নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থঋণ মামলা দায়েরের পদ্ধতি বা অর্থঋণ মামলার ধাপ সমূহ

২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২২

কোনো কারণে ঋণ গ্রহিতা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ বা ঋণের কিস্তির টাকা ফেরত প্রদান না করতে পারলে ঐ ঋণকে খেলাপি ঋণ বলে। আর খেলাপী ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ মোকাদ্দমা আনায়ন করতে হয় ব্যাংকিং ও নন- ব্যাংকিং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে।

অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর বিধান মোতাবেক খেলাপি ঋণ আদায়ের/ অর্থ ঋণ মামলা দায়েরের প্রাথমিক ধাপ সমূহ হলো ঃ

১) প্রথ‌মে Bank / Non Banking Financial Institution গ্রাহক‌কে ঋণ প‌রি‌শো‌ধের জন্য অনুরোধ/ প্রেসার কর‌বে।
২) অনুরোধ/ প্রেসার ক‌রে কাজ না হ‌লে ৭ দিন সময় দি‌য়ে ‌ডিমান্ড নো‌টিস দি‌তে হ‌বে।
৩) তারপরও য‌দি কাজ না হয়, ত‌বে মামলা দা‌য়ের কর‌তে অফিসিয়াল অনুমতি নিতে হবে।
৪) অফিসিয়াল অনুম‌তি পাওয়ার পর উকিলের মাধ্য‌মে Legal Notice দি‌তে হ‌বে।
৫) এরপর গ্রাহককে ১৫ দিন সময় দি‌তে হ‌বে।
৬) তারপরও য‌দি Adjust না করে তাহ‌লে মর্ট‌গেজ সম্প‌ত্তি বি‌ক্রি ক‌রে পাওনা শোধ না হলে আদাল‌তে মামলা কর‌তে হ‌বে। বিক্রির জন্য পত্রিকায় নিলাম আহবান করা হয়।
[ উল্লেখ্য, যে ক্ষেত্রে ঋণের বিপরীতে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়, সে ক্ষেত্রে বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই মামলা দায়েরের পূর্বে ধারা ১২ এর বিধান সাপেক্ষে বন্ধককৃত সম্পত্তি নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের চেষ্টা করতে হবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে ১২(৩) ধারায়। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিবাদীর কাছ থেকে কোনো স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখে অথবা অস্থাবর সম্পত্তি দায়বদ্ধ রেখে ঋণ প্রদান করলে এবং বন্ধক প্রদান বা দায়বদ্ধ রাখার সময় বন্ধকি বা দায়বদ্ধ সম্পত্তি বিক্রির ক্ষমতা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়ে থাকলে, তা বিক্রি না করে এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ ঋণ পরিশোধ বাবদ সমন্বয় না করে অথবা বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ না হয়ে এই আইনের অধীনে অর্থঋণ আদালতে কোনো মামলা দায়ের করা যাবে না।’ অর্থাৎ যদি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো সম্পত্তি বিক্রির ক্ষমতা দিয়ে কোনো সম্পত্তি বন্ধক দেয়া হয়, তাহলে ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই সম্পত্তি বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ঋণ পরিশোধ বাবদ সমন্বয় করার চেষ্টা করবে। এতেও যদি ঋণ না মেটে কিংবা সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করে যদি প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হয়, কেবল তখনই অর্থঋণ আদালত মামলা দায়ের করা যাবে।]

৭) এছাড়া মর্টগেজকৃত সম্প‌ত্তি নিলাম দি‌তে ব্যর্থ হ‌লে আদাল‌তে মামলা দা‌য়ের কর‌তে হ‌বে। যাকে অর্থঋণ মামলা বলা হয় ।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় এক বা একাধিক অর্থ ঋণ আদালত আছে। যুগ্ম জেলা জজ পর্যায়ের একজন বিচারক সাধারণত অর্থ ঋণ আদালতের বিচার কাজ করে থাকেন। সরকার এসব বিচার কাজ করার জন্য ২০০৩ সালে অর্থ ঋণ আদালত আইন প্রণয়ন করে। আইনানুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায় সম্পর্কিত যাবতীয় মামলা এ আদালতে দায়ের করতে হয়।

**মামলা দায়েরের নিয়মঃ
ক) মামলার বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালত আইনের ধারা ৮(১) অনুযায়ী আরজি দাখিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন।
খ)মামলার আরজিতে উপস্থাপন করতে হবে : বাদী-বিবাদীর নাম, ঠিকানা, কর্মস্থল, বাসস্থানের ঠিকানা, দাবির সঙ্গে সম্পর্কিত সব ঘটনা, কোর্ট ফি প্রদানের উদ্দেশ্যে মামলার মূল্যমান, আদালতের এখতিয়ার আছে এ মর্মে বিবরণ এবং প্রার্থিত প্রতিকার।

গ) আরজিতে দুটি তফসিল থাকবে।

প্রথম তফসিলে থাকবে বিবাদীকে প্রদত্ত মূল ঋণ অথবা বিনিয়োগকৃত টাকার পরিমাণ; স্বাভাবিক সুদ/মুনাফা/ভাড়া হিসেবে আরোপিত টাকার পরিমাণ; দণ্ড সুদ হিসেবে আরোপিত টাকার পরিমাণ; অন্যান্য বিষয় বাবদ বিবাদীর ওপর আরোপিত টাকার পরিমাণ; মামলা দায়েরের আগ পর্যন্ত প্রণীত শেষ হিসাবমতে বিবাদী কর্তৃক বাদীর আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বা পাওনা পরিশোধ বাবদে জমাকৃত টাকার পরিমাণ; বাদী কর্তৃক প্রদত্ত ও ধার্য মোট এবং বিবাদী কর্তৃক পরিশোধিত মোট টাকার তুলনামূলক অবস্থান।

দ্বিতীয় তফসিলে থাকবে, ওইসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি যা বন্ধক বা জামানত রেখে বিবাদী ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। সে সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ ও আর্থিক মূল্য সেখানে উল্লেখ করতে হবে এবং প্রত্যাশিত প্রতিকার চেয়ে একটি হলফনামা লিখে প্রদত্ত ঋণের অর্থ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতের বিচারক বরাবর এ মামলাটি দাখিল করা যাবে।

ঘ) সেই সঙ্গে মূল্যানুপাতিক কোর্ট ফি প্রদান করতে হবে।

ঙ) এই আইনে বিবাদী মূল ঋণ গ্রহীতা কিংবা ঋণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা এবং তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টরকেও বিবাদী শ্রেণিভুক্ত করে মামলা করতে হবে। অর্থাৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠান মূল ঋণগ্রহীতার (Principal debtor) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সময় তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা (Third party mortgagor) বা তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টর (Third party guarantor) ঋণের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকলে, তাদেরকেও পক্ষ করতে হবে।

চ) বিবাদী বা বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করতে হবে।
ছ) বিকল্প বিরোধ-নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে।
অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ সালের ৫ম অধ্যায়ে বৈঠক ও মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ-নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিবাদী উপস্থিত হলে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এই আইনের ২২ ধারায়। বিস্তারিত জানতে আইনজীবীর সহায়তা নিন।



- এম টি উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.