নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপীল বিভাগে যুক্তিতর্ক যথাযথ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে - আইন বিশেষজ্ঞগণ

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

আপীল বিভাগে যুক্তিতর্ক যথাযথ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে

আপীল বিভাগের এখতিয়ারের কথা জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞগণ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে যে কোন পক্ষ আপীল করলেই রায় পুনর্বিবেচনার এখতিয়ার সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের রয়েছে। সংবিধানে বলা হয়েছে, আপীল বিভাগে বিচারাধীন ‘যে কোন মামলা বা বিষয়ে’ যা প্রয়োজন সেই আদেশ বা রায় আপীল বিভাগ দিতে পারবে। সংবিধানের এ অনুচ্ছেদটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কাদের মোল্লা মামলায় যে পক্ষই আপীল করুক, আপিলে রাষ্ট্রপক্ষ যথাযথভাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারলে সেখানেও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- হতে পারে তার। এমনটাই মন্তব্য করেছেন আইন বিশ্লেষকরা। আইন বিশ্লেষকরা বলেছেন, আপীল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ বিচার করার ক্ষেত্রে কোন আইনের দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। ন্যায়বিচারের স্বার্থে যে কোন আদেশ বা রায় দিতে পারে আপীল বিভাগ।

সংবিধানে আপীল বিভাগের এখতিয়ার সংক্রান্ত ১০৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ডিক্রি, আদেশ বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল শুনানির ও তাহা নিষ্পত্তির এখতিয়ার আপীল বিভাগের থাকিবে।’ ১০৩-এর (৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংসদ আইনের দ্বারা ঘোষণা করিতে পারিবেন যে, এই অনুচ্ছেদের বিধানসমূহ হাইকোর্ট বিভাগের প্রসঙ্গে যেরূপ প্রযোজ্য, অন্য কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রেও তাহা সেই রূপ প্রযোজ্য হইবে।’

সংবিধানে আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারি ও নির্বাহ সংক্রান্ত ১০৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তির হাজিরা কিংবা কোন দলিলপত্র উদ্ঘাটন বা দাখিল করিবার আদেশসহ ‘আপীল বিভাগের নিকট বিচারাধীন যে কোন মামলা বা বিষয়ে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য যে রূপ প্রয়োজনীয় হইতে পারে, উক্ত বিভাগ সেইরূপ নির্দেশ, আদেশ, ডিক্রি বা রিট জারি করিতে পারিবেন।’

দেখা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আপীল বিভাগ সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্বাচনের তারিখও নির্ধারণ করে দিয়েছিল। গত বছরের ৩১ মে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। ওই নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অসংখ্য ভুয়া ভোটার রয়েছে দাবি করে সুপ্রীমকোর্টের এক আইনজীবী রিট করলে ওই নির্বাচন স্থগিত করে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। পরে রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী বার কাউন্সিল তফসিল নির্ধারণ করলে গত বছরের ৫ মে সুপ্রীমকোর্টের তিন আইনজীবী ৩১ মের মধ্যে বার কাউন্সিলের নির্বাচন করতে হবে এমন বিধির কথা উল্লেখ করে রিট দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আবারও নির্বাচন স্থগিত করে। এর বিরুদ্ধে আপীল করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। পরে গত বছরের ১৮ জুন আপীল বিভাগে শুনানি শেষে গত বছরের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন করতে নতুন তফসিল ঘোষণার নির্দেশ দেয় আপীল বিভাগ। সূত্র মতে, ওই সময় আপীল বিভাগ রায় দেয়ার পর বার কাউন্সিরের পক্ষের আইনজীবী আদালতে প্রশ্ন করেছিলেন কোন্ আইনের ভিত্তিতে পূর্ব ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২০ জুন নির্বাচনের তারিখ বাদ দিয়ে নতুন সময় ঠিক করে দিলেন। তখন আদালত বলেছিল, আমরা সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা বলে এ রায় দিয়েছি।

গত মঙ্গলবার একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে রায় ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ১৫ বছর করে কারাদ- দেয়া হয়েছে। আর চতুর্থ অভিযোগে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার পর বুধবার আপিলের সিদ্ধান্ত নেয় আপীল বিভাগ। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আপিলের সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তোলে রাষ্ট্রপক্ষ কি আপীল করতে পারবে? এ প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার পর বুধবার আপীল করা হবে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের প্রধান সমন্বয়ক অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান। বুধবার তাঁরা বলেছিলেন, যে অভিযোগে কাদের মোল্লাকে খালাস দেয়া হয়েছে সেই অভিযোগের বিষয়েই আপীল করবে রাষ্ট্রপক্ষ। এর আগে রায় ঘোষণার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরা আপীল করবেন। সংবাদ সম্মেলনে আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষ কোন অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা এ রায়ের রিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টে আপীল করব।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন পক্ষের সমন্বয়ক ও অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা আপীল করব। যে অভিযোগটিতে ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লাকে খালাস দিয়েছে সেই অংশ নিয়েই আমরা প্রথমে ট্রাইব্যুনালে আপীল করব। আসামি পক্ষও জানিয়ে দিয়েছে তারা সম্পূর্ণ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করবে। তিনি বলেন, আসামিপক্ষ আপীল করলে আপীল বিভাগে রাষ্ট্র মামলার একটি পক্ষ হিসেবে থাকবে। সে সময় যুক্তিতর্ক আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করতে পারলে, আপীল বিভাগ সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে সম্পূর্ণ রায় বিবেচনা করে আদেশ দিতে পারবে।

এ বিষয়ে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক আইন বিশ্লেষক শ ম রেজাউল করিম জনকণ্ঠকে বলেন, আপীল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ বিচার করার ক্ষেত্রে কোন আইনের দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। ন্যায়বিচারের স্বার্থে যেরূপ প্রয়োজন সেরূপ আদেশ বা রায় দেয়ার এখতিয়ার আপীল বিভাগের রয়েছে।

তিনি বলেন, এ মামলায় একটি অভিযোগে কাদের মোল্লাকে খালাস দেয়ার প্রেক্ষিতে সরকারপক্ষ থেকে আপীল করা হলে ওই আপিলের প্রেক্ষিতে আপীল বিভাগ, আলোচ্য বিষয়ে সাক্ষ্যপ্রমাণ ও পারিপার্শ্বিকতাকে বিবেচনায় গ্রহণ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যে কোন রায় তথা আদেশ দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, আপীল বিভাগ তার স্বীয় বিবেচনায় সিদ্ধান্ত দিতে অন্য কোন আইনের দ্বারা বায়িত বা সীমাবদ্ধ নয়। শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, সে ক্ষেত্রে আপীল বিভাগেও কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় আসতে পারে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩

মুহাম্মদ ফয়সল বলেছেন: এখন কথা হল, -"আসামিপক্ষ আপীল করলে আপীল বিভাগে রাষ্ট্র মামলার একটি পক্ষ হিসেবে থাকবে। সে সময় যুক্তিতর্ক আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করতে পারলে, আপীল বিভাগ সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে সম্পূর্ণ রায় বিবেচনা করে আদেশ দিতে পারবে।" যদি এখন আসামিপক্ষ আপীল না করে, তবে প্রদানকৃত রায়ের উপর কি সুপ্রিম কোর্টের হাত থাকে বা পুর্নবিবেচনা করা কোন উপায় থাকে? না হলে কিন্তু কঠিন সমস্যা! তবে আর একটি উপায় থাকে সরকার পক্ষের যে একটি অভিযোগের উপর আপীল। কিন্তু যে অভিযোগ নিম্ন আদালতে প্রমাণই হল না, তা উচ্চ আদালতে প্রমাণ করা খুব কঠিন হবে বলে মনে হয়। আর তার সর্বোচ্চ শাস্তি কি মৃত্যুদন্ড বিবেচনায় নিবে বিজ্ঞ বিচারক মন্ডলী? আমি সমস্যাই দেখতে পাচ্ছি। তার উপর বিচারকার্য ঐ পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া আবার নির্ভর করছে আগামী বছরের নির্বাচনে কে নির্বাচিত হয় তার উপর!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.