নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুশি মারইয়াম

আমার মাটি , আমার মা রাজাকারের হবে না

তুশি মারইয়াম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দরবন সত্যিই সুন্দর

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

যখন সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে বাসে চেপে বসলাম মনে ভয় ছিল , দ্বিধা ছিল । হয় বাঘের পেটে পড়তে হবে , নয় সাপে কামড়াবে । কিন্তু না বাঘ কিংবা সাপ কোনটাই আমাকে আক্রমণ করে নি । আক্রমণ করেছে সুন্দরবন , তার সৌন্দর্য দিয়ে । দুনির্বার সে আকর্ষণে বারবার ছুটে যেতে মন চায় । পশুর নদীর বুক চিড়ে ট্রলারে চেপে সুন্দরবনে যাওয়ার মুহূর্ত কখনই ভুলতে পারি না । যে বাঘ মামাকে দেখে এত ভয় সেই বাঘ মামার পাশ দিয়ে যখন ট্রলার চলে গেল , তখন মোটেও ভয় লাগে নি । ১০-১২ হাত দূরে নদীর তীরে তৃষ্ণার্ত বাঘ মামার পানি খাওয়ার দৃশ্য দেখে ভীত হবার পরিবর্তে হয়েছিলাম রোমাঞ্চিত । সুন্দরবনে পা রাখার সাথে সাথে সাপ কিংবা বাঘের ভয় কর্পুরের মত উড়ে যায় । গোলপাতা যে গোল না লম্বা তা দেখেছি সুন্দরবনে গিয়ে । দেখেছি সুন্দরী গাছ । হাজারো জানা অজানা গাছ দেখেছি সুন্দরবনে । বইয়ের পাতায় পড়া শ্বাসমূল চোখ দিয়ে দেখেছি , হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখেছি । উফ , বড্ড শক্ত । অসংখ্য বানর সুন্দরবনে । সুন্দরবনের বানরগুলো খুব পচা , ক্যামেরা তাক করার আগেই পালিয়ে যায় । হরিণগুলো বানরের মতো না । যথেষ্ট শিক্ষিত । ছবি তোলার সময় চমত্কার করে পোজ দিতে পারে । দেখে মনে হবে যেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত । হরিণ কিন্তু শিং ছুঁতে দেয় না । হাত বাড়ালেই পালিয়ে যায় । সুন্দরবনে গেলে লোকালয়ে ফেরার কথা মনে থাকে না । মুগ্ধ বিস্ময়ে দেখতে হয় প্রকৃতির অপূরূপ দৃশ্য । সুন্দরবন কি কেবলই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি ? নাকি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার এক অনন্য অসাধারণ বনভূমি ? আমাদের স্মৃতি শক্তি খুব দুর্বল না হলে সিডরের ভয়াবহতা বিস্মৃত হবার কথা না । এই সুন্দরবনই সিডরের ভয়াবহতা নিজের কোলে টেনে নিয়ে রক্ষা করেছিল আমাদের সুন্দর বাংলাদেশকে । সিডরের সে দগদগে ঘা এখনো পুরোপুরি শুকায় নি । সবে মাত্র জেগে উঠতে শুরু করেছে সুন্দরবন । এরই মাঝে কালঝড় দুয়ারে কড়া নাড়ছে । এই ঝড়কে কাল ঝড় বলবো নাকি মহা দুর্যোগ বলবো বুঝে উঠতে পারছি না । পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনের কোল ঘেষে গড়ে উঠতে যাচ্ছে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র । বনের পাশেই কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ বানালে সুন্দরবনের কতটা ক্ষতি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । আচ্ছা ছাপান্ন হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশে একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরী করার মতো উপযুক্ত জায়গা কি পাওয়া গেল না ? তার জন্য সুন্দরবনকেই বেছে নিতে হলো ? পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন চোখের সামনে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবে এটা কিভাবে সম্ভব ? কর্তা ব্যক্তিদের ফুলবাড়িয়া আর আড়িয়াল বিলের কথা একটু মনে করিয়ে দিতে চাই । দেশের স্বার্থ মাথায় রাখেন আর না রাখেন হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সচেতন জনগনের বিষয়টা মাথায় রাখবেন । দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বোকা আমজনতা চালক না হলেও সচেতন হয়েছে ।

পরিশিষ্ট : প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামলানোর ক্ষমতা বিধাতা প্রকৃতিকে দিয়েছেন কিন্তু মানবসৃষ্ট দুর্যোগ সামলানোর ক্ষমতা প্রকৃতিকে কে দেবে ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.