![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটবেলা থেকে ভ্রমের মধ্যে বড় হওয়া, প্রশ্ন করায় শাস্তি পাওয়া। মেয়ে হয়ে তো ষোলকলাই পূর্ণ করলাম। জ্ঞান আমাকে মুক্তি দিয়েছে। এখন নিজের আর অন্যের ভ্রম হত্যার সংগ্রাম করি যাব।
বিবর্তন নিয়ে আমাদের মাঝে অনেক ভুল ধারনা থাকে। অনেক সময় আমরা এর সম্পর্কে না জেনেই একটা উপসংহারে চলে যাই। বিবর্তন ১০১ এ ব্লগে বিবর্তন সম্পর্কে বেসিক ভুল ধারনা ও কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে একটু জটিল প্রশ্নউত্তর থাকায় প্রথম পর্বটি আগে পড়ে নিলে ভাল হয়।
বিবর্তন ১০১ (কিউ অ্যান্ড এ পর্ব ১ )
ব্লগটিকে আমার মুল ইচ্ছা ছিল ব্লগার ভাইয়ের সহযোগিতায় আরও কিছু কনফিউসনগুলো সামনে নিয়ে আসা ও সেগুলো ব্লগে আলচনা করা। সৌভাগ্যবশত ব্লগের কমেন্টে অনেকগুলো প্রশ্ন আমি পেয়েছি। সবার সময় হয়ে উঠে না কমেন্ট পড়ার। তাই সেই উত্তরগুলো নিয়ে সুগঠিতভাবে দ্বিতীয় পর্বটি পাবলিশ করলাম। তাছাড়া আরও কিছু জিনিস যা মানুষের মধ্যে ভুল ধারনা কাজ করে সেটাও ব্লগে লেখার চেষ্টা করবো। এরপরও আমি আশা রাখি প্রশ্ন থাকবে, মানুষ প্রশ্ন করবে। কারন প্রশ্ন করে, যাচাই করে সঠিক ও পরীক্ষিত জিনিসই সত্য হিসেবে মানাই আসলে জ্ঞানি মানুষের বৈশিষ্ট্য।
২১। পৃথিবীর প্রথম প্রাণ যদি জলে হয়ে থাকে। তবে জলের প্রাণীর তো ফুলকা থাকে তাদের তো আর ফুসফুস নেই। কীভাবে জলের প্রাণী স্থলে এসেছিল?
ফসিল প্রমান যে জলের প্রাণীর স্থলে আসার প্রথম প্রমান পায় না আদি যুগের লাংফিশ (protopterus annectens) এর মত এক ধরণের প্রাণী। এদের ফুলকাও ছিল, আবার ফুসফুসও ছিল। পানিতে তারা ফুসফুসকে মুলত ব্যবহার করত বাতাস ব্যবহার করে পানিতে কম্পন তৈরি করতে। তাদের আকৃতিও ছিল চারপায়ী প্রাণীদের খুব কাছাকাছি। (উল্লেখ্য যে, এই প্রান সকল Tetrapads এর কমন এনচেস্টর)। তাদের ফসিল এনাটমি থেকে বুঝা যায় তাদের ফুসফুস খুব ছোট ছিল। মানে তারা খুব বেশি সময় স্থলে থাকতে পারতো না। পরে কোটি কোটি লেগেছে লাংফিশ এর জল থেকে সম্পূর্ণ স্থলে বাসকরা যোগ্য প্রজাতিতে বিবর্তিত হতে।
২২। আমরা কিন্তু কোনভাবেই প্রক্রিয়াটিকে অবজারভ করতে পারছি না। বিজ্ঞান তো অবজারভেশন ছাড়া কোন কথা গ্রহণ করে না। তাহলে কীভাবে বিবর্তনকে সায়েন্টিফিক ফ্যাক্ট বলতে পারি?
বিবর্তন প্রকৃতি ও ল্যাব উভয়ে অবজারভ করা হয়েছে। বিবর্তন খুবই ধীরগতির প্রক্রিয়া। মানুষের এপ প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হতে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর সময় লেগেছে। বেশ কিছু ক্ষুদ্র প্রানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানিরা অরজারভ করে বিবর্তনের চাক্ষুস প্রমান পেয়েছে । এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বিবর্তন প্রকৃতিতে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, সেখানেও বিবর্তনের প্রমান মিলেছে। তাছাড়া প্রায় ১২টি ভিন্ন প্রক্রিয়া যেটা দিয়ে বিবর্তন সঠিক কিনা যাচাই করা হয়, সেই পরীক্ষণগুলোর সত্যতা ও নির্ভুলতা পরীক্ষা করা হয়েছে অরজারভেসন দিয়েই। আর সেই পদ্ধতি দিয়েই বিবর্তনকে যাচাই করা হয়। এই সবগুলো প্রিমিসেসই সাপোর্ট করে বিবর্তন ফ্যাক্ট।
২৩। এমন কোন এভিডেন্স আছে যেখানে বোঝা যায় একটা কাইন্ড অন্য কাইন্ডে পরিণত হয়েছে (উইথ অবজারভেশন)?
হ্যাঁ। অবশই। Artificial Section এর মাধ্যমে যেই প্রাণীগুলো বিবর্তিত হয়েছে তাদের নিয়ে বাইয়লজিস্টরা সেম্পিলিং পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমান পেয়েছে এক কাইন্ড থেকে অন্য কাইন্ডে বিবর্তিত হওয়ার। বিভিন্ন প্রজাতির গবাদি পশু, শস্য। এই সব অধিকাংশই বিগত মাত্র কয়েক শতাব্দী আগেও ছিল না।
২৪। যদি কোন অবজারভেশন না থাকে তবে বিজ্ঞান একে 'বিশ্বাস' বলে। বিবর্তনের কোন অবজারভেশন যদি না থাকে তবে এটাকে কি এক ধরনের 'বিশ্বাস' বলা যাবে?
বিজ্ঞান বিশ্বাস নিয়ে কাজ করে না। পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণও যাচাই নিয়ে কাজ করে। প্রশ্নকর্তার দেয়া সংজ্ঞার মতে "অবজারভেশন না থাকলে সেটা 'বিশ্বাস' " যদি হয় তাহলে বিবর্তনকে বিশ্বাস বলা যাবে না। কারন বিবর্তনের একাধিক শাখায় অনেক প্রজাতির প্রানের বিবর্তন পরীক্ষার ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ বা অবজারভেশন করা হয়েছে।
আর অক্সফোর্ড ডিকশনারির মতে "বিশ্বাস" এর কোন কিছু সঠিক মনে করা প্রমানসহ অথবা ছাড়া। সেই হিসেবে দেখলে বিবর্তন বিশ্বাস। কেননা প্রায় ১২টি ভিন্ন ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরীক্ষা বিবর্তন সমর্থন করা। সেই প্রমানের ভিক্তিতে একে সত্য মনে করা "বিশ্বাস" প্রমানসহ।
২৫। লুই পাস্তু প্রমান করেন জড় থেকে প্রানের স্বতঃস্ফূর্ত সূচনা সম্ভব নয়। তাহলে প্রথম প্রান কিভাবে আসলো ?
লুই পাস্তু তার ল্যাব এ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে যেটা বের করেছেন সেটা একদিনে যেমন বিবর্তনকে সমর্থন করে অন্যদিকে প্রথম প্রানের ব্যাপারটা সমর্থন করে না। সেই সময় মানুষ মনে করতো প্রায় ৬০০০ বছর আগে অলৌকিকভাবে সব প্রান ও প্রজাতি শুরু হয়েছিল যাকে বলা হত "Spontaneous Generation" , তার এই পরীক্ষা সেই বিশ্বাসকে ভুল প্রমান করে, যেটা বিবর্তনবাদকে সমর্থন করে। অন্যদিকে প্রথমপ্রানের স্বতঃস্ফূর্ত অস্তিত্বময় হওয়া তার প্রমানের বিরোধী। উনি Swan-Neck Flask এর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার উপর নির্ভর করে এই উপসংহারে আসেন।tiতটিতিনিবেক্তেরিয়ার্যাকটেরিয়ারউপ্রপ্র তিনি যে বছর মারা যান মাত্র ৩ বছর আগে ভাইরাস যেটা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি প্রভুত জীবের প্রথম সন্ধান পাওয়া যায় যেটা তিনি পরীক্ষা করার সুযোগ পাননি।
পৃথিবীর প্রথম প্রান ৩.৪ বিলিয়ন বছরের মধ্যে সবচেয়ে সরলতম প্রান ছিল। ক্লাসিক্যাল ফিজিক্সকে যেমন কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর সাথে তুলনা করলে চলবে না, ঠিক তেমনই প্রথম প্রানও নিপাতনে সিদ্ধ নিয়ম থেকেই এসেছে।
বিজ্ঞানীদের ধারনা Abiogenesis এর মাধ্যমে সেটা হয়েছে। ইত মধ্যে ক্রেগ ভ্যানটার ল্যাবে Abiogenesis এর সত্যতার প্রমান পেয়েছেন। উল্লেখ্য যে, এটা এখনো হাইপোথেসিস। আশা করি, নিকট ভবিষ্যতে আমরা সমৃদ্ধ একটি থিউরি পাব।
২৬। প্রায় ৫ শতাধিক বিজ্ঞানী ইভোলিউশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন । এরপর আমরা কিভাবে বিবর্তনকে ফ্যাক্ট বলতে পারি ?
Answers in Genesis নামের একটি অলাভজনক খ্রিস্টান রিসার্চ ফাউন্ডেশন একটি স্বাক্ষরনামা প্রকাশ করেন যেখানে প্রায় ৫০০ জনের মত বিজ্ঞানি বিবর্তনে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এই ইসুকে দেখিয়ে অনেকেই বলেন "বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিবর্তন নিয়ে মতবিরোধিতা আছে। যেখানে আমরা কিভাবে এটাকে ফ্যাক্ট বলতে পারি।
প্রথমত এটা আমরা সবাই বুঝি, বিজ্ঞান কোন গনতন্ত্র নয়। এখানে পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও পরীক্ষণ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলই নির্ধারণ করে কোন কিছু ফ্যাক্ট নাকি হাইপোথেসিস বাকি ভুল। যারা যারা বিবর্তনবাদকে সমর্থন করেন না তারা এর কাউন্টার কোন প্রমাননির্ভর থিউরি প্রদর্শন করেননি। সেটা সবই ছিল তাদের বিশ্বাসের ব্যাপার। আর ব্যাক্তিগত বিশ্বাস বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে না।
এরপরও আমাদের উচিত যেকোন ব্যাপারে সন্দেহ রাখা, এমনকি বিবর্তনের ব্যাপারেও। কারন এটাই সঠিককে টিকিয়ে রাখে আর ভুলকে ত্যাগ করতে শিখায়।
একটা মজার ব্যাপার শেয়ার করি, Answers in Genesis এর সেই ৫০০ জনের লিস্টের পর সাইন্টেফিক এমেরিকা বিবর্তনকে সমর্থন করে এমন বিজ্ঞানিদের লিস্ট বের করে। কিন্তু দেখাছে সমগ্র সাইন্স কমিউনিটি না করে বরং শুধু "স্টিভ" নামের বিজ্ঞানিদের স্বাক্ষর নেই। যেটা কিনা মার্কিন বিজ্ঞানীদের মাত্র ১% এর কাছাকাছি। শুধু "স্টিভ" নামেরই ২০০ জনের উপর বিবর্তন সাপোর্ট করেন।
২৭। রক্তখেকো প্রানীগুলোর আকৃতি মানুষের তুলনায় ছোট ছোট ( মশা, জোক প্রভৃতি )। প্রকৃতিতে এগুলোর অস্তিত্ব সুদৃঢ় করতে এরা কেন ঈগলের মত বড় আকৃতিতে বিবর্তিত হলো না ?
বিবর্তন কোন উদ্দেশ্য সাধন করার জন্য হয়না। বরং সেই জেনেটিক ইনফোই টিকে থাকে যেটা পরিবেশে বেশি খাপ খেতে পারে। মশা না জোঁক বা অন্যপ্রাণী যেটা আমরা ভাবছি অন্যরকম হলে হয়তো তারা পরিবেশে আরও ভাল খাপ খেতো আসলে সেই মিউটেশন তারা পায়নি বা সেটা ন্যাচারাল সিলেকশনে টিকেনি। নিচের ভিডিওটি দেখলে আশা করি ভুল ধারনাটি চলে যাবে।
কোন প্রাণীর অস্তিত্ব সুদৃঢ় করার জন্য তার আকারই সহায় নয়। tardigrade এর কথা চিন্তা করি। এরা পানির ফোটা থেকেও ছোট অথচ অথচ পৃথিবীর মহাবিপর্যয়গুলোতে তাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়নি।
বায়োলজিস্টদেড় কাছে এই প্রাণী এতই বিখ্যাত যে কমিক্সেও এরা জায়গা করে নিয়েছে
২৮। বানর থেকে যদি মানুষের উৎপত্তি হয়ে থাকে , তাহলে আমরা গহীন অরন্যের আর কোন বানরকে বিবর্তিত হয়ে লেজ খসে মানুষে রূপান্তরিত হতে দেখিনা কেন ?
প্রথমত আমরা বানর থেকে আসিনি। বানর ও মানুষ উভয়ই কমন পূর্বপুরুষ থেকে ভিন্নভাবে বিবর্তিত হয়েছে। আর দ্বিতীয় হোমিনিডদের মধ্যে রাতারাতি লেজের বিলুপ্তি হয়নি। সেটা ঘটেছে প্রায় ৮-১০ মিলিয়ন বছরের ক্রমশ ধারায় যেখানে মানুষের প্রথম সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায় মাত্র কয়েক হাজার বছর আগে। উল্লেখ্য যে, আমাদের এনাটমিতে টেইলবোন প্রমান করে যে আমাদের পূর্বপুরুষের লেজ ছিল।
২৯। বিবর্তনের ফসিল প্রমানের মাঝে অনেক মিসিং লিঙ্ক আছে। এমন কি হতে পারে যা ফসিল পাওয়া গিয়েছে সব অন্য প্রজাতির বানরের। মানুষের না ?
মিসিং লিঙ্ক বলতে আসলে কি বুঝানো হচ্ছে সেটা আসলে আগে জানা দরকার। ফসিল প্রমান সেটারই পাওয়া যায় যেটা প্রকৃতিতে একেবারে মিশে যায়নি। ধরুন, আজ থেকে এক লক্ষ বছর পর মানুষ আপনার ফসিল প্রমান পেল, আর আপনার দাদার ফসিল প্রমান পেল। দুইজনের সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা গেল আপনি ও আপনার দাদা সম্পৃক্ত। এখন আপনার বাবার ফসিল হয়নি, তার সবকিছু মাটির সাথে মিশে গিয়েছে। অবশই এখানে মিসিং লিঙ্ক আছে। তার মানে নেই না যে সম্পৃক্ততা ভুল প্রমানিত হয়েছে।
একটা সময় ছিল আজ থেকে প্রায় দেড় শত বছর আগে যখন প্রাণীর আকার, খাদ্যঅভ্যাস, প্রজনন আর ফসিল প্রমান দেখে ধারনা করা হত কোন প্রাণীর সাথে কোনটি সম্পৃক্ত। ডিএনএ কম্পারিজন পরীক্ষা আসার পর এখন আমরা শক্তভাবে লক্ষ কোটি বছরে বিচ্ছিন্ন হওয়া প্রাণীর সাথেও আমাদের সম্পৃক্তটা জানতে পেরেছি।
৩০। মানুষের মধ্যে যে বুদ্ধিমত্তা আছে সেটা অন্যপ্রাণীদের মধ্যে নেই। এটা কি প্রমান করে না যে আমরা বিবর্তন থেকে আসিনি?
না। বরং বিবর্তনই আমাদের বুদ্ধিমত্তাকে বিকশিত করতে সাহায্য করেছে। হমিনিডদের মাথার খুলি তুলনামুলক বড় ছিল। লক্ষ লক্ষ বচহ্রের বিবর্তনের পর আমাদের মগজ আমাদের শরীরের অনুপাতে অনেক বড় আকার পায়। সেটা হমিনিডদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিকাশ লাভ করে। সেই হমিনিডই টিকে থাকতে পেরেছিল তার সুক্ষবুদ্ধিমত্তা ছিল। ফলে সেই জেনেটিক ইনফো চলেই এসেছে। আমাদের আগের প্রজাতির মধ্যেও আমরা বুদ্ধিমত্তার ছোঁয়া পাই। homo habilis কে আমরা হেন্ডিম্যান বলি। কারন সেই সময় তারা ধারালো হাতিয়ার ব্যবহার করা বুঝেছিল। ধীরে ধীরে আমরা আগুন আবিষ্কার করি।
একবদ্ধ থাকা ও কমপ্লেক্স আবেগ অন্যদের বুঝানোর জন্য আমাদের বিচিত্র শব্দ তৈরি করা দরকার ছিল। যে সঠিকভাবে কমিউনিকেট করতে পারতো সে একসাথে টিকতে পারতো, দলে শিকার করতে পারতো, বাচার সম্ভাবনা বেশি ছিল। এইভাবে উন্নত ভোকাল কর্ড ওয়ালারা জেনেটিক ইনফো পাস করার সুযোগ পায় ও আমরা ধীরে ধীরে উন্নত বাকক্ষমতা পাই।
ফসিলগুলোতে আমরা ভোকাল কর্ড ও অন্যান্য অঙ্গগুলোর অবস্থার প্রমান পাই। তাছাড়া homo habilis এর ব্যবহৃত হাতিয়ারও আমরা আফ্রিকার অনেক গোহার মধ্যে সন্ধান পেয়েছি। এই সবই বিবর্তনের মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তা প্রাপ্তিকেই প্রমান করে।
আর কোন প্রানির মধ্যে কি বুদ্ধিমত্তা আছে ? তাদের মধ্যে কি ভাষা আছে? কেননা আমরা তাদের বোবাজাত বলে থাকি।
মানুষ ছাড়া আরও বেশ কিছু প্রানির মধ্যে বুদ্ধিমত্তার প্রমান পাওয়া যায়। যেহেতু তারা মানুষের থেকে শারীরিকগুনে ভিন্ন তার মানে তাদেরকে মানুষের সাথে তুলনা করা (মানুষকে মানদণ্ড চিন্তা করে) সেটার ব্যাপারে দিমত আছে। ডলফিন, শিম্পাঞ্জি, কাক, শিয়াল, পিপড়া এরা সবাই নিজেদের গুনে বুদ্ধিমান।
ভাষা স্বজাতিদের সাথে মনের ভাব প্রকাশের একটা মাধ্যম আর এই গুনও প্রাণীদের মধ্যে আছে। তাদেরকে বোবাজাত বলা ভুল হবে।
বিঃদ্রঃ ভিডিও গুলো এখানে দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র আমার ব্লগকে সাজানোর জন্য না। বরং সঠিকভাবে উপস্থাপিত ও রেফারেন্স অনুসৃত তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরার জন্য। আপনারা চাইলে ভিডিওগুলোর ইউটিউব লিঙ্ক এ গিয়ে সেগুলোর description অংশ থেকে সম্পৃক্ত রেফারেন্সগুলো পেয়ে যাবেন। আর অবশই বিবর্তন নিয়ে আপনার প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে করবেন। সবার সহযোগিতায় আমরা সঠিক জ্ঞানকে আলিঙ্গন করব সেই আশাই রইল। ধন্যবাদ সবাইকে।
২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৩
জিএমফাহিম বলেছেন: প্রথমত লাইক আর প্রিয়তে। কারন বিবর্তনের ব্যাপারে আপনার সাথে একমত হই বা না হই এমন তথ্যবহুল ব্লগ সিকুয়াল খুব একটা দেখা যায় না আজকাল।
দ্বিতীয়ত আমার কিছু প্রশ্ন আছে।
১। প্রানির লিঙ্গ কিভাবে আসলো? বিবর্তনের এখানে ভুমিকা কি ?
২। কিভাবে প্রাণীদের মধ্যে পুরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত প্রায় ১ঃ১? রিপ্রডাকশন তো র্যান্ডম। তাহলে কিভাবে অনুপাতের মাঝে এত মিল ? ( শুধু মানুষের কথাই জানি প্রায় ১০৫ঃ১০০ , অন্যপ্রানির ক্ষেত্রে অনুপাত কেমন জানা নেই)
৩। সমকামিতা, ট্রান্সসেক্স এগুলোকে বিবর্তন কিভাবে ব্যাখা করে ?
৪। মিউটেশন যদি র্যান্ডমই হয় তাহলে কিভাবে প্রাণীদের শরীরে অর্গানগুলো সঠিক জায়গায় আছে ? র্যান্ডম হলে তো মাথা এক দিকে কান একদিকে হত।
আমার কাছে Spontaneous Generation থেকে Darwinian Evolution বেশি যুক্তিযুক্ত মনে হয়। কিন্তু উপরের প্রশ্নের উত্তরগুলো জানলে কিছুটা কনভিন্স বল। আর ধর্মীয় ব্যাপারটা নিয়ে আমার যে দ্বিধা ছিল সেটা আপনি আগের পর্বের ১৮ নাম্বার পউত্তরে সেটা পরিস্কার করে দিয়েছেন। সেটার জন্য আবারও ধন্যবাদ।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০
বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: ১। প্রানির লিঙ্গ কিভাবে আসলো? বিবর্তনের এখানে ভুমিকা কি ?
প্রথমে জীবের লিঙ্গ বলতে কিছু ছিল না। তখন দুটি একই প্রজাতির haploid cell একত্রিত হয়ে তাদের আরও ২টি কপি তৈরি করত। এরপর ধিরে ধিরে মিউটেশনের মাদ্ধমে একাধিক ভিন্ন সেলুলার স্ট্রাকচার রেপ্লিকেট করার জন্য একক্রিত হত। সেটাকেও প্রথম সঙ্গম স্তর বলা যায়। সেখান থেকে পুরুষ, স্ত্রি; ধিরে ধিরে প্রানে সেক্স এর জটিলতা বিলিয়ন বছর ধরে এসেছে। যদিও এটা এখনো হাইপথেসিস। কারন সেটা আজ থেকে প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে খুবই ভিন্ন একটা পরিবেশে মিলিয়ন মিলিয়ন বছরের ক্রমশ বিবর্তিত হয়েছে। তবে বিজ্ঞানিরা পরিক্ষনের মাদ্ধমে haploid cell এর ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়েছে। চাইলে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন https://www.youtube.com/watch?v=1w0FiwfyUMM
২। কিভাবে প্রাণীদের মধ্যে পুরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত প্রায় ১ঃ১? রিপ্রডাকশন তো র্যান্ডম। তাহলে কিভাবে অনুপাতের মাঝে এত মিল ? ( শুধু মানুষের কথাই জানি প্রায় ১০৫ঃ১০০ , অন্যপ্রানির ক্ষেত্রে অনুপাত কেমন জানা নেই)
যদি ম্যাক্রো লেভেলে চিন্তা করি তাহলে পুরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত শুধুমাত্র বিবর্তনের উপর নির্ভর করে না। কারন কোন লিঙ্গের life expentency এক জায়গায় হয়তো খুব বেশি অন্য জায়গায় খুব কম। মানুষের ১০৬ জন ছেলের সময় ১০০ জন মেয়ে হয় সেটার পৃথিবীতে প্রায় ১০ মিলিয়নের মত ছেলে বেশি আছে। কিন্তু এমন অনেক দেশ আছে যেখানে ছেলেদের থেকে মেয়ে বেশি। দৈবভাবে ছেলে মেয়ের অনুপাত সব জায়গায় সমান হয় না। হিউম্যান কন্সেপ্সন রেজাল্ট অনুযায়ী এই অনুপাত ১৫০ঃ১০০ হওয়া উচিত। কিন্তু ছেলেদের মৃত্যুহার বেশি। মিসকেরেজ, ভাইটাল রোগ, দুর্ঘটনা এগুলোর সম্ভাবনা মেয়েদের থেকে ছেলেদের বেশি। তাই ছেলে মেয়েদের প্রজননক্ষমতা আসার বয়সে এই সব কারনে ছেলে ও মেয়ের অনুপাত প্রায় সমান হয়ে যায়। এই ভিডিওটি আপনাকে সাহায্য করতে পারে। https://www.youtube.com/watch?v=3IaYhG11ckA
৩। সমকামিতা, ট্রান্সসেক্স এগুলোকে বিবর্তন কিভাবে ব্যাখা করে ?
এটা বিবর্তনের সেমিনারগুলোতে করা খুব কমন প্রশ্ন। তবে এর উত্তর একটু জটিল। প্রাণীদের মধ্যে জমজ হওয়ার একটা দৈব সম্ভাবনা থাকে। আর জমজদের মধ্যে mono-zygotic genes থাকে। তাদের একেঅপরকে পছন্দ করার প্রবনতা অনেক বেশি থাকে (হোক সেই জমজ সমলিঙ্গএর অথবা বিপরিত লিঙ্গের)। আর সেই বৈশিষ্ট্য উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্তিসাদ্ধ বা heritable. মানে তাদের জেনেটিক কম্পোনেন্টএ সেই বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে যায়। (এই ভিডিওটি সাহায্য করতে পারে https://www.youtube.com/watch?v=IDmQns78FR8 ) এর যখন পরবর্তী প্রজন্মে সেই জিন জীবের মধ্যে বেশি প্রভাব বিস্তার করে তার মধ্যে সমকামিতা জৈবিকভাবে তৈরি হয়। আর এটার যথাযথ প্রমান পাওয়া গিয়েছে যে প্রাণীদের মধ্যে শুধু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণই একমাত্র আকর্ষণ নয়। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বেশি, মাঝারি, কম ও প্রায় শূন্য আকর্ষণ কাজ করে। এটা পরিবেশের অন্য প্রাণীদের মধ্যেও দেখা যায়। আর ট্রান্সসেক্স এর ব্যাপারটা পুরো মিউটেশনই বলা যায়। যখন ক্রোমোজোম পুরুষ বা স্ত্রীর কম্বিনেশন না পায় তখন অযুগ্মভাবে xxy xyy ইত্যাদি ক্রোমোজোম থেকে ট্রান্সসেক্স হয়।
৪। মিউটেশন যদি র্যান্ডমই হয় তাহলে কিভাবে প্রাণীদের শরীরে অর্গানগুলো সঠিক জায়গায় আছে ? র্যান্ডম হলে তো মাথা এক দিকে কান একদিকে হত।
এটা জেনেটিক ইনফো আর নেচারাল সিলেক্সন এর কারনে বেশি প্রভাবিত হয়েছে। আমাদের শরীরে সেই জেনেটিক ইনফো আছে আমাদের অর্গানগুলো কি অবস্থায় থাকবে। সেটা প্রজননের সময় আমাদের উত্তরাধিকাররা পাবে। আমরাও পেয়েছি আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে। তাই আমাদের মাথা একদিকে কান একদিকে থাকার কথা না (যদি না মিউটেশন হইয়) কারন জেনেটিক ইনফোই সেই আকারের সঠিক অবস্থার নির্দেশ দেয়। ঠিক যেমন ন্যাচারাল সিলেকশনে শক্ত জিনগুলো টিকে থাকে ঠিক তেমননি শারীরিক সঠিক আকারও আমরা জিন থেকে পেয়েছি। এ জন্য তৃণভুজি প্রাণীদের চোখ দুইপাশে থাকে যাকে একটা বড় দিগন্ত পর্যন্ত তারা শিকারি বুঝতে পারে। অন্যদিকে মাংসাশী প্রাণীদের মধ্যে ধারালো দাতের জিন টিকে আছে কারন এটা মাংস কাটতে সাহায্য করে। সবই ন্যাচারাল সিলেকসনের জন্য হয়েছে।
ধন্যবাদ আপনার প্রস্নের জন্য। তৃতীয়/শেষ পর্বে আপনার প্রশ্নগুলো যোগ করা হবে। আপনার মধ্যে প্রজ্ঞা আছে। চালিয়ে যান।
৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:২০
নতুন বলেছেন: ভাল হয়েছে। সহজ ভাবে লেখা অনেকের বুঝতে সুবিধা হবে।
৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩৫
কিরমানী লিটন বলেছেন: নতুন বলেছেন: ভাল হয়েছে। সহজ ভাবে লেখা অনেকের বুঝতে সুবিধা হবে।
শুভকামনা অশেষ ...
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:০৭
এহসান সাবির বলেছেন: ভালো শেয়ার। ধন্যবাদ।
৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩১
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: দারুন গোছানো আর বিস্তারিত পোস্ট। অনেক ভালোলাগা রইলো।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩২
বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, কষ্ট করে পড়ার জন্য
৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৫
গরল বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট, খুব ভাল হয়েছে। আসলে আমাদের স্কুলের বিজ্ঞান বইতে ভুলভাবে বিবর্তনকে উপস্থাপন করা হয়েছে তাই মানুষের মধ্যে এত কনফিউশন। যেমন বইতে বলা হয়েছিল উচু গাছ থেকে পাতা খাওয়ার জন্য জিরাফের গলা লম্বা হয়ে গিয়েছে। আসলে যেটা হয়েছে যে লম্বা গলার জিরাফেরাই টিকে আছে। মানে হচ্ছে সার্ভাইবাল অব দি ফিটেস্ট। অতএব আমাদের গোড়াতেই গলদ, শিক্ষা ব্যাবস্থা এবং শিক্ষক। এই দুটর প্রতি যত্নবান না হলে ভবিষ্যত অন্ধকার। কারণ ভুল শিক্ষা অশিক্ষার চেয়েও ভয়ংকর।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩১
বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: ঠিক বলেছেন। আগে থেকে আমাদের অরিজিন সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা দিয়ে থাকলে আজকে ব্লগটা লিখা প্রয়োজন পড়তো না।
৮| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬
বিষাদ সময় বলেছেন: প্রথমে চমৎকার একটি পোেস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এ বিষয়ে আমি একেবারে অজ্ঞ তারপরও আপনার পোস্ট পড়ে যতটুকু এ সম্পর্কে বুঝতে পেরেছি তা থেকে মাথায় কিছু প্রশ্নের উদয় হয়েছে আশা করি এর উত্তর পাব।
প্রশ্ন করার আগে আপনার পোস্ট পড়ে এবং ভিডিও গুলো দেখে বিবর্তন সম্পর্কে যা বুঝেছি সেটুকু বলা প্রয়োজন।প্রাণীর মিউেটশন এবং কমম্বিনেশন এর মাধ্যমে জিন এর ইনফরেমশন যখন কপি হয় তখন কিছু এরর থাকে এই এররই আসলে বিবর্তন এর মূল কারণ, পরে এ প্রক্রিয়াটি নেচারাল সিলেকশনের মাধ্যমে ফিল্টার হয়ে নতুন নতুন প্রজাতির উদ্ভব ঘটায় আর এর ধারা বাহিকতায় এক কোষী প্রাণী থেকে কোটি কোটি বছরে মানুষের উৎপত্তি।
বিবর্তন সম্পর্কে আমার ও বোধ যদি সঠিক হয় তবে কতগুলো প্রশ্ন থেকে যায়।
আমার জানা মতে এক কোষী প্রাণীর জিনে যে তথ্য থাকে মানুষের জিনের তথ্য বা ম্যাপ বা ইনফেরমেশন অনেক বেশি এবং অনেক জটিল।
এখন আমার প্রশ্নঃ
১) এক কোষী প্রাণীর জিন কপি এর এরর থেকে কি জিনে এ ধরণের নতুন এবং জটিল তথ্য ঢুকতে পারে?
২) এরর তো একটি রেন্ডম প্রক্রিয়া কোথায় কি ভাবে এরর হবে তার কোন ঠিক ঠিকানা থাকার কথা না, কিন্ত কোটি বছর আগের প্রাণী থেকে এখনকার মানুষ পর্যন্ত কতগুলো বিষয় নিখুত ভাবে ঘটছে বাকি অনেক বিষয় এতটা পরিবর্তিত হয়েছে যে বিশেষজ্ঞ ছাড়া কারও বোঝা সম্ভব না যে এখনকার মানুষের সাথে পূর্ববর্তী সে সব প্রাণীর কোন যোগ সুত্র ছিল।
ঊদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে, যেমন আদি প্রাণী বিবর্তিত হয়ে তার ফুসফুস হয়েছে, লেজ খসে গেছে , উন্নত মস্তিস্ক হয়েছে, কিন্ত দ্বি-পার্শ প্রতিসমতার কোন পরিবর্তন হয়নি, দুটো হৃৎপিণ্ড বা দুটো মস্তিস্ক হয়নি, কিডনি একটি হয়নি বা নির্দিষ্ট আকারের প্রাণী মানুষ ব্যাতিত আর কোন আকারের প্রাণীতে মস্তিষ্কের উন্নয়ন ঘটেনি। মানুষ সহ বিভিন্ন প্রাণীর যদি একটি কান বা একটি চোখ অন্যটির চেয়ে অনেক বড় হত তাহলে প্রকৃতির মধ্য তাদের খুব প্রতকুল অবস্হায় পড়তে হত বলে মনে হয় না যার ফলে ন্যাচারাল সিলেকশন প্রক্রিয়ায় তারা খুব দ্রুত হারিয়ে যেত তাও বোধ হয় না। কিন্ত এ ধরণের কোন প্রাণীর অস্তিত্ত পাওয়া যায়নি।
৩) শেষ কথা হল জিন কপিং এর এরর থেকেই যদি বিবর্তন হয় তাহলে এটি তো একমুখি প্রক্রিয়া হবার কথা না। অর্থাৎ এক কোষী প্রাণীর জিন কপিং এরর এর ফলে যদি উন্নত মানুষ হয় তবে মানুষ বা তার পূর্ব পুরুষ এর জিন কপিং এরর থেকে কিছু প্রাণির তো আবার এক কোষী প্রাণীতে বা কমপক্ষে তার কয়েক ধাপ পূর্ববর্তা প্রাণিতে বা তার কাছাকাছি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। বিবর্তনবাদে দেখানো হচ্ছে কি করে প্রাণী উন্নত থেকে উন্নত হচ্ছে কিন্তু কোন উন্নত প্রাণী অনুন্নত প্রাণিতে পরিণত হচ্ছে এর কোন উদাহরণ বিবর্তনবাদে নেই। এ ক্ষেত্রে ন্যাচারাল সিলেকশনের দোহাই দেওয়া হতে পারে। কিন্ত একই সময়ে এই পৃথিবীতে এককোষী প্রাণী থেকে মানুষ পর্যন্ত সবাই তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সেক্ষেত্রে কোন কোন প্রাণির আবার কিছুটা অতীতে দিকে যাওয়াটা স্বাভাবিক ছিলনা কি?
আসলে জিন কপিং এরর জনিত কারণে নয় আমার মনে হয় কোন অজ্ঞাত বা অলেৌকিক কারণে জিন ক্রমাগত এরর সংশোধন করে উন্নত হচ্ছে সে কারণেই বিবর্তন এর ধারা একটি একমুখী ক্রমউন্নয়নমূলক প্রক্রিয়া। ধন্যবাদ।
০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৮
বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: এক কোষী প্রাণীর জিন কপি এর এরর থেকে কি জিনে এ ধরণের নতুন এবং জটিল তথ্য ঢুকতে পারে?
একটা জিনিস বললে মনে হয় বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। লাইফ আসলে কমপ্লেক্স কেমেস্টি বা রসায়নের অত্যন্ত জটিল একটানা প্রক্রিয়া। একটা সাধারন সালফারের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে। যখন সেটা হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সাথে মিলিত হয় তখন সেটা সালফিউরিক এসিড তৈরি করে আর সালফিউরিক এসিড যৌগ হিসেবে ভিন্নভাবে কাজ করে। আমাদের জিনোমও কেমিক্যাল যৌগ। যখন তার মধ্যে কোন পরিবর্তন আসে হোক সেটা খুবই ছোট মাত্রায় আমাদের বৈশিষ্ট্যকে পরিবর্তন করে। পরিবর্তন শুধুকে ইতিমধ্যে গঠিত জিনোমে থাকা মৌলগুলো একস্থান থেকে অন্য স্থানে অবস্থার পরিবর্তন হতে হবে এমন না। সেটা নতুন যৌগ যুক্ত হওয়াও হতে পারে, মুছে যাওয়াও হতে পারে, স্থানান্তরও হতে পারে।
একটা উদাহরন দেই। ধরুন আপনি পরিক্ষার হলে খুব দ্রুত রচনা লিখছেন। আর আপনি নির্ভুলতার দাবীদার নন। রচনায় আপনি বিভিন্ন রকম ভুল করতে পারেন। হতে পারে কোন শব্দ বাদ দিয়েছেন , হতে পারে নতুন কিছু কথা যোগ করা , বানান ভুল করা। প্রজননের সময় জিনোম কপি করাও অনেকটা এমনই । আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
এরর তো একটি রেন্ডম প্রক্রিয়া কোথায় কি ভাবে এরর হবে তার কোন ঠিক ঠিকানা থাকার কথা না, কিন্ত কোটি বছর আগের প্রাণী থেকে এখনকার মানুষ পর্যন্ত কতগুলো বিষয় নিখুত ভাবে ঘটছে বাকি অনেক বিষয় এতটা পরিবর্তিত হয়েছে যে বিশেষজ্ঞ ছাড়া কারও বোঝা সম্ভব না যে এখনকার মানুষের সাথে পূর্ববর্তী সে সব প্রাণীর কোন যোগ সুত্র ছিল।
ঊদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে, যেমন আদি প্রাণী বিবর্তিত হয়ে তার ফুসফুস হয়েছে, লেজ খসে গেছে , উন্নত মস্তিস্ক হয়েছে, কিন্ত দ্বি-পার্শ প্রতিসমতার কোন পরিবর্তন হয়নি, দুটো হৃৎপিণ্ড বা দুটো মস্তিস্ক হয়নি, কিডনি একটি হয়নি বা নির্দিষ্ট আকারের প্রাণী মানুষ ব্যাতিত আর কোন আকারের প্রাণীতে মস্তিষ্কের উন্নয়ন ঘটেনি। মানুষ সহ বিভিন্ন প্রাণীর যদি একটি কান বা একটি চোখ অন্যটির চেয়ে অনেক বড় হত তাহলে প্রকৃতির মধ্য তাদের খুব প্রতকুল অবস্হায় পড়তে হত বলে মনে হয় না যার ফলে ন্যাচারাল সিলেকশন প্রক্রিয়ায় তারা খুব দ্রুত হারিয়ে যেত তাও বোধ হয় না। কিন্ত এ ধরণের কোন প্রাণীর অস্তিত্ত পাওয়া যায়নি।
আমি আসলে প্রশ্নটা ধরতে পারিনি। তবে এটার ব্যাপারে বিজ্ঞানিরা একমত যে অনেক দুর্বল বৈশিষ্ট্যের জিনোম আমাদের মধ্যে রয়ে গিয়েছে, যেই মিউটেশনের ফলে প্রানঘাতি কিছু হয়নি , কিন্তু উপকারি কোন জিন হয় সেটা। তবে উদাহরনে যেটা বললেন/। আসলে জটিল যত অরগানিজম আছে মাছ থেকে শুরু করে মানুষ এরা bilateral symmetry জিনোমে প্রজনন হয়। এমনকি যে অর্গানগুলো আমাদের শরীরে একটি তাও ভিতরে দুটি মৌলিক অংশ আছে আর সেভাবেই বিবর্তিত হয়েছে। মিউটেশনে একটা চোখ বড় হলে জেনেটিক ইনফো অন্য চোখের উপরও প্রভাব পড়বে। ফলে একটা চোখ বড় আরেকটা চোখ ছোট হয়ে বিবর্তিত হওয়ার চান্সখুব কম। নাক বা একটি কান থাকার কথা যেটা বললেন । এটা হলে আমাদের বিরাট রকমের সমস্যা হত। কারন আমাদের দৃষ্টি ও স্রবণের দিগন্ত নির্ভর করে দুইপাশের কানের উপর। কোন জিনিস না দেখেও তার স্থান আপনার অনুমান করতে পারি দুটি কান থাকার কারনে।
৩) শেষ কথা হল জিন কপিং এর এরর থেকেই যদি বিবর্তন হয় তাহলে এটি তো একমুখি প্রক্রিয়া হবার কথা না। অর্থাৎ এক কোষী প্রাণীর জিন কপিং এরর এর ফলে যদি উন্নত মানুষ হয় তবে মানুষ বা তার পূর্ব পুরুষ এর জিন কপিং এরর থেকে কিছু প্রাণির তো আবার এক কোষী প্রাণীতে বা কমপক্ষে তার কয়েক ধাপ পূর্ববর্তা প্রাণিতে বা তার কাছাকাছি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। বিবর্তনবাদে দেখানো হচ্ছে কি করে প্রাণী উন্নত থেকে উন্নত হচ্ছে কিন্তু কোন উন্নত প্রাণী অনুন্নত প্রাণিতে পরিণত হচ্ছে এর কোন উদাহরণ বিবর্তনবাদে নেই। এ ক্ষেত্রে ন্যাচারাল সিলেকশনের দোহাই দেওয়া হতে পারে। কিন্ত একই সময়ে এই পৃথিবীতে এককোষী প্রাণী থেকে মানুষ পর্যন্ত সবাই তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সেক্ষেত্রে কোন কোন প্রাণির আবার কিছুটা অতীতে দিকে যাওয়াটা স্বাভাবিক ছিলনা কি?
যেমনটা প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বলছিলাম। জিনোমে নতুন যৌগ আসতেও পারে আবার পুরানো যৌগ যেতেও পারে। জিনোম প্রতিনিয়ত লোপ পাচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছে (দুর্বল ইনফো গুলো, যেটাকে আপনি backward oriented বলতে পারেন) সাথে সাথে কিছু ইনফো যা আমাদের উন্নত করে যা ন্যাচারাল সিলেকশনে টিকে থাকে প্রসার পায়। । এ জন্যই আমরা এখন এপদের মত গাছে চড়ার ক্ষমতা রাখি না, মাছের মত পানিকে বাস করার ক্ষমতা রাখি না। কারন সেই জেনেটিক ইনফো যেগুলো এক সময় মৌলিক জিনোম ছিল এখন আমাদের মাঝে প্রায় নেই বললেই চলে।
ধন্যবাদ। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্যাখ্যা ভালো হয়েছে