![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রাজনীতি ঘৃণা করিনা।
নোংরা রাজনীতি ঘৃণা করি। সেই ছাত্র
রাজনীতি ঘৃণা করি,যে রাজনীতি আমার
বন্ধুদের এক মুহুর্তে অচেনা করে দেয়,
চোখে চোখ মেলাতে ঘৃণাবোধ হয়
এমনিভাবে আদর্শ থেকে বিচ্যুত
করে দেয়,স্বার্থপর করে দেয়, অসভ্য
করে দেয়, লাশ বানিয়ে দেয় আর সেই লাশ
দেখে কষ্ট হয়, ব্যথায়
চমকে উঠি তাকে ঘৃণা করি। এমন কেন
হয়? আমাদের মেডিকেল
কলেজে রাজনীতি চালু হওয়াটা আমার
কোনকালেই ভাল লাগেনি। ছাত্রলীগ আর
ছাত্রদলে দুটোতে ঢোকার প্রস্তাব
বিনয়সহকারে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম!
আমি লীগ অথবা দলের মিছিলে গলার রগ
ফুলিয়ে চিল্লাচ্ছি এটা চিন্তা করেই
হাসি পেয়ে যাচ্ছিল। আমার এক বন্ধু লোভ
দেখিয়েছিল, তুই জানিস
রাজনীতি করলে কত সুবিধা পাবি! ঐ দল
ক্ষমতায় থাকলে তোর প্রফ পাশ ঠেকায়
কে? পিজিতে হায়ার স্টাডির সিট
বরাদ্দ থাকবে এখন থেকেই।
আমি অবাক হয়ে শুনেছি। এতই সহজ?
লোভে পড়ে নিজেকে কলুষ
করতে রাজি হইনি তা নয় আসল
কথা আমি অনেক ভীতু। এই ভয়টাই
আমাকে বারবার খারাপ থেকে নিবৃত্ত
রেখেছে।
জীবনে আর যাই করি কখনো কোন অন্যায়ের
সাথে আপোষ করবনা। আই উইল শাউট!
গলার জোর যতই কম হোক ,চিত্কার করবোই!
বাবা এবং মা নামের দুটি প্রাণী এই
পৃথিবীতে আমার সম্প্রদান
কারককে মহিমান্বিত করে রেখেছেন।
প্রায়ই
ভাবি আমাদেরকে দূরে পাঠিয়ে সারাজীবন
তারা অপেক্ষায় থাকেন,
কবে বাড়ি ফিরব! তাদের অপেক্ষাকে যেন
এমনি এমনি বোবা কান্নায় না ভাসাই।
ছোট
ভাইয়া আপুরা যারা বাসা থেকে দূরে পড়াশোনা করছো তোমরা প্লিজ
কখনো কিছু করার আগে নিজের
বিবেককে প্রশ্ন করে দেখবে এই
কাজটা কি ভাল হবে? আমার
বাবা মা কি এই কাজে কোন দুঃখ পাবেন?
এখানে অবাধ স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার
কেউ নেই। একটু খামখেয়ালিপনায়
পা হড়কাবেই। কাদায় ডুবে যাবে। কিছু
করার আগে একটু তাদের কথা ভেবো।
যারা আর কিছুদিন পরেই দেশের শ্রেষ্ঠ
বিদ্যাপীঠগুলোতে
পড়তে যাচ্ছো কারো প্ররোচনায়
কিংবা জবরদস্তিতে রাজনীতিতে জড়াবেনা।
যদি তোমার একান্ত ইচ্ছে থাকে জড়াও
কিন্তু নিজেকে নোংরা হতে দিওনা।
একজন নোংরা মানুষ হওয়া সহজ । একজন
খাঁটি মানুষ হওয়া অসম্ভব কিন্তু চাইলেই
ভেতরটাকে পরিষ্কার রাখতে পারো।
ভেতরটাকে পরিষ্কার রাখার একটা সহজ
উপায় মানুষকে ভালবাসতে শেখো।
বিরুদ্ধ রাজনীতির জন্য তোমার বন্ধুর
বুকে ছুরি চালানর
আগে বাড়ি থেকে বহুদূরে পড়তে যাওয়া একমাত্র
ছেলেটার চেহারা ভাসতে থাকায় ভাল
তরকারিটা দিয়ে ভাত
মুখে তুলতে না পারা এক মায়ের কথা ভাব,
ভাঙা ফ্রেমের চশমায় কান্না আড়াল
করা তার বাবার কথা ভাবো,
বেনী দুলিয়ে এটা সেটা বায়না করা আর
খাতায় সুযোগ পেলেই আবোল তাবোল
আঁকিয়ে তার ছোট বোনটার কথা ভাব
কিংবা বিকেল বেলার পড়ন্ত রোদ লাজুক
ঠোঁটে মেখে শান্ত কৃষ্ণচূড়ার তলায়
ছেলেটির জন্য গভীর ভালবাসায়
অপেক্ষারত এক মায়াবতীর কথা ভাবো।
যাকে তুমি ঘৃণা করো এমন
করে ভাবলে তার জন্যেও মায়া হবে।
ক্ষমতা অদল বদল হয়। রুই
কাতলারা সুখে থাকে। আর দশটা দেশের
ছাত্র ছাত্রীরা দেশকে কিছু দেওয়ায়
ব্যস্ত থাকতে ভালবাসে , আর
তোমরা মর্গে তাজা লাশ
হয়ে পড়ে থাকতে ভালবাসো।
ডিসেকশন রুমের লাশটার কেউ নেই।
বেওয়ারিশ লাশ। অথচ
তারো মা ছিল,বাবা ছিল ভাই ছিল বোন
ছিল, প্রিয়তে রাখা কোন মুখ ছিল। পকেট
ভর্তি সুখ ছিল। এখন
সে ফরমালিনে ডুবে থাকে একা একা।
লোভ আর স্বার্থপরতায় তোমরা বেওয়ারিশ
হয়ে যাচ্ছ দিনকে দিন।
বেওয়ারিশ হচ্ছে ভেতরটা।
ভাল বোধ গুলো মারা যাচ্ছে। একদিন
তোমাদের ভেতরের বিবেকটাও
ফরমালিনে শুয়ে থাকবে, সকাল বিকেল
দুবেলা ডিসেকশন হবে।
মাছের বাজার আছে,মাংসের বাজার
আছে .. বিবেকের বাজার নেই।
থাকলে কিনে রাখতাম । কিছু
বিলিয়ে দিতাম কিছু ভেতরে পুষতাম
মানুষকে ভালবাসা অতীব সহজ ..
ঘৃণা করা অতীব কঠিন .. ।
©somewhere in net ltd.