নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মূর্খ সমাজপতি গাঁয়ে, গগনে দেখি ক্ষয়িষ্ণু চাঁদ বিচ্যুত যৌবনে জোছনা আমায় করেছে উম্মাদ

উপপাদ্য

ইমেইল: [email protected]

উপপাদ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার ব্যাক্তিগত বিষন্নতা ও সংগ্রামী শহীদ সাথীদের জন্য ভালোবাসা

২০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:২৯

বিষন্ন দিন ও বিষন্ন রাত



দূরে বিবাগী বাউল গেয়ে যাচ্ছে বিষন্নতার গান, ভীষন রকমের হৃদয়স্পর্শী বেদনার গান।



"জানি তুমি আসবেনা

কাছে এসে বসবেনা

মাকে তুমি আর কভু

ডাকবেনা................."



আমি মাঝে মাঝে খুব বিষন্ন হয়ে যাই। বিষন্না আমাকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে যে আমি তখন জাগতিক অনেক বিষয় ভুলে যেতে থাকি। পিতা মাতা, স্ত্রী, স্বজন বন্ধু সব ভুলে যাই। সেইসব বিষন্ন সময়ে আমি সাধারানত কিছু গান শুনি। একাকিত্বের গান। উদাসি বাউলের গান, বাউরী বাতাসের গান, এলোমেলো হাওয়ার গান। তখন আমি গানের মাঝে আবিষ্কার করি আমার বিষন্নতার কারন। গানের মঝে বিলীন আমি নিজেকে আবিষ্কার করি নতুন করে। আমি প্রেম কাতরতায় বিরহী নই তবে এটা নিশ্চিত এটাও এক ধরনের বিরহ, এ বিরহ বড়ই যন্ত্রনার, এ বিরহ বড়ই কষ্টের, এ বিরহ বড়ই বেদনার।



বিপ্লবের প্রেরনায় যারা অনুপ্রানিত



আমার মাঝে মাঝে মনে হয় স্বজন হারানোর বেদনার চেয়ে সাথী হারানোর বেদনা অনেক বেশী কষ্টের। আমি আমার সংগ্রামী সাথী ভাইদের কথা বলছি, আমি আমার বিপ্লবী সাথী ভাইদের কথা বলছি। যারা দেশের জন্য, আগামীর জন্য, এতটুকু শান্তির জন্য, ধর্মের জন্য, নবী মুহাম্মদের সম্মান রক্ষার জন্য তাজা রক্তে ভাসিয়ে দিলো দেশ তারা কি আমার স্বজনের চেয়েও বেশী আপন নয়? লাঙ্গল-জোয়াল ফেলে সেদিন কৃষক এসেছিলো, সড়কের পাশে তার কলিজার চেয়েও দামী রিক্সাটা পিলারের সাথে বেঁধে সেদিন এসেছিলো, "স্টেট আ্যান্ড পলিটিক্স" ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এসেছিলো তারা, মাদ্রাসার হুজুরের কড়া নজড়দারীকে ফাঁকি দিয়ে এসেছিলো তারা, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর বসকে মাথাব্যাথা-পেটব্যাথার অজুহাত দেখিয়ে এসেছিলো তারা, বোনের বিয়ের আসর থেকে লুকিয়ে এসেছিলো অনেকে, বাবার সাথে বাজারে যাওয়ার সময় মিছিলে হারিয়ে গিয়েছিলো আরো কত। মিছিলের জোয়ার দেখে সেদিন ছাত্র, শিক্ষক, কুলী, মজুর, ব্যাবসায়ী, চাকুরীজীবি সবাই এসেছিলো। সারা বাংলাদেশ হয়েছিলো মিছিলের দেশ, কালেমার পতাকায় ছেয়ে গেছিলো টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া। মানুষ দল মত সব ভুলে গেছিলো। দেশ ও ধর্ম যদি না থাকে দল মত দিয়ে কি হবে, এমন আদর্শে উজ্জীবিত সারা দেশ। খুনী, গনহত্যাকারি, ধর্ম বিদ্বেষী, ধর্মদ্রোহী, গনতন্ত্র বিনাশী ফ্যাসিস্টের দল কেঁপে উঠেছিলো। পালানোর রাস্তা খুঁজছিলো। কিন্তু অমানুষ হায়েনার দল শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশের মানুষের উপর শেষ মরন কামড় দিলো। লেলিয়ে দিলো পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবের কুখ্যাত ধর্মদ্রোহী, ইসলাম বিরোধী, দেশদ্রোহী অংশকে সরাসরি হত্যা মিশনে। রাতের আঁধারে টোটাল ব্লাক আউট করে ব্রাশ ফায়ার ও গ্রেনেড হামলা করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হলো।



এখনো দুঃস্বপ্ন হয়ে ফিরে ফিরে আসে



কিছু কিছু দৃশ্য আমি এখনো দেখি। স্বপ্নে দেখি, জাগরনে দেখি। কিছু দৃশ্য এখনো আমার বিবেকে কড়া নাড়ে, জিজ্ঞাসিত হয় এদেশ কি হায়েনার হাতে বন্দি? এদেশের মানুষের বিবেক কি তবে বিক্রিত? আমি ঐ তরুনের কথা বলছিলাম যাকে গুলি করার পর মতিঝিলের রাজপথে সে বার বার তার প্রায় নিথর দেহ নিয়ে কাতরাচ্ছিলো। বার বার উঠে দাঁড়ানোর চেস্টা করছিলো। শেষে ধপ করে রাজপথে হারিয়ে গেলো। আমি ঐ তরুনের কথা বলছিলাম যার মাথায় ছিলো কালেমার টুপি আর বুকের তাজা খুনে মতিঝিল যেন এক ছোট্ট বংগোপসাগর। আমার মনে পরে আরেক তরুনের কথা যাকে পুলিশ ঘুম থেকে উঠানোর চেস্টা করছিলো। কিন্তু হায় ঐ পুলিশেরই কোন এক সহযোগী যে তাকে চিরতরে ঘুমের রাজ্যে পাঠিয়ে দিয়েছিলো হায়েনার নৃশংস নির্দেশে। আবার মনে পরে সেই যুবকের কথা যে কিনা পিলিশের গুলিতে নিহত বন্ধুর নইঠর দেখটি জড়িরে হাউমাউ করে বিলাপ করছিলো। তবু কাফেরের অনুসারীদের, সীমারের সন্তানদের মনুষত্ব জেগে উঠেনি একটিবার, একটি মুহুর্তের জন্য। আমার প্রায়ই এসব দৃশ্য মনে পড়ে। আমি তখন বিষন্ন হয়ে পরি। আমি তখন না ঘুমাতে পারি, না জেগে থাকতে পারি।



তারপর আবারো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই



এই সব অস্থির সময় আমি পার করছি প্রতি দিন। যাকে আমি কোনদিন দেখিনি, যার সাথে কোন দিন কথা হয়নি, সে কিভাবে আমার এতো আপন হয়। তার মৃত্যুর দৃশ্য দেখে কেনো আমি কাঁদি। দেশের জন্য, ধর্মের জন্য, মানুষের জন্য, একটি সুন্দর সমাজের জন্য, ফ্যাসিস্ট মুক্ত ভবিষ্যতের জন্য তার এই আত্মত্যাগ আমাকে কাঁদায়। আমার ভেতরে বিদ্রোহ, বিপ্লবের বীজ বপিত হয়। আমার ভেতরে দ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে। আমি শান্তির জন্য অনির্বান দ্রোহের মশাল হাতে ছুটতে চাই ঐ মতিঝিল প্রান্তরে। আমি বখতিয়ারের ঘোড়া নিয়ে ছুটতে চাই সীতাকুন্ড, সাতকানিয়ায়। আমি তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লার চেতনা জ্বালাতে চাই সাতক্ষীরায়, আমি নুরালদীনের বিদ্রোহের আলোয় আলোকিত করতে চাই নীলফামারী, বগুড়া। আমি শাহজালালের তলোয়ার নিয়ে বিশ্বনাথের পথ আগলে থাকতে চাই। শিরায় শিরায় বিপ্লব মন্ত্র উচ্চারিত হয়। স্বপ্নে কিংবা জাগরনে বিশুদ্ধ বাংলাদেশ উচ্চারিত হয়। আমি তখন আবারো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই একটি সুন্দর সমাজ, সুন্দর সমাজ গঠনের শানিত আহ্বানে।



চির ক্রন্ধনরত আমার হৃদয় তোমাদের জন্য



আর আমার স্বজনের চেয়েও প্রিয় সংগ্রামী শহীদ সাথী ভাইদের জন্য ক্রন্ধনরত আমার হৃদয় স্রষ্টার সকাশে প্রার্থনায়, প্রণতিতে ধ্বণিত হয় প্রেরনার বাতিঘর হয়ে। চোখের জলে ভিজিয়ে দেই খোদার সকাশ তোমাদের জন্য, তোমাদের ভালোবাসায়।





মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:০৫

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্নভাবে, বিভিন্নরূপে একই দৃশ্য দেখতে দেখতে আমার চেতনা আজ চার দেয়ালে বন্দী,রুদ্ধ। সব শিকলে জড়িয়ে গেছে।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৮

উপপাদ্য বলেছেন: রাজপথের একসময়ের চির তরুন উপপাদ্য আজ রুটি রুজির ধান্ধায় অনেক কিছু ভুলে থাকতে চায়।

চেতনাটা বাঁচিয়ে রাখুন। সময়ে কাজে লাগবে।

২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:০০

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: দেশ ও ধর্ম যদি না থাকে দল মত দিয়ে কি হবে, এমন আদর্শে উজ্জীবিত সারা দেশ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২

উপপাদ্য বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ প্রিয় পোকা ভাই।

৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৩০

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: @ উপপাদ্য-আপনি ভুলে থাকতে চান আর আমি ভয় পাই রীতিমত।। বয়সও হয়েছে,তাই চেতনাকে ধরে রাখলেও কাজ হবে না। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.