![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রেল স্টেশনের পিশাচ- শেষ পর্ব(ভৌতিক গল্প)
পূর্বকথাঃ অসহায় নিপিন চুরির অপরাধের দায় মাথায় নিয়ে নিখোঁজ। কে চুরি করছে কেউ তা জানেনা। কিন্তু ষ্টেশন মাস্টার রুস্তম বুঝতে পারে কেউ এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে। তাই সে মাঝ রাতে কান্নার আওয়াজের সুত্র ধরে পিছু নেয় এক লন্ঠনধারীর ঠিক যার কথাই বলেছিল গ্রামবাসী। হিতে বিপরীত হয়। অজানা এক ছায়ামূর্তি রুস্তমের পিছু নেয়। জীবন বাঁচাতে পরিত্যক্ত ট্রেনের বগিতে আশ্রয় নেয়, কিন্তু সেখানেও ভূত...... বাঁচতে পারবে কি রুস্তম? কে এর আসল পিশাচ?...............
২৬শে জানুয়ারী, ১৯৩৮।
রাত পার হয়ে সকাল হল। রুস্তম অবচেতন ভাবে সেই পরিত্যক্ত ট্রেনের বগিতেই পরে রইল। যখন চেতন পেল নিজেকে একটি মরা লাশের উপর আবিষ্কার করল। মাথার উপরে এমন আঘাতের পর বেঁচে আছে তাতেই সে আশ্চর্য, তার উপর প্রায় পচে যাওয়া জোনাথন হার্টের সহকারী রর্বাট ইউলিয়াম এর মরা লাশ কোথা থেকে এল তারই কোন হদিস পেলনা। এই ঘরটাই বা কেন এত সাজানো গোছানো? মনে হয় কেউ এর মধ্যে নিয়মিত বসবাস করত। একেতো নিপিনকে হত্যার দায়ে তাকে সন্দেহ করছে বুড়ো, তার উপরে এমন মরা লাশের পাশে তাকে কেউ দেখলে নিশ্চিত ফাঁসির দড়িতে ঝোলাবে তাকে। তাই সে খুব সতর্কতার সাথে বগি থেকে নেমে এল।
বাইরে কে বা কারা পুলিশের সাথে কথা বলছে। রুস্তম বের হয়ে আসতেই চার পাঁচজন পুলিশ তার সামনে এসে দাঁড়াল। তারমানে এগুলো সাজানো নাটক, রাতে তাকে ফাসাবার জন্যই ধাওয়া করা হয়েছিল যাতে কোনমতে তাকে এখানে ঢুকিয়ে পুলিশের কাছে চাক্ষুষ প্রমাণ করা যায়। বুড়ো ইংরেজ সাথেই ছিল, তাকে দেখা মাত্রই খেকিয়ে উঠল, “দিস ইজ দ্যা বাস্টার্ড কিলার, এরেস্ট হিম”। যথারীতি ধরা খেল রুস্তম ।
২৭ সে জানুয়ারী, ১৯৩৮।
গত কালকের পুলিশি রিমান্ডের পর রুস্তম গত পরশু রাতে কি কি করেছিল সব পুলিশকে বলল, তাতেই আজ রুস্তম হিরো বনে গেল আর শয়তান ইংরেজ বুড়ো হল খুনের আসামী। কারণ রুস্তমের বর্ণনা মতে পুলিশ সে স্থানে আসল ঠিক যেখান থেকে সেদিন মাঝ রাতে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিল রুস্তম। পুলিশ সেখানকার মাটি আলগা পেল। মাটি খুরে এক হাত যাবার পরেই দেখা গেল মাটির তলায় জোনাথন হার্টের মাঝবয়সী স্ত্রীর লাশ। ঘটনার আরো বেশি তদন্ত করতে বুড়োর বাড়ির কাজের মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। তাতে সে বলল যে বেশ কয়েকদিন ধরেই তাদের দুই জনের বনিবনা হচ্ছিলনা। ইংরেজী না বুঝায় আসলে কি নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল তা সে বলতে পারেনা। রবার্টের কথা জিজ্ঞেস করাতে মেয়েটি বলল যে, বাড়িতে সাহেব না থাকলে প্রায়ই জোনাথন হার্টের স্ত্রী রবার্টের সাথে বাইরে বের হয়ে যেত।
পুলিশ এবার রবার্টের মূল হত্যাকারী কে তা বুঝতে পারল। পরিত্যক্ত ট্রেন বগির ভেতরের বিভিন্ন আলামতে এটাই প্রমাণিত হল যে, রবার্টের সাথে ইংরেজ বুড়োর স্ত্রীর পরিণয় চলছিল। এটা স্বামী হিসেবে জোনাথন মানতে পারেনি। তাই প্রথমে স্ত্রীকে বাধা দিয়ে এর কোন সুফল না পাওয়ায় তাকে হত্যা করে রুস্তমের ঘরের কোণায় তাকে পুতে রেখেছিল, কারণ ঘরের পেছনে খুব কম মানুষের আসা যাওয়া ছিল। নিপিনের ব্যাপারেও পুলিশ জানতে পাড়ল যে, রবার্টকে হত্যা ও স্ত্রী কবর দেবার কাজে নিপিনের সাহায্য নিয়েছিল বুড়ো। তাকে লাশ পাহারায়ও কাজে লাগিয়েছিল। আর সেদিন রুস্তম যে কান্নার আওয়াজ পেয়েছিল তা জোনাথনের। বুড়ো বয়সে স্ত্রী হত্যা করে একাকী হয়ে যাওয়ায় সে তার কবরের পাশে বসে বিলাপ করছিল। খুত খুতে স্বভাবের হওয়ায় নিপিনকেও সে মেরে ফেলে যাতে এর কোন প্রমাণ না থাকে। কিন্তু নিপিনের লাশ রবার্টের সাথেই ছিল। সেটা পাওয়া গেলনা। পাওয়া গেল শুধু হাড়িকেন ও চাদর।
রাত ২টা
বেকসুর খালাস পেয়েছে রুস্তম। কিন্তু চিন্তা হচ্ছে নিপিনের লাশটি নিয়ে। জোনাথনের গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেটে আসার প্রশ্নই আসেনা। কারণ তার বাড়ি ষ্টেশনের পেছনেই। তাহলে নিপিনের মত করে চাদর আর হাড়িকেনের সাথে কে হেটে গিয়েছিল সেদিন? গ্রামের কেউ কেউ তা দেখেছিলও। নানা কথা চিন্তা করতে করতে রুস্তম ঘরের মেঝেতে হাত দিল, তারপর কেমন যেন সব চিন্তা দূর হয়ে গেল এই ভেবে, মেঝের তলায় যে ট্রান্সমিটারটা চুরি করে পুতে রাখা হয়েছে তার ভাগ সে একাই নিচ্ছে।
রুস্তমের চিন্তায় ছেদ পরল। বাইরে কারো পায়ের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এত রাতে বাইরে আবার কে আসবে সে ভেবে পেলনা। পাহারাদারদের অনুপস্থিতিতে চুরি করার পাঁয়তারা করছেনাতো কেউ! রুস্তম উৎসাহ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গুদাম ঘরের দিকে হাঁটা দিল। কিছুদূর যাবার পর থমকে দাঁড়াল। কে যেন নিপিনের চেয়ারটাতে বসে আছে। পাশেই হাড়িকেনের আলো নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে। জোনাথনতো পুলিশকে বলেছিল নিপিনকে সে মেরে ফেলেছে। তবে এটা কে? রুস্তম ভেবে পেলনা। এই শীতের রাতেও সে ঘামতে লাগল। কোন কথারও জবাব দিচ্ছেনা সেই ছায়ামূর্তি। রুস্তম নিজেও তার ঘর থেকে একশো ফুট দূরে দাঁড়িয়ে। এখন তার মনে হচ্ছে দৌড় দিয়ে তার ঘরে চলে যায়, কিন্তু তার পা চলছেনা, যেন পাথর হয়ে গেছে। কোন রকমে শরীরটাকে অচল পায়ের সাহায্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগল। কিছুদুর যেয়েই একবার পেছন ফিরে চাইল। তারপর যা দেখল তাতে রুস্তমের পুরো শরীরটাই পাথর হয়ে গেল। এখন যে শুধু ফাঁকা চেয়ারটাই পরে আছে। হাড়িকেন শুদ্ধ সেই ছায়া মূর্তি গায়েব। রুস্তমের শরীর ব্যাস্ত না হতে পাড়লেও চোখদুটি ঠিকই সেই ছায়ামূর্তিটিকে খুজতে লাগল। কিন্তু সেটি কোথাও নেই।
রুস্তম গাঢ় অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকল। তার হাড়িকেনটাও নিভে গেছে তেলের অভাবে। আর কয়েক সেকেন্ড আগে থেকেই সে তার পেছনে কারো উপস্থিতি সে টের পাচ্ছে। ঠান্ডা নিঃশ্বাস নিচ্ছে সেটি ঠিক তার ঘাড়ের উপর।
পরিশিষ্টঃ জানিনা আমি আপানদের কতটুকু ভয় দেখাতে পেড়েছি। না পাড়লে পরে কখনো আপনাদের ভয় দেখিয়ে দেব নিশ্চয়ই।
****************সমাপ্ত****************
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫৬
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: পুরোটুকু পড়েছেন কি
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: এই পর্বে আমি লিংক দেই নাই, একটু খুজে নিতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:০৪
নিয়েল ( হিমু ) বলেছেন: রুস্তমের কি হৈল শেষ মেস ?
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫৬
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: আর কি রুস্তম মারা গেছে। গল্পে পিশাচ সবাই, সমাজে যারা অপকর্ম করে তাদেরতো আমরা পিশাচই বলি।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫৭
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ সাথে থাকবার জন্য, শুভকামনা রইল। সামনে বই বের করবার ইচ্ছে আছে। দোয়া রাখবেন।
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১২
রুদ্র মানব বলেছেন: ভাল লাগলো , সবগুলো পরবের লিঙ্ক একসাথে দিলে ভাল হত ।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪১
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৩
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: আমার লেখার সিকিউরিটি কে দিবে?
৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৪
ইনফাইনাইট বলেছেন: ভাল হইসে তয় ভয় পাই নাই ।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৩
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: কিছুই করার নাই, আমি চেষ্টা করেছি।
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫
অহন_৮০ বলেছেন: ভালোই লিখেছেন
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৭
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধ্ন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৪
নিয়েল ( হিমু ) বলেছেন: O.M.G বই ?!!!!!!!!!
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৮
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ভাল থাকবেন, সব সময় সাথে ছিলেন।
৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০৪
অপু তানভীর বলেছেন: আগের দুইটাতে ভয় পাইছিলাম । এইটা তে ভয় পাই নাই ।
৮| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫০
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: কিছুই করার নাই। আমাকে শেষ করতে হয়েছিল। তাই বেশী আগাই নি।
সব সময় সাথে ছিলেন, ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন যেখানেই থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৪১
অন্যআমি বলেছেন: মন্দ নয়, বেশ ভালোই।