলে সরকারের আচরণ বিভ্রান্ত হতে পারে। বিভ্রান্ত জনগণকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া উপায় নেই। আর আওয়ামী লীগকে যদি বিশ্বাস করা অসম্ভব হয়ে উঠে তাহলে এটাও বিশ্বাস করা দরকার ছিল -এদেশে ৪১ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া আসলেই বিশ্বাসযোগ্য ছিল কিনা। যে দেশে যার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে তাকে সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে সপরিবারে হত্যা করা হয়। জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। যেখানে পাকিস্তানী হায়েনাদের সহযোগি সেই ঘাতক রাজাকার আলবদরের নেতাদের মন্ত্রী -এমপি বানানো হয়। ৪১ বছরের মধ্যে ২ যুগের বেশি সময় ধরে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র দেশের শাসন ক্ষমতায় বসে সংবিধান থেকে শুরু করে সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কবরস্থ করার চেষ্টা করে। তাহলে কারা করত এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসার জন্য এদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। সেটা কিসের অপরাধে। শেখ হাসিনা আর বঙ্গবন্ধু কি যুদ্ধাপরাধ করেছিল। আর যারা দেশে ২১ আগস্টের বোমাবাজী করে, দেশে একই সময়ে ৫০০ জায়গায় বোমা ফাটায় তাদের মাধ্যমে আবার দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখে এদেশের বিভ্রান্ত অংশ জনগণ( অবশ্যই জনগণের ভোটে যে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারে। কিন্তু যারা চরম অন্যায় করেছে জঙ্গীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের সেই ভুল বোঝার সুযোগ তাদের দিতে হবে )। তাই শহীদ পরিবারগুলোর কষ্ট, এদেশের ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমহানি ও হত্যার বিচার নানা সংশয়ের সুতোয় দুলছে। সেটা আশানুরূপ বিচারের রায় ও তা কার্যকর হবার জন্য। যদি পুরোটাই সরকারের নির্বাচনি কৌশলপত্র হয় তবে তা হবে আর একটি যুদ্ধাপরাধের মত ঘটনা। আমরা কেউ এতটা দুরাশায় ডুব দিতে চায় না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৩৮

শুভসকাল বলেছেন: জাগো বাহে কুণ্ঠে সবাই..........................চলে এসো শাহবাগ মোড়ে ।দেখে যাও,বাঙালীরা গর্জে উঠেছে ।

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:০৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: প্রতিবাদ চলুক ++++ সবাই অংশ নিন । মনে রাখবেন , রাজনীতিবিদদের চেয়ে জনগনের সংখ্যা বেশি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.