| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তারেক_মাহমুদ
পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত
প্রায় দেড় বছর পর স্বপরিবারে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। চার দেওয়ালে বন্দী আমার মেয়েটা যেন মুক্ত আকাশে ডানামেলে উড়ে বেড়ানো পাখি। গ্রামের রাস্তাঘাট নদী, খালবিল, পুকুর,পরিচিত মানুষ সব কিছুই আমার ফেলে আসা শৈশবকে মনে করিয়ে দিচ্ছি তাই শৈশব স্মৃতি লিখতে বসলাম।
সময় খুব দ্রুত চলে যায়। মনে হয় এইতো সেদিন বাবার হাত ধরে গ্রামের হাটে যেতাম। বাজার শেষে বাবা এক পোঁটলা বাদাম,চানাচুর কিনে দিতেন খেতে খেতে বাড়ি ফিরে আসতাম। সবুজ ধানক্ষেতের পাশ দিয়ে কাধে বই নিয়ে স্কুলে যেতাম(তখন ব্যাগ ছিল না)। ধুলোয়ঢাকা পথে পায়ের ছেন্ডেল দিয়ে ধুলো উড়াতে উড়াতে বাড়ি ফিরতাম। নিজেদের বাড়িতে আম গাছ থাকলেও রাস্তায় অন্যের গাছের পাকা আমের দিকে লোভির দৃষ্টিতে তাকাতাম। মাঝেমধ্যে ঢিল ছুড়ে দিয়ে ভোদৌড়। একবার একজনের বরই গাছে ঢিল মেরে ধরা খেয়েছিলাম। ওই বাড়ির এক বড়ভাইয়ের হাতে মার খেয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমিও বড় হলে ওকে একদিন পেটাবো। আমি বড় হওয়ার আগেই বেচারা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।আমি ওনাকে মাফ করে দিয়েছি।
স্কুল থেকে ফেরার পথে বন্ধুদের সাথে সারারাস্তা পাখির বাসা খুঁজে বেড়াতাম, ছোটবেলায় শখছিল একটা পাখি পোষার কিন্তু এই শখটা পুরুণ হয়নি, কারণ আমি গাছে উঠতেই পারতাম না। গাছে না উঠতে পেরে একদিকে ভালই হয়েছে আমার দ্বারা কোন পাখির বাসা বা তাদের বাচ্চারা আক্রান্ত হয়নি। রাস্তায় দুষ্টু কাঠবেড়ালীটাকে দৌড়াতে দেখলে ওর পিছনে দৌড়ানো ছিল অনেকটা নেশার মত, জানতাম দৌড়ে কাঠবেড়ালী ধরা আদৌ সম্ভব নয়। তবুও ওর পিছনে দৌড়াতে ভাল লাগতো।
বৃষ্টির দিনে বাড়ির আশপাশের ডোবা থেকে বড় বড় কৈ মাছগুলো উপরে উঠে আসতো। একবার রাস্তার পাশ থেকে অনেকগুলো কই মাছ ধরেছিলাম মাছগুলো ধরার পর সেকি আনন্দ! তাছাড়া পুকুর থেকে ডোবা থেকে ছিপ দিয়ে পুটি মাছ ধরার আনন্দ বলে বোঝানো না । একবার বর্ষাকালে কলার ভেলায় চড়ে বন্ধুদের সাথে বিলের গভীরে চলে গিয়েছিলাম শাপলা তুলতে। আমি সাতার জানতাম না, পরে আম্মার হাতে প্রচুর মার খেতে হয়েছিল এই কাজের জন্য। একবার ছোট্ট একটা গাছ থেকে পড়েগিয়ে আমার হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল, আম্মাকে বলেছিলাম খেলতে গিয়ে পড়ে হাত ভেঙ্গেছে,ভয়ছিল যদি সত্যি কথা বলি তাহলে আরো কয়েকটি উওম মধ্যম লাগাবেন।
একসময় আমিও সাতার শিখে গেলাম।তখন পুকুরে একবার গোছল করতে নামলে তিন চার ঘন্টার কম উঠতাম না। মাছধরা পানিতে ছুঁয়াছুঁয়ি খেলা আরো কত কি?পুকুরে ডুব দিতে দিতে একসময় চোখ লাল হয়ে যেতে। শেষমেশ আম্মা যখন লাঠি নিয়ে পুকুর পাড়ে হাজির হতেন তখনই পানি থেকেই উপরে উঠতাম।
শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে অদ্ভুত ভাললাগা কাজ করে। মনে হয় এইতো সেদিনের কথা, প্রত্যকটি স্মৃতি এখনো মনের কোনে উজ্জ্বল হয়ে আছে, খুব বেশি হাতড়াতে হচ্ছে না এমনিতেই স্মৃতিরা এসে ধরা দিচ্ছে।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি এই কারণে, আমার গ্রাম এবং শহরের মিশ্র অভিজ্ঞতা আছে।আম কাঠালের দিনে গ্রামের মজাই অন্য রকম আপনার অভিজ্ঞতারও ভাল লাগলো ভাই ঢাকার লোক। অনেক ভালবাসা আপনার জন্য।
২|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৭
কিরমানী লিটন বলেছেন: নষ্টালজিতে ভাসলাম। আহা, প্রানের শৈশব।।।।।
মুগ্ধ ভালোলাগ++
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫১
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আপনাকে নস্টালজিয়ায় ভাসাতে পেরে আমারও ভাল লাগলো কিরমানি লিটন ভাই।অনেক শুভেচ্ছা ও ভালবাসা।
৩|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৪
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: গ্রামে থাকা প্রায় সবারই শৈশবের কাহিনী এমনই। ছোটবেলায় কত যে দুষ্টুমি করেছি তার কোন হিসেব নেই। কিছু স্মৃতি একেবারে ঝাপসা হয়ে গেছে, এখন আর মানসপটে ভেসে ওঠে না। তারপরও কিছু স্মৃতি আছে যা কখনও ভোলা যায় না। আপনার স্মৃতিকথায় অনেককিছুই আবার নতুন করে মনে পড়ল।
লেখায় ভালোলাগা।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫৮
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সম্রাট ভাই, শৈশব স্মৃতি লিখতে বসলে মনে হয় কিছুই মনে নেই কিন্তু লিখতে বসলে অনেক কথাই মনে পড়ে যায়
আমার শৈশব স্মৃতি আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো ।
৪|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৪
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমরাই শেষ প্রজন্ম সম্ভবত যাদের গ্রাম ও শহর দুইটাই দেখার অভিজ্ঞতা আছে। এখন গ্রামেও বিল্ডিং, এখন আর কেউ পুকুরে গোসল করে না...
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গ্রামে এখন উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে, রাস্তাঘাট সব পাকা,গ্রামের পুকুরের পরিবর্তে বাথরুমে গোছল, এখন আর মাটির চুলা নেই সবাই গ্যাসের চুলায় রান্না করে সত্যি অনেক পরিবর্তন। অনেক ধন্যবাদ ভাই বিচার মানি তালগাছ আমার।
৫|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৭
নূর-ই-হাফসা বলেছেন: যারা গ্রামে বেড়ে উঠেছে তারা বোধ হয় ভাগ্যবান । শহরের কোলাহল পূর্ণ বদ্ধ পরিবেশে বেড়ে উঠা আহামরি আনন্দের না।
ভালো লাগলো আপনার লেখা টা । সুন্দর লিখেছেন ।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৫৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গ্রাম এবং শহরের আনন্দ ভিন্ন প্রকৃতির, গ্রামের বাচ্চারা মুক্ত পরিবেশে বেড়ে ওঠে। আম গাছে ঢিল মেরে, পুকুরে সাতার কেটে অনিবিল আনন্দে কেটে যায় তাদের শৈশব। শহরের বাচ্চাদের আনন্দ একটু ভিন্ন প্রকৃতির, তারা টিভি দেখে মোবাইল ফোনে গেমস খেলেই কাটে বাচ্চাদের শৈশব, এখন অবশ্য দিনদিন গ্রামও শহরের মতই যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হাফসা আপু।
৬|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৩১
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: শৈশবে টাইম মেশিনে চড়ায়ে দারুণ ঘুরালেন তারেক ভাই। সেই দিন এখনকার ছেলেমেয়েরা পাবে না। দিন দিন সবি হারিয়ে যাচ্ছে আমরা উন্নয়নের ছোয়ায় উজার করে দিচ্ছি গ্রামবাংলাকে। নষ্ট করে দিচ্ছি হাল- বিল, পুকুর -ঝিল আমাদের পজন্মদেরকে পুকুরে নামার মতো পুকুর রাখছিনা। ওদের কাছে আমাদের শৈশব রূপকথার গল্প হবে একদিন।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এখন গ্রামও আস্তে আস্তে শহর হয়ে যাচ্ছে, তবে গ্রামের মানুষের মধ্যে কিছুটা প্রাণ আছে,গ্রামে কিছুটা আনন্দ এখনো আছে। মন্তব্যের জন্য সুজন ভাই।
৭|
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:০৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশের সবাই ছেলেবেলায় কেন যে পাখীর বাচ্চা ধরে, বুঝা মুশকিল। আমাদের এলাকার কয়েকজনের চেষ্টায় এই এডভেন্চারটা যুগে যুগে বন্ধ ছিল।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গ্রামের সব বাচ্চাদের মধ্যে পাখি পোষার একটা ইচ্ছা থাকে, এই ইচ্ছা থেকেই বাচ্চারা পাখির বাসা নষ্ট করে । এ ব্যাপারে বাবা মায়ের বাচ্চাদের বোঝানো উচিৎ।
৮|
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন:
আম, বরই পাড়া।পানিতে ছুঁয়াছুঁয়ি খেলা!!! আহা,
. পুরানোসেই দিনের কথা
ভুলবি কি রে হায়।
ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা,
সে কি ভোলা যায়???
শুভ নবর্বষ।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:১৪
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শুভ নববর্ষ, নিজাম ভাই, আসলেই তাই শৈশবের দিনগুলো ভোলা সম্ভব নয়।
৯|
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:০১
শাহিন বিন রফিক বলেছেন: এ যেন আমার স্মৃতি কথা লিখলেন আপনি।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গ্রমে বড় হওয়া বেশিরভাগ মানুষের শৈশব স্মৃতি এমনি হয় মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রফিক ভাই।
১০|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: শুভ নববর্ষ-১৪২৫।
স্মৃতিকথা সুন্দর হয়েছে।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৮
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শুভ নববর্ষ, খুব ভাল কাটলো নিশ্চয়ই নববর্ষের দিন? অনেক ধন্যবাদ মাইদুল ভাই।
১১|
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার শৈশবের স্মৃতিকথা পড়ে ভাল লাগলো। গ্রামের জীবনও এখন অনেক উন্নত হয়েছে, যা আমাদের সময়ে ছিল না।
আধুনিকায়নের একটা অভিশাপ আছে। সেই মূল্যটুকু পরিশোধ করেই গ্রামগুলো আজ শহরের মত গড়ে উঠছে।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আধুনিকায়নের একটা অভিশাপ আছে। সেই মূল্যটুকু পরিশোধ করেই গ্রামগুলো আজ শহরের মত গড়ে উঠছে আসলেই তাই গ্রামেও এখন আর সেই প্রাণ নেই
১২|
০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬
মাহের ইসলাম বলেছেন:
ভালো লাগলো।
অনেকাংশেই আমার নিজের শৈশব এর মতো, তাই একটু বেশি ভাল লেগেছে।
০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ মাহের ভাই, আসলে গ্রামের শৈশবের দিনগুলো একটু বেশী প্রাণোচ্ছল। অনেক ভালবাসা আপনার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:১৮
ঢাকার লোক বলেছেন: আমার শৈশব কেটেছে ঢাকায়, তবে ঢাকার অদূরে নানার বাড়ি দাদার বাড়ি বেড়াতে যেতাম আম কাঁঠালের দিনে, আপনার সুন্দর স্মৃতিচারণ পড়ে সেইসব দিনের কথা মনে পড়লো ! ভালো লাগলো !!