![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তৈৗফিক অতি সাধারন একজন মানুষ! জীবনের প্রথম দিকে সবার মতো আমিও নিজেকে নিয়ে অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখতাম! তখন আমার জানা ছিলনা যে স্বপ্ন দেখা কতটা সহজ কাজ! নিজেকে নিয়ে তো স্বপ্ন সবাই দেখে কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না! স্বপ্ন পূরনে ভাগ্য পরিশ্রম দুইটায় লাগে, কিন্তু আমি জানতাম শুধু পরিশ্রমের মাধ্যমেই মানুষ তার ভাগ্য পরিবর্তন করে জীবনের মূল লক্ষে পৌছাতে পারে! যা আমার কাছে বারবারি মিথ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে! জীবনের চলার পথে ভাগ্য কখনও আমাকে সাহায্য করে নাই বরং অনেক কিছু কেরে নিয়েছে! মানুষ তখনই হতাশ হয়, যখন পূর্ন পরিশ্রম করেও আসানুরূপ ফল অর্জনে ব্যর্থ হয়!আমি তেমনই একজন ব্যার্থ সৈনিক! নিজের প্রতি এখন তেমন কোন আস্থা না থাকায় বড় কোন আর স্বপ্নও দখিনা! তাই সব সময় চেষ্টা করি হাসি-খুসির মাধ্যে ঢুবে থাকতে! এজন্য অল্প অল্প পড়া-লেখা,বন্ধুদের সাথে আড্ডা,পিকনিক,বিভিন্ন ঐতিহাসিক বা সুন্দর স্থানে ভ্রমন প্রভৃতির মাধ্যেমে নিজের সব দুঃখ-কষ্ট আনন্দে ভাসিয়ে দেই! মাঝে মাঝে নিজের মনেই প্রশ্ন জাগে আসলে এতো কিছু দিয়ে হবেটা কি? যদি মনে কোন আনন্দ না থাকে! আল্লাহর কাছে অনেক অনেক সুকরিয়া এমন একটা সুন্দর জীবন দানের জন্য। যেমন আছি অনেক ভাল আছি......আর এমনই থাকতে চাই আজীবন.........
স্বাধারণত আমার মন খুব একটা খারাপ হয়না। কারণ আমি প্রতিটি ব্যাপারকেই স্বাভাবিকভাবে দেখতেই পছন্দ করি। কিছু কিছু ব্যাপার যখন নিজের কাছে অস্বাভাবিক লাগে ঠিক তখনই আমার মনটা বেশ খারাপ হয়ে যায়!
ক্লাশ শেষ করে বসে আছি চায়ের দোকানের পাশে।
চোঁখের সামনে বেশ সুন্দরী এক স্বাস্থ্যবান মেয়ে রিকসার জন্য দাড়িয়ে আছে। এক রিকসাওয়ালা মেয়েটির সামনে এসে দ্বাড়ালো কিন্তু ভাড়া না মেলায় চলে গেলো। দ্বাড়িয়ে আছে সে.... আরেকটা রিকসা আসলো। সেটাতেও ভাড়াতে মিললোনা। আমার মনোয়োগ এখন মোবাইলের গেমে। একটু পর দেখি মেয়েটি তবুও দ্বাড়িয়ে আছে। এবার আরেকজন আসলো.... রিকসাওয়ালার পায়ে স্যান্ডেল নাই। বয়সের কারনে মুখের চামড়া বেশ ঝুলে গেছে... চোঁখ গর্তে ঢুকেছে.... দাত আছে কিনা ঠিক খেয়াল করিনাই। আর দাত থাকলেও ২-৪টার বেশি থাকার কথা না। তিনার বয়স আনুমানিক ৯০এর মততো হবেই। বয়সের কারনেই হয়তোবা চোঁখে কিছুটা সাদা প্রলেপ পরেছে এবং ঘোলাটে দেখাচ্ছে।
বেশ অবাক নজরে তাকিয়ে ছিলাম আর ভাবছিলাম.....
অলরেডি মনের মধ্যে অনেক প্রশ্নও জমা হয়েগেছে....
* আচ্ছা? তার কি কোন ছেলে মেয়ে নাই?
* যদি কোন উপায় নাই থাকে তাহলে ভিক্ষা কেন করেনা? এমন বয়সি লোক তো প্রচুর ভিক্ষা পাওয়ার কথা তাইনা? রিকসা চালানোর থেকে কি ভিক্ষা করা সহজ কাজ নয়?
*শরীর যতদিন চলবে ততদিন তিনি কাজ করেই খেতে চান। কারও দয়ায় বাচতে চাননা হয়তোবা।
* এমন মোটা মেয়েটাকে নিয়ে কি আসলেই রিকসা চালাতে পারবেন তিনি?
আরও অনেক অনেক প্রশ্ন.....!
ভাবলাম মেয়েটা রিকসাতে না উঠলে আমিই উঠবো এবং যদি কোনভাবে সাহায্য করা যায় তাহলে অবশ্যই করবো। আর সাহায্য নিতে না চাইলে তার রিকসাতেই রাজশাহী ঘুরে বেড়াবো। যেহেতু তিনি এই বয়সেও রিকসা চালিয়ে জীবন বাচিয়ে রেখেছে সেহেতু তিনি মনে হয়না তেমন কারো সাহায্য নিবেন। তবুও চেষ্টা চালাতে ক্ষতি কি? কারণ এমন কিছু মানুষকে সাহায্য করার মত ক্ষমতা আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।
মেয়েটা রিকসাতে উঠলো। মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল। তখন ঠিক বুঝতে পারছিলামনা কি করবো। কিছুক্ষণ পর মাথায় আসলো আচ্ছা রিকসার পিছু নিয়ে আরেকটা রিকসা নিয়ে যাওয়া যায়। যেখানে মেয়েটাকে নামিয়ে দিবে সেখানে থেকে আমি আবার উঠবো রিকসাতে। কিন্তু বুদ্ধিটা মাথায় আসলো একটু দেড়িতে তাই তাকে আর খুজেই পেলাম না।
সত্তিই এমনসব মানুষদের জন্য মনের ভিতরটা কেমন যেন করে
ছেলেদের কাছে বাবা মা বোঝা অথচ বাবা মার কাছে ছেলেরা কলিজার টুকরা হয় কেন? কোন উত্তর আছে কারও? আমার জানা নাই
২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯
Crazy তৌফিক বলেছেন: আল্লাহ চাইলে অবশ্যই খুজে পাবো। আর পেলে নিশ্চয় তার দুঃখের কথাগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪০
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
৯০ বছর? এই বয়সে রিকশা চালানোর মত শক্তি তো আরামে থাকা বৃদ্ধেরও হবে না।
তবে, দারিদ্রতার কারণে বয়সটা অনেক বেশি মনে হয়। ৯০ বললেন - তারমানে ৭০/৭২ এর মত। এই বয়সেও কিন্তু রিকশা চালানো খুবই কঠিন কাজ। তবুও করতে হচ্ছে - অদৃষ্টের উপহাস।
ভিক্ষা করা এসব মানুষের জন্য সহজ হলেও পরিশ্রমকেই বেশি মূল্য দেয় তারা। আত্নমর্যাদা আছে এদের। এদেরকে আসলে সাহায্য করতে চাইলেও দান তারা নিতে চাইবে না।
কেন উনার এই অবস্থা তা আমরা সবাই জানি। জিজ্ঞেস করে তো লাভ নেই। আপনার মাঝে মানবিক বোধ ভালো - তাই উনার রিকশায় করে সারা রাজশাহী ঘুরতে চেয়েছিলেন। যাতে উনাকে আর ঐ দিনে খুব বেশি কষ্ট করতে না হয়। কিন্তু, আপনি চড়লেও তো ঐ বয়সে রিকশা চালানোর কষ্ট উনার করতেই হত।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮
Crazy তৌফিক বলেছেন: বয়সটা আনুমানিক বলা হয়েছে। ঠিক বলতে পারছিনা তবে আমার কাছে তার বয়স ৯০বছরের বৃদ্ধ ব্যাক্তর মতই মনে হচ্ছিলো। হতেপারে কম।
হুম আমি উনার রিকসায় ঘুরতে চেয়েছি। এখন আপনি কাওকে সাহায্য করতে চাইলে নিশ্চয় কিছুক্ষণ তিনার সাথে কাটাতে হবে, কথা বলে জানতে হবে সে সাহায্য নিতে চায় কিনা। আপনিতো সরাসরি সাহায্যের জন্য এমন কাওকে বলতে পারেনা তাইনা? আর তিনি যদি সাহায্য নিতে রাজি না হয় তাহলে পরীশ্রম করেওতো কিছুটা বেশি ভাড়া দিয়ে সাহায্যের টেষ্টা করা যেত তাইনা? এটা সত্তি যে আমি উনার রিকসাতে উঠলেও কষ্ট হতো কিন্তু এছাড়া কি আপনার কাছে অন্য উপায় জানা ছিলো? আমার ছিলোনা ভাই।
আর বর্তমানে পায়ে চালিত রিকসায় তেমন মানুষ ওঠেনা কারন সেগুলাতে একটু ভাড়া বেশি দিতে হয়। তাই তিনার রিকসায় লোক উঠার মত লোকও হয়তো অনেক কম। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন
ধন্যবাদ ভাল থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৪০
মানবী বলেছেন: হয়তো সন্তান আছে, হয়তো নেই। তবে ভদ্রলোক নিঃসন্দেহে আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন একজন মানুষ। আর আত্মমর্যাদাবোধ এমন এক সম্পদ যা বড় বড় অট্টালিকায় বাসাকারী, দামী হাঁকিয়ে ঘোরা অনেক অর্থবানের নেই!
ছেলেমেয়ের সংসারে যতো আদর ভালোবাসা থাক, নিজের সংসার নিজের উপার্জন নিজেরই।
দারিদ্রের তাড়না আর রোদে পুড়ে চেহারায় বয়সের ছাপ চলে আসতে পারে সময়ের অনেক আগেই, হয়তো তাঁর বয়স আপনি যতোটা ভেবেছেন তেমন বেশি নয়।
পাশ্চাত্যের দেশে বিত্ত্ববান অথবা দরিদ্র, অধিকাংশজন মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কাজ করে যেতে চায়। এই কাজ করা শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য নয়, বরং নিজের সক্ষমতার চাকা সচল রেখে নিজের মন মানসিকতার বলবৃদ্ধি করে।
আপনি আজকের এই কষ্ট ভুলে না গিয়ে থাকলে নিশ্চয় অন্যান্য সময় চোখ কান খোলা রেখে খুঁজলে এই রিক্সাচালককে পেয়ে যাবেন আশা করি।
আপনার মানবিকবোধের কষ্টটা ভালো লেগেছে পড়ে, ধন্যবাদ Crazy তৌফিক।