![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জনাব ‘ক’তিনি সবেমাত্র রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেছেন,চেষ্টা করছেন নিজের ব্যবসাকে উঁচুতে নিয়েযেতে।সে চেষ্টা সব ব্যবসাদারেরই থাকে।তিনি হজ্জ্বে গেলেন।প্রায় দুই মাস পর ফিরে এলেন।দু’দিন বিশ্রাম নেয়ার পর তিনি অফিসে যথারীতি অফিস করার জন্য আসলেন।ঘন্টাখানেক পর তিনি সবাইকে তার রুমে ডেকে পাঠালেন।অনেকদিন পর প্রধানকর্তা হিসাবে যা করেন বা যা হয় আরকি!তিনি তার হজ্বের অভিজ্ঞতা বলতে থাকলেন ওখানে উপস্থিত মুসলিম,হিন্দু,বড়ুয়া সব সম্প্রদায়েরই মানুষ ছিলেন।দশমিনিট যায় আধঘন্টা যায় প্রায় ঘন্টাখানেক যায়…এই অভিজ্ঞতা বর্ণণা শেষ হয়না তাও আবার দাঁড়ায় দাড়ায়..!তিনি কোনটা বেদাত,কোনটা নাজায়েজ,কোনটা হালাল,কোনটা হারাম সেসব বলতে থাকলেন অর্নগল।এদিকে একজন আরেকজনের দিকে,কেউ কোমরে হাতদিয়ে,কেউ হাঁটুভাজকরে, এদিকওদিক তাকানো শুরু করেছে কিন্তু উনার কোন হুঁশনেই।যার যার ডেস্কের কাজ পড়ে আছে…!যাক সেযাত্রায় ও পর্যন্ত গেল…. যাক অবশেষে শেষ হলে এ যাত্রায় রক্ষা।
যারা হিন্দু আর বড়ুয়া ছিলেন তারা খুবই বিরক্তিবোধ করেছিলেন।তারা বলতে থাকলেন,এগুলো আমাদের শুনাবার দরকার কি? তাদেরকে যদি কেউ গয়া-কাশি-মথুরা বা লঙ্কা-বুদ্ধর কথা শুনালে হয়ত ভাললাগত।সবারইতো ঘুরেফিরে একই বিশ্বাসই লালন করে।
হজ্বফেরতের কাহানির পরের ধাপে আসি, হঠাৎ তিনি আমাকে অফিসে নামাজ পড়ার আমন্ত্রণ জানালেন।ভাল কথা জানাতেই পারেন তিনি তো জানতেন যে, আমি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ,অন্তত কাগজেতো তা লিখা আছে!জামাতের সাথে নামাজ আদায় করলে সওয়াব বেশি হয়,জামাতে নামাজ পড়লে মিল বাড়ে।ওইদিন খুবকরে এই নামাজি কার্যক্রম থেকে বাঁচলাম।আমি ধারণা করেনিয়েছিলাম যে, এই এক নতুন প্যারা শুরু হইছে যা একটা খারাপের ভেতর দিয়ে শেষ হবে।কারণ তিনি এরই মধ্যে বুঝেছিলেন ধর্মকর্ম আমাকে টানে না বা উদাসীন বা না করলেও সমস্যা নেই আমাদের সাথে থাকতে থাকতে ঠিক হয়ে যাবে।
এরই মধ্যে অফিসকালীন সময়ের মধ্যে যোহর আর আছরতো পড়েই,শীতকালে মাগরিব ও পড়ে যায়।মুশকিলের প্যারামিটার ওপরের দিকে উঠতেছে তা দিনকে দিন স্পষ্ট হচ্ছে!প্রথম প্রথম কৌশল করে ওই নামাজ সময়সূচীতে আমি যথারীতি অফিস থেকে বেরিয়ে যেতাম।এইরকম চলতে থাকলে তিনি অফিসে বিষয়টাকে প্রকাশ্য নিয়ে আসলেন!একদিন তার স্ত্রীও অফিসে এসে আমাকে দেখে গেলেন!শুরু হয়ে গেল…গুচুর গুচুর,ফুসুর ফুসুর…
এইরকম ছেলেকে অফিসে রাখলে অফিসের আয়রোজগার কমে যাবে,খোদা নারাজ হবে!বেটা নাস্তিক!!যততাড়াতাড়ি পারেন ছাঁটাই করেন!সবাই আমাকে দেখে হাসাহাসি করত,টিপ্পনী কাটত,মকারিকরা শুরুকরল তাতে ওইসব হিন্দু বড়ুয়ারাও যোগ দিল।তারাওতো আসলে ওইরকমই ধারণা পোষণ করেন।সুযোগের অভাবে নেতিয়ে থাকেন আরকি।যাক এই ইঁদুরবিড়াল খেলা খুব জমে উঠল নৃশংসতার মতো।
আরেকদিন,তিনি তার পারিবারীক একটা ছোট আয়োজনে অফিসের সবাইকে দাওয়াত দিলেন।আমি যাওয়ার কোন ইচ্ছে ছিলনা।কলিগরা বলল,নাগেলে স্যার মাইন্ড করবেন।যাক গেলাম… ঠিকই আমি যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই হলো..তিনি তার পরিবার আর অন্যসবার সামনে খুব সুক্ষকরে করে আমাকে খুবই অপমানিত করলেন স্বস্ত্রীক।ঘরের বউয়েরা অফিসের কোন পদবি না থাকলেও তারচেয়ে বড়পদ তো আর কারো নাই।তিনার ছোটভাই,মানে মালিকের শ্যালক সবাইতো সেএকই গোত্রসংহার।
তবে উনারা যাই করুক,আমার সামনে সরাসরি কিছু বলার সাহস ওদের কোনদিনই ছিলনা। তবুও এই মানসিক নিপীড়ন,যন্ত্রণার কথা আমি কাউকে বলিনি।এই প্রথম যা বললাম।সবাই ভাবল যে,উনি আমাকে অন্যদশজনের মতোই ছাঁটাই করেছেন!যা হোক,এই মানসিক চাপ নিজেই সিদ্ধান্তই নিলাম জব ছেড়ে দিব এবং দিলাম।অফিসে কাজ নিয়ে কলিগ কলিগদের মধ্যে,মালিকদের মধ্যে একটু হেচিংলেগেই থাকে তাতো কোন সমস্যা না।যদিও ফেয়ার কম্পিটিশন এখানে কেউ করে না,করার যোগ্যতা রাখে না…সবাই তলে তলে যাকরার করে আরকি!
উনার ছোটছোট ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় খুব ভাল।ছোট হলে সবাই ভালই হয়।তিনি স্কুলে মোটামুটি নামকরা স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য উঠেপড়ে লাগলেন।যথারীতি ভর্তিপরীক্ষায় টিকলো না তবে তিনলাখ খরচ করে কামসারলেন যাক তবু তারা লেখাপড়া করে বড়ো হোক।
প্রায় তিনবছর পর ওখানকার এক কলিগকে দেখা সাথে পরিবর্তিত পরিস্থিতি!তিনি এখন শার্টপ্যান্ট ছেড়ে সৌদিটাইপ জামা পড়া ধরলেন,ইয়া লম্বাদাড়ি,সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার টুপি… সুযোগ পেয়ে বললাম,ভাই উনার এই অবস্থা কেন?ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে গেল নাকি…………. তিনি বললেন, আগে ছিলেন হাফ,এখন ফুল আর কি!!!এখনো এই কলিগ উনার সাথে আছেন!শুধু তাই নয় এও বললেন,কোন সময় শাটডাউন হয় প্রতিষ্ঠানের সেই অপেক্ষায় আছি!!
লোকমুখে শুনতাম,একদিন উনি এক অফিসে চাকরি করতেন…দশবছরের মধ্যেই তিনি কেমনে কোম্পানি খুললেন সেটা বড়উ আর্শ্চয্যের!!!!
[যাক এভাবে বাঙালি মুসলমানের বেশিরভাগ হজ্জ্বে গিয়ে সমাজ আর রাষ্ট্রের মধ্যে কোন্দলের মধ্যমণি হয়ে উঠছে...এ এক অনন্ত যাত্রা বাঙালির।কবে এযাত্রা শেষ হবে অথবা আদৌ হবে কিনা কেউই জানেনা।মানুষ হিসেবে সভ্য হওয়ার চেয়ে জালিমবেশে সভ্য হওয়ার লোভই ওদের বেশি]।।।
০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪৮
তাওিহদ অিদ্র বলেছেন: অভিজ্ঞতা জানা সবার দরকার........ আমি এমন কোন মানুষ নই যে, আমার ব্যক্তিগত বিষয় বলে বেড়াব আর অন্যরা গোগ্রাসে গিলবে........কিন্তু নির্ঘাত এই নিমর্ম অভিজ্ঞতা কিরুপে সমাজে আছে তার একটা নমুনা দিলাম।যাক ধন্যবাদ আপনাকে।ভাল থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:১২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ..এ এক অনন্ত যাত্রা বাঙালির।কবে এযাত্রা শেষ হবে অথবা আদৌ হবে কিনা কেউই জানেনা।মানুষ হিসেবে সভ্য হওয়ার চেয়ে জালিমবেশে সভ্য হওয়ার লোভই ওদের বেশ.

অল্পতে দারুন ফুটিয়েছেন -অন্তর্নিহিত সত্য
+++