নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমালোচনাতে জ্ঞানীর জন্য থাকে শিক্ষা আর মূর্খের জন্য থাকে তর্ক।

তোফায়েল আহমেদ টুটুল

সাহসী আওয়াজ

তোফায়েল আহমেদ টুটুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতৃপ্ত ভালবাসা

০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:৩৫

নীপা, রসায়নে অনার্স পড়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোন এক কলেজে। জীবনের রসায়নও খুব ভাল বুঝে। তাইতো দীর্ঘ চার বছরের সম্পর্কটা ভাঙ্গতে সময় লাগেনি। সাফিনকে ভালবাসে নীপা চার বছর। যাকে একদিন না দেখতে পেলে, একদিন যার কথা না শুনলে নীপা অস্হির হয়ে পাগল হয় সেই নীপা, আজ তার বিয়ের কথা বার্তা চলছে।
ছেলে আমেরিকান এম্বাসিতে উচু পদে চাকরি করে, গুলশানে ১ ফ্লাট বাড়ি। শুনেতো নীপা কখন বর মাল্য গলায় পড়াবে আনন্দে আত্নহারা। সাফিনকে বিষয়টা জানানোর প্রয়োজনই মনে করলনা নীপা।
বেশ কতদিন হল নীপাকে কলেজ প্রাঙ্গনে দেখছেনা সাফিন। এদিকে নীপা কোন ব্যাক্তিগত মোবাইল ব্যবহার করেনা যে সাফিন তার খোঁজ নিবে। অনেক ভয়ে ভয়ে নীপার বাসার নাম্বারে ফোন করল সাফিন।
নীপাই ফোনটা ধরল,
হ্যালো কে?
সাফিন : আমি নীপা।
নীপা : ও.. হ। আমার আর কলেজে যাওয়া হবেনা সাফিন। কথাটা এমনভাবে বল্ল যেন নীপা বিশ্ব জয় করে ফেলেছে।
সাফিন : কেন? নীপা : আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আগামী ২২ জানুয়ারী।
নীপা হবু বরের এত প্রশংসা করতে লাগল ভুলেও মনে করলনা এই ছেলেটাকে সে ভালবাসত। নীপার জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার পরিপূর্ণতা হবে এই বিয়েতে।
কিন্তু সাফিন চুপ করে নীপার কখাগুলো শুনতে বুক ভেঙ্গে যাচ্ছিল। তবুও সে নীপার কথাগুলো শুনতে থাকল। নীপার ঐ খুশির কথাগুলো শুনতে যদিও সাফিনের বুকের পাঁজরের হাড়গুলো ভেঙ্গে কলিজাতে বিঁধতেছিল তবুও নীপাকে কষ্ট না দেয়ার জন্য সাফিন চুপ থাকল। কারন সে নীপাকে ভালবাসে।
নীপার সুখ আনন্দের কথাই সে সবসময় ভাবে। তাই আজ স্বার্থপরের মত নিজের ভালবাসার দাবি নিয়ে নীপার ঐ আনন্দটাকে মাটি করে দেয়নি।
কখন যেন মোবাইলটা সাফিনের হাত থেকে পড়ে গেল টের পায়নি। ভাবতে লাগল অন্য কারো নিকট যদি এই খবরটা শুনত তাহলে হযত এতটা কষ্ট পেতনা।
কিন্ত যাকে সে ভালবাসে, সেই নীপা!
সেই নীপা যখন এত হাসি খুশি ও আনন্দের সাথে সাফিনকে কথাগুলো বলতেছিল তখন সত্যিকারের প্রেমিক হিসাবে সাফিনের কি বলার ছিল?
ভালবাসার দাবীতে যা কিছুই বলত হয়ত তাকে আরো অপমানিত হতে হত। যেমন সে বেকার, এখনো ছাত্র, ভালবাসে তাতে কি হয়েছে, আমি তার যোগ্য নই, সে আমাকে ভালবেসে ভুল করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
যাক মেয়েরা পারে বটে খুব সহজেই নিজেকে বদলাতে। বিয়ের আগে প্রেমিককে বলা কথাগুলো আবার স্বামীকে বলতে।
যথা সময়ে নীপার বিয়ে হয়ে গেল। সাফিন নীপার বিয়েতে কোন প্রকার সিন ক্রিয়েট করেনি।সাফিনের বুকে নীপার প্রতি যে ভালবাসা ছিল তা কিন্ত সাফিন মুছে ফেলেনি।
যতই দিন যেতে লাগল নীপা স্বামী সংসার নিয়ে ততই ব্যস্ত হতে থাকল। দুই বছর পর নীপার কোলজুড়ে আসল ফুটফুটে এক ছেলে। সংসার নামক সাগরে সুখের ভেলায় ভেসে ভেসে ভুলেই গেল সাফিনকে।
হায়রে ভালবাসা!
এদিকে নীপাকে হারিয়ে সাফিনের জীবনটা যেন স্থির হয়ে গেল।
প্রথম প্রথম উদাসিনতায় থাকলেও পরবর্তিতে যেন পৃথিবীর সবকিছুই ভুলে গেল সাফিন। নীপাতো ভুলেছে মাত্র সাফিনকে আর সাফিন ভুলে গেল পুরো পৃথিবীকে। বাবা মা ভাই বোন সবার ভালবাসা পারেনি সাফিনকে নতুন একটা সুন্দর জীবন দিতে। জগতে সবাই এখন তাকে পাগল বলে।
পাগল কাকে বলে?
এত সুন্দর শান্ত ব্যাবহার, কথাবার্তা সবি যেন সকলের সাথে ঠিকঠাক চলে শুধু চলেনা তার নিজের জীবনটা। ভাই বোনেরা সবাই প্রতিষ্ঠিত, বিয়ে শাদী ঘর সংসার সবি সুখ শান্তিতে ভরা। বন্ধু বান্ধবরাও পড়া লেখা শেষ করে চাকরি, ব্যাবসা যে যার মত সুখি ও সুন্দর জীবন যাপন করছে।
প্রায় পাঁচ বছর পর দেখা হল বাল্যবন্ধু নাসিমের সাথে। নাসিম যদিও সাফিনের সব ইতিহাসই জানত তবুও সে অবাক না হয়ে পারলনা। ক্লাসের সেই ফাস্ট বয় ছেলেটা বোর্ড পরিক্ষায় যার রোল দেখা যেত টপ চার্টে। নাসিম সাফিনকে বুঝাতে চাইল অতীতকে ভুলে যেতে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তুমিও বিয়ে করে নাও।
জানি অতীতকে ভোলা খুব কষ্টের তবুও ভবিষতের কথা ভেবে তাকে ভুলতে হবে। যেখানে অতীত মানুষকে কষ্ট দেয় সেখানে আশা হল একমাত্র প্রতিষেধক যা দ্বারা আবার নতুন কিছু ভাবা যায়। অতীত কখনো মানুষকে কিছু দিতে পারে না। যা দেয় তা শুধু কষ্ট আর এই কষ্টগুলো ভবিষৎকে নষ্ট করে আবার নতুন অতীতে হারায় ধ্বংস করে দেয় জীবন।
আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখ।
যা ঘটে গেছে তা নিয়ে ভাবার কোন দরকার নেই। যাকে ভাবতে গেলে তোমার কষ্ট বাড়বে তাকে মনে রেখে কি লাভ?
সাফিন অনেকক্ষণ পরে নিরবতা ভেঙ্গে বলে আমিতো কোন অতীত মনে রাখিনি। আমি শুধু আমার ভালবাসাকে মনে রাখতে চাই।
নাসিম : সাফিন দোস্ত প্লিজ পাগলামি করনা।
সাফিন : লোকেতো আমাকে অনেক আগে থেকেই পাগল বলে।
নাসিম : তোমার কষ্ট লাগেনা?
সাফিন : কষ্ট! কিসের কষ্ট?
নাসিম : তুমি নীপাকে বলনি কেন?
সাফিন : কি বলব?
যাকে ভালবাসি তাকে আপন করতে গিয়ে যদি তার কষ্টের কারণ হতাম। স্বার্থপরের মত নিজের আনন্দের জন্য ভালবাসার মানুষটাকে দুঃখ দেয়ার নামতো ভালবাসা নয়। নাসিম কথা গুলো শুনতে শুনতে সাফিনের লেখা একটা ডাইরি খুলে পড়তে লাগল। যা বর্তমানে সাফিনের একমাত্র বন্ধু । ডাইরিটা তাই সর্বদা সাথে সাথেই থাকে । যখনি ইচ্ছে হয় দুকলম লিখে মনের অস্থিরতা দুর করে ।
নীপা, ভুলে যাও ক্ষতি নেই ৷
ভালবাসনি তাতেও ক্ষতি নেই ৷তবে শুধু মনে রেখ পৃথিবীতে আমিও একজন তোমাকে ভাবাসি ৷তোমাকে ধরে রাখতে চাইনি। যতদুরে চলে যাবে যাও সুখের সাগরে ডুবে থাকবে , থাক ৷তোমার সুখের দিনগুলি তোমার মতই কাটিও শুধু বিশ্বাস রেখ সেখানে আমি কখনো বাধা হতে আসবনা ৷
কিন্ত মনে রেখ সুখ দুঃখ নিয়েই মানুষের জীবন ৷ তোমার সুখের দিনগুলি ফুড়িয়ে গিয়ে কখনো যদি জীবনে দুঃখ কষ্ট চলে আসে ৷যদি সুখের প্রদীপ নিভে আঁধারে ঢেকে যায় তোমার ভূবন । যদি নিঃস্ব হয়ে হারিয়ে ফেল সব আপনজন । ব্যথাভরা জীবনে যখন কাউকে তোমার পাশে পাবে না ,দুচোখ থেকে যদি নিরবে অশ্রু ঝরে, মুছে দেয়ার কেউ না থাকে তখন ভেবনা দুঃখ কষ্ট নিয়ে তুমি একা কোন মরু প্রান্তরে দাড়িয়ে ৷
চলে এসো তখন আমার কাছে ৷আমার হৃদয়ের দরজা সবসময় তোমার জন্য খোলা রাখব ৷যখন ইচ্ছে হবে অনায়েসেই চলে এসো তখন আমি তোমাকে বরন করতে না পারলেও তোমার দুঃখ কষ্টগুলো রেখে দিতে পারব আর সেগুলোই হবে তোমার কাছ থেকে আমার ভালবসার প্রতিদানের সব থেকে বড় পাওয়া ৷বিশ্বাস কর সেইদিনই হবে আমার ভালবাসার স্বর্থকতা৷
নাসিম : সাফিন এখনো তুমি নীপাকে ভাল বাস?
সাফিন : এটা কেমন প্রশ্ন করলে বন্ধ?
ভালবাসা কি কখনো চুক্তি দিয়ে হয় নাকি?
নাসিম : তুমি এত ভালবাসতে নীপাকে, কখনো জানার ইচ্ছে হয়নি সে তোমাকে এতটা ভালবাসে কি না?
সাফিন : না। আমি ভালবাসি এটাই জানি। ভালবাসার প্রতিদান কি শুধুই ভালবাসা? ঘৃনা হতে পারে না?
নাসিম : বিনা অনুমতিতে তোমার ডাইরি পড়ে ফেললাম। আরেকটু পড়তে অনুমতি দিবে?
সাফিন : পড়। তবে আমার এই না বলা কথাগুলো শুধুই আমার ভালবাসাকে নিয়ে লেখা। তুমি কখনো কাউকে বলবেনা।
নাসিম : ঠিক আছে। নাসিম আবার পড়তে লাগল
নীপা, পথ কোন পথিকের সৃষ্টি করেনা বরং পথিকই পথের স্রষ্টা পথিকের পদচিহ্নে অঙ্কিত হয় পথরেখা৷তুমি আজ আমাকে ভাল না বাসলেও মনে রেখ তোমার পায়ের স্পর্শেই আমার হৃদয়ে ভালবাসার পথচলা শুরু হয়েছে৷তোমার হয়ত অন্যপথে হেটে যেতে খুব ইচ্ছে হয় কিন্তু আমার হৃদয়ে তোমার সৃষ্টি পথটাকে আমি কখনো মুছে ফেলতে পারব না ৷সেই পথে তুমি না হাটলেও অন্য কোন পথিকের অপেক্ষা করবন৷৷
যদি কোন পথিক ভুল করে এইপথে হাটতে হাটতে চলে আসে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা আমার না থাকলেও তার পদচিহ্ন আমার হৃদয়ে কখনও অঙ্কিত হতে দিবনা ৷
তুমিই আমার ভালবাসার পথের স্রষ্টা ৷
হয়ত তুমি হেটেছ কিন্ত কখনো বুঝতেও পারনি যে তুমিই এইপথ ধরে হাটতে গিয়েই আমার ভালবাসার পথের সূচনা ৷
হৃদয়ের পথে হাটতে গিয়ে তুমি কি কখনো বুঝার চেষ্টা করেছ যে তোমার মত পথিকের অপেক্ষা সে সবসময় করে। সেখানে অন্য কোন পথিক সে কামনাও করেনা৷
তুমি পথিক তাই হাটতে হাটতে এক পথ থেকে অন্য কোন পথে গিয়ে নতুন কিছুর খোজ কর কিন্ত আমি তোমার সৃষ্টি পথ যে তোমাকে জোরপূর্বক হাটাতে পারিনি ৷তাই যখনই তুমি হেটেছ তোমার পদচিহ্নগুলো এমনভাবে আমার হৃদয়ে ধারন করে রেখেছি যেন কখনো তা মুছে না যায় ৷এখনো তোমার হাটার অপেক্ষায় থাকি সবসময় যদি কখনো তুমি হাটতে হাটতে এইপথে আবার ফিরে আস ৷
জানি হয়ত আর আসবেনা। কিন্ত তুমি বিশ্বাস কর তোমাকে ছাড়া আমার পৃথিবীটা একদম শূন্য।
তুমি নতুন সাথি নিয়ে নতুন জীবনের রচনায় নতুন স্বপ্নে বিভোর ।
আর আমি!
এই আমি, একটা নতুন ভোর একটা নতুন সূর্য একটা নতুন সকাল একটা নতুন দিন। ভোরের সূর্য উদয়ের সাথে সাথে পৃথিবীর সবকিছুই যেন বদলে গিয়ে শুরু হয় নতুন সবকিছু। এভাবে কেটে যায় দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর। পৃথিবীর সবকিছুই যেন বদলে যায় নতুনের ছোয়ায় । সকল মানুষ নতুনকে বরন করে নিজেকে বদলাতে চায়। সবাই যেন প্রান ফিরে পায় নতুনের আগমনে। কিন্তু আমি, এই আমি পারিনা নতুন ভোর নতুন সূর্য নতুন সকাল নতুন দিনকে বরন করে নিজেকে বদলাতে ।
পারিনা নতুনের আনন্দে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়ে নতুন করে সাজাতে । সকল নতুনের আগমনেও আমাকে পুরাতনকে আকড়ে ধরে থাকতে হয়। কেননা যাকিছু নতুন আসে সেখানে নেই তুমি।
তোমাকে ছাড়া আমি নতুনকে বরন করি কিভাবে?
তাইতো আমাকেও থাকতে হয় সেই পুরাতনে যেখানে আছ তুমি , তোমার কথা তোমার স্পর্শ তোমার স্মৃতি । তোমার ঐসকল প্রাপ্তি গুলোতো আর নতুনের মাঝে খুজে পাওয়া যাবেনা। তাই সকল নতুনকে দুহাতে সরিয়ে দিয়ে আমি আজও রয়ে গেলাম সেই পুরাতনে যেখানে ছিলে তুমি শুধু তুমি ।
পড়তে পড়তে নাসিমের চোখ দিয়ে কখন যে পানি চলে এল টের পায়নি। ডাইরিটা বন্ধ করে নাসিম ভাবতে লাগল লোকেরা সবাই সাফিনকে পাগল বলে! আজকাল ভালবাসায় লোভ কাজ করে সবথেকে বেশি। ভালবেসে পাওয়ার লোভ। না পাওয়ার স্বার্থকতা খুঁজ করেনা কেউ।
শরৎ বাবুর লেখা বড় প্রেম কাছেই টানেনা বরং দুরেও ঠেলে দেয়। আর আমি বলব আজকালের ভালবাসা মুখের কথায় ভাঙ্গে গড়ে হৃদয়ের ভাবনাতে স্থান পায়না।
ভালবেসে মানুষ হয় মহৎ উদার ,কৃপন নয়।
ভালবেসে মহৎ হৃদয়ে ভাবতে হবে আমার অকল্যানে কারো কল্যান আমি মেনে নিতে পারি । কিন্তু কারো অকল্যানে আমার কল্যান কখনও মানতে পরিনা।
সাফিনের ভালবাসাতেও তাই ঘটেছে। সাফিনের হৃদয়ে যে ভালবাসা প্রদীপ জ্বলছে সেটাই সত্যিকারের ভালবাসা। তবুও বলব সাফিন ভুল করেছে। ভালবাসার মানুষ নির্বাচনে ভুল করেছে।
নিজের অস্হিত্ব ভুলে কাউকে ভালবাসতে নেই তাহলে তোমাকে অনেক কষ্ট পেতে হবে । ভালবেসে তুমি যাকিছু বির্সর্জন দিবে ভালবাসার মানুষটা যদি সেটা পৃথিবীর সবথেকে বড় এবং দামী উপহার মনে না করে তাহলে বুঝবে তুমি ভালবাসার মানুষ নির্বাচনে বড় বেশি ভুল করেছ।
আজকাল সুন্দর একটা মনের খোঁজ কেউ করেনা। দেখে শুধু রুপ যৌবন। সুন্দর মনের অধিকারী যে সেই পারে সত্যিকারের ভালবাসতে,আর সেই ভালবাসা পাওয়ার মত যোগ্যতা রাখে।
নারীর চোখে প্রেম ভালবাসা মায়া মমতা ।
নারীর ঠোটে মধুর হাসি।
নারীর মুখে মিষ্টি কথা।
এই তিন হল পুরুষকে দেয়ার মত সম্পদ। আর বর্তমানে নারীকে ভালবেসে পুরুষ এগুলো খুঁজেনা। খুঁজে ছলনা আর অভিনয়। তাইতো ভালবাসার সম্পর্ক হয় তিতা। ভালবাসা আদি শব্দ " ভাল "। এই ভাল খুঁজে পাওয়া যায় যার মাঝে তাকে ভালবাসতে হয়। সুন্দর চেহারা ফর্সা গায়ের রং দেখে যারা ভালবাসে তারা কিন্তু ঠিকই মেয়েদের কথায় খুবই আঘাত পায়। চোখের ভাষায় অগ্নি ঝরায়। ঠোটকে ছয় নয় বাকা করে শুধু শুধু করে অভিমান, অভিমান থেকে তর্ক , তর্ক থেকে ঝগড়া। ওরকম মেয়েকে কোন সুপুরুষ ভালবাসতে পারে ?
তবুও পাগল ছেলে গুলো ওদের নাকি ভালবাসে। আর তাইতো বিনিময়ে পায় ছলনা প্রতারণা কষ্ট।
সাফিনের ভালবাসাকে আমরা অবশ্যই সন্মান করব।
না পাওয়ার কষ্ট দুর করতে ভালবাসাকে আঘাত করা, ভালবাসার অনেক গল্প উপন্যাসে বর্তমানে ফেইস বুক অনলাইনে পড়ি।
নিজের অভিজ্ঞতা হোক আর শুনা যারা লিখে কত কষ্ট তাদের বুকে ! ভালবাসার মানুষকে কত অপমানজনক, অশালীন, নোংরা, নিচু, ভাষায় তুলে ধরে। ভালবেসে কি শুধু তার দোষ ত্রুটি গুলো খোঁজ করে যুবক যুবতিরা ? একটু আঘাত পেলেই শুরু হয় তাকে অপবাধ দেয়া। ভালবেসে অপবাধ পেয়েতো মানুষটি বদলাবে এটাই স্বাভাবিক।
আজ আর ভালবাসায় পাওয়া যায়না জীবনান্দের বনলতা সেন, নজরুলের সঞ্চিতা,রবি ঠাকুরের লাবন্য।
পাওয়া যায়না শরৎ বাবুর দেবদাস রবী ঠাকুরের অপু কিংবা অপুর্ব।
অশ্লীল ভাষায় আক্রমনাত্বক মন্তব্য ভালবাসাকে করা মোটেও ঠিক নয়।
আজকাল মানুষগুলো নিজের অধিকার ও কর্তব্য কোনটাই মনে রাখেনা । নিজের অধিকারের কথা সবসময় ভাবে কিন্তু কর্তব্য ভুলে যায় আবার অপরজনের কর্তব্য মনে রাখে কিন্তু তার অধিকার ভুলে যায় ।
মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক জন্ম জন্মান্তরের । প্রতিটি সম্পর্কের মাঝে যদি অধিকার কর্তব্য উভয় জনই সচেতনভাবে পালন করত তাহলে পৃথিবীতে দুঃখ থাকত বলে আমার মনে হয়না।
বিশেষ করে আজ আমাদের যুব সমাজ ভালবাসার রঙ্গিন স্বপ্নে বিভোর। ভালবাসার ক্ষেত্রে তাদের যে অধিকার ও কর্তব্য দুটোই পারে ভালবাসাকে সফল করতে যুবসমমাজ তা মনেই করেনা।
অথবা পবিত্র ভালবাসার অনুসরণীয় একজন আদর্শ প্রতীক।
ভালবেসে ছেলে কিংবা মেয়ে দুজনেই চায় শুধু নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে কিন্তু কর্তব্য পালনের কোন আগ্রহ নেই।
কাউকে ভালবেসে কেউ কষ্ট পেল এমনকি জীবন দিয়ে দিলেও তাকে বাঁচাতে হবে ভালবেসে সেটা কেউ মাথায় রাখেনা।
ভালবেসে কষ্ট বলতে অধিকার ভোগ করতে না পারা।
তা কি সত্যি ভালবাসা?
আবার ভালবাসার কর্তব্য পালন করতে গিয়ে যার জন্য তুমি জিবন দিতে প্রস্তুত তার নিকট তোমার কোন অধিকার নেই?
নাকি তুমি ভালবেসে নিজের অধিকার আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে জীবন শেষ করলা?
যার ভালবাসার অধিকারে তুমি কষ্ট পাও দুঃখ পাও সে যদি তার কর্তব্য দিয়ে তোমার দুঃখ কষ্ট দুর না করে তাহলে এটা কি ভালবাসার সম্পর্ক হতে পারে?
একটি জীবন অন্য আরেকটি জীবনের আশা করার নামই হল ভালবাসা । ভালবাসার প্রধান কর্তব্য হল ভালবাসাকে বাঁচিয়ে রাখা। তাকে দুঃখ দিয়ে কষ্ট দিয়ে ধ্বংশ করা নয়।
ভালবাসা মানুষকে দায়িত্বশীল করে পাগল নয় । ভালবাসা মানুষের বিবেক জাগায় অমানুষ করেনা । ভালবাসা মানুষকে সাহসী করে ভীতু নয় । ভালবাসা মানুষকে রুটিনের ভিতরে নিয়ে যায় ভবঘুরে করে না । ভালবাসা মানুষের ধৈর্য শক্তি বাড়ায় অধৈর্য হয়ে ভারবাসা নষ্ট করে না । ভালবাসা মানুষের মুখের ভাসায় মধুরতা আনে , নম্রতা আনে , উগ্রতা নয় । কিন্তু বর্তমানে ভালবাসা মানুষের মধ্য কোন পরিবর্তন ঘটায় না তবুও দেখি মানুষ ভালবাসে । এটা কোন ধরনের ভালবাসা ?
ভালবাসা আসলে সাগরের ন্যায় যেখানে মানুষ সাঁতার কাটতে সর্বদা প্রস্তুত । অথবা ভেলা ভাসিয়ে পাড়ি দিতে চায় জীবনের শেষ প্রান্তে।
সাগর মানুষের কাছে শুধু একটি নাম ৷ কিন্তু ভালবাসার কাছে তুমি বিশাল ৷অশান্ত ঢেউ হয়ে হয়তো তুমি মানব জীবনে আসবে হৃদয়ের তীরে আছড়ে পড়ে মানুষের মনকে ধুমরে মুচরে ভেঙ্গে চুড়ে জীবনের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে যাবে ৷
নতুবা জোয়ারের পানি হয়ে এসে হৃদয়কে কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে তৄষ্ণাত' হৃদয়ের ভালোবাসার পিপাসা দুর করবে ৷
ভাটির টানে যাওয়ার সময় ভালবাসাকে তোমার বুকের গভীরে নিয়ে যাবে ৷ সেদিন তোমার মাঝে ভালবাসা নিজেকে এমনভাবে বিলিন করবে তুমি আর কখনো তাকে আলাদা করতে পারবে না ৷
ভালোবাসার পূর্বে প্রতিটি মানুষকে এই চরম বাস্তবতা মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে ৷
ভালোবাসার জয় পরাজয় ঘটবেই ৷
ভালোবাসা কারো জীবনে সাগরের গর্জন হয়ে আসতে পারে যা শুধু ধ্বংস করে দিবে সব কিছু কেড়ে নিয়ে নিঃস্ব করে দিবে কারো জীবন ৷ আবার জোয়ারের মত আসতে পারে যা আস্তে আস্তে ভাসিয়ে তুলবে হৃদয়ের সমস্ত আবেগ অনুভুতি ৷ ভাটির টানে নিয়ে গেলেও ভরে রাখবে হৃদয়ের গভীরে যেখানে সুখের ভেলায় ভাসতে ভাসতে কেটে যাবে দুটি জীবন ৷ ভালোবাসা কারো জীবনে যেন সাগরের গর্জন হয়ে না আসে, সবার জীবনেই যেন জোয়ারের পানি হয়ে এসে হ্দয়ের সমস্ত পিপাসা মিঠিয়ে সজীব রাখে দুটি জীবন এই কামনা করব ৷

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.