নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাপ্নিক

তানভীর মুহাম্মাদ

মানুষের সৌন্দর্য তার চিন্তায়; তার কল্পনায়। আমাদের চিন্তা ও কল্পনার জগত অধিকতর সুন্দর হয়ে উঠুক। এ-ই কামনা।

তানভীর মুহাম্মাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরল স্বীকারোক্তি

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২০

আকাশের সূর্যটা আজ খুব বেশি প্রখর মনে হচ্ছে। আলোর তাপে ঝলসে যাওয়ার উপক্রম বনি আদমের চামড়া। তবু কারও জীবন থেমে নেই। চলছেই অবিরত। রাস্তায় কর্মমূখী মানুষের ভীর। একজন লোক তখন রওনা হলেন টঙ্গী থেকে। গুলিস্থান যেতে হবে। ৩ বছর বয়সী ছোট্ট ছেলেটি আম খেতে চেয়েছে। টঙ্গীতে আম পাওয়া যায় না বিধায় গুলিস্থান যেতে হচ্ছে। পড়নে তার লুঙ্গী, পান্জাবী আর মাথায় একটি টুপি। সাথে কেবল ৫টি টাকা। লুঙ্গীর ভাঁজে সযতনে গোঁজা। বাস ভাড়া ২ টাকা। হিসেব কষে দেখলেন বাসে গেলে আম আর কেনা হচ্ছে না। হেঁটেই রওনা হলেন। প্রচন্ড রোদে শরীর বেয়ে ঘাম ঝরছে। ঘামের কারণে শরীরে লেপ্টে থাকা পাতলা পান্জাবীটা তার দারিদ্রের করুণ বর্ণনা দিচ্ছে। গলা তো আগেই শুকিয়ে কাঠ। ক’সেকেন্ড পরপর হাত দিয়ে কপালের ঘাম মুছছেন। সেই সকালে দু’ লোকমা পান্তাভাত খেয়েছিলেন। তা কি এতক্ষণ থাকে? ক্ষুধায় তাই পেট চোঁ চোঁ করছে। তবুও হেঁটেই চলছেন…

##পাঁচটাকার বিনিময়ে দু’টো আম কিনলেন। সাথে এখন একটি টাকাও নেই। বাসে উঠা অসম্ভব। আবার শুরু করলেন হাঁটা। কিন্তু এবার যেন পা আর চলতে চায় না। নিশ্চল হয়ে আসছে দেহ। ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীর নিয়ে বসে পড়লেন ফুটপাতে। বিশ্রাম নিলেন। কিন্তু ওদিকে যে সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসছে! যেভাবেই হোক বাসায় এখন ফিরতে হবে। খানিক ভেবে উঠে পড়লেন একটি লোকাল বাসে। নরম সুরে হেলপারকে জানালেন তার নিকট এখন টাকা নেই। হেলপার শুরু করল তার খাস ভাষায় গালাগাল। মুখ বুজে সব সহ্য করলেন তিনি। পুত্রের ভালোবাসায় এটুকু গালগাল আর কী! গন্তব্যে পৌঁছার আগেই বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হল তাকে। চশমাটা ঠিক করে আম দুটো কুড়িয়ে নিলেন আবার। পরম মমতায় বুকে ধরে রাখলেন কিছুক্ষণ। এ আম দুটোর জন্যই যে আজ তার সারাদিনের কুরবানী। আম পেয়ে তার ছোট্ট ছেলেটি কী যে খুশি হবে! মিষ্টি হাসি ফুটে উঠবে তার নিষ্পাপ মুখে। আর সে হাসি দেখে তিনি সব কষ্ট ভুলে যাবেন। সব।

পুনশ্চ ১ : আমি আম খুব পছন্দ করি এখনও। কিন্তু আমার আব্বু আজ অসুস্থ। আমি মনোকষ্টে আব্বুর মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আব্বু আমার জন্য জীবনটা বিলীন করে দিলেন। আমি কী করেছি তার জন্য?

পুনশ্চ ২ : আব্বু! আমি এমন একটি ছেলে যাকে নিয়ে তার পিতা-মাতা স্বপ্নও দেখতে পারে না। আমার কোন যোগ্যতা নেই, কোন সভ্যতা নেই। অযথাই একটা বস্তা টেনে বেড়ালেন সারাটা জীবন। কোন কাজেই এলাম না আমি। কিছুই করতে পারি নি আপনার জন্য। তবে এটাতো জানেন যে, চোখের পানি ফেলতে কোন যোগ্যতা লাগে না। হৃদয় লাগে। তাই প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর আল্লাহর দরবারে দু’ফোটা অশ্রুজল বিসর্জনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

আহা রুবন বলেছেন: আপনার পিতার কথা জেনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। দোয়া করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। আর বিপদে ধৈর্য হারাবেন না। সামনেই হয়ত সুদিন অপেক্ষা করছে। ভাল থাকবেন।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭

তানভীর মুহাম্মাদ বলেছেন: বিপদ কেটে উঠুক। আপনাদের একটু স্বান্তনা আসলেই অনেক। শুকরিয়া!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.