নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমার প্রিয় কবিদের মধ্যে অন্যতম। তার বিদ্রোহী কবিতায় অনুপ্রানিত হয়ে আমি একটি কবিতা লিখেছিলাম। তবে ভাবনাগুলো মৌলিক বলেই আমি দাবি করি। জানি না কবিতা হিসেবে তা কতটা সফল। তারপরও তাঁর জন্মদিনে তাকে উৎসর্গ করে আমার এই কবিতাঃ
“বিপ্লবী”
সৃষ্টি থেকে শুরু-তারপর সংগ্রাম
অবিরাম অবিরাম,
অস্তিত্বের লড়াই নিয়ে তখন থেকেই জ্বলছি
বিপ্লবী আমি-আপনার কথা বলছি।
বন্য, শ্বাপদ, মৃত্যু, জরা দলিয়ে পদতলে
পুড়িয়ে নিজেকে অগ্নিগিরির লেলিহান দাবানলে
তাপাদহে মোর হিমবাহ গলে, আমৃত্যু আমি বহ্নি
আমি কাহারে’ করি না গন্যি।
আমি অক্ষয় হয়ে এসেছি ধরায়, মৃত্যুতে নেই ক্ষয়
বিপ্লবী আমি বারেবারে আসি, কাহারে’ করি না ভয়।
আমি পাষাণে পাষাণ ঠুকে ঠুকে, বহ্নি করেছি গ্রাস
বনে পাহাড়ে অভিযানে আমি, ভেঙেছি অজানা ত্রাস।
আমি সুর দিয়েছি সমীরণ মাঝে মর্মর তাই গান
আমি সাগরের ঐ নির্জন দ্বীপে ফুটিয়েছি নব প্রান।
আমি বীজ বুনেছি মাটি বুক চিড়ে নতুন সৃষ্টি বোধে,
আমি বোন উজরায়ে গড়েছি নগর, উল্লাসে মহাক্রোধে।
আমি আঁধার গুহায় দীপ জ্বেলেছি, গড়েছি দিবালয়
বিপ্লবী আমি আঁধার করেছি জয়।
আমি হেসে হেসে আগুনে পুড়েছি, কাল হয়ে পুরাণের
আমি নতুনের খোঁজে স্বাদ নিয়েছি, একাকী নির্বাসনের।
আমি যীশুর ক্রুসে নিজেকেই নিজে, কত করেছি বিদ্ধ
বিপ্লবী আমি আপন প্রাণেতে, ইচ্ছে করেছি সিদ্ধ।
আমি দাসদের হয়ে লড়েছি, আমি ভেঙেছি দাসের শৃঙ্খল
আমি শোষণের উপর শাসন হয়ে, তুলেছি দারুণ মহারোল।
আমি পথে পথে ঘুরি আপন হাতে, ভেঙে ঘর আপনার
আমি বাঁচার তরে পশুসাথে লড়ি- আমি হিংস্র গ্ল্যাডিয়েটর।
আমার নেই কোন দেশ
আমি বহুখানে তাই বহুভাবে জাগি, ধরে নিয়ে বহুবেশ।
আমি লেনিন,স্তালিন, মাওসেতুং এর সাহসী হাজার যোদ্ধা
বিপ্লবী আমি বিপ্লবে তাই বোদ্ধা।
আমি ভারত মাতার আদুরে ছেলে ফাঁসিঝোলা ক্ষুদিরাম
আমি সূর্যসেনের সূর্যতরুণ মরে চলি অবিরাম।
আমি বাংলার বুকে ওঁত পেতে থাকা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি গেরিলা
আমি স্বাধীন বাংলা বেতার শিল্পী ঝড় তোলা বেহালা।
আমি ফিলিস্তিনে মরে মরে-জন্মেছি বারেবারে
আমাকে পাবে তোমরা আফ্রিকায়, ইরাকে, কাশ্মীরে।
আমি হিরোশিমা নাগাসাকির বোমা খাওয়া বিকলঙ্গা
আমি যুদ্ধবাজের দূষিত রক্তে ধরণী করিব গঙ্গা।
আমি স্বৈর রাজার ভয়
আমি আপন প্রানের দানে আনিব, বিশ্বমানব জয়।
আমি বারেবারে আসি আবার আসিব হাজার লোকের ভিরে
গর্ভবতীর আদুরে দুলাল-ভ্রুন হয়ে ফিরে ফিরে।
আমার চক্ষু হাজার তারা
আমি বিনিদ্র রাত, নিরঘুম জাগা, মানবের পাহারা।
আমি অরুণ আলোর তরুণ সূর্য, বক্ষে করি ধারণ
বিপ্লবী আমি আমার নেইকো বারন।
আমি পরাধিন দেশে স্বাধীন সূর্য উঠায়েছি বারেবারে
আমি মরেছি শত সহস্র তেমন জন্মেছি হাজারে।
আমি বিশ্ব নিখিল প্রাণ
আমি ক্ষুধাতুর মুখে খাদ্য যোগাই, পাষাণের বুকে গান।
আমি প্রিয়ার বাঁধন ছিন্ন করে হয়েছি রাতের প্রহরী
আমি সময়ে-অসময়ে সবসময়ে আসি, অনিয়মের ঘড়ি।
যেখানেই ব্যাবধান
বিপ্লবী আমি লহুর সলীলে, সবারে করেছি সমান।
আমি বাস্তুহারার সঙ্গী হয়েছি, আমি যে সর্বহারা
আমি মুক্তির তরে বরেছি অনেক, আঁধার পাষাণ কারা।
আমি লংমার্চ করি রাজপথ ধরে মিছিলের মিছিলে
আমি চিৎকার করে স্লোগান ধরি, মজুরের সামিলে।
আমি বুকের রক্তে লিখেছি লিখছি জ্বলজ্বলে পোস্টার
আমি পথহারা ভ্রষ্ট মানব-দিশারী রাহবার।
আমি জীবনের তরে জীবন নিয়েছি,প্রানের তরেতে প্রাণ
আমি ভাইয়ের বুকের রক্তে করেছি ভাইয়ের জীবন দান।
আমি বিশ্বমানব একডোড়ে বেঁধে ঘুচাবই ব্যাবধান,
বিপ্লবী আমি, আমি বিপ্লবি- পৃথিবীর সন্তান।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:২৬
তরুন ইউসুফ বলেছেন: একসময় বেশ বিপ্লবী ছিলাম, রাজনীতি করতাম, ভাবতাম সমাজ পালটে দেব। সাম্যের সমাজ গড়ব। সে পথ থেকে পালিয়ে এসেছি। তবে এখনও যারা সে পথে আছে তাদের জন্য এই কবিতা।