নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
কোমলমতি কিশোরদের দিয়ে 'পিকেটিং' করাচ্ছে। তাদের হাতে পেট্রল তুলে দেওয়া হচ্ছে গাড়ি জ্বালানোর জন্য।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম মহানগরের বন্দর থানার পুলিশ দুই বোতল পেট্রলসহ তিন শিশু শিক্ষার্থীকে আটকের পর শিবিরের 'পিচ্চি পিকেটার চক্র' উন্মোচিত হয়ে পড়ে। এর আগে শিশু শিক্ষার্থীদের দলে টানার কথা স্বীকার করলেও তাদের দিয়ে পিকেটিং, মিটিং ও মিছিল করানোর কথা অস্বীকার করেছিল ছাত্রশিবির। আটককৃত শিশু শিক্ষার্থীরা হলো বন্দর মোহাম্মদিয়া
দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র জামাল উদ্দিন (১৫) ও সাগর উদ্দিন (১৪) এবং বন্দর হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান (১৩)। দুই বোতল পেট্রলসহ তিন শিশু শিক্ষার্থীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, তালতলা ইস্ট কলোনি এলাকার সড়ক থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা দুটি পটকা ফাটানোর পর একটি টেম্পোতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
ওসি জানান, ওই তিনজনের সঙ্গে ওয়াসিম ও সরফুদ্দিন নামের আরো দুই ছাত্র ছিল। তাদের ধরা যায়নি। আটককৃতদের কিশোর অপরাধী উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
হরতালের পিকেটিং হরতালের দিনেই হওয়ার কথা। দীর্ঘকাল সেটাই রীতি ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে 'আগাম পিকেটিং' হচ্ছে। হরতালের আগের সন্ধ্যায় গাড়িতে আগুন দেয় বা ভাঙচুর চালায় এই 'পিকেটাররা'। যদিও গণমাধ্যমে তারা দুর্বৃত্ত বা দুষ্কৃতী আখ্যাই পাচ্ছে। ভাড়াটে লোকজন দিয়ে কাজটি করায় হরতাল আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলো। সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের দিয়ে সহিংসতার এ কাজ করাচ্ছে ছাত্রশিবির।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণা করার পর সারা দেশে তাণ্ডব শুরু করে জামায়াত-শিবির। ওই সব সহিংস তৎপরতায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ৩ মার্চ একটি শিশু নিহত হয়। ২ মার্চ সাতকানিয়ায় মারা যায় আরো একটি শিশু। ওই সময় বড়দের সঙ্গে ব্যাপকসংখ্যায় শিশুদেরও মাঠে নামানো হয়। লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলে অংশ নেয় তারা। আর এখন হরতালের 'পিকেটিং'য়ের জন্য পেট্রল হাতে এই 'পিচ্চি পিকেটারদের' মাঠে নামানো হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিকল্পিতভাবে শিশুদের দিয়ে এসব করাচ্ছে ছাত্রশিবির। আল্লাহর আইন কায়েমের নামে জামায়াতের 'আধ্যা@ি@@@ক গুরু' মওদুদীর বই পড়িয়ে শিশুদের মগজ ধোলাই করা হয়। সাপ্তাহিক, মাসিক ও ষাণ্মাসিক নিয়মিত বৈঠক করা হয় শিবির-সমর্থক শিশুদের নিয়ে। মগজ ধোলাইয়ের শিকার এসব শিশু এখন হয়ে যাচ্ছে রাজপথের সহিংসতার অন্যতম 'রিজার্ভ'।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (পশ্চিম বিভাগ) অতিরিক্ত উপকমিশনার আরেফীন জুয়েল কালের কণ্ঠকে বলেন, গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নগরের নিউ মনছুরাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রশিবিরের ১৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই সময় শিবির কার্যালয় থেকে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু নথিপত্র। নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সংগঠনটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ফরম পূরণ করিয়ে, মাসিক চাঁদা (বায়তুল মালের জন্য) নিয়ে কর্মী বানায়।
হরতালে সহিংসতার জন্য শিশুদের কেন নামানো হচ্ছে, জানতে চাইলে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, 'ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এইচএসসি পর্যায়ের নিচের কোনো কর্মীকে মিছিল-মিটিংয়ে আনা হয় না। এর পরও যদি কোনো কর্মী সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে হরতালে পিকেটিং করতে আসে, তাহলে সে দায় শিবির নেবে না।'
সুত্র
©somewhere in net ltd.