নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোজা

মানবিক, যৌক্তিক আর অযৌক্তিক। সোজা কথা আরেকটা মানুষ। দশ জনের ভীরে ডুবে থাকার প্রানান্ত চেষ্টায় থাকা মানুষ।

তানভীর- বিন- হাসান

ভোরের আলোয়, দুপুর রোদে আর হয়নাকো সুড়সুড়ি। হচ্ছি আমি বুড়োই ভীষণ, হচ্ছ তুমি বুড়ি। [email protected]

তানভীর- বিন- হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেল শকড।

৩১ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:০৮

শেল শকড; ইংরেজিতে- shell shocked।



প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার খুব পরিচিত একটা শব্দ। মানসিক ভাবে যুদ্ধাহত যোদ্ধার অবস্থার বর্ণনা দেবার জন্যে ব্যাবহার করা হত শব্দটি। এটা মানসিক অবস্থার একটা পর্যায় যেখানে রণক্ষেত্রের ক্রমাগত চাপ, রক্তপাত, শব্দ, জিঘাংসা, হত্যা- পরাহত্যা-গনহত্যা, হত্যার নীতি মেনে হত্যা বা না মেনে হত্যা, সম- অসম লড়াই ইত্যাদি দলের সবচেয়ে লড়াকু আর সাহসী সৈনিক কেও এমন ভাবে কাবু করে ফেলে যে সে না পারে কথা বলতে, না পারে চিন্তা করতে, না পারে ঘুমোতে, না পারে হাঁটতে।



এ বড় ভয়ানক মানসিক ট্রমা। এ থেকে মুক্তির পথ শুধু মানসিক সুস্থতার শিক্ষাই।



আজকের প্রথম আলো পড়েছেন? না পড়লে পড়ার দরকার নেই। আজকের প্রথম আলো পড়ে বাংলার প্রতিটা ক্রিকেটপ্রেমী শেল শকড হয়ে থাকবে। সকাল সাতটার দিকে পুরো রিপোর্ট পড়লাম। পড়ে ঠায় বসে রইলাম, শুলাম, পানি খেলাম, আবার উঠলাম, নাস্তা করলাম, স্বাভাবিক মানবীয় সব কাজ করলাম। কিন্তু, গত ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট আমি ট্রমায় ছিলাম। শেল শকড হয়েছিলাম।



এই লেখাটা লিখছি আমার দায়বোধ থেকে। কয়েকদিন আগে আশুর প্রতি তীব্র আবেগ থেকে ‘আমাদের আশু আর কৃতঘ্ন আমরা’ শিরোনামে একটা ব্লগপোস্ট দিয়েছিলাম। ফেবুতেও দিয়েছিলাম। সেটা দেদারসে বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার হয়েছে, কপি হয়েছে। তিন- চারটা আশু ফ্যান পেইজ থেকে আমাকে এডমিন করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অনেকের কাছেই এসব হাসি-ঠাট্টা বা ফাকাফাকির বিষয় হতে পারে, কিন্তু বিষয় টা আমার কাছে গুরুতর।



যারা বা যেসব পেইজ সেই লেখাটি শেয়ার করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, আশুর প্রতি আমাদের কানা আবেগ। ঠিকাছে। কিন্তু, বাস্তবতা বিবর্জিত আবেগ হয়ে গেলে সবাই শেল শকড হয়ে যাবো। ব্যাপারটা তখন পর্যন্ত গুরুতর ছিলনা যতক্ষণ পর্যন্ত আশুর অপরাধ স্রেফ মালিকের চাপের কাছে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে যাবার খবরেই সীমাবদ্ধ ছিল। আজকের প্রথম আলোর রিপোর্ট- টা বিশাল, এবং গোঁড়া থেকে টান মারা রিপোর্ট, যাতে অসত্য থাকার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হচ্ছে।



সত্য আমাদের কষ্ট দেয়। আপনজন হারানোর বেদনায় অনেকদিন পর পর ডুকরে কাঁদার অনুভূতি দেয়, কিন্তু সত্যের উপর দাঁড়িয়ে আমরা ঠিকই পথ টা চিনে নেই। ও পথেই হাটি, বাচি।

আজকে কি-বোর্ড টারেও অবিশ্বাস হচ্ছে। খুব কষ্ট থেকে লিখছি, চোখে- মুখে অন্ধকার দেখছি।



মনে পড়ছে ১৯৯৭, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন হয়ে পাইলটের সেই বিমান দৌড়।



মনে পড়ছে ১৯৯৯, ইনসুইঙ্গিং বলে পরাস্ত সেলিম মালিক আর ম্যান অফ দা ম্যাচের শ্যাম্পেইন হাতে সুজনের সেই হাসি।



মনে পড়ছে ২০০৭, গাঙ্গুলি আর ধোনিকে সাজঘর দেখিয়ে দেয়া রফিক।



আর মনে পড়ছে, আশুর সব কীর্তি। আমাদের রঙ ছোঁড়াছুড়ি আর সেই খুশির মুহূর্ত।



আর মনে হচ্ছে, মৃতপ্রায়, অসহায়, দুঃখে, শোকে, ক্ষোভে, লজ্জায়, হতাশায়- SHELL SHOCKED হয়ে বসে আছে পুরো বাংলাদেশ। একটাই তো আশা আমাদের। আমরা খাই ক্রিকেট, পরি ক্রিকেট, ঘুমাই ক্রিকেট, বাচি ক্রিকেট, মরি ক্রিকেট।



আর পারছিনা, সত্য উদ্ভাসিত হোক। খোদা আমাদের শক্তি দিন এমন কঠিন দিন পার হবার। বাংলার ক্রিকেট আবার উদ্ভাসিত হোক নতুন আলোয়।



শেল শকডের ট্রমা থেকে বেরিয়ে বাংলার দামালেরা আবার বুক উচু করে দাঁড়াক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.