এক নবজাতকরে পরভ্রিমণবৃত্তান্ত!

৩০ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৮

যশোর: অবশেষে ঠাঁই মিলেছে শিশু তানজিমের। দুদিন আগেও সে ভাসমান অবস্থায় ছিল। কোথাও ঠাঁই মিলছিল না তার। সাতদিন বয়সী এই শিশুটি জন্মের পরদিন থেকেই ঘুরছিল হাতে হাতে। নিশ্চিত আশ্রয় মিলেও মিলছিল না।

জন্মের পরপর বাপই প্রথমে তাকে এককথায় প্রত্যাখ্যান করে। তারপর নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে সাময়িক আশ্রয় মেলে তার। হা কপাল! এখানেও পিতৃত্বের দাবিদার ব্যক্তিটি সরাসরি নাকচ করে তাকে।

গত ২২ মার্চ খুলনার ফুলবাড়িগেট এলাকার মন্টু কিনিকে ভ্যানচালক চুন্নু মিয়ার স্ত্রী চতুর্থবারের মত একটি মেয়েশিশুর জন্ম দেন। পরপর চারটি মেয়ে হওয়ায় চুন্নু মিয়া যারপরনাই ক্ষিপ্ত হন স্ত্রী-নবজাতকের প্রতি। সেকারণে কিনিকের বিল না মিটিয়ে সবার অগোচরে স্ত্রীকে নিয়ে সটকে পড়েন।

নবজাতকের এমন টানাপড়েনের বিষয়টি পরদিন ২৩ মার্চ অবগত হন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরালী গ্রামের নিঃসন্তান গৃহবধূ ফারহানা পারভীন (৪০)। কোন এক স্বজনের মাধ্যমে তিনি ঘটনাটি জেনে তিনি খুলনায় যান এবং কিনিকের খরচ ৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর একটি স্ট্যাম্পে লিখে শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এই পরিবারের কোন সন্তান না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তারা একটি বাচ্চার সন্ধান করে আসছিল।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। শিশুটিকে বাড়িতে আনার পর থেকেই স্বামী নিয়াজুর রহমানের সাথে ফারহানার প্রত্যেকদিন বিবাদ চলে। স্বামী চান না অন্যের সন্তানকে মানুষ করতে; ফারহানা বাচ্চাকে হাতছাড়া করতে নারাজ- সে যেকোন মূল্যেই। অবশেষে বিজয় তারই হয়।

এই শিশুটিকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন ফারহানা দম্পতি। তার স্বামী হুমকি দেয়, মুনজিমকে ত্যাগ না করলে তাকে তালাক দেয়া হবে। এমন পরিস্থিতিতে স্বামী নিয়াজুর শুক্রবার বিকেলে শালিস বৈঠক ডাকে। যদিও শেষপর্যন্ত বৈঠক হয়নি। স্ত্রীর জেদের কাছে পরাজিত হয়ে শিশুটিকে সে মেনে নিয়েছে।

তাদের সংসারে যখন এমন জটিল পরিস্থিতি সেসময় এগিয়ে আসে ফারহানার ভাগ্নি মরিয়ম বেগম। তাদের সংসারেও কোন বাচ্চা নেই। খালা যাতে অশান্তিতে না পড়ে সেকারণে শিশুটিকে সে মানুষ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

৩ টি +০/-০