নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অসাধারণ

আমি অসাধারণ

তনম্য়

আমি অসাধারণ

তনম্য় › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম বোনদের প্রতি ভাই ওয়াসিউজজামানের খোলা চিঠি

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

بسم الله الرحمان الرحيم

আসসালামু আলাইকুম,
একজন দীনি ভাই হিসেবে আপনার কাছে লিখছি শুধু আল্লাহর ই জন্য। দুয়া করছি সেই মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে যেন আমার কথাগুলো আপনি বুঝতে পারেন আর আমার কথা আপনার বুঝার জন্য যেন আল্লাহ সহজ করে দেন। আমীন।

আমরা এই পৃথিবী তে কেন আসলাম, কে আমাদের সৃষ্টি করলেন আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যইটা বা কি?? হয়ত ভেবেছেন আলহামদুলিল্লাহ, কিন্তু এমন ও হতে পারে যে ভাবলেও উপলব্ধি করতে পারেননি, এমন ও হতে পারে ভেবেই উঠতে পারেননি কখনও।
তাই কিছু বলব বলে লিখতে বসা । আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের শুধুমাত্রই তার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। তার তাওহিদের উপরে থেকেই যেন আমরা তার ইবাদত করি আর কাওকেই যেন তার ইবাদতে সমকক্ষ না করি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ
وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ( ٥٦ )
আমি মানুষ এবং জীন কে শুধুমাত্রই আমার ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি। (সুরা জারিয়াতঃ৫৬)
এখন ইবাদত কি আসুন সেই বিষয়ে জানি, ইবাদত হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে, রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلمপদ্ধতি অনুযায়ী বিশ্বাস স্থাপন করা, সকল কাজ করা কিংবা বর্জন করা, সকল বিষয় যা আল্লাহ নির্দেশ করেছেন এবং রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم এনেছেন তা গ্রহন করা যা থেকে নিষেধ করেছেন ত্যাগ করা। এছারাও ইবাদতের সংজ্ঞা আরও বিস্তারিত। কয়েক বাক্যে বলা খুবই কষ্টসাধ্য তবে আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে এই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই হতে হবে ঠিক তেমনি যেমনটি আল্লাহ নির্দেশ করেছেন এবং যে পথনির্দেশ দিয়ে গেছেন আমদের নাবী মুহাম্মাদ ( ( صلى الله عليه و سلم। আর সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা যায় এটাই আল্লাহর ইবাদত।
ইবাদত মানে শুধুমাত্রই হাতে গুনা গুটিকয়েক আমল নয় যা কিছু মানুষ ভেবে থাকে যেমন শুধুই স্বলাত আদায় করা, রমাদানে সিয়াম পালন করা ইত্যাদি আর জীবনের সব বিষয় নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী অথবা সামাজিক নীতি অনুযায়ী করা যায় এমনটা ভাবা।
বরং ইবাদত হবে যখন একজন ব্যাক্তি তার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلمদেখানো পথে পরিচালিত করবে, আর সেই সমস্ত সকল বিষয় থেকে বিরত থাকবে আপ্রাণ চেষ্টা দ্বারা যা থেকে আল্লাহ এবং রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم নিষেধ করেছেন।
কেনোনা এই পার্থিব জীবন একটা পরীক্ষা মাত্র, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন আর তিনি পরীক্ষা করে দেখবেন কর্মে কে উত্তম।
ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلۡمَوۡتَ وَٱلۡحَيَوٰةَ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلاً۬ۚ
“ তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে সর্বোত্তম” (সুরা মূলকঃ২)
এখন আমরা ভাবতে পারি আল্লাহ তো সবই জানেন, গায়েবের খবরও জানেন, অতীত-ভবিষ্যৎ সবই, তাহলে কেন পরীক্ষা করবেন?!
বেপারটা এমন নয় যে, আল্লাহ জানেন না তাই তিনি পরীক্ষা করবেন। বরং বান্দা যেন বিচার দীনে সব নিজের চোখেই দেখতে পায় যে সে আল্লাহর এই পরীক্ষায় কি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আর আল্লাহ কারো প্রতিই অবিচার করেননা।
আর তাইতো সেদিন কেউ-ই আল্লাহর কাছে অভিযোগ করবেনা যে আল্লাহ তার প্রতি অবিচার করেছেন বরং অপরাধিরা সেদিন ভয়াবহতা দেখে আরেকটি সুযোগ চাইবে।
এ ব্যাপারে তাদের কথা উল্ল্যেখ করে আল্লাহ বলেনঃ
رَبَّنَآ أَبۡصَرۡنَا وَسَمِعۡنَا فَٱرۡجِعۡنَا نَعۡمَلۡ صَـٰلِحًا إِنَّا مُوقِنُونَ
“হে আমাদের রব, আমরা দেখে নিলাম এবং শুনলাম আমাদের পুনরায় ফিরিয়ে দিন আমরা সৎ আমল করবো, দৃঢ় বিশ্বাসী হয়ে যাবো”।(সুরা সাজদাঃ১২)

আর সেইদিন সবাই দেখতে পাবে সে কি আমল করেছে ছোটো কিংবা বড়।
فَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٍ خَيۡرً۬ا يَرَهُ ۥ ( ٧ ) وَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٍ۬ شَرًّ۬ا يَرَهُ ۥ ( ٨ )
“কেউ অনু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে, আর কেউ অউ পরিমাণ অসৎকাজ করলেও তা দেখতে পাবে”(সুরা যিলযালাহঃ৭,৮)
আজ যে বিষয়টা নিয়ে আপনাকে বলবো তা হল “বিয়ে”।
বিয়ে আর ১০টা মানুষের বানানো সামাজিক কাজের মত একটি নয় যে, সমাজে যে যাই রীতি বানিয়ে নিয়ে এই মহৎ কাজটি করবে।
হে বিয়ে একটি সামাজিক কাজ এবং একটি সুস্থ সমাজ গঠনে এর ভুমিকা অপরিসীম বটে কিন্তু এটিও একটি ইবাদত সুতরাং এই ইবাদতটিও পালন করতে হবে যেভাবে আল্লাহ এবং তার রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلمআমাদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই, তাহলেই আমরা এই পার্থিব জীবনেও আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে জীবন কে পরিচালিত করতে পারব আর আখিরাতেও সফল হতে পারবো, ইন-শা-আল্লাহ।
আর বিয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল সঙ্গী নির্বাচন করা যার সাথে আপনি আপনার জীবনের বাকি পথটা কাটাতে চান। আর একজন মুমিন নর কিংবা নারী মাত্রই এটাই চাইবে যে তার জীবন সঙ্গী এমন হবে যে জান্নাতের পথে তাকে চলতে সাহায্য করবে, দুজন জীবনের এই পরীক্ষাকে একসাথে পাশে থেকে পার করবে, তাই নয় কি??
তবে খুব ব্যথিত হয়েই আপনাকে লিখতে বসা। বোন আপনি দীন বুঝেছেন, বুঝেছেন আখিরাতে আল্লাহর সামনে আপনাকে আমাকে আমাদের সবাইকেই দাড়াতে হবে দিতে হবে প্রতিটি কাজ কথার হিসাব। কিন্তু কষ্ট লাগে এই দীন বুঝা বোন গুলো বিয়ের মত একটা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতে গাফিল হয়ে যায় নানা কারনে।
হয়ত পারিবারিক চাপ, সামাজিক চাপ, মানসিক চাপ ইত্যাদি।
কিন্তু কেন আপনি ভুলে গেলেন আল্লাহ আপনাকে পরীক্ষা করবেন বোন। কষ্ট-দুঃখ, অভাব, আপন মানুষকে নিয়ে গিয়ে কত কিছু দ্বারাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা
আমাদের পরীক্ষা করবেন। আপনাকে ধৈর্য ধরতেই হবে, কেনোনা বিয়ে জীবনের সেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যার মাধ্যমে আপনার যে জীবনসঙ্গী হবে সেই মানুষটার সাথে আপনার দীন মিশে আছে মনে রাখবেন আল্লাহর রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
حَدَّثَنَا ابْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، وَأَبُو دَاوُدَ قَالاَ حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ وَرْدَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ:
"‏ الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ ‏"

كتاب الأدب : باب مَنْ يُؤْمَرُ أَنْ يُجَالَسَ

তিনি ( ( صلى الله عليه و سلم বলেনঃ
“একজন ব্যক্তি তার অন্তরঙ্গ বন্ধু বা সঙ্গীর দীনের উপর থাকে, অতএব তোমাদের কেউ যেন দেখে সে কাকে তার অন্তরঙ্গ বন্ধু বা সঙ্গী করছে।”(আবু দাউদ)

হাদিসটি আসুন ভালো করে বুঝি, ভেবে দেখুন সঙ্গীর দীনের উপর থাকে মানে কি বুঝিয়েছেন রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم ?
এর মানে হচ্ছে, যাকে অন্তরঙ্গ করে বন্ধু বা সঙ্গী করছেন তার বিশ্বাস আমল সব আপনাকে প্রভাবিত করবেই। অর্থাৎ সে যদি তাওহীদ-বাদী হয় আল্লাহর হক যে জানে,বান্দার হক জানে, আর আল্লাহর হক ও বান্দার হক আদায় করতে যে সর্বদা সচেষ্ট সে আপনাকে জান্নাতের পথেই সাহায্য করবে আর আপনিও তার দীনের দ্বারা প্রভাবিত হবেন আর যদি এমন হয় সে আল্লাহর হক জানেনা বান্দার হক জানেনা সে আপনারও হক দিতে ব্যর্থ হবে আর যে আল্লাহর হক দিতে জানেনা সে আপনার হক কি দিবে?? আর সে আপনাকে জাহান্নামের দিকেই নিয়ে যাবে।
আর আমরা জানি পৃথিবীর সব সম্পর্কগুলর মধ্যে মা-বাবার অন্তরঙ্গতার সম্পর্কের পর ই সবচেয়ে কাছের আর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হল স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক।
এবার হাদিসটির দ্বিতীয় অংশে খেয়াল করুন রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم বললেন, “তোমাদের কেউ যেন দেখে সে কাকে অন্তরঙ্গ বন্ধু বা সঙ্গী হিসেবে নিচ্ছে”
এই কথাতাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহু আকবর আমাদের সত্য নাবী সঠিক দিক নির্দেশনাই দিলেন। যাকে বিয়ে করছেন সে যদি আল্লাহর দীন-ই না জানে, তাওহীদ না জানে, সুন্নাহর গুরুত্ব না থাকে যার কাছে, আর আল্লাহর হক ই না জানে আপনার হক সে কিভাবে দিবে? সে শুধুই আপনার সাথে তার সামাজিক দায়িত্ব পালন করবে আর আদৌ ভবিষ্যতে করবে কিনা আল্লাহ ই ভালো জানেন আর আখিরাতের পথে কতটা আপনাকে সাহায্য করতে পারবে এই ব্যক্তি আশা করি তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
তাই বোন অনুরোধ এটাই আজ যা ভেবেই আপনি সিদ্ধান্ত নেন না কেন আখিরাত হারানোর পথে নিজেকে থেলে দিবেননা।
অনেকে আবার ভাবেন, ছেলের মুখে দাঁড়ি নেই টাখনুর নিচে প্যান্ট স্মার্টলি চলাফেরা করে ওসব কিছুনা আমি ঠিক করে নিব, কেউ কেউ ভাবে আমার কথা না শুনে যাবে কোথায়??!!! কেউ কেউতো বলে ছেলে ব্যাংক এ চাকরি করে কি হয়েছে বিয়ের পর ঠিকি আমি এই চাকরি ছাড়াবো কিন্তু কথাটা অপ্রিয় হলেও সত্য যে আপনি শয়তানের ধোঁকায় পরেছেন বোন কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি গুলো শয়তান ই দিয়েছে যে আপনি এসব বদলাবেন কিন্তু বাস্তব হল আপনি পারবেননা বরং আপনি ই প্রভাবিত হবেন আর নিজের ক্ষতি কে ডেকে আনবেন।
অনেকে বলেন মা বাবা কে কষ্ট দিতে চাইনা তাই এটাও শায়তানের ধোঁকা আল্লার রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم একবার এক মহিলা এসে বলল আমার স্বামী কে আমার পছন্দ না তার বাবা তার অনুমতি ছাড়াই বিয়ে দিয়েছিলেন তখন
রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم বললেন তুমি কি মহর ফিরিয়ে দিতে পারবে সে বলল হা তখন এই বিয়ে রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم ভেঙ্গে দিলেন।
আর শার-ঈ অর্থাৎ ইসলামের বিধান অনুযায়ী জায়েজ নেই যে একজন বাবা অথবা মেয়ের পরিবার মেয়ের অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দিবেন এই ব্যাপারে সরাসরি নিষেধ এসেছে হাদিসে।
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
‏"‏ لاَ تُنْكَحُ الأَيِّمُ حَتَّى تُسْتَأْمَرَ وَلاَ تُنْكَحُ الْبِكْرُ حَتَّى تُسْتَأْذَنَ ‏"‏‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ إِذْنُهَا قَالَ أَنْ تَسْكُتَ ‏"‏‏.‏

রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم বলেছেনঃ ...”কোন কুমারিকে তার অনুমতি ব্যতিরেকে বিয়ে দিবেনা, বলা হলো সে অনুমতি কিভাবে দিবে ? রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم বললেন চুপ থেকে।(বুখারী)
এই হাদিস স্পষ্ট প্রমান করে একজন কুমারির সম্পূর্ণ অধিকার আছে পছন্দ না হলে তা বলার। আর তখন বাবার জন্য উপায় নেই বিয়ে দেওয়ার আর এরপরও বাবা অথবা পরিবার জোর পূর্বক কিছু করতে চাইলেও তারা গুনাহগার হবেন।
তাই আপনার দায়িত্ব আপনি এমন প্রস্তাবে দ্বিধাহীন ভাবে না বলুন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই শুধুমাত্র বলুন।
আবার অনেকে ভাবে এত ভালো ছেলে হয়ত আর পাবোনা!! দীনদারী ঠিক নাইতো কি এমন ছেলে পাওয়াই মুশকিল!!!। কি হয়েছে কবরের পুজা করে, মাজারে যায়, আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে দুয়া করে, দাঁড়ি নেই, স্বলাত ঠিক নেই আমিও তো আগে তেমন একটা দীন পালন করতাম না আস্তে আস্তে আমি ছেলেটাকে ঠিক করে ফেলবো বিয়ের পর আর এগুলা তেমন একটা বড় সমস্যা না আর ছেলেটা অনেক সুন্দর, ফ্যামিলি স্ট্যাটাস ও খুব ভালো , টাকা পয়সা ওয়ালা যেমনটা আমি চেয়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি কিন্তু বোন শয়তান আপনার চোখে পর্দা ফেলে দিয়েছে এটাই সূচনা আপনাকে জাহান্নামী বানানোর প্রথম কাজ ওই শয়তান করে ফেলেছে আর বাকি কাজ ওই যার মত চেয়েছিলেন তিনি ই করবেন। আমি বলছিনা সবাই একি রকম ভাবে তবে এটাই বলবো আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেনঃ
وَلَا تُنكِحُواْ ٱلۡمُشۡرِكِينَ حَتَّىٰ يُؤۡمِنُواْۚ
وَلَعَبۡدٌ۬ مُّؤۡمِنٌ خَيۡرٌ۬ مِّن مُّشۡرِكٍ۬ وَلَوۡ أَعۡجَبَكُمۡ
ۗ أُوْلَـٰٓٮِٕكَ يَدۡعُونَ إِلَى ٱلنَّارِ
ۖوَٱللَّهُ يَدۡعُوٓاْ إِلَى ٱلۡجَنَّةِ وَٱلۡمَغۡفِرَةِ بِإِذۡنِهِ
“তোমরা বিয়ে দিয়ো না মুশরিক পুরুষদের যতক্ষণ না তারা ঈমান না আনে, এরচেয়ে মুমিন দাস, মুশরিক পুরুষের চেয়েও উত্তম, যতই তারা(মুশরিক) তোমাদের মুগ্ধ করুক।
এরা জাহান্নামের দিকে ডাকছে পক্ষান্তরে আল্লাহ তার ইচ্ছায় আহবান করছে তার ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ”(সুরা বাকারাঃ২২১)
বোন সিদ্ধান্ত আপনার জীবন ও আপনার আমি শুধুই একজন মুসলিম ভাই হিসেবে কথাগুল বলছি এখন ও কিছু হয়নি সময় আছে আপনি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই ধৈর্য ধরুন, না করে দিন বে-দীন এক ছেলেকে সে আপনাকে জাহান্নামে নিয়ে যেতে পারে পক্ষান্তরে আপনি ধৈর্য ধরে আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে চান এমন একজন যে আপনাকে জান্নাতের পথে সাহায্য করবে।
বোন আপনি কি জানেন জাহান্নাম কত কঠিন এক জায়গা??

আর জাহান্নাম এতটা ভয়াবহ এক জায়গা যা অকল্পনীয় আর জাহান্নামের গভীরতা সম্পর্কে রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
باب فِي شِدَّةِ حَرِّ نَارِ جَهَنَّمَ وَبُعْدِ قَعْرِهَا وَمَا تَأْخُذُ مِنَ الْمُعَذَّبِينَ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ خَلِيفَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، عَنْ أَبِي، حَازِمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ سَمِعَ وَجْبَةً فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ تَدْرُونَ مَا هَذَا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ هَذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ فِي النَّارِ مُنْذُ سَبْعِينَ خَرِيفًا فَهُوَ يَهْوِي فِي النَّارِ الآنَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِهَا ‏"‏ ‏.
আবু হুরাইরা(রা) বলেন, আমরা একদিন রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم এর নিকট ছিলাম, হটাৎ আমরা একটা বিকট শব্দ শুনতে পাই, রাসুল ( ( صلى الله عليه و سلم আমাদের জিজ্ঞেস করলেন’ তোমরা কি জানো এটি কি? আমরা বললাম আল্লাহ এবং তার রাসুল ই ভালো জানেন, তিনি ( ( صلى الله عليه و سلم বললেন, এটি একটি পাথরের শব্দ সত্তর হাজার বছর আগে নিক্ষেপ করা হয়েছিল এখন তা জাহান্নামের শেষ প্রান্তে গিয়ে পৌঁছিয়েছে।(বুখারী)
চিন্তা করুন একটা পাথর যদি নিক্ষেপ করা হয় উপর থেকে ১মিনিটে কতদুর যেতে পারে ১ ঘণ্টা? ১ মাস ,............১ বছর......সেখানে সত্তর হাজার!!!! এই হচ্ছে জাহান্নাম।
وَهُمْ يَصْطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا نَعْمَلْ صَـٰلِحًا غَيْرَ ٱلَّذِى كُنَّا نَعْمَلُ ۚ أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُم مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَآءَكُمُ ٱلنَّذِيرُ ۖ فَذُوقُوا۟ فَمَا لِلظَّـٰلِمِينَ مِن نَّصِيرٍ [٣٥:٣٧]
সেখানে তারা আর্ত চিৎকার করে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করব, পূর্বে যা করতাম, তা করব না। (আল্লাহ বলবেন) আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল। অতএব আস্বাদন কর। জালেমদের জন্যে কোন সাহায্যকারী নেই।

জাহান্নামের খাদ্য হবে কষ্টের যা জাহান্নামিদের পেট ভরাবেও না পুষ্টিও দিবেনাঃ
تَصْلَىٰ نَارًا حَامِيَةً [٨٨:٤]
তারা জ্বলন্ত আগুনে পতিত হবে।
﴿٤﴾

تُسْقَىٰ مِنْ عَيْنٍ ءَانِيَةٍ [٨٨:٥]
তাদেরকে ফুটন্ত নহর থেকে পান করানো হবে।
﴿٥﴾

لَّيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ إِلَّا مِن ضَرِيعٍ [٨٨:٦]
কন্টকপূর্ণ ঝাড় ব্যতীত তাদের জন্যে কোন খাদ্য নেই।
﴿٦﴾

لَّا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِى مِن جُوعٍۢ [٨٨:٧]
এটা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং ক্ষুধায়ও উপকার করবে না।
জাহান্নামিরা জাহান্নামে মরবেওনা বাঁচবেও নাঃ
وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقْضَىٰ عَلَيْهِمْ فَيَمُوتُوا وَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُم مِّنْ عَذَابِهَا ۚ كَذَ‌ٰلِكَ نَجْزِى كُلَّ كَفُورٍ [٣٥:٣٦]
আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি।



আপনি কি জানেন জান্নাত কি?? আসুন কিছু জানিঃ
আর পক্ষান্তরে জান্নাতে আছে আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত যেখানে তার বান্দারা চিরদিন থাকবেঃ

وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ الْأَنْفُسُ وَتَلَذُّ الْأَعْيُنُ ۖ وَأَنْتُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
সেখানে মন যা চায় আর যাতে চোখ তৃপ্ত হয় তা-ই থাকবে এবং সেখানে তোমরা হবে চিরস্থায়ী।

لَهُمْ مَا يَشَاءُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ
তারা যা চাইবে, সেখানে তাদের জন্য তাই থাকবে এবং আমার কাছে রয়েছে আরও বেশি কিছু।

لَهُمْ فِيهَا مَا يَشَاءُونَ خَالِدِينَ ۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ وَعْدًا مَسْئُولًا
সেখানে তারা যা চাইবে তা-ই তাদের জন্য থাকবে, চিরস্থায়ীভাবে...
উপরন্তু, সেগুলোর ক্রমাগত ভোগে কোন বিরক্তি বা একঘেয়েমি আসবে না:
خَالِدِينَ فِيهَا لَا يَبْغُونَ عَنْهَا حِوَلًا
তারা সেখান [জান্নাত] থেকে অন্য কোথাও যেতে চাইবে না।

এই চিরস্থায়ী সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের বিনিময়ে আমাদেরকে আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেছেন, তা কি খুব কঠিন কিছু আসুন নিজেকে প্রশ্ন করি? এসব কি সাধ্যের বাইরে কোন কাজ? তা কী অতিরিক্ত কোন বোঝা? কখনো নয় বরং আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا
...আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا
...আল্লাহ কোন নফসকে যা দিয়েছেন তার চেয়ে বেশি দায়িত্ব তাকে দেন না।
يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ
আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজতা চান, আর তিনি তোমাদের জন্য কাঠিন্য চান না।
مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ
আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা আরোপ করতে চান না...
وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
আর দীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি।

বোন বিয়ের ব্যাপারেই না সকল বিষয় আল্লাহর উপর ভরসা রেখে ধৈর্য ধরুন।

ইন-শা-আল্লাহ আল্লাহ আপনাকে উত্তম কিছুই প্রতিদান হিসেবে দিবেন।
বোন আসুন আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কে জানার চেষ্টা করি, তার কথামত এই জীবন কে পরিচালনা করলে আমরা পাবো স্থায়ী সুখময় এক জীবন পক্ষান্তরে তার অবাধ্যতায় নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করবো। আর এই পার্থিব জীবন খুবি সামান্য আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا لَعِبٌۭ وَلَهْوٌۭ ۚ وَإِن تُؤْمِنُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ يُؤْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلَا يَسْـَٔلْكُمْ أَمْوَ‌ٰلَكُمْ [٤٧:٣٦]
পার্থিব জীবন তো কেবল খেলাধুলা, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও এবং সংযম অবলম্বন কর, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান দেবেন এবং তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চান না।
আমরা অনেকেই আল্লাহ্‌ কে চিনতে ভুল করি তাঁর অবাধ্য হয়ে ভাবি আল্লাহ্‌ করুনাময় ক্ষমাশীল আমাকে ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু আল্লাহ্‌ বলেনঃ
نَبِّئْ عِبَادِىٓ أَنِّىٓ أَنَا ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ [١٥:٤٩]
আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল দয়ালু।
﴿٤٩﴾

۞ وَأَنَّ عَذَابِى هُوَ ٱلْعَذَابُ ٱلْأَلِيمُ [١٥:٥٠]
এবং ইহাও যে, আমার শাস্তি যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।
উপরক্ত আয়াতে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তিনি যেমন ক্ষমাশীল তেমনি তাঁর শাস্তি যে খুব ই কঠিন তাও জানিয়ে দিয়েছেন।
ভয় এবং আশা হল পাখির ডানার মতো আমাদের আল্লাহর শাস্তিকে ভয়ও করতে হবে এবং তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে আর ক্ষমার আশাও করতে হবে। দুটির মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে তা নাহলে একটি ডানার ত্রুটির কারনে যেমন পাখি উড়তে সক্ষম হবেনা ঠিক আমরাও যদি ভয় আশার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে না পারি আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তরভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাবে।
আল্লাহ্‌ আমদের সকলকে হেফাজত করুন আমীন।






মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭

অজানাবন্ধু বলেছেন: আল্লাহ্‌ আমদের সকলকে হেফাজত করুন আমীন।

২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯

তনম্য় বলেছেন: আমিন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.