নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুনিয়াদী জ্ঞানের অনুসারিনী। মনের ভ্রমের হত্যাকারিণী।

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা

ছোটবেলা থেকে ভ্রমের মধ্যে বড় হওয়া, প্রশ্ন করায় শাস্তি পাওয়া। মেয়ে হয়ে তো ষোলকলাই পূর্ণ করলাম। জ্ঞান আমাকে মুক্তি দিয়েছে। এখন নিজের আর অন্যের ভ্রম হত্যার সংগ্রাম করি যাব।

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের ক্যানিন দাত আছে, এর মানে কি এই নয় যে প্রকৃতি আমাদের মাংস খাওয়ার পক্ষে ?

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২২



প্রাণীভোজীরা তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সাধারনত যেসব কথা বলে তার মধ্যে এটা একটা। প্রশ্নটা আরও বিস্তারিতভাবে যদি বলিঃ

" মাংসাশী প্রাণীর দাত ধারালো থাকে, যাতে তারা কাচা মাংস কেটে খেতে পারে। অন্যদিকে তৃণভোজী প্রাণীদের দাত থাকে প্রায় সমান ও ভোতা, যা তাদের সাহায্য করে গাছের শক্ত উপাদানগুলো চিবিয়ে সহজে ভেঙ্গে খেতে। মানুষ উদ্ভিজ ও প্রাণীজ উভয় খাবার খাওয়ার ক্ষমতা প্রকৃতি থেকে পেয়েছে তাই তাদের সমতল দাত ও আছে আবার Carnivores বা মাংসাশী দাতও আছে। যখন প্রকৃতি
আমাদের মাংস খাওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে তাহলে কেন আমরা প্রকৃতির নিয়মকে উপেক্ষা করবো? "


প্রশ্নের সাথে ভিগানিজম বা প্রাণীবাদ সম্পর্কে ভুল ধারনা সরাসরি জড়িত। প্রাণীবাদি ও প্রাণীভোজীরা কোন জিনিসে একমত আর কোন জিনিসে একমত না সেটা নিচের চিত্রে দেয়া হল। আর যে জিনিসে একমত না সেটা বিশ্লেষণ করা হবে।



উপরের ছবি থেকে আমরা বুঝলাম ভিগানরাও মনে করে মানুষের শারীরিক ক্ষমতা আছে প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহন করলে সেটা হজম করার। কিন্তু আমাদের বুদ্ধিমত্তা ও আমাদের সকল পুষ্টি নিষ্ঠুরতা না দিয়েই গ্রহণ করার যোগ্যতা আমাদের সেই সুযোগ ও ক্ষমতা দিয়েছে প্রাণীজ খাবার পরিহার করে নিজের স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা কমানোর। অন্যদিকে আমাদের দাত এটা প্রমান করে না যে আমাদের মাংস খেতেও হবে, বা Canine দাত মানেই সে মাংস খাওয়ার জন্য তৈরি।

এখানে বিষয়গুলো বর্ণনা করা হল

১। অনেক তৃণভোজী প্রাণী আছে যাদের Canine Teeth আছে (১) কিন্তু তারা মাংস হজম করতে পারে না। মাংস গ্রহনের চেষ্টা করলে তাদের শরীরকে নানা সমস্যা দেখা দিবে। মানুষেরও Canine Teeth আছে আর মানুষেরও প্রাণীজ খাবার হজম করতে গেলে পরিপাকতন্ত্রের নানা সমস্যা দেখা দেয়।


ক্যানিন দাত মানেই মাংসভোজী নয়

২। আমাদের Canine Teeth থাকলেও শরীরের আমাদের শরীর মাংসাশী প্রাণী বা এমনকি সর্বভুক প্রাণীদের সাথে মিলে না। আমাদের শরীরের সাথে প্রায় ৯৯ শতাংশ সাদৃশ্যপূর্ণ হচ্ছে তৃণভুজি প্রাণীদের দেহব্যবচ্ছেদ। (২)



তথ্যসুত্রঃ আমেরিকান হাইজিন সোসাইটি, শিকাগো

৩। আমাদের আদি পূর্বপুরুষরা সবাই তৃণভোজী ছিল (৩) কিন্তু পরবর্তীতে খাদ্যের অভাবে প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা অনিবার্য হয়ে উঠে (৪)। আর সেসব মানুষই পরিবেশে টিকে থাকতে পেরেছিল যারা প্রাণীদের হজম করার ক্ষমতা রেখেছে। কিন্তু এই ক্ষমতা আমাদের জন্য সার্বজনীনও ছিল না, না ছিল আমাদের দেহব্যবচ্ছেদের সাথে মানানসই। তাই সেই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার হাজার হাজার বছর পরও আমরা প্রাণীজ খাবার সঠিকভাবে হজম করতে অক্ষম।(৫) (৬)

৪ । আমাদের প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হয়েছিল যখন আমাদের কাছে আর কোন উত্তম কোন উপায় ছিল না টিকে থাকার জন্য (৭)। এখন মানুষের কাছে প্রতিটি পুষ্টি উদ্ভিজ খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে, আমাদের কাছে আছে সিদ্ধান্ত নেয়ার হাজারটা বিকল্প। তাই আমাদের এখন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত সেভাবেই যেভাবে প্রকৃতির উপকার, স্বাস্থ্যের উপর, আর প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা কম হবে।




রেফারেন্সঃ

১। Darwin, Charles, 1871. The Descent of Man, and Selection in Relation to Sex.. UK: Princeton University Press.

২। Milton R. Mills, M.D, 2011. The Comparative Anatomy Of Eating. Adaptt, . 1, 1. Available here [Accessed 30 September 2016].

৩। Scientific America. 2012. Human Ancestors Were Nearly All Vegetarians. Available at: Click This Link. [Accessed 30 September 2016].

৪। Luca, F., Perry, G. H. & Di Rienzo, A. Evolutionary adaptations to dietary
changes. Annual Review of Nutrition.30, 291-314 (2010)

৫। Vaclav Smil, 2013. Should We Eat Meat? Evolution and Consequences of Modern Carnivory. 1 Edition. Wiley-Blackwell.

৬ Fabrizis L. Suarez, Dennis A. Savaiano, and Michael D. Levitt, Suarez, Denni, Levitt, 1995. A Comparison of Symptoms after the Consumption of Milk or Lactose-Hydrolyzed Milk by People with Self-Reported Severe Lactose Intolerance. New York Medical College, [Online]. 1, 1. Available at: Click This Link [Accessed 30 September 2016].

৭। Hillary Mayell. 2005. "Evolving to Eat Mush": How Meat Changed Our Bodies. [ONLINE] Available at: Click This Link. [Accessed 30 September 2016].

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪২

একটি পেন্সিল বলেছেন: সুন্দর মতবাদ। আমি ভিগানদের সম্পর্কে জানার পর খুব ভালই লাগছে আর মনে হচ্ছে মানবিকতার দিক দিয়ে পৃথিবীর সবার চেয়ে তারা একটু হলেও এগিয়ে। আর আমার মনে হচ্ছে, মানুষ যেহেতু ক্রমে ক্রমে বর্বরতা ছেড়ে মানবিক ও সামাজিক হচ্ছে, সেহেতু ভিগানদের হারও একটি ধারায় বাড়তে থাকবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, আমরা যদি হঠাৎ করেই ভিগানিজম শুরু করি, তাহলে আমাদের শরীর কি সেটা হঠাৎ করেই মানিয়ে নিতে পারবে ,, কোন প্রভাব কি পরবে না? আমরাতো ছোট বেলা থেকেই এক খাদ্যাভ্যাসে বেড়ে উঠেছি, এখন হঠাৎ????

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: ব্যাক্তিগতভাবে আমার কোন সমস্যা হয়নি। তবে অনেক ভিগানরা প্রথম প্রথম কিছু সমস্যায় ভুগে। সেটা স্বাস্থ্যগত নেতিবাচক কোন প্রভাব না। বরং কিছুক্ষেত্রে মানসিক আর কিছুক্ষেত্রে শরীরের নতুন খাদ্যাভ্যাসকে আপন করে নেয়ার প্রক্রিয়া। যারা ভিগান হওয়ার আগে প্রচুর মাংস খেত তারা প্রথম প্রথম ভিগান খাবার অরুচিতে ভুগে, যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। এমন রিভিউও শুনেছি, যারা এক সময় নির্দিষ্ট কিছু উদ্ভিজ খাবারকে দেখলেই ক্ষুধা চলে যেত পরে একই খাবার তারা খুব মজা করে খায়। আরেকটা দিক হচ্ছে উদ্ভিজ খাবারে প্রচুর পানি থাকে, ফলে ভিগানরা নন-ভিগানদের থেকে বেশি প্রস্রাব আসে। এটা অবশ্য ভাল, এটার হলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে। স্ট্রোক এর ঝুকি কমে যায় ।

আপনি যদি ভিগানিজমে আগ্রহী হন তাহলে "Forks over Knives" নামে একটা ডকুমেন্টারি আছে সেটা দেখতে পারেন। মাংস ছেড়ে ভিগান বিকল্প গ্রহণ করার প্রভাবগুলো খুবই সহজ ও গুছালোভাবে এনিমেশনসহ এখানে বুঝানো হয়েছে। ধন্যবাদ। :)

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০৮

আশাবাদী অধম বলেছেন: এই পাগলগুলো ব্লগে আসে কোত্থেকে? সমকামীদের মত এগুলাও মানসিক রোগী। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে ব্লগে আইসা ফাল পাড়ে। স্টুপিড মার্কা কিছু যুক্তি দিয়ে আসছে মানুষরে ভিগান বানাতে। ননসেন্স বৈরাগী!

কার থেকে কার বেশি প্রস্রাব আসে- এইসব ফালতু লেকচার যাইয়া ছাগলদের সামনে মার।

স্রষ্টা যা বৈধ করেছেন তুমি তা অবৈধ করার কে?

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৫

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: প্রাণীদের সারাজীবন খাচার ভিতর কাটকে রেখে, গলার পীড়াদায়ক দড়ি জীবনভর লাগিয়ে রেখে, প্রাণীদের তাদের সন্তানদের থেকে পৃথক করতে, তাদের প্রাকৃতিক স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করার কথা কি আল্লাহ বৈধ বলেছেন ? আপনি কি জানেন ইসলামের অনেক বিজ্ঞ উলিকে উদ্ভিদভোজী ছিলেন? এখনো অনেক ইসলামিক স্কলার আছেন যারা উদ্ভিজভোজী।

আপনি কি বিশ্বাস করেন প্রাণীরাও যে আল্লাহর সৃষ্টি ? আপনিও তো প্রাণীজ খাবার খেয়ে এই পৈশাচিক শিল্পের অমানবিকতার অংশীদার হচ্ছেন। আল্লাহর সৃষ্টিকে এভাবে কষ্ট দিলে আপনার কি মনে হয় আপনার কোন পাপ হবে না?

১৪০০ বছর আগে আরবের অবস্থার সাথে বর্তমান অবস্থার তুলনা দিলে হবে না। তখন আববে কারো হাজারটা উদ্ভিজ বিকল্প খাদ্য ছিল না তাদের পুষ্টি চাহিদা পুরুন করার। তারা তো জানতোও না কোনটায় কি পরিমান পুষ্টি আছে। তখন বৈশ্বিক উস্নায়ন ছিল না, ছিল না জনসংখ্যা সমস্যা, ছিল না পরিবেশ দূষণের সমস্যা। এখন আছে, আর পৃথিবীকে সুন্দর ও বসবাসযোগ্য হিসেবে আমাদের গড়ে তুলতে হলে সেভাবে নতুনভাবেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ইসলামে ইজমা-কিয়াসের ব্যবস্থা আছে ইসলামিক নিয়মকে যুগের উপযোগী করে তৈরি করার, এখন ইসলামিক স্কলাররা যেন বর্তমান পরিস্থিতি ও ভিগানিজমকে পর্যালোচনা করে নতুন নিয়ম নিয়ে আসে এই আশা রাখি।

৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৮

জিএমফাহিম বলেছেন: একটি পেন্সিল বলেছেন: সুন্দর মতবাদ। আমি ভিগানদের সম্পর্কে জানার পর খুব ভালই লাগছে আর মনে হচ্ছে মানবিকতার দিক দিয়ে পৃথিবীর সবার চেয়ে তারা একটু হলেও এগিয়ে। আর আমার মনে হচ্ছে, মানুষ যেহেতু ক্রমে ক্রমে বর্বরতা ছেড়ে মানবিক ও সামাজিক হচ্ছে, সেহেতু ভিগানদের হারও একটি ধারায় বাড়তে থাকবে।

৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৮

নেবুলাস বলেছেন: প্রানিদের প্রতি নিষ্ঠুরতা কম হবে। এইটা একটা ভিত্তিহীন কথা। ভাই উদ্ভিদেরও প্র্রাণ আছে। এটা কি ভুলে গেলেন? নাকি উদ্ভিদ মারলে সমস্যা নাই?

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৫

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: এ ধরনের কমন প্রশ্নগুলোর উত্তর ইতমধ্যে এই ব্লগে দেয়া আছে। কষ্ট করে পড়ে নিবেন। ভিগানদের সম্পর্কে ভুল ধারনা (পর্ব- ১)

৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩২

নেবুলাস বলেছেন: ভাই আমাদের দেশের কেউই প্রত্যেক দিন গোস্ত খায় না। আর যার বেগুনে এলার্জি রোগ আছে তার তো বেগুন খাওয়াও ঠিক না। তাই বলে এখন সবাই কি এই অজুহাতে বেগুন খাওয়া বন্ধ করব? আপনার সুচিন্তিত মতামত আশা করছি।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৯

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: মাংস সবার জন্য খারাপ। আপনার জন্য, পরিবেশের জন্য, সেসব প্রাণীদের জন্য তো বটেই। বেগুনের অ্যালার্জি সার্বজনীন নয়, ব্যাক্তিগত শারীরিক সমস্যা। বেগুন যদি সার্বজনীনভাবে স্বাস্থ্যক্ষতি, পরিবেশ নষ্ট ও প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে প্রাণীদের নিষ্ঠুরতার কারন হত তাহলে সেটাও ঠিক না বলতাম। ধন্যবাদ।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৫

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: আর আমি বোন, বাই দ্য ওয়ে। -_-

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.