![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুমাতে অত্যন্ত ভালোবাসি। আর ভালোবাসি পড়তে। স্বপ্ন দেখি একটি স্বপ্নীল পৃথিবীর। সত্যকে ভালোবাসি, হোক তা নিজের মতের বিপরীত।
কখনো আমার মাকে কোনো গান গাইতে শুনিনি৷
সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানিয়া গান গেয়ে
আমাকে কখনো ঘুম পাড়াতেন কি না আজ মনেই পড়ে না৷....
..........মাছ কোটা কিংবা হলুদ বাটার ফাঁকে
অথবা বিকেলবেলা নিকিয়ে উঠোন
ধুয়ে মুছে বাসন-কোসন
সেলাইয়ের কলে ঝুঁকে, আলনায় ঝুলিয়ে কাপড়,
ছেঁড়া শার্টে রিফু কর্মে মেতে
আমাকে খেলার মাঠে পাঠিয়ে আদরে
অবসরে চুল বাঁধবার ছলে কোনো গান গেয়েছেন কি না
এতকাল কাছাকাছি আছি তবু জানতে পারিনি৷....
(কখনো আমার মাকে)- শামসুর রাহমান
খুব একটা অস্বচ্ছলতায় না কাটলে ও আমার মা'য়ের জীবন অনেক সুখে কেটেছে- এমন ও বলা যায় না। একেবারেই সাধারন মধ্যবিত্ত আমাদের পরিবারে বাবা এখনো চাকরি করেন। বছর খানেক ধরে আমি ও চাকরি করছি। হয়তো অঢেল টাকা-পয়সা কামাই করি না, তবু আমার ব্যক্তিগত খরচ কম বলে কিছু টাকা থেকেই যায়। প্রেমিকা নেই, চা-সিগারেটের নেশা নেই; ভাবি মা'র জন্য কিছু খরচ করি। সে উপায় আছে?
অন্য অনেক মহিলার মত শাড়ি নিয়ে আমার মায়ের কোন মোহ নেই। মা'কে নিয়ে কোথাও বাইরে যাবো, সেখানেও খরচের কোন উপায় নেই। মা' এসি গাড়িতে চড়তে পারেন না- অসুস্থ হয়ে যান। ঢাকা যাবার সময় মা'কে নন-এসিতেই নিয়েযেতে হয়। বাইরে কোথাও বসে কিছু খেতে আমি আমার জীবনে ও দেখি নি। দূরে কোথাও যাবার সময় ব্যাগে করে শুকনো খাবার নিয়ে যান। জোর করে ও কিছু খাওয়াতে পারি না। বাসায় ভালো রান্না হলেও খুব একটা চেখে দেখেন না। হাড়-গোড় আর পা ছাড়া অন্য কোন মুরগীর মাংস খেতে আমি কখনো তাঁকে দেখি নি।
কী দিয়ে শুধবো তবে এ জন্মের ঋণ!
আরো অনেকের মত শামসুর রাহমানের অনেক কবিতাই আমার খুব প্রিয়। তারপরেও, উপরের ঐ কবিতাটার আবেদন আমার কাছে সব সময় অন্য রকম। কেমন একটা আটপৌরে গন্ধ আছে; জীবনের সাথে মিলে যায়। তাহলে, একটু পেছনে ফিরে তাকাই?
আমার মা'য়ের জন্ম, বেড়ে ওঠা গ্রামেই। গ্রামের স্কুল থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এমন কোন আহামরি ফলাফল নয়; বরং সোজা কথায় টেনেহেঁচড়ে পাস। এরপর আর কলেজের দিকে পা মাড়ান নি। সুতরাং, প্রচলিত অর্থে আমার মা' একজন অল্পশিক্ষিত মহিলা। তখনো পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দু'চারদিনের বেড়ানো বাদ দিলে কখনো শহরে থাকেন নি। বাবা কর্মসুত্রে থাকতেন চট্টগ্রাম। আর মা' বিয়ের পর ও প্রথম চার বছর গ্রামে আমার দাদা বাড়িতেই ছিলেন। যৌথ পরিবার ছিল তখন। সে সময়ই আমার জন্ম এবং সে সূত্রে জীবনের প্রথম দু'বছর আমার গ্রামেই কেটেছে। আশ্চর্য্য হয়ে ভাবি, এতোকিছুর মধ্য দিয়ে এমন আধুনিক স্বচ্ছ চিন্তা-ভাবনা তাঁর মনে কিভাবে বাসা বাঁধতে পেরেছিল?!
বাবা-মা'র প্রথম সন্তান হিসেবে আমার প্রতি তাঁর একটা আলাদা টান আমি সব সময়ই টের পাই। একেবারে শিশু অবস্থায় মা'কে কাছে পাওয়াতেই বোধহয় বাবার চাইতে তাঁর প্রতি আমার টান একটু দৃষ্টিকটু রকমের বেশি। আমার পরে জন্মানো অন্য দুই ভাই কিন্তু উলটা, বাবার দিকে বেশি ঝুঁকে পড়া। গ্রামে থাকলে আমার পড়াশোনা হয়তো তেমন হবে না, শুধুমাত্র এই আশংকায় মা’ আমার দাদা-দাদীকে রাজি করিয়ে চলে আসেন বাবার কাছে শহরে।
এসব ক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক শ্বশুর-শ্বাশুড়ি বৌয়ের উপর নাখোশ থাকেন, ভাবেন ছেলেটাকে 'পর করে নিয়ে গেলো। নিজের মা' বলে বলছি না, সত্যিই জীবনে এই একটাই ব্যতিক্রম পেলাম! আর সব চাচীদের মধ্যে আমার দাদা-দাদী আমার মা'কেই বেশী ভালোবাসতেন। আমার দাদী তো এক রকম আমার মায়ের হাতের উপরে মারা যান।
সাড়ে চার বছর বয়সে আমাকে বাসার কাছের একটা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হলো। স্কুলের মাষ্টারেরা খুব রাগী হন আর পড়া না পারলেই মারেন এই ভয় কিভাবে যেন আমার ছোট্ট মনে বাসা বেঁধে ছিল! ফলে, ক্লাসে স্যার ঢূকলেই আমি ভয়ে কাঁপতে থাকতাম আর সুযোগ পেলেই পালাতাম (বড় বড় মানুষের জীবনাদর্শ অনুসরণ আর কী! )। শুরু হল মায়ের নতুন কষ্ট। আমার ছোট ভাইটা তখন দু' বছরের। কখনো ওকে কোলে করে আবার কখনো বাসায় কাজের মেয়েটার কাছে ওকে রেখে এসে বসে থাকতেন আমার ক্লাসের পাশেই। মা' একটু চোখের আড়াল হলো তো আমি এক দৌড়ে বাসায়! এভাবে চললো মাস দুয়েক। কী পরিমান কষ্ট দিয়েছি তখন মা'কে- ভাবতেই নিজের উপর রাগ হয় এখন। ইতোমধ্যে ক্লাসে কিছু বন্ধু জুটে গেলো। ভয় ও কমলো। স্কুল পালানো বন্ধ হল। মা' হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন।
তখন মা’য়ের কাছেই পড়তাম। ভালো ফল করেই দ্বিতীয় শ্রেনীতে উঠলাম। এ সময় একটু দুরেই আরেকটা ভালো স্কুলে ভর্তি করানোর ভুত(!) তাঁর মাথায় চাপলো। জীবনে প্রথম ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। ভয়ে কিছুই লিখতে পারি নি, তার পরেও কিভাবে যেন ভর্তির সুযোগ পেয়ে গেলাম। সম্ভবতঃ মা' আমাকে দিন রাত কষ্ট করে যা পড়িয়েছিলেন তার জোরেই পার পেয়ে গিয়েছিলাম সেবার।
এবার, শুরু হলো তাঁর নতুন যুদ্ধ। নতুন স্কুলটা শুরু হত সকাল আটটায়। সে সময় আবার আমার দাদীর একেবারে শেষ অবস্থা। বাড়ি থেকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। ডাক্তাররা জবাব দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর সেবা-শ্রুশুষা, তাঁকে দেখতে আসা মেহমানদের সামলানো, এরই ফাঁকে আমাকে সকাল বেলা তুলে দিয়ে ঘুমে ঢুলতে থাকা আমায় রেডি করে খাইয়ে স্কুলে পাঠানো, দুপুরে নিয়ে আসা আবার রাতে পড়ানোর মত দুরহ কাজগুলো মা' এক হাতে কেমন করে সামাল দিতেন- আমার কাছে আজো এ এক অমিমাংসিত রহস্য! বিধাতা এতোটা প্রানশক্তি এ বিশ্ব চরাচরে কেবল মাত্র মা'য়েদেরই দিয়েছেন বোধহয়।
শুধু মাঝে মাঝে একটা কথাই ভাবি, কী দিয়ে শুধবো তবে এ জন্মের ঋণ!
শুনতে পেলাম কাল মা' দিবস। অনুষ্ঠান করে কখনোই এ সব পালন করি নি। কাল ও সে রকম আদিখ্যেতা করবার ইচ্ছে নেই। এমনিতেই লিখতে গিয়ে অনেক বড় কাসুন্দী টেনে ফেলেছি। অথচ, দেখছি, এর পরেও আরো অনেক কিছু লিখার ছিলো! আজকের মত ক্ষান্ত দিলাম। অন্য কোনদিন হবে? এখন মা’কে নিয়ে আরেকটা লেখার লিঙ্ক দিয়ে শেষ করছি।
এটি কোন নারীবাদী রচনা নয়; পুরুষবাদী ও নয়!
ধন্যবাদ।
০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৩১
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: পড়ে নিচ্ছি।
২| ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:০৩
সীমান্ত আহমেদ বলেছেন: অসাধারণ । আর কিছুক্ষণ পরেই মা দিবস শুরু হবে। জগতের সকল মমতাময়ী মায়ের চরণে সশ্রদ্ধ সালাম।
Click This Link
আমার একটা পোস্টের লিংক দিলাম। মা দিবস নিয়ে লিখার চেষ্টা করছিলাম। চিন্তা গুলিয়ে যাওয়ায় মাঝপথে উঠে যতটুক লিখা হয়েছে দিয়ে দিয়েছি।
পড়লে খুশি হবো।
০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:১২
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: কিছুক্ষন পরে কিছুই হবে না!
কেবল একদিনের জন্য মা'য়ের ভালোবাসাকে বেঁধে রাখতে রাজি নই।
৩| ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:০৭
আগামি বলেছেন: সত্যিই মনোমুগ্ধকর লেখা ! হয়তো মাকে নিয়ে লেখা বলেই !
চমৎকৃত হলাম আপনার লেখায় ।
০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:২৭
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:২৩
এস.আর.এফ খাঁন বলেছেন: আমি এমনিতেই কোন দিবস পালন করিনা, ভালোবাসা এবং ব্যাক্তি আন্তরিকতার স্বার্থে আমি নেই। তবে এ ভাষার প্রকৃতি অর্থ পাবোনা কখনো ম'য়ের প্রতি জন্য।
০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৩৪
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: ঠিকমত বুঝতে পারি নি আপনার কথাগুলো।
তারপর ও ধন্যবাদ।
৫| ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৩২
সীমান্ত আহমেদ বলেছেন: দুঃখিত আমার আগের মন্তব্য প্রত্যাহার করছি। আমার আগের কমেন্ট আর এই কমেন্ট মুছে দিলে খুশি হবো।
০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৪০
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: মাত্রাতিরিক্ত পরিমানের অশ্লীল না হলে আমি কারো মন্তব্যই মুছে দেবার পক্ষপাতী নই। থাক না!
সমস্যা কী?
৬| ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৫০
সীমান্ত আহমেদ বলেছেন: সমস্যা কিছু না যেহেতু আমি আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করেছি তাই অনুরোধ করছিলাম ।
৭| ১০ ই মে, ২০০৯ রাত ১২:০৮
তনুজা বলেছেন: ++
৮| ১০ ই মে, ২০০৯ রাত ১২:৪৬
ভেবে ভেবে বলি বলেছেন: এই লেখাটা আমার মনে হয় আপনি পর্ব আকারে দিলে ভালো করতেন। একটু অসম্পুর্ণ লাগছে। বেশি নয়, অল্প কয়েকটা পর্ব হলেই চলবে।
পর্ব আকারে দেয়ার কথাটা কি বিবেচনা করা যায়?
১০ ই মে, ২০০৯ সকাল ৮:১৩
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: এক টানে যতদুর পেরেছি লিখে ফেলেছি, পর্বের কথা মাথায় আসে নি।
৯| ১২ ই মে, ২০০৯ ভোর ৬:৩০
কঁাকন বলেছেন: ভালো থাকুন
১২ ই মে, ২০০৯ দুপুর ২:৫১
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
১০| ১৮ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৫৩
~স্বপ্নজয়~ বলেছেন: "মা দিবস ব্লগ সঙ্কলন - ২০০৯ " ই-বুক আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিস্তারিত পাবেন এই পোষ্টে । পোষ্টটিতে আপনার মতামত আশা করছি।
১৯ শে মে, ২০০৯ সকাল ১১:৫২
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: ভালো উদ্যোগ।
কিন্তু আমার লেখাটা তো অর্ধেক!
পুরোটা কিভাবে দেব?
১১| ১৯ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:০০
জেরী বলেছেন: টাচি লেখা
১৯ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:১৯
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: ধইন্যা...
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ১০:৫৭
শুভ৭৭ বলেছেন: ভাল লেখার জন্যে ধন্যবাদ।
'বিধাতা এতোটা প্রাণশক্তি এ বিশ্ব চরাচরে কেবল মাত্র মা'য়েদেরই দিয়েছেন বোধহয়।'
আমার এ নিয়ে ছোট লেখা পড়ুনঃ
জীবনে সফল হতে চাইলে মায়ের সেবা করুন
Click This Link