নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছেঁড়া পাতা

যত দোষ, নন্দ্য ঘোষ !

সাঈদ অমি

সাঈদ অমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোলাপির সাথে এক দিন

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৩

অবস্থা করুন, বন্ধু শুভ আর আমার চোখ, যেদিকেই যায়, শুধু গোলাপীরেই দেখতে পায়। চারিদিকে শুধু গোলাপি আর গোলাপি, কিন্তু কে এই গোলাপি, হু ইজ শী ? থাকেই বা কোথায়, কিই বা তার পরিচয়; গোলাপির পিছনে রহস্যটা কি, আবার গোলাপিই কেন? লাল নীল হলুদ সবুজ কমলা আকাশি নয় কেন, কেন গোলাপিইইইই। আসুন, এই রহস্য উদ্ঘাটন করি । B-)
দূরঘটনার পূর্ব মুহুতঃ দুর্ভাগ্য বশত, বন্ধুর আর আমার, দুই জনেরই ক্লাস মিস । হাহহ, কি আর করা, কপাল খারাপ (যদিও ইচ্ছা করেই মিস করছি ) মনের দুঃখে, দুক্ষভরাক্রান্ত মন নিয়ে, ক্লাস করার অদম্য ইচ্ছা মাটিচাপা দিয়ে দুই বন্ধু বসছি ক্যান্টিনে ।
হঠাৎ ! সময়ের গতি থেমে গেলো, ব্যাকগ্রাউন্ডে সোলো মিউজিক, আর তাতে দুর্ভিক্ষের মাঝে শীতল দক্ষিণা বাতাসের মত দুই কাঙ্গালের সামনে এলো অতিশয় রূপের অলংকারে সজ্জিত এক ললনাময়ী । বন্ধু অজান্তেই নামকরণ করে ফেলল, যেন ভিতর থেকে একটা আওয়াজ আসলো, বলল ‘গোলাপী’ ‘গোলাপী’ ‘গোলাপী’। :)
তাকে নিয়ে আমাদের আজকের অভিযান, ‘গোলাপী যেখানে, আমরা সেখানে’ । B-)
গোলাপী এখন ক্যান্টিনেঃ হটাত বয়ে যাওয়া এক পশলা শীতল বাতাসের মত, বন্ধু মহলের সাথে আবির্ভূত হল গোলাপী। মনে নেই কোন চিন্তা, নেই ক্লান্তি, ফুরফুরে তার মুখাভিলাশ; যেন সদ্য ফোটা সর্পগন্ধা, বদনে তার গলাপি রঙের বেশ; বন্ধু বলে আমারে বাঁচা, আমি তো শেষ । চোখতো নয়, যেন ডিএসএলআর এর লেন্স, যা দেখে বন্ধু হারিয়ে ফেলছে তার সেন্স । যেন সাক্ষাত মাসুদ রানা সিরিজের কোন অপরাজিতা, কিন্তু আমার কাছে দীপান্বিতা ।কিউরিয়াস মাইন্ড জানতে চায়, সিম্পল ড্রেসে কোন আটা ময়দা সুজি ছারাই,মেয়েটা আত্তও সুন্দর হল কীভাবে? হাও ইট ইজ পছিবল ? অঙ্গভঙ্গিমায় কোন আভিজাত্য নেই, কোন বিলাসিতা নেই,নেই বহিরাবরণের প্রাচুর্য, তাও কেমনে সম্ভব ? :-*
যাই হোক, বন্ধুরে টাইনা বাইর করলাম ক্যান্টিন থেকে ।মোহ মায়া কাটাতে রওনা দিলাম লেকের পথে। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, এখানে বেশিক্ষণ থাকা ক্ষতিকারক প্রমানিত হতে পারে, তাই বেরিয়ে পরলাম।কথায় আছে, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়, তাই হলও !!!!!!!!
গোলাপী এখন লেকেঃ লেকের পথ ধরে হাঁটছি দুই পথহারা, হটাত পা শিরশির করে উঠলো; থেমে গেলো দুপা । মনে হচ্ছে কেযেন পা-দুটো মাটিতে পুতে দিয়েছে । অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলাম সামনে আর এক ‘গোলাপী’! ‘গোলাপী’! ‘গোলাপী’ !! গোলাপী উইথ আটা, ময়দা, সুজি ...
নিরংকুশ নিরবিচ্ছিন্ন তার পথচলা, যেন সামনে থেকে হেঁটে আসছে কোন হুরপরী, ল্যাম্পপোস্টের আলো আর অন্ধকারে তার চলা যেন রূপের সাথে ছলনা ।সন্ধ্যের আবছা আলোতে মুখখানা তার মুক্তর মত জ্বলছে, আলো ছরাচ্ছে। শীতের রুক্ষ চাদরের বুক চিরে,দৈবিক শোভা ছড়ানো তার বদন আর গোলাপি রঙ জড়ানো তার বেশভূষণ, মুখে মিষ্টি হাসি,কিন্তু পাশে একটা ইয়া বড় আফ্রিকান খাশি। ধুর, মুডটাই নষ্ট হয়ে গেলো । X((
বন্ধু বলল; চল, ডিঙ্গিতে যাব । যেই কথা সেই কাজ, গেলাম ডিঙ্গিতে । কিন্তু হাঁয়, কপালের লিখন কি আর খণ্ডানো যায় ?
গোলাপী এখন ডিঙ্গিতেঃ লেকের পানিতে দোলা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে গোলাপির নৌকা, ধীর পায়ে প্যডেল করছে নৌকাতে, যেন হারিয়ে যাচ্ছে লেকের মাঝে। প্রেমিকের কাঁধে মাথা রেখে করছে দিন যাপনের গল্প, দেখছে সোনালি দিনের স্বপ্ন, গাইছে হয়তো কোন ডুয়েট গান। নিশ্চিন্ত সে যাত্রা, শুমধুর সেক্ষণ, যেন শীতের প্রকোপে ধীর পায়ে বসন্তের আগমন। হটাত অন্ধকারে, থেমে গেলো তাদের দুপায়ে চালিত যান । পাশ থেকে কে যেন বলল, ভাই সামনে আগান, এখানে বসা নিষেদ । /:)
N:B: আগেই বলে নিচ্ছি, আমরা কিন্তু অতিশয় ভালো ছেলে, বিপদ দেখলেই এড়িয়ে চলি, কমপক্ষে হলেও ১০০ গজ। ঘটনার বর্ণনায় বিভ্রান্ত হবেন না, কথাগুলো সব ১০০ ভাগ সত্য, অন্তরের অন্তস্তল থেকে নিংড়ায়ে নিংড়ায়ে চামিস দিয়ে তুলে এনে রূপান্তর করা।
তাই আবেগে আপ্লুত নাহয়ে আমরা এগলাম রবীন্দ্রশরবরের দিকে, একটু স্বস্তির প্রশ্বাস নিয়ে বসলাম ফাকা জায়গাতে । গল্প করছি, আমাদের গল্প, ক্যারিয়ারের গল্প, নিত্য দৈনন্দিনের গল্প, দুই বন্ধুর মনের কথা একে একে উত্থাপন করছি, এমন সময়......
গোলাপী এখন রবীন্দ্রশরবরেঃ একি, চোখে ভুল দেখছিনাতো ? একটা না, দুইটা না, তিন তিনটে গোলাপী !!!! আরও বিস্মিত হলাম, যখন দেখলাম, ওরা আমাদের দিকেই আসছে। বন্ধুরে বললাম, দেখতো, গোলাপি আমাদের দিকেই আসছে না?
হ্যাঁ তাইতো, আমাদের দিকেই তো আসছে !!! অ্যায় হ্যাঁয়, এখন কি হবে ?
এক্সকিউজমি ভাইয়া, আপনাদের সাথে একটু কথা বলতে পারি যদি কোন, অসুবিধা না হয় ? (গোলাপির মুখে হাসি)
কল্পনায়ঃ কি আশ্চর্য! কি আশ্চর্য! অসুবিধা হবে কেন? একটু কেন, যত খুশি যতক্ষণ খুশি বলুন, কোন সমস্যা নেই। তবে পিলিজ, যা বলার এখানেই বলুন, কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে কথা বলতে চাইবেন না কাইন্ডলি। মাসের প্রায় শেষের দিক, অভাবে আছি ।তাও একা হলে ভেবে দেখতাম, তিনজন তো সম্ভবই না, চরি ।
বাস্তবেঃ জী! বলুন ।
একচুআলি আমরা একটি শিশুকে বাঁচানোর জন্যে সাহায্য সংগ্রহ করছিলাম, আপনারা যদি একটু অংশগ্রহন করতেন ।
অংশগ্রহণ করে বাড়ির দিকে হাটা দিলাম, অনেক তো হলও, এবার ঘড়ের ছেলে ঘড়ে ফিরে যাই । কিন্তু যাওয়া আর হলও কই, সামনে এগতেই আর এক গোলাপির তীক্ষ্ণ নজর ধারালো বল্লমের মত গেথে গেলো, সাথে বোনাস হিসেবে মিষ্টি হাসি ।বার বার আর চোখে বিদ্ধ করছে বর্শার আঘাতে, সব সহ্য করে এগলাম সামনে। কিন্তু একি!! অ্যান্টিও দেখি গোলাপি!!! মডার্ন অ্যান্টি আর কি । ধুর, জাহান্নামে যাক অ্যান্টি ফ্যানটি । বাড়ি পউসাতে পারলে বাঁচি ।
অবশেষে বন্ধুকে বিদায় দিয়ে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে অনেক স্বস্তি নিয়ে বিছানায় শুলাম । উফফ, বাঁচা গেলো এ যাত্রায় । চোখটা বন্ধ করবো এমন সময় বেজে উঠলো ফোন।
(ওপাশ থেকে মেয়ে কণ্ঠ) কিরে দস্ত, কি করিস?
এইতো রে, অনেক ক্লান্ত, একটু আগে বাসায় আসলাম, শুয়ে আছি ...
ওওওও, অনেক ক্লান্ত বুঝি? জানিস আজকে কি হইছে !!!!!!
কি ?
আর বলিস না, এততো দিন পর এসে আব্বু আমাকে ওই গোলাপি ড্রেসটা কিনে দিসে, ওই যে, ওই দিন মার্কেটে......... ব্লা ব্লা ব্লা......... গোলাপি......... ব্লা ব্লা ব্লা ......... গোলাপি ।
দস্ত পিলিজ, পরে শুনবনি, এখন না। /:)/:)
আরে শোন না, পরে ভুলে যাবতো । ওই ড্রেস পরে আজ বের হইছি, তারপর যা ঘটল নাআআআ... শোন না...... তারপর...... ব্লা ব্লা ব্লা......
(ভাইরে, বাচ্চে কি জান লেগা ক্যয়া? মাফ করে দেওয়া যায়না ? পিলিজ, মাফ কইরা ডে আমারে... (মনে মনে)) :((

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.