নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা বাবার মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে নাবালক সন্তান আইনত কার কাছে থাকবে!

৩০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৬

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোন কারণে বিচ্ছেদ হয়ে গেলে সন্তানেরা কার কাছে থাকবে বা কে হবে তাদের অভিভাবক- এই প্রশ্ন দেখা দেয়। সাধারনত শিশু সন্তানের ত্বত্তাবধান, অভিভাবকত্ব ও ভরনপোষণের বিষয়গুলি পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ানস এন্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট ১৮৯০ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। উল্লেখ্য, গার্ডিয়ানস এন্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট ১৮৯০ হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রযোজ্য।

মুসলিম আইন অনুসারে, পিতা হচ্ছেন সন্তান ও সন্তানের সম্পত্তির প্রকৃত ও আইনগত অভিভাবক। পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ অনুসারে, সাধারনত একজন শিশু সন্তানের ত্বত্তাবধানের অধিকার বা দায়িত্ব একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পেয়ে থাকে ঐ শিশু সন্তানটির মাতা। শিশুসন্তানের দেখাশোনার বিষয়ে (জিম্মাদারির ক্ষেত্রে )সবচেয়ে বড় অধিকারী হলেন মাতা। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্তানের জিম্মাদার হয়ে থাকেন; কিন্তু তিনি কখনও অভিভাবক হতে পারেন না।

একজন মাতা তার শিশু সন্তানের ত্বত্তাবধানের দায়িত্ব বা অধিকার পেয়ে থাকেন
ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে ৭ বছর আর মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটলে বা স্বামী মারা গেলে ছেলেসন্তান ৭ বছর পয্যন্ত এবং মেয়েসন্তান বয়ঃসন্ধিকাল পয্যন্ত মায়ের হেফাজতে থাকবে, এটাই আইন । এক্ষেত্রে মায়ের অধিকার সর্বাগ্রে স্বীকৃত। মায়ের অবর্তমানে শিশুর জিম্মাদারি নিকটাত্মীয়দের কাছে চলে যাবে।

**যে সকল কারণে মাতা সন্তানের জিম্মাদারিত্ব হারাতে পারেনঃ
— পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে
— নীতিহীন জীবনযাপন বা অনৈতিক জীবন যাপন করলে
— সন্তানের প্রতি অবহেলা বা অযত্ন করলে
— দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে
— বিয়ে থাকা অবস্থায় বাসার বসবাসস্থল থেকে দূরে অবস্থান করলে
— ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করলে
— যদি সন্তানের পিতাকে তার জিম্মায় থাকা অবস্থায় দেখতে না দেয়।
— দুশ্চরিত্রবান হন, বিশ্বস্ততা হারিয়ে ফেলেন, ইত্যাদি।

**সন্তানের সম্পত্তির দায়িত্বঃ
মুসলিম আইনে কোনো নাবালক শিশুর সম্পত্তির তিন ধরণের অভিভাবক হতে পারে। আইনগত অভিভাবক, আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অভিভাবক এবং কার্যত অভিভাবক। আইনগত অভিভাবকেরা হলেন, বাবা, বাবার ইচ্ছাপত্রে (উইল )উল্লেখিত ব্যক্তি, বাবার বাবা (দাদা ), বাবার বাবার ইচ্ছাপত্রে (উইল ) উল্লেখিত ব্যক্তি।

উল্লেখিত আইনগত অভিভাবকেরা কিছু জরুরী কারণে নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি অথবা বন্ধক দিতে পারেন। ওই সন্তানের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য তার অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি অথবা বন্ধক দিতে পারেন। কিংবা নাবালকের ভরণপোষণ, উইলের দাবি, ঋণ, ভূমিকর পরিশোধ ইত্যাদির জন্য একজন আইনগত অভিভাবক নিচের একবা একাধিক কারণে স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করতে পারেন। যেমন: ক. ক্রেতা দ্বিগুণ দাম দিতে প্রস্তুত খ. স্থাবর সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গ. সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে।

নাবালককে রক্ষার জন্য আইনগত অভিভাবক বা আদালত নিযুক্ত অভিভাবক না হয়েও যেকেউ নাবালকের অভিভাবক হিসেবে কাজ করতে পারেন। বাস্তবে এরকম যিনি অভিভাবক হিসেবে কাজ করেন তিনিই হলেন কার্যত অভিভাবক। তবে তিনি কোন অবস্থাতেই সম্পত্তির স্বত্ব, স্বার্থ বা অধিকার হস্তান্তর করতে পারবেন না।

**আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অভিভাবকঃ
যখন আইনগত অভিভাবক থাকেন না তখন আদালত নাবালকের সম্পত্তি দেখাশুনার জন্য অভিভাবক নিয়োগ করতে পারেন। এভাবে নিযুক্ত অভিভাবকরাই হলেন আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অভিভাবক। তবে এই অভিভাবক আদালতের অনুমতি ছাড়া কোন কারণেই সম্পত্তির কোন অংশ বিক্রি, বন্ধক, দান, বিনিময় বা অন্য কোন প্রকার হস্তান্তর করতে পারবে না।

**কার্যত অভিভাবকের কাজঃ
নাবালককে রক্ষার জন্য আইনগত অভিভাবক বা আদালত নিযুক্ত অভিভাবক না হয়েও যে কেউ নাবালকের অভিভাবক হিসেবে কাজ করতে পারেন। বাস্তবে এরকমভাবে যিনি অভিভাবক হিসেবে কাজ করেন তিনিই হলেন কার্যত অভিভাবক। তবে তিনি কোন অবস্থাতেই সম্পত্তির স্বত্ব, স্বার্থ বা অধিকার হস্তান্তর করতে পারবেন না।

- এম টি উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: মায়ের কাছে থাকবে। এটাই সবাই জানে।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০০

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.