![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার জীবনী লিখে গেছেন বুদ্ধদেব বসু, ১৯৪৪-এ, আমার জন্মের বহু আগে, তাঁর 'রাধামাধব উপাধ্যায়ের শেষ উক্তি' কবিতায় : '.............................................. বালক বয়সে তাঁর মুখে কতদিন শুনেছি আমার প্রতিভা অপরিমিতা। কিন্তু আমার গ্রন্থে ছিল না মন, পড়েছি আকাশে রৌদ্র-ছায়ার লেখা, দ্বিপ্রহরের স্নিগ্ধ গাছতলায় বন্ধু ছাগলছানার পেয়েছি দেখা। ............................................ সুরার আবেশে কন্ঠে এসেছে গান, শুনে বলেছেন ওস্তাদ চাঁদ মিঞা, "রেওয়াজ করলে অনায়াসে হ'তে তুমি গৌড়ভূমির শ্রেষ্ঠ কীর্তনিয়া।" হায় রে আমার রেওয়াজে গেলো না মন। নর্তকীদের আসরে-আসরে ভেসে দ্বাদশ বরষ কাটিয়ে দিলাম হেসে। ............................................. সবাই বললে, রাধামাধবের মতো কখনো হয়নি এমন কর্মবীর। তবু তো আমার কর্মে গেলো না মন। শুধু মনে হ'লো, বন্যার জলরাশি অস্বাস্থ্যকর, ব্যর্থ, লক্ষ্যহারা অপব্যয়ের পয়ঃপ্রণালী ছাড়া। .......................................... তখন শুনেছি, ইচ্ছে করলে পারি রম্যতমাকে আনতে আপন ঘরে-- হায় রে আমার বিবাহে ছিল না মন। খেলা শেষ হ'লো, নেই আর কারো দেখা, লাল বাতি জ্বেলে আমি ব'সে আছি একা। .............................................. কৃপা ক'রে তাঁরা আমার দগ্ধভালে মোক্ষলাভের লক্ষণ দেখেছেন-- হায় রে আমার মোক্ষে গেল না মন। বৈতরণীর অবৈতনিক মাঝি পার ক'রে দিতে যদিও ছিলেন রাজি, তবু ফিরে এসে গলিতে, খোলার ঘরে কাব্যপুঁথিতে খেয়েছি চোখের মাথা, ইয়ার ছোঁড়ার রাত বারোটার গানে গুনগুন ক'রে সেধেছি বিকল গলা। এ-পক্ককেশ আমারে ব্যঙ্গ করে। ................................................. বিস্মৃতিলোকে মরেছে যে বেঁচে থেকে জানি না মরণ কী-ক্ষতি করবে তার। মৃত্যু পাবে না অশ্রুজলের ভেট, মুক্তির পথে পিছে টানবে না শোক, লজ্জায় শববাহীদের মাথা হেঁট। আমার মতন ভাগ্য কারো না হোক। হায় এ-জীবন ফিরায়ে পেতাম যদি তাহ'লে অবোধ ভাগ্যে ইচ্ছামতো চালিয়ে নিতাম সার্থকতার পথে। নব উদ্যমে সব তবে হ'তো শুরু.... সব এ-ই হ'তো, সব ঠিক এ-ই হ'তো !'
©somewhere in net ltd.