নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোট্ট জীবনে অনেক ভাঙ্গাগড়া দেখেছি । আমার সৃষ্টিকর্তা ,অস্তিত্ব রক্ষাকারী আল্লাহ্‌ কে ছাড়া কাউকে ভয় করিনা। বর্তমানের মানুষ ও দেশকে নিয়ে অনেক চিন্তা মাথায় ঘুরে। দেখা যাক, কিছু করা যায় কিনা ?

তাসিন , সবার থেকে আলাদা

আমি অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই আলাদা

তাসিন , সবার থেকে আলাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

>>>>>>>>>> শৈশবের দুরন্তপনা ও একটি স্মরণীয় ঘটনা[/su<<<<<<<<<<

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫

জীবনে মা কে ফাঁকি দিয়ে অনেক দুরন্তপনা করেছি । কতবার এর জন্য মার খেয়েছি , কান ধরেছি তার হিসাব করা কঠিন । তার পরও কমেনি দূরন্তপনা । কারণ, আমার জন্ম স্থান তো উত্তাল, দুরন্ত পদ্দার একমাএ উপনদী মহানন্দা নদীর তীরের ছোট্টো একটি বাড়ীতে । আপু বলে , "পিচ্চিকালে আমার জ্বালাই নাকি বাড়ীতে খেলনা থেকে শুরু করে বাটি , চামচ, কৌটা সহ কোন বস্তুই আমার হাত থেকে রক্ষা পেত না । সবকিছু আমি জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দিতাম ।" ৭ বছর পর্যন্ত বন্যা ,নদী ভাঙ্গনের সাথে লড়াই করি । এমন ছেলে দুরন্ত না হলে আর কে হবে ?



ছোটবেলাই বেলুন-পলিথিন ফুটিয়ে, হঠাৎ চিৎকার দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সারাদিন রোদে পুড়ে-বৃষ্টিতে ভিজে খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে প্রজাপতি - ফড়িং ধরা, গোল্লাছুট, এক্কা-দোক্কা, লাটিম, টিপ্পু, বামপাট, বরপ পানি, চোর-পুলিশ, হট্টিটি, মাংশ চুরি, বুড়ি বসান্তি, যুদ্ধ-যুদ্ধ, বদ্দন আরো কত কিছু খেলা খেলেছি, কতো দৌড়াদৌড়ি ছুটাছুটি করেছি যার দৃশ্য এখনো চোখের সামনে ভাসে ।



এতো খেলার মধ্যে সব চেয়ে প্রিয় ছিল ক্রিকেট । আব্বুর কিনে দেওয়া প্লাস্টিকের বল-ব্যাটে ক্রিকেটের হাতেখড়ি । সেই থেকে মনে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন মনের কোণে উঁকি দিত এবং আাজ পর্যন্ত তা থামেনি । সেই লক্ষ্য পুরনের জন্য চলে ক্রিকেট খেলা ।কখনো মাঠে, কখনো ঘাটে, কখনো রাস্তাই, কখনো বাগানে,কখনো চিপাই, কখনো গলিতে, কখনো নদীতে,কখনো চরে, কখনো এপাড়াই, কখনো ঐপাড়াই শুধু ক্রিকেট আর ক্রিকেট । স্কুল ছুটির পর পরই খেলায় নেমে পড়তাম । চলতো সন্ধ্যা না হওয়া পর্যন্ত । ক্লাশ ৭ এ উঠার পর সব থেকে বড় বাঁধা হলো আম্মা । খেলা বন্ধ করার জন্য বিকালে বাসাই প্রাইভেট ঠিক করলো । সেই থেকে খেলার পরিমাণ কমে যায় । তবুও ক্রিকেট কে ভুলিনি । কারণ, আমি যে দুরন্ত । সুযোগ পেলেই চলে যেতাম মাঠে । জীবনে অনেক পাড়া-পাড়া, স্কুল-স্কুল, ক্লাশ-ক্লাশ, প্রাইভেট-প্রাইভেট হারাহারি খেলেছি । কিন্তু যে খেলার কথা জীবনে ভুলবনা তা হলো :



২০১০ সাল। তখন কলেজে ১ম বর্ষে পড়ি । আমার এক বন্ধু বললো, তার গ্রামের (শহর হতে অনেক দূরের প্রত্যান্ত গ্রাম , দূরত্ব ১০-১২ কি.মি.) ছেলেদের সাথে খেলা আছে । ছুটির দিনে খেলা হওয়ায় সাথে সাথেই রাজী হয়ে গেলাম। রওনা দিলাম সাইকেলে করে। ৫-৬ কি.মি. যাওয়ার পর নদী পার হতে হয়। নৌকায় করে নদী পার হলাম । খেলা হলো , কিন্তু আমরা জিতা ম্যাচ হেরে গেলাম । মনে মনে ভীষণ রাগ হলো । আমার বন্ধুকে বললাম , সামনে শুক্রবার আবারো খেলা দিতে । সেইদিন সবাই মনখারাপ করে চলে আসলাম।শুক্রবার সকাল ৬.৩০ প্রাইভেট আছে বলে বাসা হতে বের হলাম । শুক্রবার, জুম্মার নামাজ আছে। বেশি দেরি হলে নামাজ মিস হতে পারে। তাই, আগের প্ল্যান অনুযায়ী অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে নিলাম। যেন খেলা শেষে গোসল করেই নামাজ পড়তে পারি। সাইকেল নিয়ে রওনা হলাম। কিন্তু , বিপওি ঘটলো রাস্তাই চাকা লিক হয়ে। একে তো সকাল বেলা,তার উপর গ্রামীণ এলাকা । মেকার পাবো কোথাই ? তাই একবার হেঁটে , একবার সাইকেলে চড়ে চলতে লাগলাম। আবারও বিপদ নদীর কাছে গিয়ে। নৌকা নষ্ট ,পারাপার বন্ধ । কথাই আছে ,"বিপদ নাকি আসলে একসাথেই আসে।" তাই হলো অবস্হা। সবাই সাঁতার কেটে নদী পার হচ্ছে । কি আর করা ? ফিরে যেতে হবে। প্রতিশোধ আর নেয়া হলো না। হঠাৎ মাথাই আসলো, অতিরিক্ত কাপড় আছে। যেই ভাবা সেই কাজ। সাইকেল গ্যারেজে জমা দিয়ে সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে গেলাম। ঐ পাড়ে কাপড় বদলিয়ে ভ্যানে করে রওনা দিলাম। তারপর পৌঁছে খেলা শুরু হলো। প্রথমে আমরা ব্যাটিং করলাম।১৫ ওভারে ১২৯ রান টার্গেট দিলাম। আমি উইকেট কিপার ছিলাম। উওেজনাপূর্ণ জমজমাট খেলা হচ্ছিল। শেষ ২ ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল ওদের, হাতে আছে ২ উইকেট। শেষ ওভারের আগের বল, বলটা ব্যাটের কানা ছুয়ে আমার ডান দিকের ২ হাত দূর দিয়ে যেতে লাগলো ।আমিও সহজে দমবার পাএ নয়। দিলাম এক ড্রাইভ। হাতে তালুতে বলের স্পর্শ পেয়েই হাত বন্ধ করলাম। মাটিতে পড়লাম মুখের ভরে। সাথেসাথেই মনে হলো মুখটা বুঝি পুড়ে গেল। কিছুক্ষন পর মাটি থেকে উঠে দেখলাম হাতে বল আছে। আর বাম চোখের নিচ হতে গাল পর্যন্ত খুব ই জ্বলছে এবং ২-১ ফোঁটা রক্তও পড়ছে। যেখানে পড়েছিলাম, সেখানে দেখলাম ছোটছোট ইটের কণা পড়ে আছে। মাথাও ঘুরছিল।সবাই খেলতে মানা করলো । না খেললে একজন কম নিয়ে খেলতে হবে। ১ উইকেটে ১ ওভারে লাগবে মাএ ৮ রান। তাই যতই কষ্ট হোক সকলের নিষেধ সও্বেও উইকেটের পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। শেষ পর্যন্ত আমরা ১ রানে জিতলাম। ফিরার পথে আবারো সাঁতার কেটে নদী পার হলাম এবং গোসলও করে নিলাম । আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। পানি লেগে কাটা জায়গা খুবই জ্বলছিল ।



জুম্মার নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরলাম। এক দিকে অনেক দেরি করেছি, তার উপর কাটা মুখ । প্রথমেই ঝাড়ী দিয়ে আমার চৌদ্দ গুষ্টি (বংশ) উদ্ধার করে নিল আম্মু । তারপর দেরির কারণ জানতে চাইলো ।বললাম, রাস্তাই পড়ে গিয়ে সাইকেলের চাকা লিক হওয়ায় দেরি । আজও তারা এই কথা জানে। এখনো সেই কাটার ছোট একটু চিন্হ আছে । এই দিনটিকে আমি জীবনেও ভুলতে পারবোনা ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৫

এরিস বলেছেন: অন্যদের তুলনায় বেশীই আলাদা তো, তাই দুষ্টুমিটাও আলাদা... মজা পেলাম... :)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

তাসিন , সবার থেকে আলাদা বলেছেন: একটু না , অনেক আলাদা । মজা পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ।

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৭

ঝটিকা বলেছেন: ভালোই দুরন্ত আপনি, কিছুটা খামকেয়ালিও।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৮

তাসিন , সবার থেকে আলাদা বলেছেন: ভালোই দুরন্ত !!!!!!!!!!!!!!! হতে পারে । তবে খামকেয়ালির ব্যাপারটা , বলতে পারবোনা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.